Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৪০ || ‘জামাআত কায়িদাতুল জিহাদ’ সম্পর্কে প্রচলিত আপত্তির জবাব।। ভাই আবু আব্দুল্লাহ আল-মায়াফিরী || চতুর্থ পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৪০ || ‘জামাআত কায়িদাতুল জিহাদ’ সম্পর্কে প্রচলিত আপত্তির জবাব।। ভাই আবু আব্দুল্লাহ আল-মায়াফিরী || চতুর্থ পর্ব

    আল হিকমাহ মিডিয়া পরিবেশিত
    “‘জামাআত কায়িদাতুল জিহাদ’ সম্পর্কে প্রচলিত আপত্তির জবাব
    ।।ভাই আবু আব্দুল্লাহ আল-মায়াফিরী||
    এর থেকে– চতুর্থ পর্ব



    ৬) তানজিম আল-কায়েদার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কি?

    তানজিম আল-কায়েদার একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে, দুনিয়ার বুকে আল্লাহর বিধান কায়েম করা। এ লক্ষ্যে কেবল আল-কায়েদা কাজ করছে, বিষয়টি এমন নয়। বহু ইসলামি দল এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। তবে তানজিম আল-কায়েদা সশস্ত্র পন্থায় লক্ষ্যে পৌঁছার চেষ্টা করছে। এটিই আল-কায়েদার বৈশিষ্ট্য।

    অপরাপর ইসলামি দলসমূহের মতো আল-কায়েদাও মনে করে যে, ইসলামি রাষ্ট্রসমূহের শাসকগোষ্ঠী উম্মাহর শত্রুদের তাবেদার। তারা উম্মাহকে জিম্মি করে রেখেছে এবং শরিয়ত বহির্ভূত পন্থায় শাসনকার্য পরিচালনা করছে। এজন্যই অন্যান্য তানজিমসমূহ সম্ভব্য উপায়ে সরকার ও শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা সশস্ত্র না হওয়ায় বারবার ব্যর্থ হতে হয়েছে। উপরন্তু ইসলামি আন্দোলনের যুবকদের জন্য তা বয়ে এনেছে মহা বিপর্যয়! তাদেরকে দিয়ে জেলখানাগুলো কানায় কানায় পূর্ণ করা হয়েছে। তাদের কবর গণকবরে পরিণত হয়েছে। পরিবর্তনের লক্ষ্যে যাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে তারা হলো-

    ক) সিরিয়ায় ইখওয়ান ও প্রথম দিকের লড়াইকারী দলসমূহ।
    খ) আলজেরিয়ায় জাবহাতুল ইনকায ও সমমনা দলসমূহ।
    গ) আল জামায়াতুল ইসলামিয়া আল মুকাতিলাহ, লিবিয়া।
    ঘ) আল জামায়াতুল ইসলামিয়া, মিশর।

    পরবর্তীতে আন্দোলনকারী ইসলামি দলসমূহ ব্যর্থতার কারণ চিহ্নিত করে সে মতে ব্যবস্থা গ্রহণের পরিবর্তে সংঘাত ও লড়াইয়ের নীতিকেই অযথার্থ ভাবতে লাগল। কেউ গণতন্ত্রের দিকে ঝুঁকল, আবার কেউ এমনি অন্য কোনও পন্থা বেছে নিল। শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের পরিবর্তে নিজেরাই আমূল বদলে গেল। তবে জিহাদি তানজিমসমূহের গায়ে এ ধরণের পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগেনি। সশস্ত্র জিহাদের নীতিতে তারা পরিপূর্ণ বিশ্বাসী ও আস্থাশীল। তারা নিজেরা বদলে যাওয়ার বদলে পরাজয়ের কারণসমূহ চিহ্নিত করেছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কারণ নিম্নরূপ-

    ক) জিহাদ মুষ্টিমেয় মানুষের মাঝে সীমিত ছিল। সরকারের সামর্থ্যের তুলনায় তাদের সামর্থ্য ছিল খুবই নগণ্য।

