Announcement

Collapse
No announcement yet.

আকিদা ইস্যুতে কিছু কথা- আসুন ইখলাসের সাথে একতাবদ্ধ হই!

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আকিদা ইস্যুতে কিছু কথা- আসুন ইখলাসের সাথে একতাবদ্ধ হই!

    আকিদা ইস্যুতে কিছু কথা- আসুন ইখলাসের সাথে একতাবদ্ধ হই!


    আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন, ওয়াস সালাতু ওয়াস সালাতু আলা রাসুলিহিল আমিন- আম্মা বাদ-
    সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ লম্বা সময় ধরেই আকিদা বিষয়ক আলোচনা পর্যালোচনা চলছে! অবশ্যই আকিদাহর মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে বারবার আলোচনা হওয়া দরকার! কিন্তু এই আলোচনার মাঝে মাঝে অজ্ঞতা ও দলান্ধতার কারণে বিভিন্ন অসুন্দর ইস্যু সামনে চলে আসছে...
    ১- আমাদের আকিদাহ কি? এটা মুজাহিদিন অবশ্যই জেনে থাকবেন! খাসভাবে বলতে চাচ্ছি তাওহিদুল আসমা ওয়াস সিফাত সম্পর্কে আমাদের আকিদা হল-
    পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহতে আল্লাহ তা’আলার যে নাম ও সিফাতসমূহ বর্ণিত হয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে আমাদের আক্বীদা হল- সেগুলো তাঁর শান অনুযায়ী বিদ্যমান, কোন মাখলুকের মতো নয়। আমরা আল্লাহ তা’আলার এই সিফাতগুলোকে মুশাব্বিহা ফেরকার (المشبهة) মতো কোন মাখলুকের সদৃশ মনে করি না এবং মুয়াত্তিলা ফেরকার (المعطلة) মতো তাঁর কোন সিফাতকে অস্বীকারও করি না।
    এই কথাটাকেই আরও সুন্দরভাবে জানার জন্য আল হিকমাহ থেকে প্রকাশিত মাওলানা শরিফুল আলম হাফিজাহুল্লাহ'র দারসুল আকিদা সিরিজ ও আল্লাহর নাম বিষয়ক মূলনীতি রিসালাহটি পড়া উচিত! এবং শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রহিমাহুল্লাহ, শাইখ মাকদিসি হাফিজাহুল্লাহ, শাইখ আবু মুসআব সুরি ফাক্কাল্লাহু আসরাহ বিভিন্ন রিসালাহতে স্পষ্ট করে বর্ণনা করেছেন!

    কোন কোন ভাই এই আকিদাহকে দেহবাদী আকিদাহর সাথে মিলাতে চাচ্ছেন, এমনকি এটা শুধু শাইখ আসিম আল-মাকদিসি হাফিজাহুল্লাহর বিচ্ছিন্ন মত বলতে চাচ্ছেন! আকিদাহর এই পয়েন্টটি নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা হতে পারে, সেটা সমস্যা নয়, কিন্তু মনে রাখতে হবে হে সম্মানিত ভাই এই মতটি শুধু একজনের বিচ্ছিন্ন মত নয়, এটা তো পূর্বসূরি ও বর্তমান অসংখ্য ইমামের মত! আধুনিক জিহাদের অনেক উলামায়ে কেরামের মত! বিস্তারিত পর্যালোচনায় আমি যাবো না, এটাই বলা উদ্দেশ্য ছিল যে এটা বিচ্ছিন্ন মত নয় এমনকি ১/২ জনেরও মত নয়।

    ২- একটি সরল কথা হল, তানযিমের আকিদাহ কি? আহলুস সুন্নাহ ওয়াল-জামাআহর আকিদা-ই তানযিমের আকিদা! অর্থাৎ আকিদাহর যে সকল বিষয় সম্পর্কে উম্মাহর আলিমদের মাঝে কোন মতানৈক্য নেই, সেটা হল তানযিমের ঘোষিত আকিদা, আর যেগুলার ব্যাপারে আলিমদের মতানৈক্য রয়েছে, সেক্ষেত্রে ব্যক্তি স্বাধীন, উনি হকপন্থী আলিমদের যে কারো মতকে গ্রহণ করতে পারেন! এই ইখতিলাফ সাথে নিয়েই জিহাদের উলামা ও উমারাহগণ একতার কথা বলেন।

