Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ০৬ || জিহাদের পথে স্থায়ী ও অবিচল বিষয় সমূহ || - শাইখ ইউসূফ আল উয়াইরি [এর উপরে লেকচার দিয়েছেন ইমাম আনোয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ)] || ৭ম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ০৬ || জিহাদের পথে স্থায়ী ও অবিচল বিষয় সমূহ || - শাইখ ইউসূফ আল উয়াইরি [এর উপরে লেকচার দিয়েছেন ইমাম আনোয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ)] || ৭ম পর্ব

    আল-ক্বাদিসিয়াহ মিডিয়া
    কর্তৃক পরিবেশিত
    জিহাদের পথে স্থায়ী ও অবিচল বিষয় সমূহ
    -শাইখ ইউসূফ আল উয়াইরি
    [এর উপরে লেকচার দিয়েছেন ইমাম আনোয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ)||
    এর থেকে
    ৭ম পর্ব

    ==================================================
    ===============================
    অধ্যায়ঃ ৪


    চতুর্থ বৈশিষ্ট্যঃ জিহাদ কোন নির্দিষ্ট যুদ্ধ ক্ষেত্রের উপর নির্ভরশীল নয়

    ঐ সকল আলেমদেরকে বর্জন কর, যারা শাসকদের দারজায় গিয়ে ধরণা দেয় ...”
    -ইমাম আল-গাজালী رحمه الله


    চতুর্থ বৈশিষ্ট্যঃ জিহাদ কোন নির্দিষ্ট যুদ্ধ ক্ষেত্রের উপর নির্ভরশীল নয়

    আরও একটি সমস্যা মানুষের মাঝে রয়েছে। আর তা হল, যখন কোন নির্দিষ্ট যুদ্ধে জয়লাভ করে তারা বলে যে, জিহাদ করে ঠিক কাজ করেছে এবং তারা যদি কোন যুদ্ধে পরাজিত হয় তবে বলে যে, তারা যুদ্ধ করে ভুল করেছে। এটি একটি গুরুতর সমস্যা। এ কারণে লেখক এই বিষয়টি বেশ কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করেছেন।

    সাধারণ মানুষ ফলাফলের উপর ভিত্তি করে জিহাদের বিষয়টি উপলব্ধি বা অনুধাবণ করতে চায়। যদি একদল মুজাহিদীন কোন নির্দিষ্ট যুদ্ধে জয়লাভ করে তখন মানুষ বলে যে, তারা সঠিক পথের উপর প্রতিষ্ঠিত। আর যদি তারা কোন যুদ্ধে পরাজিত হয়, তবে তারা ভুল পথে রয়েছে বলে মনে করে। এটি একটি ভুল উপলব্ধি।

    রসূলুল্লাহ্ একদল আম্বিয়াকে কেয়ামতের দিন দেখবেন যাদের কোন অনুসারী থাকবেনা। এটা মানে কি যে সেসব আম্বিয়াগণ ব্যর্থ? না, বরং তারা তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন, পূর্ণরূপে, কিন্তু কেউ তাদের ডাকে সাড়া দেয়নি। যদি তাঁরা একজনকেও না পায়, তার সাথে ব্যর্থতার কোন সম্পর্ক নেই। কারণ, হিদায়াত আল্লাহর হাতে এবং কোন আম্বিয়া বা অন্য কারও হাতে না। আমরা কি বলতে পারি, রসূলুল্লাহ্ এর দাওয়াহ্ তাঁর নিজ চাচা আবু তালিবের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছিল? একটুও না। তিনি তাঁর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছেন এবং তাঁর থেকেও বেশি করেছেন। তাঁর চাচার অন্তর আল্লাহর হাতে ছিল, রসূলুল্লাহ্ -এর হাতে নয়।