    খ) সরকারের হালচাল ও প্রকৃত অবস্থা সর্বসাধারণ জানত না, তাই তারা আন্দোলনকারীদেরকে সঙ্গ দেয়নি। কেবল মুষ্টিমেয় আন্দোলনকারীকে সরকারের মুখোমুখি হতে হয়েছে। ফলে সরকার ও তার গোয়েন্দা বাহিনী সহজে আন্দোলনকারীদেরকে সনাক্ত করতে পেরেছে এবং বন্দি বা হত্যা করেছে।

    গ) নিজস্ব মিডিয়া না থাকায় ইসলামি আন্দোলনকারীরা নিজেদের বক্তব্য দেশবাসীর কাছে পৌঁছাতে পারেনি। অপরদিকে সরকার মিডিয়া ব্যবহার করে ইসলামি আন্দোলন এবং তার কর্মীদের ব্যাপারে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।

    এসকল কার্যকারণ বিশ্লেষণ করে মুজাহিদগণ যে সকল সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তা হলো-

    উম্মাহকে ব্যাপকভাবে জিহাদে শরীক করা না গেলে বিজয় লাভ সম্ভব হবে না।

    স্থানীয় সরকারের সাথে যুদ্ধের বিষয়ে জাতি ঐক্যবদ্ধ নয়, তাই তাদের সাথে সংঘাত পরিহার করা হবে। যুদ্ধ হবে এমন শত্রুর (আমেরিকা) বিরুদ্ধে হবে, যার সাথে যুদ্ধের বিষয়ে কারো দ্বিমত নেই। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রথম কারণ হলো, আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে উম্মাহ কখনো ক্লান্তি ও দ্বিধাবোধ করবে না। অন্যদিকে আমেরিকার পতন হলে এমনিতেই এসব স্থানীয় সরকারের পতন ঘটবে। কারণ, তাদের শক্তি-সামর্থ্য, কামনা বাসনা সবই আমেরিকার সাথে জড়ানো।

    উক্ত নীতি (نظرية ضرب رأس الأفعى) তথা ‘সাপের মাথায় আঘাত হানা’র নীতি বলে পরিচিত। জিহাদি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ উক্ত নীতি আবিষ্কারের পর আল-কায়েদা গঠিত হয়। উক্ত নীতির আলোকে আল-কায়েদা ২০ বছরের যুদ্ধ-পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এর সূচনা হয় ২০০০ সাল থেকে। গেরিলা পদ্ধতিতে মার্কিন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আঘাত হানা হবে। উক্ত পরিকল্পনার আওতায় আল-কায়েদা বহু মার্কিন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বহু সফল অপারেশন পরিচালনা করে। তার মধ্যে ৯/১১ হামলা ছিল সবচেয়ে বড় ও ফলপ্রসূ।

    এই হামলার ইতিবাচক কয়েকটি দিক-
    • ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আঘাত মানে তাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ডে আঘাত হানা।
    • পেন্টাগন ও হোয়াইট হাউসকে টার্গেট করার মধ্য দিয়ে তাদেরকে বিশ্ব দরবারে অপদস্থ করা হয়েছে।
    • আরও সম্ভাব্য হামলার আশংকায় তারা নজিরবিহীন নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলতে বাধ্য হয়েছে। এতে তারা বিপুল অর্থ ব্যয় করছে। সেই সাথে এই হামলার মাধ্যমে তাদেরকে সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে টেনে আনা সম্ভব হয়েছে। ফলে বিশ্ববাসীর মন থেকে তাদের বিষয়ক অজানা ভীতি দূর হয়েছে।
    অপরিপক্ব কতিপয় বুদ্ধিজীবীকে বলতে শোনা যায় যে, ৯/১১ হামলা নাকি আমেরিকা নিজেই করেছে।

    বস্তুত নাইন ইলেভেনের হামলার দ্বারা আল-কায়েদার লক্ষ্য ছিল আমেরিকার অর্থনীতিতে আঘাত হানা, তাদের ভয়-ভীতি বিশ্ববাসীর মন থেকে দূর করা, বিশ্বের উপর তাদের একক মোড়লগিরীর অবসান ঘটানো এবং ধীরে ধীরে তাদেরকে নিঃশেষ করতে দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধে টেনে আনা।