    ৩- পূর্ব যুগ থেকে নিয়ে বর্তমান যুগ পর্যন্ত উলামায়ে কেরাম দ্বীনের স্বার্থে বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য করেছেন। একজন অপরজনের জন্য কঠোর ভাষাও প্রয়োগ করেছেন। তো এই উলামাদের ব্যক্তিগত এই কর্মকে নিজ জায়গাতে রেখে দিয়ে উভয়কেই আমাদের সম্মান করা উচিত! কিন্তু অনেক ভাইকে দেখা যাচ্ছে আল্লামা যাহেদ কাউসারী রহিমাহুল্লাহকে নিয়ে সমালোচনা করছেন। কঠিন কঠিন শব্দ ব্যবহার করছেন। জবানদারাজি করছেন! হে ভাইয়েরা! আল্লাহকে ভয় করুন! ওই সকল লোকদের মিসদাক হওয়া থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন, যারা আলিমদের গালি দিবে! সীমারেখা মেনে চলুন, আহলুস সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত ও বহির্ভূতদের সাথে কেমন আচরণ হবে, সেটা গুলিয়ে ফেলবেন না!

    ৪- এখন আমাদের কি করণীয়? আমাদের করণীয় হল আকিদাহর মুত্তাফাক অংশগুলোর ব্যাপারে নির্দ্বিধায় ঈমান আনবো, এবং ইখতিলাফি অংশগুলার ক্ষেত্রে হকপন্থী যে কোন ইমামের অনুসরণ করবো! অতঃপর সকল মুসলিম ভাই মিলে নিপীড়িত উম্মাহুকে রক্ষা ও আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নের জন্য দাওয়াত ও জিহাদের কাজ চালিয়ে যাবো!
    ভাইয়েরা! ওই যে দেখুন! আপনাদের বিবাদে লাগিয়ে দিয়ে শত্রুরা আশআরি-মাতুরিদি আকিদাহ পোষণকারী এলাকার মুসলিম বোনকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছে! আরেকদিকে সালাফি আকিদাহ পোষণকারীদের ঘরবাড়ি মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে! অনেক হয়েছে বিবাদ! এখন আসুন ইখতিলাফকে ইখতিলাফের জায়গাতে রেখে হাতে হাত মিলিয়ে আমাদের শত্রুদের প্রতিরোধ করি!

    নোট- ভাইয়েরা! আমি লিখতে অভ্যস্ত নই, উপরের কথাগুলার মাঝে যদি কোন ভুল থাকে, সম্মানিত ভাইদের ধরিয়ে দেওয়ার বিনীত অনুরোধ থাকলো!