    আমাদের ইতিহাসে এমন কিছু ঘটনা আছে। যেখানে মুসলিমরা কোন এক যুদ্ধ ক্ষেত্রে পরাজিত হয় এবং তাদেরকে বলা হতো যে, তারা আর কখনও নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারবে না। এগুলোর মাঝে সবচেয়ে জঘন্যতম যুদ্ধ ছিল আত-তাতারদের সাথে হিজরী ৬৬৬ সালেযখন তাতাররা ইরাকের আশ শামে প্রবেশ করেছিল এবং ৪০ দিন অবস্থান করেছিল, তারা সেই ৪০ দিনে ১০ লক্ষ এর উপর মানুষকে হত্যা করেছিল। যা গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২৫,০০০ জন হয়। তারা তখন আশ-শামের ভিতর অগ্রসর হতে থাকে এবং প্রতিটি যুদ্ধে মুসলিমদের পরাজিত করতে থাকে। মুসলিমরা সে সময় ভীষণ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। তারা অনুভব করছিল যে, তাতাররা একটি অপরাজেয় জাতি এবং তাদেরকে পরাজিত করা অসম্ভব। তাদের (তাতারদের) আর কিছু জায়গা দখল করতে বাকি ছিল, যাতে তারা পুরো মুসলিম সাম্রাজ্য দখল করতে পারত। কিন্তু কি ঘটেছিল? আল্লাহ্ মুসলিমদের এই পরীক্ষা দ্বারা পরিশুদ্ধ করেছিলেন এবং তারা তাদের দো‘আ এবং জিহাদের ক্ষেত্রে আন্তরিক হয়। তারা তখন তাতারদের ‘আইন-জালুত’ যুদ্ধে পরাজিত করে। এটি একটি সংকটময় পরাজয় ছিল এবং সেই সাথে ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ আবর্তন। যখন মুসলিমরা জয় লাভ করল, তারা তাদের শক্তির জন্য জয়লাভ করেনি। যেহেতু তারা তাদের অধিকাংশ শক্তি তাতারদের কাছে হারিয়েছিল। সুতরাং কেউ যদি যৌক্তিকতার উপর ভিত্তি করে তর্ক করে যে, মুসলিমদের প্রথমদিকে জয় লাভ করা উচিত ছিল, যেহেতু তাদের সৈন্যবাহিনী পরিপূর্ণ ছিল এবং তাদের প্রচুর সম্পদও ছিল। কিন্তু দেখা যায় যে শেষ সময় যখন তারা জয় লাভ করেছিল, তাদের সৈন্যসংখ্যা কমে গিয়েছিল এবং সম্পদও সীমিত হয়ে পড়ে। কেউই কখনও যুক্তি তর্কের মাধ্যমে বা যুক্তির আঙ্গিকে জয় পরাজয় ব্যাখ্যা করতে পারেনা। মুসলিমরা তাদের সংখ্যা বা সম্পদের উপর ভিত্তি করে জয় লাভ করে না। তারা আল্লাহর ইচ্ছায় জয়লাভ করে। জয় আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি উপহার।

    আমাদের প্রস্তুতিঃ

    আমাদেরকে আমাদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে, অতঃপর লড়াই করতে হবে। যদি আমরা হেরে যাই, আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি এবং আমাদের জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ-তে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে আমাদের যে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল তা পূর্ণরূপে পালন করেছি। এক্ষেত্রে আমরা আল্লাহর উপর ফলাফল ছেড়ে দেই। যদিও প্রস্তুতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত আজ যখন যুদ্ধের পদ্ধতিতে উন্নতি সাধিত হয়েছে এবং সেই সাথে জটিলতর হয়েছে। কোন মুসলিম যদি জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ-র ব্যাপারে অত্যন্ত প্রত্যয়ী হয়, তাহলে তার প্রস্তুতির জন্য সময় দেয়া প্রয়োজন। কোন মুসলিম যদি পর্যাপ্ত প্রস্তুতির অভাবে পরাজিত হয়, তবে সে জন্য সে কৈফিয়ৎ দিতে বাধ্য থাকবে। উপরন্তু কোন মুসলিম যদি জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ-র জন্য একেবারেই প্রস্তুতি গ্রহণ না করে; তবে সে অনুরূপ কাজের কারণে বা অনুরূপ অবস্থায় পাপ অর্জন করছে, কারণ যখন জিহাদ ফারদ্ আল-আইন, তখন প্রস্তুতিও ফারদ্ আল আইন এবং জিহাদ যখন ফারদ্ আল কিফায়াহ, তখন প্রস্তুতিও ফারদ্ আল কিফায়া। সুতরাং জিহাদের প্রস্তুতির হুকুম জিহাদের হুকুমের অনুরূপ। যদি আমরা বলি যে জিহাদ যুদ্ধের উপর নির্ভর করে ,তবে তা জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং হতাশা বিস্তৃত হওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবেই কাজ করবে। আমরা আমাদের সংখ্যা বা প্রস্তুতির উপর ভিত্তি করে যুদ্ধ করছি না।

