Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ১১ || “ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোর সমীপে দরদমাখা আহবান”|| ‘গনতান্ত্রিক রাজনীতি দ্বীনি ভাইদের ক্ষমতায়নের কারণ নাকি দুর্বলতার কারণ?!!’ ।। উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ || ৬ষ্ঠ পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ১১ || “ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোর সমীপে দরদমাখা আহবান”|| ‘গনতান্ত্রিক রাজনীতি দ্বীনি ভাইদের ক্ষমতায়নের কারণ নাকি দুর্বলতার কারণ?!!’ ।। উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ || ৬ষ্ঠ পর্ব

    আন-নাসর মিডিয়া পরিবেশিত
    “ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোর সমীপে দরদমাখা আহবান”||
    তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হও!|| তৃতীয়পর্ব।।
    ‘গনতান্ত্রিক রাজনীতি দ্বীনি ভাইদের ক্ষমতায়নের কারণ নাকি দুর্বলতার কারণ?!!’।।
    উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ এর থেকে || ৬ষ্ঠ পর্ব


    ==================================================
    =====

    সুপ্রিয় সূধীমন্ডলী!

    এটাই হচ্ছে প্রকৃত তত্ত্ব কিন্তু আলোচনাকে সামনে বাড়ানোর প্রয়োজনে...যদি আমরা মেনেও নিই যে, তা দ্বীনদার ভাইদের জিতের ফিরিস্তিতাহলে প্রশ্ন হলো: এই জিতের ফিরিস্তি কি আপনাদেরকে রাজনৈতিক নির্বাচন দিয়েছে? আপনারা অধিক ভোট পেয়েছেন বলেই কি সংবিধানে এই ধারাগুলো সংযুক্ত করা হয়েছে? নাকি বিষয়টি সম্পূর্ণ তার উল্টো?! প্রকৃত বাস্তবতা হলো: এই নামমাত্র পরিবর্তনও আপনারা তখনই করতে পেরেছেন, যখন আপনারা জনগণকে ‘নাহি আনিল মুনকার’ তথা মন্দকাজের প্রতিরোধ শিরোনাম দিয়ে রাস্তায় নামাতে পেরেছেনতারা শরীয়ত প্রতিষ্ঠার খাতিরে গুলি ও লাঠিচার্জ এবং সরকারের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেএই বিজয়াবলি লাভের কারণ এই নয় যে, পার্লামেন্টে আপনাদের ডিজিটাল শক্তি বেশী ছিল, বরং পার্লামেন্টের বাহিরে আপনাদের প্রতিবাদ এমন একটি প্রতিরোধ ছিল; যার কারণে শাসকশ্রেণি কয়েকটি জিনিস মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল। যখন ১৯৪৯ খৃষ্টাব্দে প্রস্তাবনামূলক দাবি গৃহীত হওয়ার আইন পাশ হয়, তখনকার সময়ে আপনাদের কতটি সিট ছিল? তখন তো আইন পরিষদে আপনাদের শুধু একটি সিট ছিল। পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালে যখন সংবিধান প্রণিত হয়, তখন তো আপনাদের দলসমূহ সবচেয়ে খারাপ পরাজয়ের শিকার হয়েছিলসেই সময় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শরীয়ত প্রতিষ্ঠার নামে আপনারা মন্দকাজ থেকে বাঁধাপ্রদানের যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন, সেই আন্দোলনের ভীতির কারণেই সংবিধানে ইসলামী ধারাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল...আর এই ধারাগুলো কাদের হাতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল? কে ১৯৭৩ সালের এই তথাকথিত ইসলামী সংবিধানকে পাশ করেছিলেন? এই ধোঁকাবাজির “সৌভাগ্য” প্রধানমন্ত্রী ও তার দলের অর্জিত হয়েছে, যার দ্বীন বিদ্বেষ ও ছল-ছাতুরীর উপর আপনারা সবাই ঐক্যমত পোষণ করেছেন।