  • #2
    ২- একটি সরল কথা হল, তানযিমের আকিদাহ কি? আহলুস সুন্নাহ ওয়াল-জামাআহর আকিদা-ই তানযিমের আকিদা! অর্থাৎ আকিদাহর যে সকল বিষয় সম্পর্কে উম্মাহর আলিমদের মাঝে কোন মতানৈক্য নেই, সেটা হল তানযিমের ঘোষিত আকিদা, আর যেগুলার ব্যাপারে আলিমদের মতানৈক্য রয়েছে, সেক্ষেত্রে ব্যক্তি স্বাধীন, উনি হকপন্থী আলিমদের যে কারো মতকে গ্রহণ করতে পারেন! এই ইখতিলাফ সাথে নিয়েই জিহাদের উলামা ও উমারাহগণ একতার কথা বলেন।
    জাযাকাল্লাহ আখি, এ কথাটা খুবই ভালো লেগেছে। ভাইদের নিকট আমার আবেদন, আপনারা ঐক্যের স্বার্থে এ মাসয়ালায় একটু উদার হওয়ার চেষ্টা করুন। নতুবা এর পরিণতি খুবই ভয়াবহ হতে পারে। আপনাদের যার নিকট যে মতটি গ্রহণযোগ্য হয়, নিদ্বিধায় গ্রহণ করুন, কিন্তু এর প্রচার ও তা নিয়ে দলাদলি হতে বিরত থাকুন। ইতিপূর্বে মুহাম্মদ বিন তুমারত এ মতভেদের আশ্রয় নিয়ে মহান মুজাহিদ ইউসুফ বিন তাশফীনের রক্ত-ঘামে গড়ে তোলা মুরাবিতীন সাম্রাজ্যকে ধ্বংস করেছে। সুতরাং ইতিহাস হতে শিক্ষাগ্রহণ করুন, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সেই ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। যারা এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে চায়, বিশেষ করে যারা সালাফীদের গোমরাহ বলতে চায়, তাদের নিকট আল্লামা তাকী উসমানী দা.বা. এ বক্তব্য পেশ করুন। ইনশাআল্লাহ, তাহলে তারা বাড়াবাড়ি থেকে মুক্ত হয়ে বিষয়গুলোকে মাযহাবী মতপার্থক্যের পর্যায়ে রাখবে।

    আল্লামা তাকী উসমানী দা.বা. বলেন,

    إنما ذكر الإمام النووي مذهبين لعلماء أهل السنة في مثل هذه النصوص التي نسب فيها إلى الله الإصبع أو اليد أو الكف وغيرها، أولها: مذهب التفويض، وهو مذهب جمهور المحدثين والسلف، والثاني: مذهب التأويل، وهو مذهب أكثر المتكلمين.
    وهناك مذهب ثالث ذهب إليه جماعة من السلف، واختاره الحافظ الذهبي والعلامة ابن تيمية وتلميذه ابن القيم رحمهما الله تعالي، وهو أن المراد من الإصبع معناها الحقيقي ولكنها صفة الله تعالى وليست جارحة، وليست مثل أصابع المخلوقات، بل كيفيتها مجهولة ......
    وهذه المذاهب الأربعة كلها محتملة ذهب إلى كل واحد منها جماعات من العلماء المحققين، فإن المهم في العقيدة هو تنزيه الله تعالى عن التشبيه والتعطيل، وإن كل واحد من هذه المذاهب الأربعة جازم بذلك، والاختلاف بينها ليس اختلاف عقيدة، وإنما هو اختلاف رأي وتعبير في التعبير عن تلك العقيدة وتقعيدها على النصوص، مثل اختلاف الفقهاء في المسائل الفقهية المجتهد فيها.
    ولذلك ذهب إلى كل رأي من هذه الآراء الأربعة فحول علماء الأمة المتمسكين بالكتاب والسنة الذين لا شك في كونهم من أهل الحق ومن أهل السنة والجماعة.
    ويبدو أن مذهب جمهور السلف هو التفويض، وهو الأسلم والأحوط والأوفق بقوله تعالى: «وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلَّا اللَّهُ وَالرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ يَقُولُونَ آمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِنْ عِنْدِ رَبِّنَا».

    “এ ধরণের বিষয়াদীর ব্যাপারে ইমাম নববী দুটি মত উল্লেখ করেছেন,
    ১. তাফবীয। এটাই অধিকাংশ মুহাদ্দিসগণের মাযহাব।
    ২. তা’বীল। এটা অধিকাংশ মুতাকাল্লিমগণের মাযহাব।

    এ ক্ষেত্রে তৃতীয় একটি মতও রয়েছে যা সালাফের একটি দলের মত। হাফেয যাহাবী, আল্লামা ইবনে তাইমিয়াহ ও তার শাগরেদ ইবনুল কাইয়িম রহ. এ মতটিই গ্রহণ করেছেন। তা হলো, (আল্লাহ তায়ালার দিকে যে হাত) আঙ্গুল ইত্যাদি বিষয়ের নেসবত করা হয়েছে এর দ্বারা তার প্রকৃত অর্থই উদ্দেশ্য। তবে তা আল্লাহর তায়ালার সিফাত, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নয় এবং মাখলূকের আঙ্গুলের মতও নয়, বরং তা কেমন তা আমাদের জানা নেই। .....................