    এটা কি যৌক্তিক যে, নিজের কিছু স্বার্থ হাসিলের জন্য আমেরিকা নিজেই আল-কায়েদার এসব লক্ষ্য বাস্তবায়ন করেছে? অথচ তারা তেমন কোনও ক্ষতির মুখোমুখি না হয়েও নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করতে পারত। তাছাড়া বিশ্ববাসীর সামনে নিজের রাষ্ট্রকে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং তার ভাবমূর্তি নষ্ট করার মাঝে কী স্বার্থ থাকতে পারে?!



    ৭) আল-কায়েদা সেনাদের হত্যা করে কেন?

    উত্তর : সাধারণভাবে সকল জিহাদি তানজিম বিশ্বাস করে এবং জানে যে, এই সকল রাষ্ট্র ও তাদের সেনাবাহিনী ইসলামি শরিয়াহর পরিবর্তে মানবরচিত আইনে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে এবং উক্ত কুফরি আইন প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছে। আর এটাতো জানা কথা যে, শরিয়তের কোনও একটি বিধানকে অস্বীকারকারীর সাথে লড়াই করা আবশ্যক। উক্ত কাজের দলিল হল; যাকাত অস্বীকার কারীদের বিরুদ্ধে জিহাদের বিষয়ে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও সাহাবায়ে কেরামের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান। আর ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ মাজমুউল ফাতাওয়ায় লিখেছেন –

    ‘ইসলামী শরিয়াহ’র কোনও একটি বিধান যদি কেউ অস্বীকার করে তার সাথে লড়াই ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের ইজমা (ঐক্যমত) রয়েছে’।

    ‘ইকামাতুত দলীল আলা ইবতালিত তাহলীল’ গ্রন্থে তিনি বলেন,

    ‘যারা শরিয়তের প্রকাশ্য ও স্বতঃসিদ্ধ কোনও বিধান অস্বীকার করবে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে মুসলিমদের ইজমা রয়েছে। যেমন, নামাজ অস্বীকারকারী, কোরআনে বর্ণিত আট শ্রেণীকে যাকাতের মাল বণ্টনের বিষয়টি অস্বীকারকারী, রমজানের রোজা অস্বীকারকারী এবং যারা মুসলিমদের রক্ত ঝরায়, মুসলিমদের মালামাল লুণ্ঠন করে অথবা নিজেদের মাঝে কোরআন-সুন্নাহ মাফিক ফায়সালা না করে, আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং সাহাবায়ে কেরামের ভাষ্যমতে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ওয়াজিব’।

    ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ মাজমুউল ফাতাওয়াতে আরও বলেন,

    ‘যারা শরিয়তের প্রকাশ্য কোনও বিধানকে অস্বীকার করে অথবা অপ্রকাশ্য বিধানকে অস্বীকার করে এবং তা নিশ্চিত হওয়া যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা ওয়াজিব। যারা বলে, আমরা রাসূলকে সত্য বলে বিশ্বাস করি, কিন্তু নামায পড়বো না, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে যতক্ষণ না তারা নামায পড়তে সম্মত হয়। যদি বলে আমরা নামায পড়বো তবে যাকাত দেব না, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে যতক্ষণ না তারা যাকাত দেয়। যদি বলে আমরা যাকাত দিবো তবে রোজা রাখব না এবং হজ্জ করব না, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে যতক্ষণ না তারা রমজানের রোজা রাখে হজ্জ করে। যদি বলে আমরা সবই করব তবে সুদী লেনদেন, মদপান অশ্লীলতা বর্জন করব না, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করব না, ইহুদি-নাসারাদের উপর জিযিয়া (কর) আরোপ করব না - তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে, যতক্ষণ না তারা এসবের মধ্যে পালনীয়গুলো পালন করে এবং বর্জনীয় বিষয়গুলো বর্জন করে’।

    আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
    { وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ}


