কেন আমরা এমন হলাম? পর্ব:২
৯/ নবূওয়াত ও রিসালাতের মূল মাকসাদ:
"اظهار ألحق على الدين كله"
"দ্বীনে হক্বকে সকল বাতিল দ্বীনের উপর বিজয়ী করা" কে ভুলে গিয়ে দ্বীনের ফুরূয়ী' কাজ যেমন, তেলাওয়াতে কুরআন, তা'লীমে কিতাব, তা'লীমে হিকমাহ এবং তাযকীয়াহর কাজকেই চূড়ান্ত মাকসাদ বানিয়ে নিয়েছি।
১০/ আল্লাহ্ তায়ালার ফরমান:
﴿وَمَا كَانَ الْمُؤْمِنُونَ لِيَنْفِرُوا كَافَّةً فَلَوْلَا نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِنْهُمْ طَائِفَةٌ لِيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنْذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ﴾
এর সঠিক ব্যাখ্যাকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র তা'লীমে দ্বীনের কাজকেই নিজেদের আসল কাজ বানিয়ে আয়াতের মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য ভুলে বসেছি। আয়াতে কারীমার শানে নুযূল এবং প্রেক্ষাপটের সঠিক প্রয়োগ থেকে নিজেদের মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি।
১১/ আল্লাহ্ তায়ালার ফরমান:
"أشداء على الكفار رحماء بينهم"
" কাফেরদের উপর কঠোর নিজেদের মাঝে অতিশয় দয়ালু" এর শিক্ষাকে ভুলে গিয়েছে।
১২/ কুরআনে কারীমের আয়াত:
﴿فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَى لَا انْفِصَامَ لَهَا وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ﴾
"যে তাগূতের সাথে কুফরী করল এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনল নিশ্চিত সেই মজবুত হাতল আঁকড়ে ধরল, যা বিচ্ছিন্ন হবার নয়, আর আল্লাহ্ সামী' এবং আলীম।
এর নির্দেশকে পশ্চাতে নিক্ষেপ করেছি।
১৩/ আল্লাহ্ তায়ালার বানী:
﴿وَإِذْ أَخَذَ اللَّهُ مِيثَاقَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَتُبَيِّنُنَّهُ لِلنَّاسِ وَلَا تَكْتُمُونَهُ فَنَبَذُوهُ وَرَاءَ ظُهُورِهِمْ وَاشْتَرَوْا بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًا فَبِئْسَ مَا يَشْتَرُونَ﴾
"যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি তাদের থেকে আমি অঙ্গীকার নিয়েছি যে, তোমরা তা মানুষের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করবে এবং তা গোপন করবে না"। এর নির্দেশকে পিছনে ফেলে দ্বীনের সহজ সরল কিছু বিষয়কে বর্ণনা করাকে নিজেদের পেশা বানিয়ে নিয়েছি।
আমাদের এহেন কৃতকর্মের কারণে যদি আমাদের ক্ষেত্রে কুরআনে কারীমের এই আয়াত গুলো প্রযোজ্য হয় তাহলে আপত্তির কি থাকে?
