আল-ক্বাদিসিয়াহ মিডিয়া
কর্তৃক পরিবেশিত
জিহাদের পথে স্থায়ী ও অবিচল বিষয় সমূহ
-শাইখ ইউসূফ আল উয়াইরি
[এর উপরে লেকচার দিয়েছেন ইমাম আনোয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ)||
এর থেকে
১০ম পর্ব
==================================================
===============================
কর্তৃক পরিবেশিত
জিহাদের পথে স্থায়ী ও অবিচল বিষয় সমূহ
-শাইখ ইউসূফ আল উয়াইরি
[এর উপরে লেকচার দিয়েছেন ইমাম আনোয়ার আল-আওলাকি (রহিমাহুল্লাহ)||
এর থেকে
১০ম পর্ব
==================================================
===============================
ইসলামে বিজয়ের ১১ টি অর্থ রয়েছেঃ
বিজয়ের প্রথম অর্থঃ ৮টি প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে বিজয়
বিজয়ের ষষ্ঠ অর্থঃ জান ও মালের কোরবানী
তুমি যদি এই পথের উপর অবস্থান কর, তবে তুমি বিজয় লাভ করেছ, কারণ তুমি তোমার জান, মাল, সময় আল্লাহর কারণে কোরবানী করতে আগ্রহী। এই দ্বীনের জন্য কোরবানিই হল বিজয়।
যখন তুমি তোমার সম্পদ, অস্ত্র-সস্ত্র এবং সংখ্যার দিক থেকে দূর্বল হওয়া সত্ত্বেও শত্রুদের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছ, যদিওবা বাহ্যিকভাবে তারা তোমার থেকে এ সব ক্ষেত্রে বহু গুণ শক্তিশালি আর তাদের বাহিনী দেখে মনে হচ্ছে পরাজয় প্রায় অবশ্যম্ভবী। তোমার এই দাঁড়ানোই হচ্ছে বিজয়ের একটি সুস্পষ্ট চিহৃ। এটা এমন বিষয় যা দেখে সহজে একজন মানুষ প্রভাবিত হয়। এটাই তাদের সাহস এবং দৃঢ় বিশ্বাসের প্রমাণ, যে কারণে তারা কোরবানী করতে প্রস্তুত। আমরা আজকে সেই নমুনা ইরাকে দেখি, মুসলিমদের একটি ক্ষুদ্র অংশ আল্লাহর উদ্দেশ্যে উঠে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করতে আগ্রহী হয়েছে, এমন এক ফৌজের বিরুদ্ধে যারা প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ, অস্ত্র-সস্ত্র, সংখ্যা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে তাদের চেয়ে অধিকতর উন্নত। এটা হল নৈতিক বিজয়। ইতিহাস তাদের কথা মনে রাখে না, যারা মৃত্যুর হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে চেষ্টা করেছিল।
মুসলিমদের অভ্যন্তরীন দলসমূহ আপনারা যাদেরকে পরাজিত করছেনে, তারা হল সেসব লোক যারা জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ কে ঘৃণা করে। একমাত্র সবরই মুজাহিদদের এ পথে চলার চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। মুজাহিদীনরা যে দো‘আ করে কোরআনের ভাষায় তা হল, যখন যুদ্ধক্ষেত্রে জালুত ও তার সৈন্যবাহিনীর সম্মুখীন হল তখন বলতে লাগল,
﴿ وَلَمَّا بَرَزُوا لِجَالُوتَ وَجُنُودِهِ قَالُوا رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ ﴾
“তারা যখন যুদ্ধে জালূত ও তার সৈন্যবাহিনীর সম্মুখীন হল, তখন তারা বলল, হে আমাদের রব! আমাদেরকে ধৈর্য্য দান কর, আমাদের পা অবিচল রাখ এবং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য কর।”