    এমনিভাবে কাদিয়ানীদেরকে যখন কাফির বলে ঘোষণা করা হয়, তখন পার্লামেন্টে আপনাদের কতটি সিট ছিল? তখন নামকা ওয়াস্তে আপনাদের কিছু সিট ছিলকিন্তু আপনাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এসেম্বলির ভিতরে আপনাদের থেকে ভিন্ন মতাদর্শিক এবং রাজনৈতিক বিরোধীরাও আপনাদের জন্য ভোট প্রদান করে। এখন বলুন তো! কেন এই বিরোধীরা আপনাদেরকে সমর্থন করেছিল? কেন আপনাদের সামনে তারা হাঁটু গেড়ে ছিল? তাহলে শুনুন- তারাখতমে নবুওয়াতআন্দোলনের কারণে হাঁটু গেড়েছিলখতমে নবুওয়াতেরআন্দোলন কোন ব্যালেট বক্সের আন্দোলন ছিল না তা ছিল না ছোট বক্সে কাগজ ফেলানোর কোন কারিশমা বরং তা ছিল মন্দকাজ থেকে বাঁধা প্রদান করার আন্দোলন আর তা এমন একটি আন্দোলন ছিল; যেখানে সাধারণ জনগণ কুরবানী দিয়েছেন, রক্তের নযরানা পেশ করেছেন এবং প্রতিদিন কয়েকজন মুসলমান শহীদ হয়েছেন

    অন্যদিকে তার বিপরীত চিত্র দেখুন! আপনাদের এমন একটা সময় এসেছিল, যখন আপনাদের নিকট নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশী সংখ্যক সিট ছিল ২00২ সালের নির্বাচনে আপনারা জাতীয় পরিষদের 63 টি আসন পেয়েছেন। সীমান্তে সম্পূর্ণরূপে আপনাদের সরকার ছিল এবং বেলুচিস্তান সরকার আপনাদের অবদান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল। এটা এমন একটা বিজয় ছিল, যা ইতিপূর্বে কখনো অর্জিত হয়নি এবং ভবিষ্যতে অর্জিত হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। এখন বলুন! সেই সময় ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে আপনারা কি কোন অগ্রগতি করতে পেরেছিলেন ? আপনারা কি আইনী ও সাংবিধানিক সংস্কার করতে পেরেছিলেন?!

    আসলে সত্য কথা হলো: আপনাদের এই সাফল্য অর্জিত হওয়ার মূল কারণ ছিল আফগানিস্তানের উপর আমেরিকার আক্রমণ ইমারতে ইসলামী আফগানিস্তানের পতন সাধারণ জনগণ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করতে ছিল, সীমান্ত, উপজাতীয় ও বেলুচিস্তানের জনগণের হৃদয়ে চোট ও রাগ ছিল, এমতাবস্থায় জেনারেলদের জন্য পাকিস্তানের ভূমিতে আমেরিকার গোলামী করাটা কোন সহজ ব্যাপার ছিল না। তজ্জন্য এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভকে থামানো জরুরী ছিল। আবার এই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তাতে তালেবানদের পদ্ধতিতে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করা হয়। আর সাধারণ জনগণও এই শ্লোগানের উপর ভিত্তি করে আপনাদেরকে সমর্থন করে।[1] কিন্তু যখন আপনারা ক্ষমতার মহলে পৌঁছেছেন, তখন প্রতিবাদ আর প্রতিবাদ হিসাবে বাকি ছিল নাএই পাঁচ বছরে সরকার ও সেনাবাহিনী সবচেয়ে খারাপ অপরাধগুলি করেছেযে পার্লামেন্টে তখন আপনারা একটি বড় সংখ্যা ছিলেন, সেই সময়ে নারী অধিকারের নামে সেই বিলটি পাস হয়, যাকে আপনারা নিজেরা “যিনা বিল” বলে নামকরণ করেছিলেন। ফলশ্রুতিতে সম্মতিসহ যিনার অনুশীলন করা কোন আইনি অপরাধ হিসাবে বাকি থাকেনি। এই সময়ে দুর্বৃত্ততা, অনৈতিকতা, ধর্ম বিদ্বেষ গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়; উদারতাবাদ ও বুদ্ধিবৃত্তিক দেদীপ্যমান প্রদর্শনীর নামে ক্ষমতার পূজায় লিপ্ত হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমেরিকার হুকুমের গোলামে পরিণত হয়। এখানে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ শহরে সি,আই এসে কেন্দ্র স্থাপন করা শুরু করে দেয় প্রত্যেক শহরে শহরে আমেরিকানদের হাতে দ্বীনদার ভাইয়েরা গ্রেফতার হতে থাকে। পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানের উপর ৫৭ হাজার বার বিমান হামলা করা হয়। জিহাদের নুসরত করার অপরাধে স্থানীয় মুসলমানদের উপর বোমা ও বারুদের গুলিবৃষ্টি বর্ষণ করা শুরু হয়। ন্যাটোর সামরিক যান আমাদের রাস্তা দিয়ে আমাদের নিরাপত্তার মাধ্যমে আফগানিস্তানে যাওয়া শুরু করে। লাল মসজিদের লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে; যাতে আমাদের বোনদের ও মেয়েদেরকে ফসফরাস বোমা দ্বারা পুড়িয়ে ফেলা হয় কিন্তু আপনারা এই সকল ক্ষেত্রে কি কোন ধরনের বাঁধা তৈরী করতে পেরেছেন? তখন আপনাদের মাঝে সম্পূর্ণরূপে নিরবতা বিরাজমান ছিল কেন?! তার কারণ সুস্পষ্ট তা হলো: পার্লামেন্টের এই সিটগুলি আপনাদের হাতকড়া এবং পায়ের বেড়ি হিসাবে প্রমাণিত হয়েছিল মন্ত্রণালয় ও সিটের কারণে আপনাদের মুখে তালা লেগেছিল। মন্দকে প্রতিহত করা ও বাতিলের সামনে হুংকার দেওয়ার যে ক্ষমতা ছিল, তা প্রথমে আপস-মীমাংসা, তারপর পুনর্মিলন, অবশেষে এটা সহযোগিতায় পরিণত হয়...

    এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের পন্থায় চলার বাস্তবতা। তাছাড়া অন্যান্য আরো অনেক বাস্তবতাও ‍ষ্পষ্ট করে দেয়। যেমন: গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে দ্বীনদার ভাইদের একেবারেই কোন শক্তি-সামর্থ নেই, এটার জানান দেয় কারণ, গণতান্ত্রিক রাজনীতি শক্তি প্রদান করে না, বরং যে শক্তি ধর্মকে রক্ষা করতে পারে এবং কাফের ও ধর্মের দুশমনদের পথকে চিরতরে বন্ধ করে দিতে পারে সে শক্তিকে ছিনিয়ে নেয় এর বিপরীতে, জনগণকে ভাল কাজের প্রতিরক্ষায় উন্নিত করা, মন্দপথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ানো এবং তাদের আত্মত্যাগের নি:স্বার্থ আবেগের দ্বারা তাদেরকে নিবেদিত রাখা এমন একটি প্রক্রিয়া, যা ধর্মীয় দলগুলোকে কোন সন্দেহ-সংশয় ছাড়াই ক্ষমতা প্রদান করে থাকে।


    প্রিয় উপস্থিতি!

    আপনারা পুরো বিশ্বের ইতিহাসের দিকে একটু তাকান! তাহলে আপনারা একটি চরম বাস্তবতা দেখতে পাবেন যে, গণতন্ত্রের ভিতরে ক্ষমতা স্থানান্তর হয় কেবল যার কারণে ব্যক্তির চেহারা তো পাল্টায়, কিন্তু জোর-জবরদস্তি ও শক্তির উপর নির্ভরশীল পূর্ব থেকে চলে আসা চাপিয়ে দেওয়া সিস্টেমে কখনো কোন পবিরর্তন আসে না। সিস্টেমের পরিবর্তন অর্থাৎ উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সম্পূর্ণ এক নতুন সিস্টেম আনা; যার মাধ্যমে পূর্ব থেকে চেপে বসা শাসকশ্রেনী ও বুদ্ধিজীবিদের থেকে পরিত্রান হাসিল হবে, সেটা ভোটের গণনা দ্বারা কখনো হাসিল হয়নি ও কখনো হতে পারে না। তার জন্য এমন একটি শক্তির দরকার, এমন শক্তি সঞ্চারের প্রয়োজন; যা বাতিলদের শক্তিকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলে দিবে। ইসলামের ইতিহাস আপনার সামনে রয়েছে। সীরাত আমাদের জন্য এক আমলী নমুনা বা আদর্শ। মক্কার মুশরিকরা যখন সত্যের বিরোধিতায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং ইসলাম বিজয়ের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল, তখন নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধু প্রজ্ঞাপূর্ণ মতামত দিয়েই মক্কা বিজয় করেননি। বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রথমে মদীনায় শক্তি সঞ্চার করেছেন, ময়দানে বদর ও ময়দানে উহুদের মারহালা অতিক্রম করেছেন, অবশেষে মক্কা বিজয়ের রাস্তা সুগম হয়েছে, যার মাধ্যমে সকল বাঁধা-বিপত্তি দূর হয়ে যায় এবং মানুষ দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করতে আরম্ভ করে।

    প্রিয় সূধীবৃন্দ!

    সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে এই নিয়ম চলে আসছে যে, বিপরীত শক্তির মোকাবিলা শক্তির দ্বারাই করতে হয় মহান রাব্বুল আলামীনও তাঁর সৃষ্টজগত চালানোর জন্য এই নিয়মই লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন এই নিয়ম মুসলিম ও কাফির সকলের জন্যই প্রযোজ্য তাছাড়া কুফুরী বিশ্বে যেসব বড় ধরনের পরিবর্তন সাধিত হয়েছে তারও মৌলিক কারণ হচ্ছে এটাআর এটা কখনো সাধারণ চিন্তা-ভাবনা বা শান্তিপূর্ণ সংগ্রাম করার দ্বারা অর্জিত হয়নি। বরং চিন্তা-ভাবনা করার সাথে সাথে শক্তি প্রয়োগ করতে হয়েছে, তখনিই গিয়ে সকল বাঁধা-বিপত্তি দূর হয়েছে এবং পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ফ্রান্সের বিপ্লবের দিকে একটু লক্ষ্য করুন! এটা হচ্ছে সেই বিপ্লব যার মাধ্যমে সেখানে গণতন্ত্র সিস্টেম প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। কিন্তু সেই গণতান্ত্রিক সিস্টেমও কি ভোটের গণনা দ্বারা আনা হয়েছিল? অহিংস নীতির কারণে কি এই পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল? না, কক্ষনো না বরং চেপে বসা শাসকশ্রেণীর সাথে সংঘাতে যেতে হয়েছে, জীবন দিতে হয়েছে, তখন গিয়ে কোথাও কোন নতুন সিস্টেম প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পেরেছে আমাদের আশে পাশে রাফেযী বিপ্লবের ইতিহাসও আপনাদের সামনে রয়েছে সেখানেও ভোটের গণনা দ্বারা পুরোনো সিস্টেম রহিত হয়ে যায়নি, বরং তা শক্তিমত্তার বহির্প্রকাশ ছিল পাশাপাশি তা একটি বিপ্লব ছিল, ফলশ্রুতিতে পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল

    যদি আমাদের পাকিস্তানী সিস্টেমটি অস্তিত্ব লাভ করে থাকে, তবে তা এখানে ১৯৪৭ সালের ভোট গণনা করার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আসল কথা হচ্ছে: ১৯৪৭ সালে সিস্টেম একটুও পাল্টায়নি বরং পূর্ব থেকে প্রতিষ্ঠিত সিস্টেমের মাঝে ক্ষমতার স্থানান্তর হয়েছে মাত্র। যার কারণে চেহারা পাল্টিয়েছে, কিন্তু সিস্টেম আগের সিস্টেম হিসাবেই অক্ষুন্ন রয়েছে। সেনাবাহিনী, শিক্ষাব্যবস্থা, রাজনীতি এবং সংবিধানসহ পুরো সিস্টেম ইংরেজদের সিস্টেম হিসাবেই অবশিষ্ট ছিল। নতুন সিস্টেম যদি ভারতবর্ষে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে, তাহলে তা ইংরেজরা প্রতিষ্ঠা করেছেইংরেজরা জ্ঞান-বিজ্ঞান, সভা-সমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ উৎসগুলির দ্বারা নিজেদের সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করে নাই। বরং তারা শক্তি ও ক্ষমতা প্রয়োগ করেছে, বন্দুক ও বারুদ দ্বারা নিজেদের রাস্তার সকল বাঁধা-বিপত্তি দূর করেছে। তখন গিয়ে তারা কোন স্থানে কোন সিস্টেম আমাদের উপর চাপিয়ে দিতে পেরেছে। সুতরাং আমাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য হলো: যুক্তি, ইতিহাস ও ইসলামসহ সকল কষ্টিপাথর দ্বারা একথা সম্পূর্ণরূপে ভুল প্রমাণিত হয়েছে যে, শক্তি ও ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে কোন বাতিল সিস্টেম বিজয়ী হবে, অতঃপর তা গণতন্ত্রাতিক সংগ্রামের মাধ্যমে পরিবর্তন করে ফেলা হবে! এবং তদস্থলে তার সম্পূর্ণ বিপরীত-উল্টো আসমানের রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত ন্যায়-ইনসাফের উপর ভিত্তিকৃত ইসলামী সিস্টেম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে।


    প্রিয় ভাইয়েরা আমার!