১/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿ أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ فَمَا جَزَاءُ مَنْ يَفْعَلُ ذَلِكَ مِنْكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّونَ إِلَى أَشَدِّ الْعَذَابِ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ﴾
২/ আল্লাহ্ তায়ালা আরও বলেনঃ
﴿إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنْزَلْنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالْهُدَى مِنْ بَعْدِ مَا بَيَّنَّاهُ لِلنَّاسِ فِي الْكِتَابِ أُولَئِكَ يَلْعَنُهُمُ اللَّهُ وَيَلْعَنُهُمُ اللَّاعِنُونَ﴾
৩/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ مِنَ الْكِتَابِ وَيَشْتَرُونَ بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًا أُولَئِكَ مَا يَأْكُلُونَ فِي بُطُونِهِمْ إِلَّا النَّارَ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾
৪/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ نَافَقُوا وَقِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْا قَاتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَوِ ادْفَعُوا قَالُوا لَوْ نَعْلَمُ قِتَالًا لَاتَّبَعْنَاكُمْ هُمْ لِلْكُفْرِ يَوْمَئِذٍ أَقْرَبُ مِنْهُمْ لِلْإِيمَانِ يَقُولُونَ بِأَفْواهِهِمْ مَا لَيْسَ فِي قُلُوبِهِمْ وَاللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا يَكْتُمُونَ ﴾
৫/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿كَانُوا لَا يَتَنَاهَوْنَ عَنْ مُنْكَرٍ فَعَلُوهُ لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَفْعَلُونَ﴾
৬/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿لَوْلَا يَنْهَاهُمُ الرَّبَّانِيُّونَ وَالْأَحْبَارُ عَنْ قَوْلِهِمُ الْإِثْمَ وَأَكْلِهِمُ السُّحْتَ لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَصْنَعُونَ﴾
৭/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿وَذَرِ الَّذِينَ اتَّخَذُوا دِينَهُمْ لَعِبًا وَلَهْوًا وَغَرَّتْهُمُ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا وَذَكِّرْ بِهِ أَنْ تُبْسَلَ نَفْسٌ بِمَا كَسَبَتْ لَيْسَ لَهَا مِنْ دُونِ اللَّهِ وَلِيٌّ وَلَا شَفِيعٌ وَإِنْ تَعْدِلْ كُلَّ عَدْلٍ لَا يُؤْخَذْ مِنْهَا أُولَئِكَ الَّذِينَ أُبْسِلُوا بِمَا كَسَبُوا لَهُمْ شَرَابٌ مِنْ حَمِيمٍ وَعَذَابٌ أَلِيمٌ بِمَا كَانُوا يَكْفُرُونَ﴾
৮/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿إِنَّ الَّذِينَ فَرَّقُوا دِينَهُمْ وَكَانُوا شِيَعًا لَسْتَ مِنْهُمْ فِي شَيْءٍ إِنَّمَا أَمْرُهُمْ إِلَى اللَّهِ ثُمَّ يُنَبِّئُهُمْ بِمَا كَانُوا يَفْعَلُونَ﴾
৯/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿الَّذِينَ اتَّخَذُوا دِينَهُمْ لَهْوًا وَلَعِبًا وَغَرَّتْهُمُ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا فَالْيَوْمَ نَنْسَاهُمْ كَمَا نَسُوا لِقَاءَ يَوْمِهِمْ هَذَا وَمَا كَانُوا بِآَيَاتِنَا يَجْحَدُونَ﴾
১০/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿مِنَ الَّذِينَ فَرَّقُوا دِينَهُمْ وَكَانُوا شِيَعًا كُلُّ حِزْبٍ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ﴾
১১/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿لَا يَتَّخِذِ الْمُؤْمِنُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَلَيْسَ مِنَ اللَّهِ فِي شَيْءٍ إِلَّا أَنْ تَتَّقُوا مِنْهُمْ تُقَاةً وَيُحَذِّرُكُمُ اللَّهُ نَفْسَهُ وَإِلَى اللَّهِ الْمَصِيرُ﴾
