খাওয়ারিজ সম্প্রদায় সম্পর্কে আমাদের অনেক ভুল ধারণা আছে। তাই আমরা যাকে তাকে খারিজী মনে করি, অথবা নিজেই খারিজী হয়ে যাই, এমনকি এমনও হতে পারে যে খারিজীদের বিরোধীতা করতে গিয়ে নিজেরাই একএকজন খারিজীর মত আচরণ করি। নবীজী (সা) একদল লোকের ফিতনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে এক পর্যায়ে বলেব, "...তারা দ্বীন হতে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে..." আর বেরিয়ে যাওয়া আরবী হচ্ছে খুরুজ। যে বেরিয়ে গিয়েছে, খারিজী; আর যারা বেরিয়ে গিয়েছে, খাওয়ারিজ।
.
দ্বীন হতে বেরিয়ে যাবার অর্থ হচ্ছে, আহলুস-সুন্নাহর আক্বীদা এবং মানহাজ থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়া। এখন যে কোন দল, যারাই আহলুস সুন্নাহর আক্বীদা-মানহাজ থেকে খুরুজ করবে তারাই খাওয়ারিজ তাত্ত্বিক ভাবে। কিন্তু আমাদের সমাজে একটি ধারণা বসে গেছে যে, যারা কবীরা গুনাহর উপর তাকফির করে, তাকফির করে মুসলিমদের হত্যা করে তারাই শুধু খাওয়ারিজ; অন্য বিদা'তী এবং দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া দলগুলো খাওয়ারিজ হতে পারে না। ব্যাপারটা তা নয়।
.
যারা কবীরা গুনাহর উপর তাকফির করে, তাকফির করে মুসলিমদের হত্যা করে তারাই শুধু না, বরং যারা যে কোন ধরণের অন্যায় তাকফির আর এর জন্য হত্যাকে মানহাজ হিসেবে নিয়েছে তারা সকলেই তাকফিরী খাওয়ারিজ। এভাবে শিয়া-রাফিজী, মুর্যিয়া, মুতাযিলা, কাদীয়ানী, হাল আমলের বেরেলভী, মাদখালী, মুনকারে হাদিস, মডারেট, সেকুলার এবং সে সকল জিহাদি লদ যারা আহলুস-সুন্নাহর আক্বীদা-মানহাজের অনুসরণ করে না। এরা সকলেই এক একটি খাওয়ারিজ দল। জরুরী না যে সকলকেই তাকফিরী হতে হবে; সকলকে কবীরা গুনাহর উপর তাকফির করতে হবে; সকলকে ইসলামের নাম ব্যাবহার করে অন্যা করতে হবে। বরং অন্যরকমও হতে পারে।
.
এখন খাওয়ারিজ মানেই কি মুরতাদ? কারণ উপরে যাদের উদাহরণ দিলাম, তাদের মধ্যে মুরতাদ দলের নামও আছে, আবার এমন দলের নামও আছে যাদের মুরতাদ বিবেচনা করা হয় না। আসলে খাওয়ারিজ মানেই মুরতাদ না। তবে যে কোন খাওয়ারিজ দল মুরতাদ হয়ে যেতে পারে, যদি তারা তাদের আক্বীদা-মানহাযে কোন রকমের রিদ্দা গ্রহণ করে অথবা শিরক-কুফর যুক্ত আক্বীদা গ্রহণ করে। খাারিজী মানে যে আহলুস-সুন্নাহ ওআল-জামা'তের অন্তর্ভুক্ত নয়, মানে এখনো তার মুসলিমদের অনর্ভুক্ত থাকার সম্ভাবনা আছে। আর মুরতাদ মানে যে মুসলিমদেরই অন্তর্ভুক্ত নয়। আর যে মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত নয়, তার তো আহলুস-সুন্নাহ ওআল-জামা'তের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রশ্নই আসে না। প্রথমে তারা বিদা'আত সৃষ্টি করে, পরবর্তিতে তাদের কোন কোন দল সম্পূর্ণ ইসলাম হতেই বেরিয়ে যায়।
.
এখন আসা যাক আদ জাতির মত হত্যা করার ব্যাপারটায়। দেখুন, খাওয়রিজ বিষয়ক অনেকগুলো হাদিস রয়েছে। সবগুলো মূলত বিভ্রান্ত দলগুলো সম্পর্কে। এর প্রত্যেকটা বৈশিষ্ট্য কখনো একটি দলের মধ্যে নাও থাকতে পারে। এদের সম্পর্কে হাদিসে দেয়া হুকুমগুলো পড়লে, আপনারা সেই হুকুমের কারণও দেখতে পারবেন। যেমন যখন নবীজী (সা) তাদের আদ জাতির মত হত্যা করার ইচ্ছা পোষণ করলেন, ঠিক এর আগের কথাই ছিল, তারা মুসলিমদের হত্যা করবে আর মুশরিকদের ছেড়ে দিবে। এবং এর কারণেই তিনি তেমন মন্তব্য করেছিলেন। কারণ মুসলিমদের জান-মাল হচ্ছে পবিত্র এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ইসলামের দায়িত্ব।
.
অর্থাৎ যারাই এমনটা করবে যে, মুশরিকদের ছেড়ে দিয়ে মুসলিমদের হত্যা করবে, হোক সেটা তাকফির করে অথবা তাকফির না করে, হোক সেটা ইসলামের নামে অথবা গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষা আর জাতীয়তাবাদের নামে; তাদের শুধু খাওয়রিজ ডাকা হোক আর না হোক, তাদের মুরতাদ ডাকা হোক আর না হোক; আমি আবারো বলছি যে, যারা মুশরিকদের ছেড়ে দিবে এবং মুসলিমদের হত্যা করবে, নবীজী (সা) তাদেরকে পেলে আদ জাতির মত হত্যা করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। এবং তাদেরকে সৃষ্টির মধ্যে নিকৃষ্ট, এবং জাহান্নামের কুকুর বলে অবিহিত করেছিলেন।
.
