উম্মাহর অধঃপতনঃ কষ্টে বুকটা ফেঁটে যায়
বর্তমানে মুসলিম উম্মাহ ভয়াবহ এক সময় অতিক্রম করছে ৷ পঙ্গপালের মতো জাহান্নামের দিকে ছুটছে উম্মাহর যুবক যুবতীরা ৷ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে হারামের দিকে ৷
অভিভাবকগণও উদাসীন হয়ে আছে ৷ সন্তানের ব্যাপারে তেমন ভাবার সময় নেই ৷ সন্তানকে মানুষ করতে হবে ৷ আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে এ নিয়ে ভাবনার শেষ নেই ৷ তিলে তিলে কষ্টে অর্জিত সম্পদ ব্যয় করছে সন্তানের পিছনে ৷ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে,নিজেদের সুখকে বিসর্জন দিয়ে; শুধুমাত্র সন্তানকে মানুষ করতে দুনিয়ার সুখকে পিছনে ফেলে সম্পদ অর্জন করতে ব্যধিব্যস্ত ৷
সন্তানকে প্রতি মাসে টাকা পাঠানো হচ্ছে লেখাপড়ার জন্য ৷ সন্তান নিজের মত করে চলছে ৷ জবাবদিহীতা নেই কারো কাছে ৷ স্বাধীন দেশে পাখির মতো ডানা মেলে উড়ে বেড়াচ্ছে ৷
সন্তান ছোটকাল থেকে দ্বীনি শিক্ষা একেবারে পায়না বললেই চলে ৷ ইসলাম সম্পর্কে না জেনেই বড় হয় সন্তান ৷ বন্ধুদের সাথে মিশে কত যে পাপাচারও অন্যায়ে লিপ্ত হয় তা বুঝানো মুশকিল ৷
কষ্টে বুকটা ফেঁটে যায় উম্মাহর বর্তমান হালত দেখে ৷ মূল সমস্যা কেথায়?
মূল সমস্যা হলো গোঁড়ায় ৷ আমরা খিলাফত হারিয়েছি ৷ রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামের প্রয়োগ নেই ৷ কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এ বিষয়ে বেখবর ৷
রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম নেই ৷ তাই চেষ্টা করলেও সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা যাচ্ছে না ৷
এই যে থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন, ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদযাপন, ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস,পহেলা বৈশাখ ইত্যাদি দিবসে সমাজে কনসার্টের আয়োজন করা হয় ৷ কেউবা শুধু বক্স বাজায় ৷ নাচ-গানসহ হারাম অনেক বিষয় থাকে ৷
এগুলো কি ব্যক্তি বা পরিবার কেন্দ্রীক হয়?
না ৷ বরং এতে প্রতিবেশীর হক নষ্ট করা হয় ৷ গানের আওয়াজে ঘুমানো যায় না,অসুস্থ ব্যক্তির কষ্ট হয়,শিশুরা ভয়ে কেঁপে উঠে ইত্যাদি ৷
আপনি নিজেও এগুলো সহ্য করতে পারছেন না ৷ আবার কিছু বলতেও পারছেন না ৷ যদি ইমানি জযবায় সরাসরি কিছু বলতে যান কিংবা অনুষ্ঠান ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টার করেন ৷ তবে আপনি নিজেই অপমানিত তো হবেনই ৷ বরং কুফুরি আইনে আপনি অন্যায়কারী,স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপকারী সাব্যস্ত হবেন ৷ দেশের অধিকাংশ জায়গায় একই অবস্থা বিরাজমান ৷ ইচ্ছে করলেও প্রতিহত করা সম্ভব হচ্ছে না ৷
আপনিই যতই লিফলেট বিতরণ করুন না কেন! যতই বুঝান ও দাওয়াত দিন; দিনশেষে ফলাফল কিন্তু শূণ্য (অবশ্য দায়িগণ আল্লাহর কাছে প্রতিদান পাবেন এবং অনেকে হারামে যাবে না,তবে এর পরিমাণ অতি নগণ্য) ৷
সম্মানিত খতিবগণ,দ্বীনের দায়ি বক্তাগণ,তাবলিগের মেহনতকারীগণ,বিভিন্ন সংগঠনের ভাইয়েরা সবাই মেহনত করে যাচ্ছে ৷ আল্লাহ সবাইকে উত্তম জাযা দিন এবং সঠিক পন্থায় দাওয়াহর কাজ করার তাউফিক দান করুন ৷
অনেক দায়িগণ মনে করেন, যদি প্রকাশ্যে সব বলি,তাহলে আমাদের দ্বারা উম্মাহ উপকৃত হবে না ৷ কারণ দাওয়াহর পথ বন্ধ হয়ে যাবে ৷
কিন্তু একটু ভেবে দেখুন তো! যতই দাওয়াহর কাজ করা হচ্ছে,দিন দিন ফিতনা কি বাড়ছে নাকি কমছে ৷
অবশ্যই বলবেন ফিতনা বেড়েই চলেছে ৷ তাহলে মূল সমস্যা কোথায়?
মূল সমস্যা হলো আমরা খিলাফাহ হারিয়েছি ৷ আমরা যদি খিলাফাহ ফিরিয়ে আনতে পারি,রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম কায়িম হয়; তখন আর এত কষ্ট করতে হবে না ৷ গোঁড়া থেকে ফিতনা নির্মূল হবে ৷ ইনশাআল্লাহ
সবাই যদি এ দিকে মনোযোগ দেই,তবে কতইনা ভালো হবে ৷
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন এবং নববি মানহায অনুসারে চলার তাউফিক দান করুন ৷ আমিন
Comment