১২/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يَزْعُمُونَ أَنَّهُمْ آَمَنُوا بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ يُرِيدُونَ أَنْ يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُوا أَنْ يَكْفُرُوا بِهِ وَيُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُضِلَّهُمْ ضَلَالًا بَعِيدًا﴾
১৩/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿فَخَلَفَ مِنْ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ وَرِثُوا الْكِتَابَ يَأْخُذُونَ عَرَضَ هَذَا الْأَدْنَى وَيَقُولُونَ سَيُغْفَرُ لَنَا وَإِنْ يَأْتِهِمْ عَرَضٌ مِثْلُهُ يَأْخُذُوهُ أَلَمْ يُؤْخَذْ عَلَيْهِمْ مِيثَاقُ الْكِتَابِ أَنْ لَا يَقُولُوا عَلَى اللَّهِ إِلَّا الْحَقَّ وَدَرَسُوا مَا فِيهِ وَالدَّارُ الْآَخِرَةُ خَيْرٌ لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ﴾
দ্বীনের যে অংশের আমল করাকে নিজেদের জন্য নিরাপদ মনে করেছি সে অংশের উপর খুব গুরুত্ব দিয়েছি। কিন্তু দ্বীনের যে অংশের উপর আলোচনা করা এবং আমল করাকে নিজেদের জন্য নিরাপদ মনে হয়নি সে অংশের ব্যপারে দিনের পর দিন নিরব থেকেছি। আবার অনেকে আরও এ্যডভ্যান্স হয়ে সে অংশের সাথে কটাক্ষপুর্ণ আচরণ করার দুঃসাহস পর্যন্ত দেখিয়েছি। এভাবে আমরা খণ্ডিত দ্বীন পালনকেই একপর্যায়ে নিজেদের জন্য যথেষ্ট মনে করে বসেছি। এভাবে খণ্ডিত দ্বীন পালনের জন্য যদি আল্লাহ তায়ালা আমাদের উপর লাঞ্ছনার বোঝা চাপিয়ে দেন তাতে দুঃখের কী আছে? যেমনটি আল্লাহ্ তায়ালা বলেছেন:
জেল-জুলুম এবং গুম-খুন, এমনকি শুধুমাত্র তাগূতের চোখ রাঙানির ভয়ে কুফুর বিত্-ত্বাগূত, কিতাল বি-আওলিয়া-ইশ্-শয়তান, তাহাকুম ইলাত্-ত্বাগূতকে প্রত্যাখ্যান, আল-ওলা' ওয়াল বারা', ফরজিয়্যাতে ঈ'দাদ ওয়াল জিহাদ, হুদূদ-কিসাস, সিয়াসাতে ইসলামিয়্যাহ্, এর মত গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েলকে আমরা উম্মাহর সামনে কখনো স্পষ্ট করেনি। একারণে যদি আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে লা'নতের উপযুক্ত হয়। তাহলে আমাদের আর কীইবা উপায় থাকতে পারে?
যখন আমাদেরকে জিহাদ এবং কিতাল ফী সাবীলিল্লাহ এবং দ্বীন ও উম্মাহর এবং দ্বীনের শিয়া'রগুলোকে হিফাজত করার জন্য দিফা' তথা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতি তাকিদ করা হয়েছে তখন আমরা বলেছি এগুলো শরয়ী জিহাদ-কিতাল নয়, বরং অনেকেই তো আল্লাহ্ তায়ালার এই অকাট্য বিধানসমূহকে বর্তমান সময়ের জন্য ফেতনা-ফাসাদ আখ্যায়িত করে তৃপ্তি লাভ করেছি। এসব করার কারণে আমরা যদি আল্লাহ্ তায়ালার ফরমান অনুযায়ী দ্বীন থেকে বের হয়ে কুফুরের নিকটবর্তী হয়ে যাই, এবং আমাদের ব্যপারে আল্লাহ্ তায়ালার এই ফায়সাল অবধারিত হয়ে যায় তাহলে কি আর আমাদের বাচার কোন রাস্তা থাকতে পারে? আল্লাহ তাআলা বলেন:
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا مَنْ يَرْتَدَّ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ذَلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ﴾
এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই এরশাদে মোবারকের বাস্তবায়ন ঘটে:
عَنِ*ابْنِ عُمَرَ*، قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : " إِذَا تَبَايَعْتُمْبِالْعِينَةِ*، وَأَخَذْتُمْ أَذْنَابَ الْبَقَرِ، وَرَضِيتُمْ بِالزَّرْعِ، وَتَرَكْتُمُ الْجِهَادَ ؛ سَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ ذُلًّا لَا يَنْزِعُهُ حَتَّى تَرْجِعُوا إِلَى دِينِكُمْ ".*
তাহলে জিহাদ কিতালের রাস্তায় ফিরে আসা ছাড়া কি বর্তমান সংকট থেকে এবং আসন্ন ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে বাচার কোন উপায় থাকতে পারে??
