আন নাসর মিডিয়া পরিবেশিত
“ফিতনার যুগে
মুজাহিদদের প্রতি নসিহত” ।।
ড. শায়খ সামী আল-উরাইদী হাফিযাহুল্লাহ ||
এর থেকে– ৭ম পর্ব
“ফিতনার যুগে
মুজাহিদদের প্রতি নসিহত” ।।
ড. শায়খ সামী আল-উরাইদী হাফিযাহুল্লাহ ||
এর থেকে– ৭ম পর্ব
ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, ‘পরিচ্ছেদ: وما كان الله ليعذبهم وأنت فيهم وما كان الله معذبهم وهم يستغفرون প্রসঙ্গ। এ আয়াতের উপর দু’টি বিষয়ে আলোচনা করা যায়:
এক. আযাব প্রতিহতকারী ইস্তেগফার
আযাব আসে গোনাহের কারণে। আর ইস্তেগফার এমন গুনাহকে মিটিয়ে দেয়, যার কারণে আযাব সুনিশ্চিত। বুঝা গেল, ইস্তেগফারের মাধ্যমে আযাব দূর হয়। আল্লাহ বাণী,
الر ۚكِتَابٌ أُحْكِمَتْ آيَاتُهُ ثُمَّ فُصِّلَتْ مِن لَّدُنْ حَكِيمٍ خَبِيرٍ﴿١﴾أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا اللَّـهَ ۚإِنَّنِي لَكُم مِّنْهُ نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ﴿٢﴾وَأَنِ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوبُوا إِلَيْهِ يُمَتِّعْكُم مَّتَاعًا حَسَنًا إِلَىٰ أَجَلٍ مُّسَمًّى وَيُؤْتِ كُلَّ ذِي فَضْلٍ فَضْلَهُ ۖوَإِن تَوَلَّوْا فَإِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ كَبِيرٍ﴿٣﴾
‘আলিফ, লা-ম, রা; এটি এমন এক কিতাব, যার আয়াতসমূহ সুপ্রতিষ্ঠিত। অতঃপর যা সবিস্তারে বর্ণিত এক মহাজ্ঞানী সর্বজ্ঞ সত্তার পক্ষ হতে। যেন তোমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো বন্দেগী না কর। নিশ্চয় আমি তোমাদের প্রতি তাঁরই পক্ষ হতে সতর্ককারী ও সুসংবাদ দাতা। তোমরা নিজেদের পালনকর্তার সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা কর। অতঃপর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ কর। তাহলে তিনি তোমাদেরকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত উৎকৃষ্ট জীবনোপকরণ দান করবেন, সেই সাথে অধিক আমলকারীকে বেশি করে দেবেন।’ - সূরা হুদ 11:১-৩
উল্লিখিত আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বর্ণনা করলেন, তারা যখন এ কাজগুলো করবে, তো তাদেরকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত উত্তম জীবনোপকরণ দান করা হবে। এরপর তাদের অধিক নেক আমল থেকে থাকলে তাদেরকে আরো বেশি দেয়া হবে।
নূহ আ. সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
وَيَا قَوْمِ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوبُوا إِلَيْهِ يُرْسِلِ السَّمَاءَ عَلَيْكُم مِّدْرَارًا وَيَزِدْكُمْ قُوَّةً إِلَىٰ قُوَّتِكُمْ وَلَا تَتَوَلَّوْا مُجْرِمِينَ﴿٥٢﴾
‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমাদের পালনকর্তার কাছে তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তারই প্রতি মনোনিবেশ কর; তিনি আসমান থেকে তোমাদের উপর বৃষ্টিধারা প্রেরণ করবেন এবং তোমাদের শক্তির উপর শক্তি বৃদ্ধি করবেন।’ (সূরা হুদ ১১׃৫২)
এটা এজন্য যে, আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَمَا أَصَابَكُم مِّن مُّصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ وَيَعْفُو عَن كَثِيرٍ﴿٣٠﴾
‘তোমরা যে মসিবতে আক্রান্ত হয়েছ তা তোমাদের হাতের কামাই, তিনি তোমাদের অনেক গুনাহ ক্ষমা করে দেন।’ ( সূরা আশ-শুরা ৪২׃৩০)
আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন,
إِنَّ الَّذِينَ تَوَلَّوْاْ مِنكُمْ يَوْمَ الْتَقَى الْجَمْعَانِ إِنَّمَا اسْتَزَلَّهُمُ الشَّيْطَانُ بِبَعْضِ مَا كَسَبُواْ وَلَقَدْ عَفَا اللّهُ عَنْهُمْ إِنَّ اللّهَ غَفُورٌ حَلِيمٌ
তোমাদের যে দুটি দল লড়াইয়ের দিনে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল শয়তান তাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিল, তাদেরই পাপের দরুন। (সূরা ইমরান ৩׃১৫৫)
