চিরসত্যটি না বললে দোষমুক্ত হতে পারবেন না কিছুতেই
আলেম উলামারা ইসলামের কথা বলেন। ইসলাম সত্য ধর্ম এবং একমাত্র সত্য ধর্ম। সবই বলেন। কিন্তু যখনই উগ্রবাদের কথা আসে, উলামারা মোড় ঘুরিয়ে বলেন, ইসলামে উগ্রবাদ নেই।
নাস্তিকরা বলে, ‘সবাই আল্লাহর সৃষ্টি, সবারই বেঁচে থাকার অধিকার আছে। ভিন্ন ধর্মীদের হত্যা করা হবে কেন’?
তখন উলামারা সুর ঘুরিয়ে বলেন, ইসলামে হত্যা নেই। ইসলাম শান্তির ধর্ম।
নাস্তিকরা পাল্টা প্রশ্ন করে, তাহলে ইসলামের নামে যে জিহাদ হচ্ছে সেটাকে কি বলবেন?
উলামারা তখন ঘুরিয়ে বলেন, ইসলামে জিহাদ আছে। তবে হত্যা নেই। যারা হত্যা করছে তারা ইসলাম বুঝে না। জিহাদ বুঝে না।
এভাবে উলামারা জিহাদের অপব্যাখ্যা করে গা বাঁচাতে চাইছেন। কিন্তু যখন ইসলামের মূলে আঘাত আসে, ঈমানি তাগাদায় উলামারা আর চুপ থাকতে পারেন না।
যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে যখন কটূক্তি হলো, তারা চুপ থাকতে পারলেন না। দাবি করলেন, কটূক্তিকারীদের ফাঁসি দিতে হবে। কিন্তু তখনই সেই এড়ানো অপবাদটি আবার সামনে চলে আসছে। বলা হচ্ছে, জঙ্গিরাও হত্যা করে, আপনারাও হত্যার কথা বলছেন। তাহলে কি আপনারা এদেশে জঙ্গিবাদ কায়েম করতে চাচ্ছেন?
মূর্তি ইস্যুতে ঈমানি তাগাদায়ই উলামারা চুপ থাকতে পারেননি। কিন্তু সেই এড়ানো অপবাদই আবার গায়ে এসে পড়ছে: দেশটাকে আফগানিস্তান বানাতে চাইছেন? তালিবানি মোল্লাতন্ত্র কায়েম করতে চাচ্ছেন? মোল্লা উমরের সাম্প্রদায়িকতা কায়েম করতে চাচ্ছেন, যে মোল্লা উমর মূর্তি ভেঙেছিল?
এভাবে ইসলামের যেকোনো ইস্যু উঠে আসলে উলামারা যখনই কথা বলছেন, তখনই সে জঙ্গিবাদ আর তালেবানির ট্যাগ তাদের উপর এসে পড়ছে; যে জঙ্গিবাদকে তারা এতোদিন ইসলামে নেই বলে আসছিলেন। এভাবে উলামারা এখন পড়েছেন উভয় সংকটে। না পারছেন চুপ থাকতে, আর না পারছেন জঙ্গিবাদের অপবাদ সইতে। না পারছেন আল্লাহ তাআলার কাছে নিজেদের নিষ্কলুষ রাখতে, আর না পারছেন সরকারের কাছে নিরপরাধ থাকতে।
এ সত্যটিই আল্লাহ তাআলা স্পষ্ট করেছেন,
{أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ الْقُرْآنَ وَلَوْ كَانَ مِنْ عِنْدِ غَيْرِ اللَّهِ لَوَجَدُوا فِيهِ اخْتِلَافًا كَثِيرًا (82)}
তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা করে না? এটা যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও পক্ষ থেকে হতো, তাহলে এর মধ্যে অনেক গরমিল দেখতে পেতো। -নিসা: ৮২
তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা করে না? এটা যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও পক্ষ থেকে হতো, তাহলে এর মধ্যে অনেক গরমিল দেখতে পেতো। -নিসা: ৮২