৯/ নবূওয়াত ও রিসালাতের মূল মাকসাদ:
"اظهار ألحق على الدين كله"
"দ্বীনে হক্বকে সকল বাতিল দ্বীনের উপর বিজয়ী করা" কে ভুলে গিয়ে দ্বীনের ফুরূয়ী' কাজ যেমন, তেলাওয়াতে কুরআন, তা'লীমে কিতাব, তা'লীমে হিকমাহ এবং তাযকীয়াহর কাজকেই চূড়ান্ত মাকসাদ বানিয়ে নিয়েছি।
১০/ আল্লাহ্ তায়ালার ফরমান:
﴿وَمَا كَانَ الْمُؤْمِنُونَ لِيَنْفِرُوا كَافَّةً فَلَوْلَا نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِنْهُمْ طَائِفَةٌ لِيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنْذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ﴾
এর সঠিক ব্যাখ্যাকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র তা'লীমে দ্বীনের কাজকেই নিজেদের আসল কাজ বানিয়ে আয়াতের মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য ভুলে বসেছি। আয়াতে কারীমার শানে নুযূল এবং প্রেক্ষাপটের সঠিক প্রয়োগ থেকে নিজেদের মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি।
১১/ আল্লাহ্ তায়ালার ফরমান:
"أشداء على الكفار رحماء بينهم"
" কাফেরদের উপর কঠোর নিজেদের মাঝে অতিশয় দয়ালু" এর শিক্ষাকে ভুলে গিয়েছে।
১২/ কুরআনে কারীমের আয়াত:
﴿فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَى لَا انْفِصَامَ لَهَا وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ﴾
"যে তাগূতের সাথে কুফরী করল এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনল নিশ্চিত সেই মজবুত হাতল আঁকড়ে ধরল, যা বিচ্ছিন্ন হবার নয়, আর আল্লাহ্ সামী' এবং আলীম।
এর নির্দেশকে পশ্চাতে নিক্ষেপ করেছি।
১৩/ আল্লাহ্ তায়ালার বানী:
﴿وَإِذْ أَخَذَ اللَّهُ مِيثَاقَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَتُبَيِّنُنَّهُ لِلنَّاسِ وَلَا تَكْتُمُونَهُ فَنَبَذُوهُ وَرَاءَ ظُهُورِهِمْ وَاشْتَرَوْا بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًا فَبِئْسَ مَا يَشْتَرُونَ﴾
"যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি তাদের থেকে আমি অঙ্গীকার নিয়েছি যে, তোমরা তা মানুষের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করবে এবং তা গোপন করবে না"। এর নির্দেশকে পিছনে ফেলে দ্বীনের সহজ সরল কিছু বিষয়কে বর্ণনা করাকে নিজেদের পেশা বানিয়ে নিয়েছি।
আমাদের এহেন কৃতকর্মের কারণে যদি আমাদের ক্ষেত্রে কুরআনে কারীমের এই আয়াত গুলো প্রযোজ্য হয় তাহলে আপত্তির কি থাকে?
