Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ২৫ || এই তো গাজা... যা পশ্চিমের ঘুম কেড়ে নিয়েছে || সালেম আল শরীফ || ১ম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ২৫ || এই তো গাজা... যা পশ্চিমের ঘুম কেড়ে নিয়েছে || সালেম আল শরীফ || ১ম পর্ব

    আন নাসর মিডিয়া পরিবেশিত

    এই তো গাজা...
    যা পশ্চিমের ঘুম কেড়ে নিয়েছে

    ||সালেম আল শরীফ​ || এর থেকে
    ১ম পর্ব


    ===================






    আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিসরে ক্রুসেডার জায়নবাদীদের প্রতিক্রিয়া কি ফিলিস্তিনিদের অজানা ছিল? সেটা কি পরিকল্পনার বাইরে ছিল?

    কখনোই নয়। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিসরে বিভিন্ন আরব-ইসলামিক সংস্থা ও রাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে সেটাও জানা ছিল। ফিলিস্তিনের এই উম্মাহর বীর বাহাদুর সন্তানেরা ভালো করেই এসব জানতেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা আশাবাদী, শত্রুপক্ষের পাল্টা আক্রমণ ও প্রতিক্রিয়ার (মানুষ, ঘর-বাড়ি, গাছপালা সবকিছুর ওপর গণহারে বোমাবর্ষণ) প্রতিটি পর্যায়ের জন্য এবং ক্রুসেডার-জায়নবাদীদের ধারাবাহিক পাল্টা জবাবের মুখোমুখি হবার জন্য প্ল্যান করে রেখেছেন।

    একইভাবে সীমিত পরিসরে স্থল অভিযানে অগ্রসর হওয়া, লজ্জাজনক পশ্চাদপসরণ—এগুলোর কোনো কিছুই তাদের কাছে অবাক করে দেয়ার মতো বিষয় ছিল না। তবে সম্ভবত দক্ষিণ বিভাগের এতো দ্রুত পতন হবে, সেটা মুজাহিদীন নেতাদের ভাবনায় ছিল না। ‘তুফানুল আকসার’ পর যে বিশ্বব্যাপী এমন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়বে, সেটাও সম্ভবত তারা কল্পনা করেননি। কিন্তু এটা তাদের কাছে কোনো গোপন বিষয় ছিল না যে, জায়নবাদের সন্তানেরা আজ স্বেচ্ছায় দখলকৃত ভূমি ছেড়ে চলে যাবে না। ইনশাআল্লাহ আগামী দিনে বাধ্য হয়ে তারা পালাবে…। কারণ পালাতে দেরি করলেই তো মুসলিম জাতির ক্রোধের অস্ত্র দ্বারা আক্রান্ত হবে।

    এই নিবন্ধটি সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহের সংক্ষিপ্তসার। এই নিবন্ধে আছে সিংহ ও বাজপাখিদের শিকারের গল্প…। আরও আছে হায়েনা ও ময়লা আবর্জনা খাওয়া প্রাণীদের কথা। আল্লাহর বাহিনী এমন এক অপারেশন আরম্ভ করেছেন, যার স্ট্র্যাটেজিক বিষয় নিয়ে বিশ্বের সমস্ত সামরিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক বিতর্ক হলে হতে পারে। কিন্তু ট্যাকটিক হিসেবে এটি একটি সর্বোত্তম সামরিক অপারেশনের উদাহরণ, যা দুর্বলদের আন্দোলন রচনা করেছে।

    জনপ্রিয় মুক্তি আন্দোলনের সদস্যদের দ্বারা স্থল, আকাশ এবং নৌপথ – সবদিক থেকে পরিচালিত এই অভিযান ছিল, দুর্বলদের ভূমি দখলকারী শত্রুর বিরুদ্ধে। আক্রমণটি নিখুঁতভাবে শত্রুপক্ষের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা দেয়াল অতিক্রম করে। এরপর এমন বিস্ময়কর বিজয় অর্জন করে, যা ইসরায়েলি শত্রুকে হতবাক করে দিয়েছিল। ফলস্বরূপ দক্ষিণ বিভাগের বাহিনী ভেঙে পড়ে। পশ্চিমের নেতৃবৃন্দ ও ইহুদীরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

