আন নাসর মিডিয়া পরিবেশিত
“ফিতনার যুগে
মুজাহিদদের প্রতি নসিহত” ।।
ড. শায়খ সামী আল-উরাইদী হাফিযাহুল্লাহ ||
এর থেকে– ৩য় পর্ব
ফিতনার পরিচয়:
ইমাম যুহরী রহ. ‘তাহযীবুল লুগাত’ এ বলেন, আরবদের ভাষায় ‘আল-ফিতনা’ শব্দের অর্থ হচ্ছে, বিপদে পতিত হওয়া, পরীক্ষা করা ইত্যাদি। এ শব্দটি মূলত গৃহীত হয়েছে فتنت الفضة و الذهب (আমি স্বর্ণ-রূপা পরীক্ষা করেছি) থেকে। এটি তখনই বলা হয় যখন স্বর্ণ-রূপাকে আগুন দ্বারা বিগলিত করা হয়, যেন ভাল থেকে মন্দটি আলাদা হয়ে যায়।’
ইবনুল আরাবী রহ. বলেন, ‘الفتنة শব্দের অর্থ হচ্ছে, পরীক্ষা, পরিশ্রম, মাল, সন্তানাদি, কুফরি, মতপার্থক্য, আগুন দ্বারা জ্বালিয়ে দেয়া ইত্যাদি। কারো কারো মতে الفتنة শব্দের অর্থ অবিচার করা। বলা হয়ে থাকে, فلان مفتون في طلبالدنيا অর্থাৎ- অমুক দুনিয়া তালাশের ক্ষেত্রে অতিরঞ্জন করেছে।’- লিসানুল আরব
এ ক্ষেত্রে আমার বক্তব্য হলো, শরীয়তের ভাষায় ফিতনা একাধিক অর্থে ব্যবহৃত হয়, যা তার পূর্বাপরের দ্বারা বুঝে আসবে। ইবনুল কায়্যিম রহ.‘যাদুল মা’আদ’ (৩/১৫০)-এ বলেন, ‘যে فتنةশব্দটি আল্লাহ তা’আলা নিজের দিকে সম্পৃক্ত করেছেন অথবা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের দিকে সম্পৃক্ত করে বলেছেন, যেমন আল্লাহর বাণী, وكذلك فتنا بعضهم ببعض মূসা আ. এর বক্তব্য, إن هي إلا فتنتك تضل بها من تشاء وتهدي من تشاء এক্ষেত্রে শব্দটির অর্থ হবে ভিন্ন। তা হচ্ছে, আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাকে ভাল-মন্দের নিয়ামত ও বিপদ-আপদের মাধ্যমে পরীক্ষা করা। সুতরাং মুশরিকদের পরীক্ষার মধ্যে এক ধরণের রং বিদ্যমান, আর মুমিনের ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি ও পরিজনের ক্ষেত্রে পরীক্ষার রং আলাদা। যে ফিতনা মুসলমানদের মাঝে দেখা যায় তা মূলত আলী ও মুআবিয়া রা. এর সঙ্গীদের মাঝে, জঙ্গে জামাল ও জঙ্গে সিফ্ফীনের মুজাহিদদের মাঝে এবং মুসলমানদের মাঝে সংঘটিত ফিতনার পর্যায়ভুক্ত। তাদের পরস্পরের জিহাদ ও একে অপরকে ছেড়ে যাওয়ার রং ভিন্ন রকম। এটি এমন ফিতনা, যে ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
الْقَاعِدُ فِيهَا خَيْرٌ مِنَ الْقَائِمِ وَالْقَائِمُ فِيهَا خَيْرٌ مِنَ الْمَاشِى وَالْمَاشِى فِيهَا خَيْرٌ مِنَ السَّاعِى
‘সেখানে(ফেতনার সময়) দণ্ডায়মান ব্যক্তির চেয়ে বসে থাকা ব্যক্তি উত্তম, হেঁটে চলা ব্যক্তির চেয়ে দণ্ডায়মান ব্যক্তি উত্তম, ধাবমানকারী ব্যক্তির চেয়ে হেঁটে চলা ব্যক্তি উত্তম।’(মুসলিম-৭৪২৯)