দ্বীন হতে বেরিয়ে যাবার অর্থ হচ্ছে, আহলুস-সুন্নাহর আক্বীদা এবং মানহাজ থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়া। এখন যে কোন দল, যারাই আহলুস সুন্নাহর আক্বীদা-মানহাজ থেকে খুরুজ করবে তারাই খাওয়ারিজ তাত্ত্বিক ভাবে। কিন্তু আমাদের সমাজে একটি ধারণা বসে গেছে যে, যারা কবীরা গুনাহর উপর তাকফির করে, তাকফির করে মুসলিমদের হত্যা করে তারাই শুধু খাওয়ারিজ; অন্য বিদা'তী এবং দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া দলগুলো খাওয়ারিজ হতে পারে না। ব্যাপারটা তা নয়।
.
যারা কবীরা গুনাহর উপর তাকফির করে, তাকফির করে মুসলিমদের হত্যা করে তারাই শুধু না, বরং যারা যে কোন ধরণের অন্যায় তাকফির আর এর জন্য হত্যাকে মানহাজ হিসেবে নিয়েছে তারা সকলেই তাকফিরী খাওয়ারিজ। এভাবে শিয়া-রাফিজী, মুর্যিয়া, মুতাযিলা, কাদীয়ানী, হাল আমলের বেরেলভী, মাদখালী, মুনকারে হাদিস, মডারেট, সেকুলার এবং সে সকল জিহাদি লদ যারা আহলুস-সুন্নাহর আক্বীদা-মানহাজের অনুসরণ করে না। এরা সকলেই এক একটি খাওয়ারিজ দল। জরুরী না যে সকলকেই তাকফিরী হতে হবে; সকলকে কবীরা গুনাহর উপর তাকফির করতে হবে; সকলকে ইসলামের নাম ব্যাবহার করে অন্যা করতে হবে। বরং অন্যরকমও হতে পারে।
.
এখন খাওয়ারিজ মানেই কি মুরতাদ? কারণ উপরে যাদের উদাহরণ দিলাম, তাদের মধ্যে মুরতাদ দলের নামও আছে, আবার এমন দলের নামও আছে যাদের মুরতাদ বিবেচনা করা হয় না। আসলে খাওয়ারিজ মানেই মুরতাদ না। তবে যে কোন খাওয়ারিজ দল মুরতাদ হয়ে যেতে পারে, যদি তারা তাদের আক্বীদা-মানহাযে কোন রকমের রিদ্দা গ্রহণ করে অথবা শিরক-কুফর যুক্ত আক্বীদা গ্রহণ করে। খাারিজী মানে যে আহলুস-সুন্নাহ ওআল-জামা'তের অন্তর্ভুক্ত নয়, মানে এখনো তার মুসলিমদের অনর্ভুক্ত থাকার সম্ভাবনা আছে। আর মুরতাদ মানে যে মুসলিমদেরই অন্তর্ভুক্ত নয়। আর যে মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত নয়, তার তো আহলুস-সুন্নাহ ওআল-জামা'তের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রশ্নই আসে না। প্রথমে তারা বিদা'আত সৃষ্টি করে, পরবর্তিতে তাদের কোন কোন দল সম্পূর্ণ ইসলাম হতেই বেরিয়ে যায়।
.
এখন আসা যাক আদ জাতির মত হত্যা করার ব্যাপারটায়। দেখুন, খাওয়রিজ বিষয়ক অনেকগুলো হাদিস রয়েছে। সবগুলো মূলত বিভ্রান্ত দলগুলো সম্পর্কে। এর প্রত্যেকটা বৈশিষ্ট্য কখনো একটি দলের মধ্যে নাও থাকতে পারে। এদের সম্পর্কে হাদিসে দেয়া হুকুমগুলো পড়লে, আপনারা সেই হুকুমের কারণও দেখতে পারবেন। যেমন যখন নবীজী (সা) তাদের আদ জাতির মত হত্যা করার ইচ্ছা পোষণ করলেন, ঠিক এর আগের কথাই ছিল, তারা মুসলিমদের হত্যা করবে আর মুশরিকদের ছেড়ে দিবে। এবং এর কারণেই তিনি তেমন মন্তব্য করেছিলেন। কারণ মুসলিমদের জান-মাল হচ্ছে পবিত্র এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ইসলামের দায়িত্ব।
.
অর্থাৎ যারাই এমনটা করবে যে, মুশরিকদের ছেড়ে দিয়ে মুসলিমদের হত্যা করবে, হোক সেটা তাকফির করে অথবা তাকফির না করে, হোক সেটা ইসলামের নামে অথবা গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষা আর জাতীয়তাবাদের নামে; তাদের শুধু খাওয়রিজ ডাকা হোক আর না হোক, তাদের মুরতাদ ডাকা হোক আর না হোক; আমি আবারো বলছি যে, যারা মুশরিকদের ছেড়ে দিবে এবং মুসলিমদের হত্যা করবে, নবীজী (সা) তাদেরকে পেলে আদ জাতির মত হত্যা করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। এবং তাদেরকে সৃষ্টির মধ্যে নিকৃষ্ট, এবং জাহান্নামের কুকুর বলে অবিহিত করেছিলেন।
Comment