    এটা সম্ভব যে আমাদের সংখ্যা প্রত্যেক ক্ষেত্রে আমাদের শত্রুদের থেকে বেশি এবং তবুও আমরা পরাজিত হয়েছি। কেন? কারণ আমরা জয়লাভের শর্তসমূহ পূর্ণ করিনি। আল্লাহ্ আমাদের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করতে চান । তখন আমরা ইনশাআল্লাহ্ জিতব।

    আমরা জয়লাভের জন্য দায়বদ্ধ না। আল্লাহ্ আমাদের যে কাজের আদেশ দিয়েছেন, আমরা সেই কাজ পালন করি কিনা, আমরা সে ব্যাপারে দায়বদ্ধ। আমরা জিহাদের জন্য যুদ্ধ করি, কারণ তা আমাদের উপর ফারদ্। আমরা জয়লাভ বা পরাজয় বরণ করার উদ্দেশ্যে জিহাদ করি না, আমাদেরকে প্রস্তুতি এবং জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহর ইবাদত পরিপূর্ণ করার ক্ষেত্রে আমাদের অংশের দায়িত্ব পালন করতে হবে, অতঃপর আমাদেরকে আল্লাহর কাছে দো‘আ করতে হবে। ঠিক যেমনি করে ‘বদরের’ যুদ্ধের আগে রসূলুল্লাহ একজন মানুষের পক্ষে সর্বোচ্চ যা করার তাই করেছিলেন, যেমন সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা, মুসলিমদের যুদ্ধ করতে উৎসাহ প্রদান করা,পদমর্যাদা বিস্তৃত করা, সঠিক জায়গা নির্বাচন এবং আরও অনেক কিছু। যখন তা সব করা শেষ হল, তখন তিনি কি করলেন? তিনি একটি আলাদা নির্জনে চলে গেলেন এবং আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে একটি দীর্ঘ দো‘আ করলেন; যাতে আল্লাহ্ মুসলিমদের বিজয় দান করেন।



    আরও পড়ুন
    ৬ষ্ঠ পর্ব ------------------------------------------------------------------- ৭ম পর্ব
    Last edited by tahsin muhammad; 09-25-2023, 07:15 PM.

  • #2
    أَينَما تَكونوا يُدرِككُمُ المَوتُ وَلَو كُنتُم فى بُروجٍ مُشَيَّدَةٍ ۗ وَإِن تُصِبهُم حَسَنَةٌ يَقولوا هٰذِهِ مِن عِندِ اللَّهِ ۖ وَإِن تُصِبهُم سَيِّئَةٌ يَقولوا هٰذِهِ مِن عِندِكَ ۚ قُل كُلٌّ مِن عِندِ اللَّهِ ۖ فَمالِ هٰؤُلاءِ القَومِ لا يَكادونَ يَفقَهونَ حَديثًا
    [78] তোমরা যেখানেই থাক না কেন; মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও অবস্থান কর, তবুও। বস্তুতঃ তাদের কোন কল্যাণ সাধিত হলে তারা বলে যে, এটা সাধিত হয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর যদি তাদের কোন অকল্যাণ হয়, তবে বলে, এটা হয়েছে তোমার পক্ষ থেকে, বলে দাও, এসবই আল্লাহর পক্ষ থেকে। পক্ষান্তরে তাদের পরিণতি কি হবে, যারা কখনও কোন কথা বুঝতে চেষ্টা করে না।