যে সব ফিতনার হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু’দলকেই পরিত্যাগ করতে বলেছেন এসব সে প্রকারের ফিতনা।
কখনো কখনো ‘ফিতনা’ দ্বারা ‘গোনাহ’ উদ্দেশ্য হয়। আল্লাহ তা’আলার বাণী, ومنهم من يقول اءذن لي ولاتفتني এ কথাটি জাদ্দ ইবনু কায়েসের। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন তাবুক যুদ্ধের জন্য আহ্বান করছিলেন তখন সে বলেছিল, আমাকে ঘরে থাকার অনুমতি দেন, আমাকে বনুল আসফারের মেয়েদের সম্মুখীন করে ফিতনায় ফেলবেন না। কারণ আমি তাদের থেকে ধৈর্য ধারণ করতে পারব না। তখন আল্লাহ তা’আলা বলেন, ألا في الفتنة سقطوا ‘তারা ফিতনার শিকার হয়ে গেছে’। অর্থাৎ তারা নেফাকের ফিতনায় জড়িয়ে পড়েছে। বনুল আসফারের মেয়েদের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য নেফাকের ফিতনাকে বেছে নিয়েছে।
হাফেজ ইবনে হাজার রহ. বলেন, ‘ফিতনা শব্দের মূল অর্থ- পরীক্ষা করা, যাচাই করা। শরীয়তের পরিভাষায় অপছন্দনীয় বিষয় প্রকাশপূর্বক পরীক্ষা করার নাম ফিতনা। যখন ভালটি পরখ করার জন্য স্বর্ণকে আগুন দ্বারা যাচাই করা হয় তখন বলা হয় فتنت الذهب । উদ্দিষ্ট বিষয়ে গাফলতি পাওয়া যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেমন আল্লাহর বাণী, إنما أموالكم وأولادكم فتنة ‘নিশ্চয় ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি তোমাদের জন্য ফিতনা স্বরূপ।’ দ্বীন থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য বাধ্য করার অর্থেও ব্যবহৃত হয়। আল্লাহর বাণী
إِنَّ الَّذِينَ فَتَنُوا الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ ثُمَّ لَمْ يَتُوبُوا فَلَهُمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَلَهُمْ عَذَابُ الْحَرِيقِ (10)
যারা মুমিন পুরুষ ও নারীকে নিপীড়ন করেছে, অতঃপর তওবা করেনি, তাদের জন্যে আছে জাহান্নামের শাস্তি, আর আছে দহন যন্ত্রণা, (সূরা আল-বুরুজ ৮৫׃ ১০)
আমি বলি, ফিতনা শব্দটি পথভ্রষ্ট, অন্যায়, কুফর, শাস্তি ও অপমানের অর্থেও ব্যবহৃত হয়। পূর্বাপরের সম্পর্ক ও লক্ষণ অনুযায়ী উদ্দিষ্ট অর্থ বুঝা যাবে।’
বি.দ্র.- যে ফিতনা মতৈক্য ও ঝগড়া-বিবাদের সময় দেখা দেয়- সেটি এমন ফিতনা যার কারণে হকের সাথে বাতিলের তালগোল পেকে যায়, তাতে হক বিষয়টি প্রকাশিত হতে পারে না; বরং অধিকাংশ মুসলমানের কাছে অস্পষ্ট থেকে যায়। হুযাইফা রা. বলেন,
"لا تضرك الفتنة ما عرفت دينك،
إنما الفتنة إذا اشتبه عليك الحق والباطل
فلم تدر أيهما تتبع؟
فتلك الفتنة".