    অপারেশনের সরাসরি উদ্দেশ্য কী ছিল: –

    – তারা ইসরায়েলি দখলদার সেনাবাহিনী সম্পর্কে ছড়িয়ে পড়া বিভ্রম দূর করে একটি বিস্ময়কর সামরিক অভিযান উপহার দিতে চেয়েছিল। এটি ০৬ ই অক্টোবরে মিশরীয় সেনাবাহিনীর সুয়েজ খাল অতিক্রমের বিস্ময়কেও হার মানায়।

    – যতটা অধিক সম্ভব অপরাধী শত্রু সৈন্যদের হত্যা; যারা সব সময় মুজাহিদীনের পরিবার, নারী ও শিশুদের উপর বোমা মেরেছে।

    – শত্রুদের কারাগারে বন্দী নিজেদের অপহৃত ভাইদের মুক্তির লক্ষ্যে দর কষাকষি করার জন্য সম্ভাব্য সর্বাধিক সংখ্যক ইহুদীদের ধরে আনা এবং তাদেরকে গাজা স্ট্রিপের গোপন আস্তানায় নিয়ে যাওয়া।

    – সম্ভাব্য সর্বাধিক সংখ্যক শত্রুর গাড়ি, সাঁজোয়া যান এবং সামরিক সুবিধা ধ্বংস করা।

    – দক্ষিণ বিভাগের গোয়েন্দা সদর দপ্তর থেকে সম্ভাব্য সর্বাধিক পরিমাণ গোয়েন্দা নথি সংগ্রহ করা।

    প্রথম মূল্যায়ন:

    ফজর…

    ০৭ই অক্টোবর; সে ছিল আলো ও আগুনের খেলা

    এই লক্ষ্যগুলি ছাড়াও আরও কিছু লক্ষ্য অর্জিত হয়েছিল। এই অতিরিক্ত লক্ষ্যগুলো সাধারণত সামরিক অভিযানের ফলাফলের উপর নির্ভর করে আসে। যেমন: শত্রুর নিরাপত্তা ও সামরিক স্ট্র্যাটেজি নষ্ট করা, ধারাবাহিক ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে যেকোনো উপায়ে ইহুদীদেরকে অধিকৃত ফিলিস্তিন থেকে পলায়ন করে পশ্চিমা দেশগুলিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য করা, ইহুদীবাদী অর্থনীতিকে সংঘাতের মাধ্যমে নিঃশেষ করা, ব্যবসায়িক সুনাম নষ্ট করে এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা তুলে নেয়া এবং সেনাবাহিনী, জায়নবাদী শত্রুদের রক্ষাকারী ও সুরক্ষাদানকারী ব্লকের সরকারগুলোকে বিব্রত করা। কারণ এই সুরক্ষাদানকারী ব্লকের সরকারগুলো ইসলামী জনগণের ক্রোধ থেকে ইহুদীবাদের সীমানাকে নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে।

    বিশাল আকারের এই সৈন্য-বাহিনীর গুদামে অস্ত্র ও গোলা বারুদ যথেষ্ট পরিমাণে মজুদ থাকা সত্ত্বেও ০৭ই অক্টোবর শনিবারে মুজাহিদীনের পরিচালিত অভিযানের প্রতিরোধে এক-দশমাংশ করে দেখাবারও সাহস করতে পারেনি। চীনের বিরুদ্ধে জোট গঠনের জন্য উদ্ভাবিত আবরাহামিক ধর্মের দাওয়াত ও আহ্বানের হৃদয়ে এ ছিল এক গভীর আঘাত। এই আক্রমণ মুসলিম জাতির মনোবল বৃদ্ধির কারণ। নবীদের অঞ্চল তথা মধ্যপ্রাচ্যের জনগণকে রাজা-বাদশা, ক্ষমতাধর শ্রেণি এবং ওই সমস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে এই হামলা করা হয়েছে, যারা বিশ্বাসঘাতকতার পোশাক গত কয়েক দশক ধরে পরিধান করে আছে। গর্বিত গাজার ব্যাপারে মুজাহিদীন নেতাগণ বলেছেন, ‘আল-আকসার তুফান’ (তুফানুল্ আকসা) অপারেশনটি ছিল মূলত বর্ণবাদী ইহুদীবাদী সরকার কর্তৃক গাজা উপত্যকায় পরিচালিত হতে চলা একটা বিরাট আক্রমণের পূর্ব অভিযান। (অর্থাৎ এমনিতেও ইসরাঈলিরা গাজা উপত্যকায় একটা বড় হামলা করার পথে ছিল, তার আগেই আল্লাহর সৈনিকগণ তাদের উপর হামলা করে দিয়েছেন)।