১/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿ أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ فَمَا جَزَاءُ مَنْ يَفْعَلُ ذَلِكَ مِنْكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّونَ إِلَى أَشَدِّ الْعَذَابِ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ﴾
২/ আল্লাহ্ তায়ালা আরও বলেনঃ
﴿إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنْزَلْنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالْهُدَى مِنْ بَعْدِ مَا بَيَّنَّاهُ لِلنَّاسِ فِي الْكِتَابِ أُولَئِكَ يَلْعَنُهُمُ اللَّهُ وَيَلْعَنُهُمُ اللَّاعِنُونَ﴾
৩/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ مِنَ الْكِتَابِ وَيَشْتَرُونَ بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًا أُولَئِكَ مَا يَأْكُلُونَ فِي بُطُونِهِمْ إِلَّا النَّارَ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾
৪/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ نَافَقُوا وَقِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْا قَاتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَوِ ادْفَعُوا قَالُوا لَوْ نَعْلَمُ قِتَالًا لَاتَّبَعْنَاكُمْ هُمْ لِلْكُفْرِ يَوْمَئِذٍ أَقْرَبُ مِنْهُمْ لِلْإِيمَانِ يَقُولُونَ بِأَفْواهِهِمْ مَا لَيْسَ فِي قُلُوبِهِمْ وَاللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا يَكْتُمُونَ ﴾
৫/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿كَانُوا لَا يَتَنَاهَوْنَ عَنْ مُنْكَرٍ فَعَلُوهُ لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَفْعَلُونَ﴾
৬/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿لَوْلَا يَنْهَاهُمُ الرَّبَّانِيُّونَ وَالْأَحْبَارُ عَنْ قَوْلِهِمُ الْإِثْمَ وَأَكْلِهِمُ السُّحْتَ لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَصْنَعُونَ﴾
৭/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿وَذَرِ الَّذِينَ اتَّخَذُوا دِينَهُمْ لَعِبًا وَلَهْوًا وَغَرَّتْهُمُ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا وَذَكِّرْ بِهِ أَنْ تُبْسَلَ نَفْسٌ بِمَا كَسَبَتْ لَيْسَ لَهَا مِنْ دُونِ اللَّهِ وَلِيٌّ وَلَا شَفِيعٌ وَإِنْ تَعْدِلْ كُلَّ عَدْلٍ لَا يُؤْخَذْ مِنْهَا أُولَئِكَ الَّذِينَ أُبْسِلُوا بِمَا كَسَبُوا لَهُمْ شَرَابٌ مِنْ حَمِيمٍ وَعَذَابٌ أَلِيمٌ بِمَا كَانُوا يَكْفُرُونَ﴾
৮/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿إِنَّ الَّذِينَ فَرَّقُوا دِينَهُمْ وَكَانُوا شِيَعًا لَسْتَ مِنْهُمْ فِي شَيْءٍ إِنَّمَا أَمْرُهُمْ إِلَى اللَّهِ ثُمَّ يُنَبِّئُهُمْ بِمَا كَانُوا يَفْعَلُونَ﴾
৯/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿الَّذِينَ اتَّخَذُوا دِينَهُمْ لَهْوًا وَلَعِبًا وَغَرَّتْهُمُ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا فَالْيَوْمَ نَنْسَاهُمْ كَمَا نَسُوا لِقَاءَ يَوْمِهِمْ هَذَا وَمَا كَانُوا بِآَيَاتِنَا يَجْحَدُونَ﴾
১০/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿مِنَ الَّذِينَ فَرَّقُوا دِينَهُمْ وَكَانُوا شِيَعًا كُلُّ حِزْبٍ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ﴾
১১/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿لَا يَتَّخِذِ الْمُؤْمِنُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَلَيْسَ مِنَ اللَّهِ فِي شَيْءٍ إِلَّا أَنْ تَتَّقُوا مِنْهُمْ تُقَاةً وَيُحَذِّرُكُمُ اللَّهُ نَفْسَهُ وَإِلَى اللَّهِ الْمَصِيرُ﴾