[مصنف ابن أبي شيبة:٧٠/١٥]
‘সঠিক দ্বীন তোমার সামনে স্পষ্ট হওয়ার পরও যেন ফিতনা তোমাকে ক্ষতি করতে না পারে। ফিতনার কারণে যখন তোমার কাছে হক-বাতিল অস্পষ্ট হয়ে যাবে এবং বুঝতে পারছ না তুমি কোনটার অনুসরণ করবে- তাহলে ধরে নিবে এটিই ফিতনা।’ –( মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা-১৫/৭০)
সালাফে সালিহীনের বুঝ অনুযায়ী কুরআন-সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরতে হবে
খাইরুল কুরুন এবং উত্তমরূপে তাদের অনুসরণকারীদের দিকনির্দেশনায় কুরআন-সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা ফিতনার জমানায় মুজাহিদদের জন্য সবচেয়ে বড় অর্জনের বিষয়। সব সময়ের জন্য এই মজবুত রজ্জুকে আঁকড়ে ধরাই মুক্তির পথ। যে ব্যক্তি আল্লাহর রজ্জুকে শক্তভাবে ধারণ করতে পারল সেই হিদায়েত প্রাপ্ত এবং কামিয়াব। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّـهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا ۚوَاذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّـهِ عَلَيْكُمْ إِذْ كُنتُمْ أَعْدَاءً فَأَلَّفَ بَيْنَ قُلُوبِكُمْ فَأَصْبَحْتُم بِنِعْمَتِهِ إِخْوَانًا وَكُنتُمْ عَلَىٰ شَفَا حُفْرَةٍ مِّنَ النَّارِ فَأَنقَذَكُم مِّنْهَا ۗكَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّـهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ﴿١٠٣﴾
‘তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরো, বিচ্ছিন্ন হয়ো না। এবং তোমাদের উপর দেয়া আল্লাহর নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যখন তোমরা একে অপরের শত্রু ছিলে, আল্লাহ তা’আলা তোমাদের অন্তরসমূহকে এক করে দিলেন, যার ফলে সে নেয়ামত দ্বারা তোমরা একে অপরের ভাই হয়ে গেলে। তোমরা আগুনের এক গর্তের কিনারে অবস্থান করছিলে, তিনি তা থেকে তোমাদের রক্ষা করলেন। এভাবে আল্লাহ তা’আলা তাঁর নিদর্শনাবলী তোমাদের সামনে উপস্থাপন করেন যাতে তোমরা হিদায়েত লাভ কর।’ (সূরা আল-ইমরান ৩ ׃ ১০৩)
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
إنِّي قد خَلَّفتُ فيكم اثنين، لن تضلُّوا بعدهما أبدًا: كتاب الله، وسُنتي، ولن يتفرَّقَا حتى يرِدَا عليَّ الحوض
‘তোমাদের মাঝে দু’টি জিনিস রেখে গেলাম, যে দু’টির অনুসরণ করলে তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। একটি হচ্ছে কিতাবুল্লাহ, দ্বিতীয়টি হচ্ছে আমার সুন্নত। হাউজে কাউসারে উপনীত হওয়ার আগ পর্যন্ত এ দু’টি জিনিস বিচ্ছিন্ন হবে না।’ –( আল-হাকিম-৪৩২১)
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে আবযা তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘যখন উসমান রা. এর ব্যাপারটি নিয়ে লোকজন সমস্যার সম্মুখীন হলো তখন আমি উবাই ইবনে কা’বকে বললাম, আবুল মুনজির! এ বিষয় থেকে আমাদের উত্তরণের পথ কী? তিনি বললেন, আল্লাহর কিতাব এবং নবীর সুন্নত। এ বিষয়ে তোমাদের কাছে যা পরিষ্কার মনে হয় তা কর, আর যা তোমাদের কাছে অস্পষ্ট মনে হয় তার দায় দায়িত্ব এ বিষয়ে বিজ্ঞ আলেমের হাতে ছেড়ে দাও।’ - আল-হাকিম
কুরআন-সুন্নাহকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরার এ বিষয়টি সালাফে সালিহীনের বুঝ ও আমলের সঙ্গে মিলা উচিত। কারণ আল্লাহ তা’আলা তাদের পবিত্রতা ঘোষণা করেছেন, তাদের উপর খুশি হয়েছেন এবং আমাদেরকে তাদের অনুসরণ করতে বলেছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَمَن يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَىٰ وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّىٰ وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ ۖ وَسَاءَتْ مَصِيرًا (115
‘দলিল-প্রমাণ স্পষ্ট হওয়ার পরও যে রাসূলের বিরোধ মত পোষণ করল এবং মুমিনদের পথ ভিন্ন অন্য কিছুর অনুসরণ করল তাহলে আমি তাকে সেদিকেই ফিরিয়ে দিব এবং নিক্ষেপ করব তাকে জাহান্নামে। কত নিকৃষ্ট তার ঠিকানা!’ (সূরা আন-নিসা ৪׃১১৫)
আল্লাহ তা’আলা অন্য আয়াতে বলেন,
وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُم بِإِحْسَانٍ رَّضِيَ اللَّـهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ۚذَٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ﴿١٠٠﴾
‘আর যারা সর্ব প্রথম হিজরতকারী ও আনসারদের মাঝে পুরাতন, এবং যারা তাদের অনুসরণ করেছে, আল্লাহ তা’আলা সে সকল লোকদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। আর তাদের জন্য তৈরি করে রেখেছেন জান্নাত, যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নহরসমূহ। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। এটাই সবচেয়ে বড় সফলতা।’ (সূরা আত –তাওবা ৯׃ ১০০)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
" لَيَأْتِيَنَّ عَلَى أُمَّتِي مَا أَتَى عَلَى بَنِي إِسْرَائِيلَ حَذْوَ النَّعْلِ بِالنَّعْلِ حَتَّى إِنْ كَانَ مِنْهُمْ مَنْ أَتَى أُمَّهُ عَلاَنِيَةً لَكَانَ فِي أُمَّتِي مَنْ يَصْنَعُ ذَلِكَ وَإِنَّ بَنِي إِسْرَائِيلَ تَفَرَّقَتْ عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ مِلَّةً وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِي عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ مِلَّةً كُلُّهُمْ فِي النَّارِ إِلاَّ مِلَّةً وَاحِدَةً قَالُوا وَمَنْ هِيَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِي " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ مُفَسَّرٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِثْلَ هَذَا إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ
অর্থ: বানী ইসরাঈল যে অবস্থায় পতিত হয়েছিল, নিঃসন্দেহে আমার উম্মাতও সেই অবস্থার সম্মুখীন হবে, যেমন একজোড়া জুতার একটি আরেকটির মতো হয়ে থাকে। এমনকি তাদের মধ্যে কেউ যদি প্রকাশ্যে তার মায়ের সাথে ব্যভিচার করে থাকে, তবে আমার উম্মাতের মধ্যেও কেউ তাই করবে। আর বানী ইসরাঈল বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছিল। আমার উম্মাত তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে। শুধু একটি দল ছাড়া তাদের সবাই জাহান্নামী হবে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! সে দল কোনটি? তিনি বললেনঃ আমি ও আমার সাহাবীগণ যার উপর প্রতিষ্ঠিত।(তিরমিজী-২৬৪১)
ইরবায ইবনে সারিয়া রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
قَالَ: صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ يَوْمٍ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَوَعَظَنَا مَوْعِظَةً بَلِيغَةً ذَرَفَتْ مِنْهَا الْعُيُونُ وَوَجِلَتْ مِنْهَا الْقُلُوبُ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَأَنَّ هَذِهِ مَوْعِظَةُ مُوَدِّعٍ فَأَوْصِنَا قَالَ: «أُوصِيكُمْ بِتَقْوَى اللَّهِ وَالسَّمْعِ وَالطَّاعَةِ وَإِنْ كَانَ عبدا حَبَشِيًّا فَإِنَّهُ من يَعش مِنْكُم يرى اخْتِلَافًا كَثِيرًا فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ تَمَسَّكُوا بِهَا وَعَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ
অর্থ: ইরবায ইবনে সারিয়া রা. বলেন, একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে নামাজ আদায় করলেন, এরপর আমাদের সামনে এসে একটি চমৎকার নসিহত পেশ করলেন, যার দ্বারা অশ্রু সিক্ত হয় ও হৃদয় বিগলিত হয়। একজন বলছিল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! মনে হচ্ছে এটি বিদায়ী ভাষণ। অতএব, আপনি আমাদের কী উপদেশ দিয়ে যাচ্ছেন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আমি তোমাদেরকে খোদাভীতি ও আনুগত্যের উপদেশ দিয়ে যাচ্ছি, যদিও তা একজন হাবশি গোলামের প্রতি হয়ে থাকে। আমার পরে যে বেঁচে থাকবে সে অনেক মতবিরোধ দেখতে পাবে। তখন তোমরা আমার সুন্নত এবং খুলাফায়ে রাশেদার সুন্নতকে মেনে চলবে এবং মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরবে। আর আবিষ্কৃত নতুন নতুন বিষয় থেকে বেঁচে থাকবে; কারণ, দ্বীনের মাঝে প্রত্যেক নতুন আবিষ্কার বিদআত, আর প্রত্যেক বিদআতই গুমরাহী।’ - আবু দাউদ
আরও পড়ুন
Comment