আল্লাহর বাণী,
‘أَوَلَمَّا أَصَابَتْكُم مُّصِيبَةٌ قَدْ أَصَبْتُم مِّثْلَيْهَا قُلْتُمْ أَنَّى هَـذَا قُلْ هُوَ مِنْ عِندِ أَنْفُسِكُمْ إِنَّ اللّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
যখন তোমাদের উপর একটি মুসীবত এসে পৌঁছাল, অথচ তোমরা তার পূর্বেই দ্বিগুণ কষ্টে পৌঁছে গিয়েছ, তখন কি তোমরা বলবে, এটা কোথা থেকে এল? তাহলে বলে দাও, এ কষ্ট তোমাদের উপর পৌঁছেছে তোমাদেরই পক্ষ থেকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রত্যেক বিষয়ের উপর ক্ষমতাশীল। (সূরা ইমরান ৩;১৬৫)
আল্লাহর বাণী
وَمَا أَصَابَكُم مِّن مُّصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ (30)
‘যদি তোমাদেরকে কোনো মসিবত স্পর্শ করে তাহলে তা তোমাদের কর্মফল। (সূরা আশ-শুরা ৪২׃৩০)
দুই. ইস্তেগফারের মাধ্যমে প্রতিহত আযাব
প্রতিহত আযাবটি আসমানি আযাব হতে পারে, মানুষের পক্ষ থেকেও হতে পারে। তবে আল্লাহ তা’আলা উভয়টিকেই আযাব বলে আখ্যায়িত করেছেন। আল্লাহর বাণী,
وَإِذْ نَجَّيْنَاكُم مِّنْ آلِ فِرْعَوْنَ يَسُومُونَكُمْ سُوءَ الْعَذَابِ يُذَبِّحُونَ أَبْنَاءَكُمْ وَيَسْتَحْيُونَ نِسَاءَكُمْ ۚوَفِي ذَٰلِكُم بَلَاءٌ مِّن رَّبِّكُمْ عَظِيمٌ﴿٤٩﴾
‘আর স্মরণ কর সে সময়ে কথা, যখন আমি তোমাদেরকে মুক্তিদান করেছি ফেরাউনের বাহিনীর কবল থেকে যারা তোমাদেরকে কঠিন শাস্তি দান করত; তোমাদের পুত্রসন্তানদেরকে জবাই করত এবং তোমাদের স্ত্রীদেরকে বাঁচিয়ে রাখত।’ -সূরা বাকারা 2:৪৯
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
قَاتِلُوهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللّهُ بِأَيْدِيكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ َ
‘তাদের সাথে কিতাল কর, আল্লাহ তোমাদের হাতে তাদেরকে শাস্তি দেবেন, তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন এবং তাদের বিপক্ষে তোমাদেরকে সাহায্য করবেন।’ (সূরা আত-তাওবা ৯׃১৪)
এমনিভাবে,
قُلْ هَلْ تَرَبَّصُونَ بِنَا إِلَّا إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ ۖوَنَحْنُ نَتَرَبَّصُ بِكُمْ أَن يُصِيبَكُمُ اللَّـهُ بِعَذَابٍ مِّنْ عِندِهِ أَوْ بِأَيْدِينَا ۖفَتَرَبَّصُوا إِنَّا مَعَكُم مُّتَرَبِّصُونَ﴿٥٢﴾
‘আপনি বলুন, তোমরা তো তোমাদের জন্য দু’টি কল্যাণের একটি প্রত্যাশা কর; আর আমরা অপেক্ষায় আছি তোমাদের জন্য, আল্লাহ তোমাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন নিজের পক্ষ থেকে অথবা আমাদের হাতে।’ (সূরা তওবা 9: ৫২)
কেননা আযাব আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, মানুষের পক্ষ থেকেও হয়। আল্লাহ পাক বলেন,
قَاتِلُوهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللّهُ بِأَيْدِيكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ َ
‘তাদের সাথে কিতাল কর, আল্লাহ তোমাদের হাতে তাদেরকে শাস্তি দেবেন, তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন এবং তাদের বিপক্ষে তোমাদেরকে সাহায্য করবেন।’ (সূরা আত-তাওবা ৯׃১৪)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
مَنْ لَزِمَ الاِسْتِغْفَارَ جَعَلَ اللَّهُ لَهُ مِنْ كُلِّ ضِيقٍ مَخْرَجًا وَمِنْ كُلِّ هَمٍّ فَرَجًا وَرَزَقَهُ مِنْ حَيْثُ لاَ يَحْتَسِبُ
‘যে ইস্তেগফারকে নিজের জন্য আবশ্যকীয় বস্তু হিসাবে নির্ধারণ করে নিয়েছে আল্লাহ তা’আলা তার সকল সমস্যা সমাধানের পথ বের করে দেন, তাকে চিন্তামুক্ত করে দেন এবং তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দান করেন, যা সে কল্পনাও করত না।’ –(আবু দাউদ, আলবানী রহ. এর মতে হাদিসটির সনদগত মান ‘জঈফ’, তবে তার অর্থ সঠিক।)
আরও পড়ুন
৬র্ষ্ঠ পর্ব ------------------------------------------------------------------------------------------------- ৮ম পর্ব
Comment