    এই সকল লক্ষ্য স্থির হয়েছিল বরকতময় এই অভিযানের রাজনীতিক উদ্দেশ্যের ছায়ায়। তেমনি মৌলিক কিছু রাজনীতিক উদ্দেশ্য হলো: – প্রতিক্রিয়াশীল ইহুদীবাদী বিকৃত সরকারের পতন ঘটানো।

    – আল-আকসা মসজিদে হামলা, মসজিদ প্রাঙ্গণে অন্যায় অনাচারের ঝড় এবং মুসল্লিদেরকে নিপীড়ন ও নামায আদায়ের বাধা দান – এইসব কিছু বন্ধ করা।

    – ইসরায়েলি কারাগার থেকে ফিলিস্তিনি বন্দীদের সরিয়ে আনা।

    – ‘ইতামার বেন-গাভির’ ও তার কুকুর – ইসরায়েলের ধর্ষিতা নারীদের জারজ সন্তানগুলো যে নিকৃষ্ট কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে, সেগুলো বন্ধ করা। নেতানিয়াহু তার সরকারে এমন এক নির্বোধকে অংশীদার করেছে, যার নির্বুদ্ধিতার কোনো দৃষ্টান্ত নেই। সে ফিসফিস করে কানে কানে বললো: আমাকে যুদ্ধের সুযোগ দিন; একটা যুদ্ধ। বলতে না বলতেই নিজের মনিবের নির্দেশ পালনে সকাল-সন্ধ্যা কুদসের ভূমিতে আমাদের ভাই-বোনদের সঙ্গে অন্যায় আরম্ভ হয়ে গেল।

    পূর্বে থেকেই আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের বন্দী ও হত্যা করা হচ্ছিল। এমনকি রক্তস্রোত চরমে পৌঁছে যায়- আর ইহুদীবাদীদের অনাচার চূড়ান্ত মাত্রা স্পর্শ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সহনশীল ব্যক্তিদের ক্রোধান্বিত অবস্থার কঠোরতা আজ কোথায় পৌঁছেছে দেখুন।

    তাই সব অনাচার-অত্যাচারের জবাব হিসেবে অক্টোবরের সপ্তম দিনটি ছিল লড়াইয়ের চূড়ান্ত পর্বের সূচনা। যা দিনের পর দিন বছরের পর বছর চলতেই থাকবে ইনশাআল্লাহ্। যতদিন না ইহুদীরা আমাদের ভূখণ্ড ছেড়ে চলে যায়!

    ঘটনা প্রবাহের চূড়ান্ত অবস্থা যেহেতু শুরু হয়ে গিয়েছে, তাই এখন এই যুদ্ধ একদিন বা এক রাতের নয়। এই চলমান যুদ্ধের বীর সেনারা ঘোষণা করেছে: বর্তমান রণাঙ্গন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। এই অনুচ্ছেদ শেষ করার আগে যদি কোনো ব্যক্তি বলে: সময়টা কি এখন এসবের উপযুক্ত? আমি তাকে জবাব দেব: অবশ্যই উপযুক্ত।

    বেলফোর চুক্তির পর থেকেই বিভিন্নভাবে ইহুদীবাদী সদস্যদের (ইহুদী ও পশ্চিমা) যে প্রতিক্রিয়া ফিলিস্তিনি মুসলিম জনগণ অনুভব করছে, সেটা তো নতুন কিছু নয়।



    আরও পড়ুন
    Last edited by tahsin muhammad; 5 days ago.

  • #2
    আল্লাহ তাআলা জালিমদের বারবার এমন উপহার দেয়ার তাওফিক মুসলিম উম্মাহকে দান করুন, আমীন

    Comment

    Working...
    X