১২/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يَزْعُمُونَ أَنَّهُمْ آَمَنُوا بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ يُرِيدُونَ أَنْ يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُوا أَنْ يَكْفُرُوا بِهِ وَيُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُضِلَّهُمْ ضَلَالًا بَعِيدًا﴾
১৩/ আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿فَخَلَفَ مِنْ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ وَرِثُوا الْكِتَابَ يَأْخُذُونَ عَرَضَ هَذَا الْأَدْنَى وَيَقُولُونَ سَيُغْفَرُ لَنَا وَإِنْ يَأْتِهِمْ عَرَضٌ مِثْلُهُ يَأْخُذُوهُ أَلَمْ يُؤْخَذْ عَلَيْهِمْ مِيثَاقُ الْكِتَابِ أَنْ لَا يَقُولُوا عَلَى اللَّهِ إِلَّا الْحَقَّ وَدَرَسُوا مَا فِيهِ وَالدَّارُ الْآَخِرَةُ خَيْرٌ لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ﴾
দ্বীনের যে অংশের আমল করাকে নিজেদের জন্য নিরাপদ মনে করেছি সে অংশের উপর খুব গুরুত্ব দিয়েছি। কিন্তু দ্বীনের যে অংশের উপর আলোচনা করা এবং আমল করাকে নিজেদের জন্য নিরাপদ মনে হয়নি সে অংশের ব্যপারে দিনের পর দিন নিরব থেকেছি। আবার অনেকে আরও এ্যডভ্যান্স হয়ে সে অংশের সাথে কটাক্ষপুর্ণ আচরণ করার দুঃসাহস পর্যন্ত দেখিয়েছি। এভাবে আমরা খণ্ডিত দ্বীন পালনকেই একপর্যায়ে নিজেদের জন্য যথেষ্ট মনে করে বসেছি। এভাবে খণ্ডিত দ্বীন পালনের জন্য যদি আল্লাহ তায়ালা আমাদের উপর লাঞ্ছনার বোঝা চাপিয়ে দেন তাতে দুঃখের কী আছে? যেমনটি আল্লাহ্ তায়ালা বলেছেন:
জেল-জুলুম এবং গুম-খুন, এমনকি শুধুমাত্র তাগূতের চোখ রাঙানির ভয়ে কুফুর বিত্-ত্বাগূত, কিতাল বি-আওলিয়া-ইশ্-শয়তান, তাহাকুম ইলাত্-ত্বাগূতকে প্রত্যাখ্যান, আল-ওলা' ওয়াল বারা', ফরজিয়্যাতে ঈ'দাদ ওয়াল জিহাদ, হুদূদ-কিসাস, সিয়াসাতে ইসলামিয়্যাহ্, এর মত গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েলকে আমরা উম্মাহর সামনে কখনো স্পষ্ট করেনি। একারণে যদি আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে লা'নতের উপযুক্ত হয়। তাহলে আমাদের আর কীইবা উপায় থাকতে পারে?
যখন আমাদেরকে জিহাদ এবং কিতাল ফী সাবীলিল্লাহ এবং দ্বীন ও উম্মাহর এবং দ্বীনের শিয়া'রগুলোকে হিফাজত করার জন্য দিফা' তথা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতি তাকিদ করা হয়েছে তখন আমরা বলেছি এগুলো শরয়ী জিহাদ-কিতাল নয়, বরং অনেকেই তো আল্লাহ্ তায়ালার এই অকাট্য বিধানসমূহকে বর্তমান সময়ের জন্য ফেতনা-ফাসাদ আখ্যায়িত করে তৃপ্তি লাভ করেছি। এসব করার কারণে আমরা যদি আল্লাহ্ তায়ালার ফরমান অনুযায়ী দ্বীন থেকে বের হয়ে কুফুরের নিকটবর্তী হয়ে যাই, এবং আমাদের ব্যপারে আল্লাহ্ তায়ালার এই ফায়সাল অবধারিত হয়ে যায় তাহলে কি আর আমাদের বাচার কোন রাস্তা থাকতে পারে? আল্লাহ তাআলা বলেন:
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا مَنْ يَرْتَدَّ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ذَلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ﴾
এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই এরশাদে মোবারকের বাস্তবায়ন ঘটে:
عَنِ*ابْنِ عُمَرَ*، قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : " إِذَا تَبَايَعْتُمْبِالْعِينَةِ*، وَأَخَذْتُمْ أَذْنَابَ الْبَقَرِ، وَرَضِيتُمْ بِالزَّرْعِ، وَتَرَكْتُمُ الْجِهَادَ ؛ سَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ ذُلًّا لَا يَنْزِعُهُ حَتَّى تَرْجِعُوا إِلَى دِينِكُمْ ".*
তাহলে জিহাদ কিতালের রাস্তায় ফিরে আসা ছাড়া কি বর্তমান সংকট থেকে এবং আসন্ন ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে বাচার কোন উপায় থাকতে পারে??
Comment