খুবাইব (রাঃ) কুফ্ফার কর্তৃক আটককৃত হয়ে মক্কায় আসেন। তারা তাঁকে শূলীবিদ্ধ করে। যখন তাঁকে শূলে চড়ানোর জন্য নেয়া হয় এবং শত্রুরা তাঁর দিকে তাদের অস্ত্রসমূহ তাক করে, তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, “তুমি কি তোমার বদলে মুহাম্মদকে তোমার অবস্থায় পছন্দ করবে?” খুবাইব (রাঃ) বলেনঃ “মুহাম্মদ ﷺ এর পায়ে একটি কাঁটা ফোটার বদলে আমি বরং মরতে পছন্দ করব এবং মুহাম্মদ ﷺ-কে মৃত্যু নয়, একটা কাঁটার আঘাত থেকে বাঁচাতে আমি আমার জীবন ত্যাগ করা এবং মৃত্যু বরণ করা পছন্দ করি।” -এটাই হচ্ছে বিজয়। এটা প্রতীয়মাণ করে সাহাবাদের ঈমান কত মজবুত ছিল, রসূলুল্লাহ্ ﷺ এর প্রতি তাদের কত ভালবাসা ছিল। মুজাহিদীনগণ বলে যে, তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলকে ভালবাসে এবং তাঁদের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতেও তাঁরা প্রস্তুত। আজ যারা মুজাহিদীন নয়, তারা দাবী করে যে, তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল ﷺ-কে ভালবাসে, যদিও তারা ঘুরে বেড়ায়, নাচ-গান করে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে আরাম করে বসে থাকে, বিভিন্ন ধরনের খাদ্য গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান উদ্যাপন করে। এরা সবচেয়ে নির্বোধ।
তুমি কিভাবে বলতে সাহস কর যে, তুমি আল্লাহর দ্বীনকে ভালবাস এবং তুমি জানো যে, আল্লাহর কিতাবের অবমাননা করা হচ্ছে এবং তুমি কিছুই করছ না? যখন তুমি জানো যে, তারা কুরআনকে টয়লেটে নিক্ষেপ করছে এবং তুমি তোমার অস্ত্র তুলে ধরছ না এবং আল্লাহর কারণে যুদ্ধ করছ না? যখন তুমি জানো যে, তারা রসূলুল্লাহ্ ﷺ-কে অসম্মানিত করেছে তাঁর ব্যাঙ্গাত্মক চিত্র অঙ্কনের মাধ্যমে? যখন তুমি জানো যে, তারা মুসলিম যুদ্ধ বন্দীদের শারিরীক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করছে? যখন তুমি জানো যে, তারা মুসলিম যুদ্ধ বন্দীদের বিবস্ত্র করে এবং তাদের বাজে ছবি তুলে, উম্মাহকে বিব্রত এবং অবমাননা করছে? যখন তুমি জানো যে. সত্য ইসলামের উপর তারা বিকৃত ইসলামিক অধ্যায়ের প্রবর্তন করছে? যখন তুমি জানো যে, ইরাক, ফিলিস্তিনে, আফগানিস্তানে তারা নিরপরাধ বেসামরিক মুসলিমদের হত্যা করছে? যখন তুমি জানো যে, তারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় মুজাহিদীনদের সাথে যুদ্ধ করছে? যখন তুমি জানো যে, তারা মুসলিম ভূমিতে আগ্রাসন চালিয়েছে? যখন তুমি জানো যে, তারা কুরআনের প্রতিটি পৃষ্ঠা টয়লেট পেপার হিসেবে ব্যবহার করছে? যখন তুমি জানো যে তাদের সেনাবাহিনীর প্রধান পরিষ্কার এবং প্রকাশ্যভাবে আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের ﷺ বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছে? তুমি কিভাবে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ভালবাসার