    [79] ما أَصابَكَ مِن حَسَنَةٍ فَمِنَ اللَّهِ ۖ وَما أَصابَكَ مِن سَيِّئَةٍ فَمِن نَفسِكَ ۚ وَأَرسَلنٰكَ لِلنّاسِ رَسولًا ۚ وَكَفىٰ بِاللَّهِ شَهيدًا
    [79] আপনার যে কল্যাণ হয়, তা হয় আল্লাহর পক্ষ থেকে আর আপনার যে অকল্যাণ হয়, সেটা হয় আপনার নিজের কারণে। আর আমি আপনাকে পাঠিয়েছি মানুষের প্রতি আমার পয়গামের বাহক হিসাবে। আর আল্লাহ সব বিষয়েই যথেষ্ট-সববিষয়ই তাঁর সম্মুখে উপস্থিত।

    [154] ثُمَّ أَنزَلَ عَلَيكُم مِن بَعدِ الغَمِّ أَمَنَةً نُعاسًا يَغشىٰ طائِفَةً مِنكُم ۖ وَطائِفَةٌ قَد أَهَمَّتهُم أَنفُسُهُم يَظُنّونَ بِاللَّهِ غَيرَ الحَقِّ ظَنَّ الجٰهِلِيَّةِ ۖ يَقولونَ هَل لَنا مِنَ الأَمرِ مِن شَيءٍ ۗ قُل إِنَّ الأَمرَ كُلَّهُ لِلَّهِ ۗ يُخفونَ فى أَنفُسِهِم ما لا يُبدونَ لَكَ ۖ يَقولونَ لَو كانَ لَنا مِنَ الأَمرِ شَيءٌ ما قُتِلنا هٰهُنا ۗ قُل لَو كُنتُم فى بُيوتِكُم لَبَرَزَ الَّذينَ كُتِبَ عَلَيهِمُ القَتلُ إِلىٰ مَضاجِعِهِم ۖ وَلِيَبتَلِىَ اللَّهُ ما فى صُدورِكُم وَلِيُمَحِّصَ ما فى قُلوبِكُم ۗ وَاللَّهُ عَليمٌ بِذاتِ الصُّدورِ
    [154] অতঃপর তোমাদের উপর শোকের পর শান্তি অবতীর্ণ করলেন, যা ছিল তন্দ্রার মত। সে তন্দ্রায় তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ ঝিমোচ্ছিল আর কেউ কেউ প্রাণের ভয়ে ভাবছিল। আল্লাহ সম্পর্কে তাদের মিথ্যা ধারণা হচ্ছিল মুর্খদের মত। তারা বলছিল আমাদের হাতে কি কিছুই করার নেই? তুমি বল, সবকিছুই আল্লাহর হাতে। তারা যা কিছু মনে লুকিয়ে রাখে-তোমার নিকট প্রকাশ করে না সে সবও। তারা বলে আমাদের হাতে যদি কিছু করার থাকতো, তাহলে আমরা এখানে নিহত হতাম না। তুমি বল, তোমরা যদি নিজেদের ঘরেও থাকতে তবুও তারা অবশ্যই বেরিয়ে আসত নিজেদের অবস্থান থেকে যাদের মৃত্যু লিখে দেয়া হয়েছে। তোমাদের বুকে যা রয়েছে তার পরীক্ষা করা ছিল আল্লাহর ইচ্ছা, আর তোমাদের অন্তরে যা কিছু রয়েছে তা পরিষ্কার করা ছিল তাঁর কাম্য। আল্লাহ মনের গোপন বিষয় জানেন।
    পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

    Comment

    Working...
    X