Announcement

Collapse
No announcement yet.

সমাজ ও ব্যক্তিত্ব গঠনে সোহবতের প্রভাব।

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সমাজ ও ব্যক্তিত্ব গঠনে সোহবতের প্রভাব।

    মানুষের চিন্তা-চেতনায় ও নীতি-নৈতিকতায় এবং আখলাক-আফকারের পরিবর্তনে সোহবত বা সাহচর্যের গভীর প্রভাব রয়েছে। শত পৃষ্ঠা পড়ে যা অর্জন হয়না এক সোহবতের মাধ্যমেই অনেক সময় তার চেয়ে ঢের বেশী অর্জন হয়।
    নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সোহবতের কারণেই জাহিলিয়্যাতের পঙ্কে ডুবে থাকা মানুষগুলো পৃথীবির সর্বোত্তম মানুষে পরিণত হতে পেরেছেন। এবং তাঁদের সোহবতের বরকতে তাবেয়ীগণ সাহাবীদের পরে সর্বশ্রেষ্ঠ ইনসানে পরিণত হয়েছেন। এভাবে তাবীয়ীদের সোহবতে কারণে তাবে তাবেয়ীগণ শ্রেষ্ঠ হয়েছেন- আর এই তিন যুগের ব্যাপারেই যবানে নবুওয়াতে সুসংবাদ ঘোষিত হয়েছে শ্রেষ্ঠ যুগের। এ ফযীলত ও মর্যাদা তো মূলত সর্বপ্রথম ইমান ও তারপর সোহবতের কারণেই!
    বর্তমানযুগে কারো নামের শুরুতে যদি ইমাম, ফকীহ, মুফতী বা এ জাতীয় সম্মান সূচক কোন উপাধী না থাকে তাহলে চেনা যায়না যে, সে কে। কি তাঁর পরিচয় বা মর্যাদা।পক্ষান্তরে সাহাবায়ে কেরামের মর্যদা, সম্মান, ইলম, আমল তাকওয়া, যুহদ ইত্যাদী বুঝাতে প্রয়োজন হয়না নামের শুরুতে কোন গুরুগম্ভীব বা আড়ম্বরপূর্ণ উপাধীর। নামের শুরুতে শুধু মাত্র ‘সাহাবী’ শব্দ যোগ হওয়ায় তাঁদের সম্মান, মর্যাদা ও ইলমের যে চিত্র আমাদের সামনে অঙ্কিত হয়, অন্য হাজারো শব্দ যোগে তা সম্ভবনা।
    কর্মে ও চিন্তায় ভালো ও সঠিক মানুষ হতে যেমন সোহবতের প্রভাব রয়েছে, তেমনই প্রভাব আছে খারাপ মানুষে রুপান্তর হতে। আল্লাহ তায়ালা খারাপ সোহবতের প্রভাব সম্পর্কে বলেন,
    وَيَوْمَ يَعَضُّ الظَّالِمُ عَلَى يَدَيْهِ يَقُولُ يَا لَيْتَنِي اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُولِ سَبِيلًا} {يَا وَيْلَتَى لَيْتَيْتَنِي لَمْ أَتَّخِذْ فُلَانًا خَلِيلًا} {لَقَدْ أَضَلَّنِي عَنِ الذِّكْرِ بَعْدَ إِذْ جَاءَنِي وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِلْإِنْسَانِ خَذُولًا} [الفرقان:
    'আর সেদিন যালিম নিজ হাত দুটো কামড়িয়ে বলবে। "হায় আমি যদি রাসূলের সাথে কোন পথাবলম্বন করতাম। হায় অমুককে যদি আমি বন্ধুরুপে গ্রহণ না করতাম। অবশ্যই সে তো আমাকে উপদেশ বাণী থেকে বিভ্রান্ত করেছিল তা আমার কাছে আসার পর।" আর শয়তান তো মানুষের জন্যে চরম প্রতারক'