দাবী কর, যখন তুমি জানো এসব অন্যায় হচ্ছে এবং তুমি কিছুই করছ না? তোমার জন্য কি তোমার বাড়িতে বোমা পড়তে হবে, যাতে তুমি উঠে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করবে? তখন অনেক দেরী হয়ে যাবে। মানসিকভাবে হতাশ হয়ে কিছু করা যাবে না। তুমি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাস দাবী করার সাথে সাথে, এই বিশ্বাসের বলে সবকিছু করতে পারবে। সাহাবাগণ রসূলুল্লাহ্ ﷺ এর আদেশের অধীনে অনেক তথাকথিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কি এ ক্ষেত্রে বলতে পারবে যে, মহানবী ﷺ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন এবং তিনি হিকমাহ অবলম্বন করেননি? কোন সুস্থ এবং অনুশীলনরত মুসলিম কি এমন বলার সাহস করতে পারে? কি বলার আছে, আজ যখন একটি কাফির আল্লাহ্ এবং আমাদের রসূল ﷺ-কে অপমান করে আর আমরা বলি যে, তাদের সাথে আমাদের শান্তিপূর্ণ আলোচনা করা উচিত? আমরা ইসলামের সঠিকপথ থেকে কতখানি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছি এবং এই সত্যপথকে কিভাবে আমাদের অসাড় যুক্তি দিয়ে পরিবর্তন করছি? কিছু মুসলিম বিতর্ক করে যে, এরকম হত্যা অভিযান চালানোর জন্য খলিফার প্রয়োজন। এই ওজর একেবারেই ভিত্তিহীন এবং আমাদের ভীরুতার পরিচায়ক।
ঠিক এসময় আমরা সেইসব ঘটনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি যা আমাদের কাছে মিথ্যা হতে সত্যকে পৃথক করে দেখাচ্ছে। এর পূর্বে সবকিছু ধোয়াটে ছিল এবং তুমি জানতে না, কে সত্য মু’মিন এবং কে মুনাফিক। কিন্তু এরকম ঘটনাসমূহ সত্য ঈমানকে নিফাকের মধ্য হতে প্রকাশ করে। আমরা আরও জানি যে, নিফাকের ঘটনা মদীনায় আত্মপ্রকাশ করেছিল এবং তা কখনই মক্কায় ছিল না। কেন? কারণ মদীনায় জিহাদ ছিল, আল্লাহ্ বলেনঃ
﴿ أَوَلَا يَرَوْنَ أَنَّهُمْ يُفْتَنُونَ فِي كُلِّ عَامٍ مَرَّةً أَوْ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ لَا يَتُوبُونَ وَلَا هُمْ يَذَّكَّرُونَ ﴾
“তারা কি দেখে না যে, তাদেরকে প্রতি বৎসর একবার বা দু’বার বিপর্যস্ত করা হয়? তারপরও তারা তওবা করে না এবং উপদেশ গ্রহণ করে না।”
এই আয়াত মুনাফিকদের উদ্দেশ্যে নাযিল হয়েছে। আল্লাহ্ তাদেরকে বলছেন যে, প্রতি বছর তাদের সামনে একটি বা দু’টি ঘটনার অবতারণা হয়। এই ঘটনাগুলো কি? রসূলুল্লাহ্ ﷺ এর সামনে ঈমান এবং নিফাক প্রকাশিত হয়ে পড়ে।
সহীহ আল-বুখারী-তে উখদুদ (গর্তের) বাসীদের কাহিনী লিপিবদ্ধ আছে, বিজয় কাকে বলে এই কাহিনী তার বিশাল উত্তর। তারা একটি জাতি বা দল ছিল যারা আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছিল এবং সে সময়কার রাজার সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল। রাজা তাদের বলেছিল যে, হয় ধর্ম ত্যাগ কর এবং বেঁচে থাক অথবা নিজ ধর্মে থাক এবং মৃত্যু বরণ কর। তারা মৃত্যুকে বেছে নিল। তাদের মৃত্যুর পদ্ধতি