Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৩০ || “এই তো গাযা… গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (4) ” ।। সালেম আল শরীফ || ১ম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৩০ || “এই তো গাযা… গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (4) ” ।। সালেম আল শরীফ || ১ম পর্ব


    আন নাসর মিডিয়া পরিবেশিত

    “এই তো গাযা…
    গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (4)


    ।।সালেম আল শরীফ||

    এর থেকে১ম পর্ব

    بسم الله الرحمن الرحيم



    পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি


    এই তো গাজা... গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (4)


    ভূমিকা:


    ইহুদীবাদী চক্র যখন ফিলিস্তিনে আশ্রয় নেয় তখন গোটা পশ্চিমা বিশ্ব তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। কিন্তু এটা তাদের প্রতি ভালোবাসার কারণে নয়। কারণ তাদের পরস্পরে এমন বিরোধ রয়েছে যা লজ্জাজনক। কিন্তু তবুও তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার উদ্দেশ্য হলো গোটা বিশ্বে মুসলিমদের প্রভাব প্রতিপত্তি যেন অবশিষ্ট না থাকে— যেই প্রভাবের মাধ্যমে তারা আল্লাহর সাজে পৃথিবীকে সজ্জিত করবে। ইতিহাসের এই পর্যায়ে শয়তানিমূলক এই মৈত্রী গোটা বিশ্বে এই উম্মাহর সন্তানদের মাঝে এবং দুর্বল জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে থেকে সুস্থ প্রকৃতির ব্যক্তিদের মাঝে জাগরণ সৃষ্টি করেছে। তারা উপলব্ধি করতে পেরেছে গোটা বিশ্ব ততক্ষণ পর্যন্ত স্বাধীন হবে না এবং বিশ্বের জনগোষ্ঠী ততক্ষণ পর্যন্ত উপযুক্ত মর্যাদা পুনরুদ্ধার করতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত পশ্চিমা বিশ্বের পতন ঘটানো না হবে এবং আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত থেকে তাদেরকে অপসারিত করা না হবে। কারণ পশ্চিমা বিশ্ব মানবতার সঙ্গে যা করেছে, বিগত দুই শতাব্দী যাবৎ মানবজাতির মান সম্মান অধিকারের প্রশ্নে তারা যা কিছু করেছে সেগুলো বর্ণনাতীত জঘন্য অপরাধ। তারা যেই নৈতিকতা ও মূল্যবোধের দাবি করে থাকে এবং গোটা বিশ্বে মিথ্যাচারের বাজারে নৈতিকতার কথা বলে নিজেদেরকে অন্যদের চেয়ে উন্নত ও প্রগতিশীল প্রমাণ করার চেষ্টা করে থাকে, তারা নিজেরাই সে নৈতিকতার ওপর আঘাত করে এসেছে প্রতিনিয়ত। তাদের ভাবখানা এমন, তারাই একমাত্র সত্যের ঠিকাদার, সত্য তাদের মালিকানাধীন; তারা যেমন বিচার করবে সেটাই ন্যায় বিচার। তারা যুবতী নারীদেরকে ব্যবহার করে অন্যদেরকে দিয়ে যা করাবে সেটাই ইনসাফ। সত্য সঠিক নির্ধারণে অন্যদের কোনোই অধিকার নেই। সবার কাজ হচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারী মনিবদের কথা নিঃসংকোচে মেনে নেওয়া। এইতো সেদিন তাদের সেনাবাহিনী উপনিবেশ ছেড়ে পালিয়েছে। কিন্তু চলে যাবার আগে কলোনিগুলোতে এমন নেতৃবৃন্দকে বসিয়ে দিয়েছে যারা মনিবদের নামেই শাসন করে, স্বজাতিকে লাঞ্ছিত করে, জুলুম নির্যাতন করে এবং মনিবদের জন্য নিজের দেশের জনগণের উপর চড়াও হয়। উম্মাহর শত্রুদের স্বার্থে তারা ঠুনকো কারণ দেখিয়ে হেসে খেলে মুসলিমদের সম্পদ জবরদখল করে শত্রুদের হাতে তুলে দেয়। অন্ধকার যতই গাঢ় হোক, জুলুম নির্যাতন যতই দীর্ঘ হোক, পরিবর্তন সাধনের জন্য সত্যের বাহিনী আসছে। ইউরোপ এখন মৃত্যুমুখে। আমেরিকা আফগানিস্তানের পরাজয়ের পর পতনের দ্বারপ্রান্তে। যদি উপসাগরীয় অঞ্চলের রশি তাদের হাতে না থাকতো তাহলে গোটা বিশ্ব তাদের কবল থেকে মুক্তি পেয়ে যেত। আর যারা পশ্চিমাদের প্রতি ঝুঁকেছে, তাদের কাছে নিজেদের বিবেক বন্ধক দিয়েছে, আসলে তাদের মানবিক স্বভাব-বৈশিষ্ট্য বিকৃত হয়ে গেছে। আল্লাহর ক্রোধ তাদের ওপর, তিনি তাদের দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নিয়েছেন। এদের মাঝে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য মুসলিম অঞ্চলগুলোর রাজনৈতিক ব্যক্তিগণ। তাদের শীর্ষে রয়েছে উপসাগরীয় অঞ্চলের শাসকবৃন্দ এবং আরো বিশেষভাবে বললে আরব আমিরাতের শয়তান এবং তার ভ্রাতারা।