    এমতাবস্থায় যদি আপনার কোন হিতাকাঙ্খী আপনাকে বাতিল সিস্টেমের পক্ষ থেকে চিহ্নিত রেখার উপর চলতে প্ররোচিত করে, গণতন্ত্রের সাথেই সংশ্লিষ্ট হওয়ার ও তার প্রতি বিশ্বস্ত হওয়ার প্রতি প্ররোচিত করে; তাহলে আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে চাই যে, এমন হিতাকাঙ্খীরা এই বাতিল সিস্টেমের সম্মান ও বিজয়কে একটি স্বীকৃত বাস্তবতা হিসাবে মেনে নিয়েছে এবং আমাদের শংকা আছে যে, সম্ভবত তাদের অন্তরে ভালকাজের প্রচার এবং মন্দকাজের প্রতিরোধের প্রতিশ্রুতিও অদ্যবধি বাকি নেই। যদি এই প্রতিশ্রুতি এবং অভিপ্রায় থাকত, তাহলে তার বাস্তবতা স্বীকার করে নিত এবং অন্তর্দৃষ্টি এবং পরিকল্পনা অনুসারে সঠিক পথ গ্রহন করে নিত

    সুপ্রিয় ভাইয়েরা আমার!

    তো এখন কথা হলো: এর সমাধান কিসে? শরীয়াহর উদ্দেশ্য কি এবং তার কর্ম প্রদ্ধতি কি হতে পারে? যার উপর আমল করার মাধ্যমে আমরা নিজেরাও বদদ্বীনি থেকে বাঁচতে পারব এবং আমাদের জাতিকেও শরীয়াহর বরকতসমূহের দ্বারা ভরপুর করে দিতে পারব এই বিষয়ের উপর আগামী পর্বে ও শেষ পর্বে আলোচনা করা হবে, ইনশা আল্লাহ
    وآخر دعوانا أنِ الحمدُ للهِ ربِ العالمين.والسلامُ عليكم ورحمةُ اللهِ وبركاتُه.




    [1] পাকিস্তানের যৌথ পরিষদের শীর্ষ অধিবেশনে কিছু বিষয়ে সবাই ঐক্যমতে পৌঁছানোর পর অবিলম্বে (নির্বাচনের আগে) একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। সেখানে ঘোষণা দেওয়া হয় যে, যৌথ পরিষদ ক্ষমতায় আসার পর ইমরাতে ইসলামী আফগানিস্তান(তালেবান)-এর নীতি অনুসারে সরকার সকল ধরনের আইন পাশ করবে:

    ঘোষণাপত্রের অনুবাদ:

    যৌথ পরিষদের শীর্ষ অধিবেশনের ঘোষণাপত্রঃ

    তারিখ: ২২ সেপ্টেম্বর শনিবার ২০০২ ইং। স্থান: ইসলামাবাদ, পাকিস্তান।

    পাকিস্তানের ছয়টি দ্বীনি দলের শীর্ষ অধিবেশন, নিজেদের এই দৃঢ় প্রতিজ্ঞা প্রকাশ করছে যে, আমরা পাকিস্তানের স্বাধীনতা, নিরাপত্তা, স্থায়িত্ব এবং ইসলামী বৈশিষ্ট্য ও স্বাতন্ত্র্য রক্ষার জন্য যৌথভাবে নিরলস চেষ্টা করে যাব। আমাদের আসল টার্গেট হলো: রাষ্ট্রের মাঝে প্রকৃত ইসলামের শরয়ী আইন-কানুন প্রতিষ্ঠা করা, যা খেলাফতে রাশেদার রীতি-নীতি অনুসারে সম্ভরপর হতে পারে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের জনগণের আইন-কানুনের ভিত্তি হানাফী মাযহাব অনুসারে হবে। আমিরুল মুমিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাযি., আমিরুল মুমিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত উমর রাযি., আমিরুল মুমিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত উসমান রাযি., আমিরুল মুমিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত আলী রাযি., আমিরুল মুমিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত আমীরে ‍মুয়াবিয়া রাযি. এবং কনস্টানটিনোপল (ইস্তাম্বুল) বিজয়ের ইজ্জত-সম্মান ও আনুগত্যের আকিদার ভিত্তিতে নেককার লোকদের ক্ষমতায় গমনের পথকে সুগম করা এবং এর জন্য আইন রচনা করাএই অধিবেশন আরো ঘোষণা করছে যে, ১৯৭৩ সালের আইন ইসলামের আসল ভিত্তির উপর সংসদীয় গণতন্ত্র এবং ঐক্যমতের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হওয়ার জন্য জিম্মাদার। সংবিধান বহাল রাখা ও তার ধাঁচে কুরআন ও সুন্নাহর দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী এবং ইসলামিক গবেষণা কাউন্সিলের প্রস্তাবনার আলোকে এমন একটি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা আমাদের সকল চেষ্টা-প্রচেষ্টার আসল লক্ষ-উদ্দেশ্য ও প্রকৃত মানযিলে মাকসুদ; যা সাধারণ জনগণের স্বাধীনতা, দ্বীনি সুসমাচার, জাতীয় কৃষ্টি-কালচার ও সামাজিক রীতিনীতি, অর্থনীতির সুষম বন্টন এবং স্বচ্ছলতায় ভরপুর জীবনের জামানত/গ্যারান্টি দিবে।