এত ভয়বাহ ছিল যে, তারা যা করেছিল আমাদের অবশ্যই তার প্রশংসা করা উচিত। তাদেরকে বলা হয়েছিল তারা যেন জ্বলন্ত কাঠ দ্বারা পূর্ণ গর্তসমূহে জীবন্ত ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা একের পর এক ঝাঁপ দেয় এবং আগুনে পুড়ে মৃত্যুবরণ করে। তারা এই পৃথিবীর আগুনকে পরকালের আগুনের বিনিময়ে বেছে নিয়েছিল। সেখানে সদ্যজাত একটি শিশুসন্তানসহ মা উপস্থিত ছিলেন, যাদেরকে আগুনে ঝাঁপ দিতে বলা হয়েছিল। যখন সেই মা গর্তের খুব কাছে চলে আসে, সে ইতঃস্তত বোধ করে, তখন আল্লাহ্ এই সদ্যজাত শিশু সন্তানের মুখে কথা ফুটিয়ে দেন এবং সে বলতে থাকে। “হে মা! তুমি তো সৎ পথেরই অনুসরণ করছ, সুতরাং দৃঢ় থাক।” এরপর সে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং মৃত্যুবরণ করে। এই মহিলা প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছিল আর তা হল গর্তের কাছে যাওয়া। কিন্তু যখন সে ইতস্তত করল, আল্লাহ্ তাকে সাহায্য করলেন। এভাবে তুমি যদি আল্লাহর পথে একটি পদক্ষেপ দাও, আল্লাহ্ তোমার দিকে অনেক পদক্ষেপ দিবেন। তুমি যদি আল্লাহর দিকে চলতে শুরু কর, তিনি তোমার দিকে দৌড়ে আসবেন। এ কাহিনীর সারমর্ম হল, প্রথমে পদক্ষেপ নেয়া এবং তুমি যদি এই পথে দূর্বল হয়ে পড়, আল্লাহ্ তোমাকে সাহায্য করবেন, যদি তুমি ইখলাসের সাথে শুরু করে থাক। সুতরাং, আল্লাহ্ এই শিশুকে কথা বলানের মাধ্যমে মহিলাকে কিরামাহ দেখালেন, শুধুমাত্র তাদের রক্ষা করার জন্য। পার্থিব ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে তারা সবাই পরাজিত হয়েছিল (!)। তাদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছিল এবং রাজা তাদের দ্বীনকে নির্মূল করতে সফল হয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও আল্লাহ্ তাদের সম্পর্কে বলেনঃ “এটাই বড় বিজয়।”
বিজয়ের সপ্তম অর্থঃ তোমার আদর্শের বিজয়
তোমার আদর্শের বিজয় হচ্ছে বিজয়ের সপ্তম অর্থ। আদর্শের সমারোহে তোমার আদর্শই সর্বোৎকৃষ্ট। তোমার আদর্শ এবং মূলনীতি জয়ের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। কখনও এটা সত্যিকার অর্থে জয়ী হয়, যখন তুমি তোমার রক্ত দিয়ে এর মূল্য পরিশোধ কর। ইব্রাহিম (আঃ) যুক্তির মাধ্যমে তার নিজ গোত্রের বিরুদ্ধে তাঁর এই আদর্শে জয়ী হয়েছেন। আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
﴿أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِي حَاجَّ إِبْرَاهِيمَ فِي رَبِّهِ أَنْ آَتَاهُ اللَّهُ الْمُلْكَ إِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ رَبِّيَ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ قَالَ أَنَا أُحْيِي وَأُمِيتُ قَالَ إِبْرَاهِيمُ فَإِنَّ اللَّهَ يَأْتِي بِالشَّمْسِ مِنَ الْمَشْرِقِ فَأْتِ بِهَا مِنَ الْمَغْرِبِ فَبُهِتَ الَّذِي كَفَرَ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ﴾