    নেতানিয়াহু সেই পথেই হাঁটছে, যে পথে সাবেক ইহুদী খুনিরা হেঁটেছে। অতএব এমনটা আশা করা উচিত হবে না যে, নেতানিয়াহু সিরিয়াসভাবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য উদ্যোগী হবে এবং মুজাহিদদের হাত থেকে ইহুদী বন্দীদেরকে মুক্ত করার জন্য আলোচনার টেবিলে আসবে। কারণ যেই অজুহাতে তারা গণহত্যা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছে তা হলো, মুজাহিদদের হাতে বন্দীরা এখনো বেঁচে আছে। এখন বন্দী বিনিময় কার্যক্রম যদি সম্পন্ন হয়ে যায় তাহলে শুধু এতটুকুর মাধ্যমেই যুদ্ধের ঘোষিত লক্ষ্য পূরণ হয়ে যাবে। তৎক্ষণাৎ আবার ইহুদী সত্তার অভ্যন্তর থেকে (আংশিক জায়গা থেকে) ক্ষোভের ঢিপি ধসে পড়বে, বিক্ষুব্ধ হয়ে যাবে একটা অংশ। এ কারণেই সঙ্গত ভাবে সে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার বিষয়ে টালবাহানা করছে। এই সুযোগে এমন নতুন কোনো লক্ষ্য খুঁজে বেড়াচ্ছে, যা সামনে রেখে লড়াইয়ের সময়সীমা আরও দীর্ঘায়িত করা যাবে। এভাবেই সে নিজের পদে বহাল থাকতে চাচ্ছে এবং তার ইহুদী প্রতিপক্ষদের হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখছে। এখন প্রশ্ন হলো, তার পক্ষে কি এই অঞ্চলকে এমন কোনো লড়াইয়ে প্রবেশ করানো সম্ভব হবে, যে লড়াই সম্পর্কে কারো জানা নেই— তা কতদিন পর্যন্ত চলমান থাকবে এবং যুদ্ধের আগুন প্রজ্জ্বলনকারীরা কবে নিবৃত্ত হবে? তবে কি পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা ঘটে যাবে? খুবই গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রশ্ন: যে শক্তিগুলো গোটা বিশ্ব পরিচালনা করছে, তারা কি মানচিত্রে কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে? বিপ্লব ও পরিবর্তন সাধনের জন্য যুদ্ধই একমাত্র পদ্ধতি ও পন্থা? নাকি তারা অন্যান্য উপায়কে প্রাধান্য দেবে? এছাড়াও গোটা বিশ্বের দেশগুলো কি এই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত? কোন্ রাষ্ট্রগুলোর বাস্তবেই এত আগ্রহ অনিশ্চিত এমন যুদ্ধে প্রবেশ করার ব্যাপারে, যে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে শেষ হবার আশা কেউ করতে পারে না? আর কত কাল পর্যন্ত অপেক্ষা করে চীন ও ভারতের মতো বিভিন্ন শক্তি এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে? এখন একটি বিষয় হচ্ছে ইউরোপের দেশগুলো আফ্রিকায় তাদের আয় উপার্জনের অনেক উৎস হারিয়ে বসেছে। আর এখন তারা মৃত্যুর দিন গুনছে। এই অবস্থা সামনে রেখে তারা আবারো আগ্রাসনের পথে যাবে? নাকি আফ্রিকার দেশগুলো ইউরোপের আগ্রাসন থেকে এখন সুরক্ষিত? পতনের মুখে আমেরিকার পূর্বের সবুজ বাগান কি এবার তার হাতছাড়া হয়ে যাবে, নাকি আমেরিকার ইচ্ছামত সবুজ কাননের সরবরাহ অব্যাহত থাকবে? তেলের প্রবাহ কি চলমান থাকবে, নাকি লড়াইয়ে অপরপক্ষের কৌশলগত লক্ষ্য হবে তেলের খনি ও কূপগুলো ধ্বংস করা অথবা সেগুলোর কর্তৃত্ব ছিনিয়ে নেওয়া, যেন বিরোধী বড় শক্তিগুলো বঞ্চিত হয়? সর্বশেষ প্রশ্ন হলো, সীমাহীন, নিয়ন্ত্রণহীন, অনৈতিক একটি যুদ্ধের পর অস্তিত্বের রূপরেখা কিরূপ হবে?

