২ আস-সাহাব মিডিয়া উপমহাদেশ
কর্তৃক প্রকাশিত
আচরণবিধি
আল-কায়েদা উপমহাদেশ.
এর থেকে
পর্ব- ০২
==================================================
===============================
কর্তৃক প্রকাশিত
আচরণবিধি
আল-কায়েদা উপমহাদেশ.
এর থেকে
পর্ব- ০২
==================================================
===============================
প্রথম অনুচ্ছেদঃ জামাআতের লক্ষ্য
১। তাওহীদ ও একত্ববাদের দাওয়াত দেয়া। অর্থাৎ, ইবাদত থেকে শুরু করে শাসনব্যবস্থা পর্যন্ত সবকিছু একমাত্র আল্লাহ তা’আলার জন্য নির্দিষ্ট করার আহ্বান জানানো।
২। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত শরীয়ত এবং তাঁর নবুওয়্যাতী পদ্ধতির খেলাফত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা। (ইসলামী ইমারাত আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা এবং তা শক্তিশালী করা এই লক্ষ্যেরই অংশ।)
৩। সকল অধিকৃত ইসলামী ভূখণ্ড এবং বায়তুল মুকাদ্দাসসহ সকল ইসলামী পবিত্র স্থান কাফেরদের দখল থেকে মুক্ত করা।
৪। অত্যাচার, অধিকার হরণ ও শোষণের পথ বন্ধ করা এবং এমন একটি ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে সর্বত্র শান্তি, শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, কল্যাণ ও ন্যায়পরায়ণতা বিরাজ করবে।
৫। মুসলমানদের দ্বীন, জান, ইজ্জত ও সম্পদের হেফাজত ও প্রতিরক্ষা। একই সঙ্গে পুরো দুনিয়ার মাজলুমদের সাহায্য করা।
৬। কাফের ও তাগুতের জেলে বন্দী মুসলিম ভাই-বোনদের মুক্ত করা।
৭। উম্মতের ধনসম্পদ লুটেরা শক্তিগুলোর হাত থেকে মুক্ত করে ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে উম্মতের মাঝে বণ্টন করা।
৮। দেশ, জাতি ও ভাষার মূর্তি চূর্ণ করে মুসলিম উম্মাহ’র ঈমানী ভ্রাতৃত্বকে জাগ্রত করা এবং ‘এক উম্মত’-এর ধারণা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।
৯। পরকালের জীবনে জান্নাত লাভ করা, যাকে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত জিহাদের রাস্তার উপর দৃঢ় থাকার সাথে জুড়ে দিয়েছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ইরশাদ করেনঃ
أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جَاهَدُوا مِنكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّابِرِينَ
“তোমাদের কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্যশীল।” ( সূরা আলে ইমরানঃ ১৪২)
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদঃ জামাআতের কিছু
গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি
১। জামাআত আল-কায়েদা উপমহাদেশ, বৈশ্বিক কুফরি ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য এবং শরীয়ত কার্যকর করার জন্য কিতাল ফী সাবিলিল্লাহকে ফরজ মনে করে এবং এই কিতাল করতে গিয়ে কোনো নিন্দুকের নিন্দায় পরোয়া করে না।
২। জামাআত শরীয়ত প্রতিষ্ঠার জন্য দাওয়াত ও কিতালকে অত্যাবশ্যক মনে করে এবং চেষ্টা করে, যেন এই দুটির প্রত্যেকটি অপরটিকে এগিয়ে নেয় এবং শক্তিশালী করে।
৩। জিহাদের ফরজ আদায়ের জন্য জামাআত নিজেকে শরীয়তের ঐসব সুস্পষ্ট নীতির মাঝে সীমাবদ্ধ রাখে, যা সালাফে-সালেহীন কুরআন ও সুন্নাহ’র আলোকে লিপিবদ্ধ করেছেন।
১- ফলে জামাআত শত্রুদের হত্যা করা, ওদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া এবং ওদের সম্পদকে গনিমত বানানোর ক্ষেত্রে কোনো তা’উয়ীল বা অস্পষ্ট কোনো অভিব্যক্তিকে ভিত্তি বানায় না, বরং শরীয়তের সুস্পষ্ট ও প্রতিষ্ঠিত দলীলকে ভিত্তি বানায়।
২- জামাআত নিজস্ব মুজাহিদদের এই সীমায় সীমাবদ্ধ রাখে যে, তারা যেন শত্রুর সাথে আচরণের ক্ষেত্রে, এমনকি রণাঙ্গনেও শরীয়তের মূলনীতি অনুসরণ করে এবং অসংগত ও অস্পষ্ট তা’উয়ীলের ভিত্তিতে কোনো সন্দেহজনক বিষয় অনুসরণ করা থেকে বিরত থাকে। কাজেই, কোনো ব্যক্তির জান ও মাল সন্দেহজনক অবস্থায় থাকলে, জামাআত নিজ সাথীদেরকে তা পরিহার করে উম্মতের ফকীহ আলেমগণের বিবৃত প্রতিষ্ঠিত নীতির মাঝে সীমাবদ্ধ থাকার আদেশ দেয়।