    এ মতগুলোর সবগুলোই গ্রহণযোগ্য, সহনীয়। প্রতিটির পক্ষেই বিজ্ঞ আলেমগণের একটি দল রয়েছে। কেননা আকীদার ক্ষেত্রে মূল প্রতিপাদ্য হলো তাশবীহ ও তা’তীল (আল্লাহর সিফাতকে মাখলুকের সাথে তুলনা বা সেগুলোকে অকার্যকর/বাতিল করে দেয়া) হতে আল্লাহ তায়ালার পবিত্রতা। আর এ বিষয়টিতে সবাই একমত। তাদের মধ্যকার মতভেদ আকীদার মতভেদ নয়। বরং তা উক্ত আকীদার বর্ণনাভঙ্গি ও কুরআন-সুন্নাহর সাথে তাকে মিলানোর মতভেদ। তা মতভেদপূর্ণ ফিকহি মাসায়েলে ফুকাহায়ে কেরামের মতপার্থক্যের মতই। এজন্যই প্রত্যেক মতের পক্ষে কুরআন-সুন্নাহর অনুসারী বড় বড় আলেমগণের এক দল রয়েছেন, যারা আহলে হক ও আহলে সুন্নাহ হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই।
    তবে আমার কাছে মনে হয়, সংখ্যাগরিষ্ঠ সালাফের মাযহাব হলো তাফবীয এবং এ মতটিই নিরাপদ এবং আল্লাহর তায়ালার এই বাণীর অধিক নিকটবর্তী, (অর্থ) সে সব আয়াতের যথার্থ মর্ম আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। আর যাদের জ্ঞান পরিপক্ক তারা বলে, আমরা এর (সেই মর্মের) প্রতি বিশ্বাস রাখি (যা আল্লাহ তায়ালার জানা)। সবকিছুই আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে। -সূরা আলে ইমরান, ৭ তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম, ৫/৩৭৯-৩৮০ দারু ইহইয়াউত তুরাস
    الجهاد محك الإيمان

    জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ ভাই অনেক সুন্দর লিখেছেন ... আল্লাহ তায়ালা আমাদের বোঝার তাওফিক দান করুন , আমীন ।

      Comment


      • #4
        মাশা আল্লাহ,,,,,,,,, আল্লাহ সুবঃ আমাদের সঠিক টা বুঝার তৌফিক দান করুক।আমীন

        দ্বীন প্রিয় ভায়েরা!!
        আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যা বুঝি, মুত্তাফাক বিষয়ে আমরা একমতাবলম্বী হই।আর মুখতালাফ বিষয়ে হয়ত কাছরিয়তের দিকে যাব। অন্যথায় ব্যাক্তি স্বাধীনতা আছে এখানে।
        আর আমার মনে আছে,,,, মাদ্রাসার তাইসির জামাতে একটা কিতাব পড়ানো হয়।এর নাম হলঃ বেহেস্তি গাওহার।
        ইসলামিয়া কুতুবখানা থেকে প্রকাশিত এই কিতাবের উর্দু কপির ৮ ম পৃষ্ঠার ২ নং লাইনের শুরুতেই এই লিখাটা আছে যে, اختلاف سے بچنا اولی =অর্থাৎ ইখতিলাফ থেকে বেঁচে থাকাটাই উত্তম।
        তো আমি মনে করি,,,বৃহৎ স্বার্থের জন্য ক্ষুদ্র স্বার্থ টা কুরবানি দিয়ে দ্বীনের পথে এগিয়ে যায়।আর ইখতিলাফ থেকে বাঁচি।
        আল্লাহ সুবঃ আমাদের কে হেফাজত করুক।আমীন

        Comment

        Working...
        X