    এই অবস্থায় সমস্ত ঘটনা প্রবাহকে শুধু সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে পাঠ করাটা ভুল। প্রতিটি ঘটনাকে কৌশলগত, স্ট্র্যাটেজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা একান্ত জরুরি। এমনিভাবে শুধু রাষ্ট্র বা আঞ্চলিক সীমানা ধরে নিয়ে ঘটনাগুলো পাঠ করাটাও ভুল। যে সামরিক শিবিরগুলো গঠিত হচ্ছে, সেগুলো একসঙ্গে আমাদের দেখতে হবে। সামরিক শিবিরগুলোর কক্ষপথে যেই ছোট ও প্রভাবশালী শক্তিগুলো রয়েছে এবং আকর্ষণ বা বিকর্ষণ নীতি অনুসারে সামরিক শিবিরসমূহের কক্ষপথগুলোতে যেই শক্তিগুলোকে চলাচল করানো সহজভাবে সম্ভব, সেই ছোট ও প্রভাবশালী শক্তিগুলোকেও আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে।
    ***


    বিপ্লবের পথে কিছু দিক নির্দেশনা কিছু তথ্য উপাত্ত এবং সর্বশেষ সংবাদ :


    সকল অভিজ্ঞতা থেকে একটা বিষয় জোরালোভাবে বোঝা যায়; সকল অঙ্গনে, সকল ময়দানে প্রস্তুতি ও বিজয়ের ক্ষেত্রে সফলতার একটি মৌলিক ভিত্তি হচ্ছে তথ্য উপাত্তের প্রাচুর্য। সমস্ত তথ্য সামনে রেখে তবেই কোনো লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়। এর জন্য মৌলিক এমন কিছু তথ্যের একান্ত প্রয়োজন, যেগুলোর আলোকে লড়াইয়ের একটি দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হবে। সেই তথ্যগুলো সংগ্রহের জন্য লড়াইয়ের আগে, লড়াই চলাকালে এবং লড়াইয়ের পরেও কাজ করতে হবে। দিনে রাতে কখনো সেই তথ্যগুলো একত্র করার কাজ থামিয়ে রাখা যাবে না। তথ্যাবলী পূর্ণাঙ্গ, সর্বাঙ্গীন এবং সর্বব্যাপী হতে হবে। শত্রু কাঠামোর সকল অঙ্গ, শত্রুপক্ষের সকল প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংযোগসমূহ এবং নেতৃবৃন্দের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে তথ্য থাকতে হবে। কারণ যুদ্ধ শুধু আগুন আর আন্দোলনের ময়দানে সীমাবদ্ধ নয় বরং জীবনের সকল অঙ্গনেই যুদ্ধের প্রভাব থাকা উচিত। আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারা উচিত। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্য আমাদের আলাদা সেল থাকতে হবে। যেই যুদ্ধ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে, সেই লড়াইয়ের পরিধি অনুপাতে তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া উচিত