    নিচে উল্লেখিত ছয়টি দ্বীনি দল যৌথ পরিষদ”-এর মেম্বার হিসাবে দ্বীনি ও রাজনৈতিক সমস্যাবলীর ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গরূপে নিজেদের মতৈক্যতা প্রকাশ করছে এবং এই বিষয়ের ঘোষণা প্রদান করছে যে, কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের জাতীয় অবস্থান-ই হবে আসল মূলনীতি। কিন্তু পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র আফগানিস্তানের তালেবানের ব্যাপারে পাকিস্তান সরকার সাম্রাজ্যবাদীদের হাতের পুতুল হিসাবে খেলছেযৌথ পরিষদক্ষমতায় আসার পর তালেবান সরকারের শাসননীতিকে পাকিস্তানের সকল পর্যায়ে জারি করার জন্য সকল মাধ্যম ও উসীলাগুলোকে গ্রহন করবে এবং পুরো পাকিস্তান তাওহীদের অতি উজ্জ্বল ছায়ানীড়ে পরিণত হবে।

    স্বাক্ষরঃ

    ১. কাজী হুসাইন আহমাদ
    আমীর, জামাআতে ইসলামী পাকিস্তান।
    ২. মাওলানা শাহ আহমাদ নূরানী
    সদর, জমিয়ত উলামায়ে পাকিস্তান।
    ৩. মাওলানা ফজলুর রহমান
    আমীর, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম।
    ৪. মাওলানা সামিউল হক
    আমীর, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তান।
    ৫. আল্লামা সৈয়দ সাজিদ আলী নকভী
    পৃষ্টপোষক, তাহরীকে জাফরিয়া পাকিস্তান।
    ৬. অধ্যাপক সাজিদ মীর
    আমীর, জমিয়তে আহলে হাদীস।



    আরও পড়ুন
    ৫ম পর্ব ------------------------------------------------------------------------------------------------- ৭ম পর্ব
    Last edited by tahsin muhammad; 01-01-2024, 08:28 PM.

  • #2
    গণতন্ত্রের ভিতরে ক্ষমতা স্থানান্তর হয় কেবল যার কারণে ব্যক্তির চেহারা তো পাল্টায়, কিন্তু জোর-জবরদস্তি ও শক্তির উপর নির্ভরশীল পূর্ব থেকে চলে আসা চাপিয়ে দেওয়া সিস্টেমে কখনো কোন পবিরর্তন আসে না।

    সিস্টেমের পরিবর্তন অর্থাৎ উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সম্পূর্ণ এক নতুন সিস্টেম আনা; যার মাধ্যমে পূর্ব থেকে চেপে বসা শাসকশ্রেনী ও বুদ্ধিজীবিদের থেকে পরিত্রান হাসিল হবে, সেটা ভোটের গণনা দ্বারা কখনো হাসিল হয়নি ও কখনো হতে পারে না।

    তার জন্য এমন একটি শক্তির দরকার, এমন শক্তি সঞ্চারের প্রয়োজন; যা বাতিলদের শক্তিকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলে দিবে।
    আল্লাহ্‌ তাআলা আমাদের বুঝার ও গ্রহণ করার তাওফিক দিন, আমীন

    Comment


    • #3
      আল্লাহ তায়ালা প্রিয় মডারেটর ভাইকে জাযায়ে খাইর দান করুন। আমীন
      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

      Comment


      • #4
        জাযাকাল্লাহ খাইরান ভাই

        Comment


        • #5
          আমাদের বিষয়গুলো বুঝার এবং আমল করার তাওফিক আল্লাহ্‌ তাআলা দান করুন, আমীন

          Comment

          Working...
          X