“তুমি কি ঐ ব্যক্তিকে দেখ নাই, যে ইব্রাহীমের সাথে তাঁর রব সম্বন্ধে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিল, যেহেতু আল্লাহ্ তাকে কর্তৃত্ব দান করেছিলেন। যখন ইব্রাহীম বলল, তিনি আমার রব যিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান, সে বলল, আমিও তো জীবন দান করি ও মৃত্যু ঘটাই। ইব্রাহীম বলল, আল্লাহ্ সূর্যকে পূর্ব দিক হতে উদয় করান, তুমি তাকে পশ্চিম দিক হতে উদয় করাও। অতঃপর যে কুফরী করেছিল, সে হতবুদ্ধি হয়ে গেল। আল্লাহ্ যালিম সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।”
সূরা বুরুজে ছেলেটির কাহিনী যা গর্তের ঘটনার জন্ম দেয় তা হচ্ছে, রাজাটি ছেলেটিকে হত্যা করতে চেয়েছিল। রাজার লোকেরা তাকে পর্বত হতে নিক্ষিপ্ত করে এবং সমুদ্রে ডুবিয়ে দিতে চায়। কিন্তু প্রত্যেকবার রাজা ব্যর্থ হয়। ছোট ছেলেটি তখন রাজার কাছে এল এবং বলল, “যদি তুমি আমাকে হত্যা করতে চাও, তবে আমার একটি তীর নাও এবং বল বিসমিল্লাহ; অতঃপর আমাকে আঘাত কর,তাহলে তুমি আমাকে মারতে পারবে। কিন্তু তোমাকে তা করতে হবে আল্লাহর নামে।” ছোট ছেলেটি আরেকটি শর্ত জুড়ে দিল যে, রাজাকে তা প্রত্যেকের সামনে করতে হবে। যখন প্রত্যেকে দেখল যে, রাজা এ তরুণকে আল্লাহর নামে হত্যা করতে সমর্থ হল, তখন কি ঘটল? তখন তারা সবাই মুসলিম হয়ে গেল এবং এটা ঠিক তাই, যা ছোট ছেলেটি চেয়েছিল এবং ঠিক তা, যা রাজা এড়িয়ে যেতে চেয়েছে। রাজা এই তরুণকে নির্মূল করতে চেয়েছিল তার বিশ্বাসের কারণে এবং এই কারণে প্রত্যেকে মুসলিম হয়ে গেল। সে এই তরুণের ‘দাওয়া’-কে ভয় পেয়েছিল এবং এখন তার এই দাওয়া পুরো রাজত্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এখানে তরুণটি দাওয়ার জন্য মূল্য পরিশোধ করেছে এবং এ মূল্য ছিল তার নিজের রক্ত। আমরা আমাদের সমসাময়িককালে সাইয়েদ কুতুবের رحمه الله মত মানুষদের দেখি। তিনি কালি এবং নিজ রক্ত দিয়ে লিখেছেন। শায়খ আব্দুল্লাহ আজ্জাম رحمه الله এবং শায়খ ইউসুফ আল উয়াইরি رحمه الله । তারা অত্যন্ত আশ্চর্যজনক বই লিখেছেন এবং তাঁদের মৃত্যুর পর এসব বইকে জীবন্ত করতে আল্লাহ্ যেন তাঁদের আত্মাকে এসব বইয়ের শব্দের মধ্যে প্রবেশ করে দিয়েছেন। এই ত্যাগ তাঁদের এই শব্দগুলোকে নতুন জীবন দিয়েছে।
রসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, “একটি তাইফাহ্ সব সময়ে বিজয়ী থাকবে।” এখানে বিজয়ী থাকার অর্থ এই নয় যে তারা সব সময়ে যুদ্ধ ক্ষেত্রে জয় লাভ করতে থাকবে; বরং বিজয়ী থাকা অর্থ হচ্ছে তাদের দাওয়াহ্ সব সময়ে চালু থাকবে। তারা যুদ্ধে হেরে যেতে পারে কিন্তু তাদের দাওয়াহ্ বিজয় লাভ করবে এবং সর্বত্র ছড়িয়ে পরবে। কেউই তাদের দাওয়াহ্-কে বন্ধ করতে পারবেনা। এটি হচ্ছে সেই আদর্শ যার মাধ্যমে এই দলকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম শক্তিশালী রাখবে।
আরও পড়ুন
Comment