    শত্রুপক্ষ সম্পর্কে, শত্রুর ঘাঁটি সমূহ, বিশেষ করে ঘোষিত বা অঘোষিত গুপ্ত বিমান ঘাঁটি সম্পর্কে, তার গোলাবারুদ ডিপো, তার জ্বালানির ডিপো, সামরিক সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র, নেতৃত্ব, শত্রুর শক্তি ও দুর্বলতার বিভিন্ন পয়েন্ট, প্রভাব বলয়, তার নরম পেটে আঘাত করার দ্বারা কতটুকু প্রভাব সৃষ্টি হবে সে সম্পর্কে, তার মিত্র কারা তার প্রতিপক্ষ কারা আর তার ব্যাপারে কারা নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছে তাদের সম্পর্কে, আমাদের অন্যান্য প্রতিপক্ষ সম্পর্কে, তাদের সঙ্গে আমাদের শত্রুতার ধরন ও পর্যায় সম্পর্কে, সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য আমাদের প্রতিপক্ষের প্রস্তুতি সম্পর্কে এবং আমাদের মিত্রদের সম্পর্কে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ পরিমাণ সামরিক রাজনৈতিক সামাজিক এবং অর্থনৈতিক তথ্য সংগ্রহ করা একান্ত জরুরি। লড়াইয়ের জন্য আমাদের জনগণ কতটা প্রস্তুত, তারা কতটা ধৈর্য ধারণ করতে পারবে, কি পরিমাণ ত্যাগ ও বিসর্জন তাদের দ্বারা সম্ভব, এগুলোও ভুলে গেলে চলবে না।

    এটা একটা অস্তিত্বের লড়াই। এই লড়াইয়ে যতটা সম্ভব অধিক কৌশল ও দৃঢ় প্রত্যয় অবলম্বন করা জরুরি। প্রতিটি পর্যায়ে প্রতিটি স্তরে যা করা উচিত, তা করতে হবে। সেই সাথে কৌশল অবলম্বনে শত্রুকে প্রতারিত করার এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দর কষাকষির সুযোগ বাকি রাখতে হবে। শত্রুদের সঙ্গে যারা জোটবদ্ধ তাদের মাঝে বিভক্তি তৈরির চেষ্টা করতে হবে। মিত্র শক্তিগুলোর মাঝে পারস্পরিক বিভেদ-বিচ্ছিন্নতার বীজ ছড়িয়ে দিতে হবে। শুধু তাই নয় বরং একটি দলের বিভিন্ন অংশের মাঝেও সেই বিভক্তি তৈরির চেষ্টা করতে হবে। কারণ যুদ্ধ শুধু লোহা আর আগুন দিয়ে হয় না। আরো অধিক সুস্পষ্ট ভাষায় আমরা বলতে চাই, সমাজের কোন কোন অংশের ওপর আঘাত না করলে অন্য অংশ হিংসার আগুনে পুড়তে থাকে এবং তাদের মাঝে শত্রুতা তৈরি হয়ে যায়। এভাবে তাদের বাহ্যিক একতা বিনষ্ট করে দেয়া এবং তাদের শক্তি দুর্বল করে দেয়া সম্ভব হয়।