৪। জামাআত প্রত্যেক এমন লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা বানানো অথবা হত্যা করা থেকে বিরত থাকে, যাকে হত্যা করা শরীয়ত অনুযায়ী হয়তো জায়েয, কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের ফলে জিহাদের লাভ অপেক্ষা ক্ষতি বেশি হয় অথবা যা মুসলিম উম্মতের উপলব্ধির বাইরে এবং মুসলিম উম্মতকে জিহাদ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।
৫। জামাআত প্রত্যেক এমন পন্থায় অর্থ-সম্পদ নেয়া থেকে বিরত থাকে, যার কারণে জিহাদ ও মুজাহিদদের বদনাম হয়।
১- ফলে জামাআত এমন কাফের ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ-সম্পদ (ছিনিয়ে) নেয়া থেকে বিরত থাকে, যা শরীয়ত অনুযায়ী জায়েয, কিন্তু ঐ ব্যক্তি গরীব অথবা মাজলুম শ্রেণীর মানুষ হওয়ায় তাতে ইসলাম ও জিহাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাছাড়া জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহর অন্যতম একটি উদ্দেশ্য হলো, গরীব, অভাবী ও মাজলুম শ্রেণীকে শাসক শ্রেণীর জুলুম থেকে মুক্ত করে ইসলামের ছায়ায় নিয়ে আসা।
২- একই কারণে জামাআত গনিমতের তালিকায় এমন সুস্পষ্ট বস্তুকে নিশানা বানায়, যার ব্যাপারে কারও কোনো সন্দেহ না হয়।
৬। একইভাবে, মুখে কালিমা উচ্চারণ করা কোনো ব্যক্তিকে তাকফির করা, তার সাথে যুদ্ধ করা, তাকে হত্যা করার ব্যাপারে জামাআত নিজেকে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ’র সুস্পষ্ট ও প্রতিষ্ঠিত নীতির মাঝে সীমাবদ্ধ রাখে। পাশাপাশি প্রত্যেক এমন অনুপযুক্ত তা’উয়ীল থেকে নিজেকে বাঁচায়, যা শরীয়তের ভারসাম্যপূর্ণ রাস্তা থেকে মানুষকে বিচ্যুত করে। একইভাবে, জামাআতের সাধারণ সাথীদেরকেও এরকম স্পর্শকাতর বিষয়ের উপর কথা বলা থেকে বিরত রাখে এবং এসব বিষয়ে তাদেরকে হক্বপন্থী উলামায়ে কেরামের শরণাপন্ন হওয়ার নির্দেশ দেয় এবং তাদের দেয়া সীমারেখায় সীমাবদ্ধ রাখে।
৭। জামাআত শরঈ বিষয়গুলোতে এ অঞ্চলের হক্বপন্থী আলেমদের অনুসরণ করে এবং সমকালীন ঐসকল আলেম থেকে ‘মুস্তাফিদ’ ও উপকৃত হওয়াকে জরুরী মনে করে, যাদের তাকওয়া, ইলম ও অভিজ্ঞতা প্রতিষ্ঠিত ও স্বীকৃত। একইভাবে, নব-উদ্ভূত বিষয়গুলোতে তাঁদের রায়ের দিকে ফিরে যাওয়ার মত পোষণ করে।
৮। জামাআত আল-কায়েদা উপমহাদেশের নীতি হলো, সম্পূর্ণ মনযোগ কুফরি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধের উপর রাখা এবং অন্য কোনো পার্শ্বযুদ্ধে না জড়ানো।
৯। জামাআত যেসব লক্ষ্যবস্তুর উপর কাজ করে, প্রকাশ্যে তার দায় স্বীকার করে। যেসব লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলা করাকে ভুল মনে করে, তার ঘোষণা এই আচরণবিধির মাধ্যমে জাতিকে অবগত করছে। এরপরও যদি কখনও জামাআতের পক্ষ থেকে ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়ে যায়, তাহলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কাছে এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং জাতির সামনেও সেই ভুল স্বীকার করে ক্ষতিপূরণ ও সংশোধনের চেষ্টা করে। কারণ আখিরাতের পাকড়াও দুনিয়ার পাকড়াও থেকে অনেক গুণ বেশি কঠিন।
১০। উম্মতের কল্যাণকামী মুজাদ্দিদ শায়খ উসামা বিন লাদেন (রহিমাহুল্লাহ)-এর সময় থেকে আল-কায়েদা নিজেদের অপারেশনে সামরিক কৌশলের উপর বিশেষ মনযোগ দিয়ে আসছে। ফলে লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলা করার ব্যাপারে স্থান নির্বাচন, সময় ও উপলক্ষ্যের যথার্থতার উপর বিশেষভাবে খেয়াল রাখা হয়। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সীরাত মোবারকের আলোকে, আমরা এমন কৌশল অবলম্বনের চেষ্টা করি, যাতে সীমিত সরঞ্জামের মাধ্যমে অধিক থেকে অধিকতর ভালো ফলাফল অর্জন করা যায়।
আরও পড়ুন
Comment