    আয়াতটি নাযিল হয়েছে ওকবা বিন আবু মুয়াইতের ব্যাপারে।এই আয়াতগুলোতে আমরা দেখতে পাই যে, খারাপ সোহবতের প্রভাব কতটা মন্দ হতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত মানুষকে কুফর পর্যন্ত পৌঁছে দেয়।
    অপরদিকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা অন্য আয়াতে আমাদেরকে সৎ লোকদের সাহচর্য গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন, যাতে তাঁদের মাঝে যা কিছু ভালো আছে তার কিছু অংশ আমাদের ভাগ্যেও জুটে। তিনি বলেন, يا ايها الذين امنوا اتقوا الله وكونوا مع الصدقين
    অর্থাৎ হে ইমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং ‘সাদীকীনদের সাহচর্য গ্রহণ করো।’ এ আয়াত থেকে এও বুঝা যায় যে, তাকওয়া অবলম্বন করার জন্যেও সাহচর্যের গভীর প্রভাব ও প্রয়োজন রয়েছে। অন্য আয়াতে রব্বে কারীম বলেন, واصبر نفسك مع الذين يدعون ربهم با الغداة والعشي يريدون وجهه।
    আর তুমি নিজেকে ধৈর্যশীল রাখো তাঁদের সাথে, যারা আপন রবের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সকাল-স
    কবি বলেন, “আল্লাহ ওয়ালাদের সামান্য সময়ের সোহবত একশত বছরের রিয়ামুক্ত ইবাদতের চেয়েও উত্তম!’”
    সারকথা হচ্ছে, দীনে ইসলামে সোহবতের অনেক মর্যাদা রয়েছে । এবং ব্যক্তিত্ব গঠন ও সমাজ পরিবর্তনে রয়েছে এর সীমাহীন গভীর প্রভাব। তাই, যারা জিহাদী কাজের দায়িত্বশীল রয়েছেন, তারা যদি আপন অনুসারীদেরকে সোহবত থেকে বঞ্চিত করেন তাহলে বলতেই হবে যে, তাঁদের অনুসারীরা বহুবিধ কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এর ফলে তারা কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিত্বে পরিণত হতে পারবেননা যে , এটা অনেকটা নিশ্চিত!
    আর যারা সোহবত দিবেন তারা যদি সোহবত দেয়ার উপযুক্ত না হন, অর্থাৎ তাঁদের আমল, আখলাক, আফকার ও জঝবায় যদি সঠিকতার মিশ্রণ না থাকে, তারা যদি কোরআন সুন্নাহর আলোয় আলোকিত না হন, তাহলে তাঁর অনুসারীরা তাঁর থেকে কি নিবেন?!! তাই, প্রথমে সোহবতদাতাদের সঠিক ভাবে বেড়ে উঠতে হবে। আমল, আখলাকে ও চিন্তা চেতনায় অনুসরণীয় ব্যক্তি হতে হবে, তাহলেই তাঁর থেকে মধু ও ঘ্রাণ নিচের পাত্রে গড়িয়ে পড়বে ও আশপাশে সুঘ্রাণ ছড়াবে।
    আমরা গড়তে চাই, ধ্বংস নয়; আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে চাই, বিভক্তি নয়; আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই, পিছনে নয়! শাইখুনা আবু মোহাম্মাদ আইমান হাফিঃ