    বনি ইসরাঈলের নিজেদের মধ্যকার রাজনৈতিক লড়াই সম্পর্কে তথ্য-উপাত্তের অপ্রতুলতার কারণে যুদ্ধ আশা ও ধারণার চেয়ে বেশি দীর্ঘায়িত হয়েছিল।

    ইহুদীদের জনপ্রিয় আন্দোলনের প্রভাবের হ্রাস সম্পর্কে তথ্যের অভাবের কারণে বন্দীরা আর তুরুপের তাস হিসেবে বিবেচিত হয়নি। ২০০ দিনের যুদ্ধের পরে খুনি নেতানিয়াহু একটি বিনিময় চুক্তি করার আর কোনো অর্থ নেই। কারণ সে গাজার মুসলমানদের নির্মূলে যা করতে চেয়েছিল তা করেছে। এখন মুজাহিদদের উচিত তাকে এবং তার কট্টরপন্থী দলকে ভালো রকম শিক্ষা দেয়া।
    ***


    মৈত্রী চুক্তি সমূহ:

    এটা দুই ধারী অস্ত্র। এর কোনো বিকল্প নেই। বিভিন্ন আকীদা-বিশ্বাসের মাঝে যুদ্ধের সূচনাই মৈত্রীর অবসান। তাই প্রজ্ঞার দাবি হচ্ছে, শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এবং তার চেয়ে বেশি সাবেক মিত্রদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যৎ লড়াইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় হিসেব আগেই কষে রাখা।

    শত্রুর সঙ্গে ডিল করার চেয়ে মৈত্রী শিল্প বা বন্ধু বানাবার যোগ্যতা যে পক্ষের বেশি রয়েছে; সেই সাথে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীর ব্যাপারে সজাগ থেকে রাজনৈতিক বুদ্ধিমত্তা সহকারে শক্তিশালী মৈত্রী নির্মাণের যোগ্যতা যে পক্ষের রয়েছে, তারাই আসলে বোধগম্য প্রতিকূলতা অনুপাতে দীর্ঘমেয়াদি একটি লড়াই চালিয়ে যেতে সক্ষম। এ বিষয়টা লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সাফল্যের সম্ভাবনার প্রতি ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করে। আসলে প্রতিকূলতা ছাড়া পথ চলা যায় না। আর সবচেয়ে বাজে ধরনের প্রতিকূল দশা হচ্ছে, দলের ভিতরেই কিছু লোক নিজেদের নার্সিসিজম বা আত্মতুষ্টি দ্বারা অভ্যন্তরীণ সম্প্রীতি নষ্ট করে। একতা ধরে রাখার জন্য এবং বিভেদ-বিভক্তি ও ব্যর্থতা থেকে বেঁচে থাকার লক্ষ্যে এজাতীয় ব্যক্তিদের হাত থেকে অবিলম্বে মুক্তি পাওয়া একান্ত জরুরি। তাদের স্বভাব পরিবর্তনের আশায় বসে থেকে অপেক্ষা করার পরিণতি হয়ে থাকে ভয়াবহ। যদি তাদেরকে সুযোগ দিতে থাকি, তাহলে একতা বিনষ্টের জন্য আমরাই দায়ী থাকবো। কখনো দলের অভ্যন্তরীণ এই বিচ্যুতি শত্রুপক্ষের তাবেদার হওয়া পর্যন্ত গড়িয়ে নেয়। মিত্রদের মাঝে রাজনৈতিক সম্পর্কচ্ছেদ ঘটা খুবই সুনিশ্চিত একটা ব্যাপার। সামাজিক বিভক্তির চেয়েও এটা বেশি জোরালো। তাই রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হবেই— আজ হোক কাল হোক, বিলম্বে হোক কিংবা অবিলম্বে। কারণ বিভিন্ন সম্পদ লেনদেন, বাজার ও নৌপথ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এমনই এক অনিবার্য বিষয়, যা শত্রুদেরকে সহজেই আলাদা পথে দাঁড় করাবে। এছাড়াও আত্মমর্যাদা, অহংকার, নেতৃত্ব-কর্তৃত্বের আকাঙ্ক্ষা ইত্যাদি বিষয়গুলো যেকোনো পক্ষকে একচেটিয়া হতে প্ররোচিত করে এবং যৌথ স্বার্থ রক্ষার পথে বাধা সৃষ্টি করেএ কারণেই লড়াই চলতে থাকে এবং চলবেই। কিয়ামত পর্যন্ত লড়াইয়ের স্থায়ী অবসান নেই। মানবজাতি এভাবেই বিলুপ্তি অভিমুখে হাঁটছে।