কুরআনের বিধানকে, কুরআনের নির্দেশকে ঘুরিয়ে নিজেদের সুবিধামতো ব্যাখ্যা করে নিয়েছেন, তাই সীমাহীন অসংগতির মধ্যে পড়ে গেছেন উলামা সমাজ। যে অপবাদ থেকে তারা আজীবন জানেপ্রাণে বাঁচতে চেষ্টা করছেন, সে অপবাদই এসে পড়ছে তাদের উপর। যতই বুঝাতে চাইছেন যে তারা উগ্র না, জঙ্গি না, সাম্প্রদায়িক না- সরকারপক্ষকে কিছুতেই আর মানাতে পারছেন না।
মুহতারাম উলামায়ে কেরাম, কুরআনের একটি চিরসত্যকে শুধু তুলে ধরুন, সকল গরমিল দূর হয়ে যাবে। তুলে ধরুন, কাফের আল্লাহর দুশমন। তার দুনিয়াতে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। একমাত্র যদি মুসলমান হয় কিংবা জিযিয়া দিয়ে নত হয়ে নিম্নশ্রেণীর নাগরিক হিসেবে লাঞ্ছিত অবস্থায় মুসলিমদের অধীনস্থ হয়ে বসবাস করতে চায়, তাহলেই শুধু বাঁচতে পারবে। অন্যথায় তাই করা হবে যা আল্লাহর নির্দেশ,
{فَاقْتُلُوا الْمُشْرِكِينَ حَيْثُ وَجَدْتُمُوهُمْ وَخُذُوهُمْ وَاحْصُرُوهُمْ وَاقْعُدُوا لَهُمْ كُلَّ مَرْصَدٍ}
মুশরিকদেরকে যেখানেই পাও হত্যা কর, পাকড়াও কর, অবরোধ কর এবং তাদের (পাকড়াওয়ের) জন্য প্রতিটি ঘাঁটিতে (ওঁৎপেতে) বসে থাক। -তাওবা: ৫
মুশরিকদেরকে যেখানেই পাও হত্যা কর, পাকড়াও কর, অবরোধ কর এবং তাদের (পাকড়াওয়ের) জন্য প্রতিটি ঘাঁটিতে (ওঁৎপেতে) বসে থাক। -তাওবা: ৫
বলুন: না আছে তোমাদের জানের নিরাপত্তা, না আছে তোমাদের মালের নিরাপত্তা। আমরা তোমাদের হত্যা করবো। বন্দী করবো। গোলাম বাদী বানাবো। যতক্ষণ না আল্লাহর শাসনের সামনে নত হও।
বলুন, আমরা তালিবানি শাসন কায়েম করতে চাচ্ছি। খিলাফার শাসন কায়েম করতে চাচ্ছি। মূর্তিপূজারি শাসনের অবসান ঘটাতে চাচ্ছি।
মুহতারাম উলামায়ে কেরাম, শুধু এ চিরসত্যটি তুলে ধরুন। তাহলে আর কোনো গরমিল থাকবে না।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে ভয়ানক একটি অপরাধ আপনারা করেছেন: কাফেরকে বেঁচে থাকার অধিকার দিয়েছেন। কুফরি শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হারাম বলেছেন। যার ফলশ্রুতিতে জিহাদের অপব্যাখ্যা আপনাদের করতে হচ্ছে। না পারছেন আল্লাহকে রাজি করতে, না পারছেন তাগুতের কাছে নির্দোষ থাকতে।
আল্লাহ তাআলা সত্যই বলেছেন,
{وَمَنْ أَعْرَضَ عَنْ ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنْكًا}
যে আমার উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবন হয়ে পড়বে সংকীর্ণ। -তোয়াহা: ১২৪
যে আমার উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবন হয়ে পড়বে সংকীর্ণ। -তোয়াহা: ১২৪
***
Comment