  • #2
    আলহামদুলিল্লাহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। আল্লাহ তায়ালা আপনার লিখার ক্ষুরধার বাড়িয়ে দিন। আমিন।
    মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি।” (সূরা আল-আহযাব)

    Comment


    • #3
      মাশ আল্লাহ। উত্তম বলেছেন ভাই।।

      Comment


      • #4
        احسنت يا اخي!
        আল্লাহ আপনার লিখনি প্রতিভায় বারাকাহ দান করুন। আমীন।

        Comment


        • #5
          তাসীর অর্থাৎ প্রভাব এর বিষয়টি বোঝার ক্ষেত্রে আমি একটি মিসাল ব্যবহার করি। আর তা হল:

          মনে করুন,
          একটা জায়গায় বেশ কিছু লোক আছেন।
          তাঁরা সবাই সৎ এবং সত্যবাদী।
          উম্মতের জন্য তাঁদের হৃদয় উন্মুক্ত।
          ইত্যাদি ইত্যাদি এমন আরো বহু গুণে গুনান্বিত তাঁরা।

          যদি আপনি তাদের মাঝে উপস্থিত হন। আর আপনার অবস্থা হচ্ছে:
          আপনি ক্ষুদার্ত।
          আপনি পিপাসার্ত।
          আপনি ময়লা যুক্ত।
          অনেক দিন গোসল করেন না।

          তাহলে তাঁরা আপনাকে কি,
          খাবার দিবে না ? কেননা তাঁরা তো দয়ালু।
          পান করাবেন না ? কেননা তাঁরা পরকালে বিশ্বাসি।
          গোসল করাবেন না ? কেননা তাঁরা উম্মতের জন্য উন্মুক্ত।

          আপনারা রসূলের আনসারদের ঘটনা ভুলে গেছেন ?!

          এই হল বাহ্যিক বিষয়।
          তো চলুন এখন রাত্র হয়েছে ঘুমাতে যাই:

          মনে করুন,
          একটা জায়গায় বেশ কিছু লোক ঘুমাচ্ছেন।
          তাঁরা সবাই সৎ এবং সত্যবাদী।
          উম্মতের জন্য তাঁদের হৃদয় উন্মুক্ত।
          ইত্যাদি ইত্যাদি এমন আরো বহু গুণে গুনান্বিত তাঁরা।

          যদি আপনিও তাঁদের মাঝে ঘুমান। আর আপনার অবস্থা হচ্ছে:
          আপনি ক্বলবের দিক থেকে ক্ষুদার্ত।
          আপনি ক্বলবের দিক থেকে পিপাসার্ত।
          আপনি ক্বলবের দিক থেকে ময়লা যুক্ত।
          অনেক দিন ক্বলবের গোসল হয় না।

          আশা করি আপনারা জানেন যে, ঘুমালে রূহ বের হয়ে যায়।

          উক্ত সত্যবাদী দলের সাথে ঘুমানোর কারণে ,
          রাতে যখন রূহ বের হবে তখন আপনার এই রূহ উক্ত সত্যবাদীদের রূহের মাঝে আসবে।
          অবশ্যই ওই রূহ গুলো আপনার রূহের ক্ষুদার্ততা, পিপাসার্ততা, অসুস্থতা ইত্যাদি দেখে দূর করার চেষ্টা করবে যেমনভাবে বাহ্যিক ভাবে করেছিল। আপনার রূহানী গোসল দিবে।


          আপনার রূহ ঠিক হবে তো বাকী সব কিছুও ঠিক হয়ে যাবে।

          রূহ মারাত্মক শক্তিশালী একটি গোশতের টুকরা ।
          আপনার শরীরের হাত আছে , পা আছে , দেমাগ আছে আরও বহু কিছু আছে। তারপরও আপনি আরশে যেতে পারবেন না।
          কিন্তু রূহের কিছুই নাই তবু সে প্রতিরাত আরশে যায়।

          রূহকে শান্ত বানানো উচিত, শক্তিশালী বানানো উচিত, ধৈর্য্যশীল বানানো উচিত।
          মনে করুন, পুলিশ আপনাকে ধরেছে, আপনাকে প্রহার করে রক্তাক্ত করেছে।
          এতে আপনার কোন কষ্টই হবে না কেননা জিসিম আর কি ? মূল তো হল রূহ।
          রূহ শান্ত, শক্তিশালী, ধৈর্যশীল তাহলে ব্যথা কীভাবে অনুভূত হবে বলুন?!

          তাই তাসীর বা প্রভাব খুব জরুরী বলে মনে করি।
          হে পরাক্রমশালী শক্তিধর! কৃপণতা আর কাপুরুষতা থেকে আশ্রয় চাই সর্বক্ষণ।

          Comment


          • #6
            আল্লাহ্ আমাদের উত্তম সোহবত ওলাদের দলে শামিল রাখুন। আল্লাহ্ তাআলা যাদেরকে ভালবাসেন তাদের অন্তভূক্ত করুন আমিন।

            Comment

            Working...
            X