    আমাদের সশস্ত্র মুসলিম জনসাধারণের মৈত্রী এমন এক প্রকল্প যা নির্মাণ করা এবং সফল করে তোলার জন্য চেষ্টা করা অনিবার্য। যে বিষয়ের ভিত্তিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হব তা শত্রুপক্ষের একতার ভিত্তি অপেক্ষা অনেক বেশি সুদৃঢ় ও সুসংহত। কারণ আমরা এমন এক উম্মাহ, যাদের রব একজন, যাদের দীন অভিন্ন, যাদের রাসূল এক, যাদের কিবলা এক, যাদের ধর্মগ্রন্থ অভিন্ন। এই উম্মাহর রাজনৈতিক পথ চলাটা মানবজাতির কল্যাণ অভিমুখী। এই উম্মাহর প্রতিটি দল-উপদল যেই পথে চলবে, যে পন্থা অবলম্বন করবে এবং বিশ্ববাসীর ব্যাপারে যে অঙ্গীকার পোষণ করবে, তা মানব-সভ্যতা নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব এবং পৌত্তলিকদের কর্মকাণ্ড অপেক্ষা বহু গুণ উত্তম ও উৎকৃষ্ট। ইনশাআল্লাহ অচিরেই এমন একটা সময় আসবে, যখন আমরা নিজেদের প্রবৃত্তিকে পরাজিত করবো এবং আমাদের অনুচিত আশা-আকাঙ্ক্ষা চাপা দিয়ে এগিয়ে চলবো। স্থানীয়, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক শত্রুদেরকে পরাজিত করা তখন হবে শুধু সময়ের ব্যাপার।

    ***






    আরও পড়ুন​
    Last edited by tahsin muhammad; 1 day ago.

  • #2
    ইনশাআল্লাহ অচিরেই এমন একটা সময় আসবে, যখন আমরা নিজেদের প্রবৃত্তিকে পরাজিত করবো এবং আমাদের অনুচিত আশা-আকাঙ্ক্ষা চাপা দিয়ে এগিয়ে চলবো। স্থানীয়, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক শত্রুদেরকে পরাজিত করা তখন হবে শুধু সময়ের ব্যাপার।
    হয় শাহাদাহ নাহয় বিজয়।

    Comment


    • #3
      সকল অভিজ্ঞতা থেকে একটা বিষয় জোরালোভাবে বোঝা যায়; সকল অঙ্গনে, সকল ময়দানে প্রস্তুতি ও বিজয়ের ক্ষেত্রে সফলতার একটি মৌলিক ভিত্তি হচ্ছে তথ্য উপাত্তের প্রাচুর্য।
      আল্লাহ মুজাহিদদের জামাআতগুলোকে তথ্য উপাত্তের প্রাচুর্য দ্বারা ভরপুর করে দিন। আমীন
      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

      Comment

      Working...
      X