    “অর্থঃ তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর যতক্ষণ না ফিতনা নির্মূল হয় এবং দ্বীন পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর জন্য হয়ে যায়”। (সূরা আনফাল ৮:৩৯)

    ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ এর বিভিন্ন ফতোয়া ও রিসালায় এসেছে, যারা ফরজ নামাজসমূহকে আংশিকভাবে অর্থাৎ কোনও এক ওয়াক্ত বা একাধিক ওয়াক্ত নামাযের ফরজিয়ত অস্বীকার করে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা ওয়াজিব। তেমনি যারা রোজা ও হজ্জ ফরজ হওয়ার বিষয় অস্বীকার করে, অথবা মুসলমানদের জান-মালের ক্ষতিসাধন থেকে বিরত না থাকে, মদ, জিনা, জুয়া ও মাহরামকে বিবাহ করা হারাম হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে অথবা কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ ফরজ হওয়া, ইহুদি-নাসারাদের উপর জিযিয়া (কর) আরোপসহ শরিয়তের অবশ্যপালনীয় বা বর্জনীয় বিধানসমূহকে আংশিকভাবে হলেও অস্বীকার করে বা স্বীকৃতি দেওয়া সত্ত্বেও পালন করা থেকে বিরত থাকে, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা ওয়াজিব। এ বিষয়ে উলামায়ে কেরামের মাঝে কোনও দ্বিমত আছে বলে আমার জানা নেই।

    এতো গেল কিতালের বিষয়। অর্থাৎ এসব ক্ষেত্রে সামর্থ্য থাকলে কিতাল করতে হবে, অন্যথায় ই’দাদ তথা কিতালের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। তবে ব্যক্তি-বিশেষকে তাকফির করতে হলে আহলে সুন্নাহ কর্তৃক প্রণীত তাকফিরের প্রতিবন্ধকতাসমূহ মাথায় রাখতে হবে। কারণ, ব্যক্তি বিশেষের ক্ষেত্রে অজ্ঞতাসহ তাকফিরের আরও বহুবিধ প্রতিবন্ধকতা থাকতে পারে।

    এসব রাষ্ট্রের শাসকগোষ্ঠী শুধু স্বৈরাচারী ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীই (ইসলাম বিরোধী) নয়, বরং এরা উম্মাহর শত্রুদের পক্ষে এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে এবং তাদের ধন-সম্পদ শত্রুদের হাতে তুলে দিচ্ছে। বাস্তবতা সম্পর্কে যারা অজ্ঞ অথবা যারা শত্রুদের ভাড়াটে কর্মী তারা ছাড়া কেউই এ সকল সরকারকে বৈধ মনে করে না এবং এদের বিরুদ্ধে লড়াই আবশ্যক হওয়া অস্বীকার করে না। তবুও আল-কায়েদা এসব সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে না, কারণ তাঁরা বড় শত্রুর (আমেরিকা) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাকে প্রাধান্য দেয়।

    পেছন থেকে সহায়তা প্রদানকারী পক্ষ যতদিন টিকে থাকবে ততদিন এসব সরকারের পতন ঘটানোর চেষ্টা করা, নিজেদের শক্তি ক্ষয় ও একই বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই আল-কায়েদা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে, লড়াই হবে পেছনের শত্রু আমেরিকার সাথে। জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া এর ব্যতিক্রম হবে না। যেমন সরকার যদি স্বপ্রনোদিত হয়ে ‍যুদ্ধ শুরু করে তাহলে আল-কায়েদা তাদেরকে প্রতিরোধ করবে এবং ততটুকু শিক্ষা দিয়ে ছাড়বে যাতে তারা পুনরায় হামলা করার সাহস না পায়। তাইতো দেখা যায় ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুল্লাহ সালেহ যখন আমেরিকার হয়ে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে তখন আল-কায়েদা সরকারি বাহিনীর উপর পাল্টা হামলা করেছে। তবে এ ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা ছিল। হাদী সরকারের সাথেও এ নীতির পরিবর্তন হয়নি। হাদীর ক্ষমতা গ্রহণের পর বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে সংযুক্ত আরব আমিরাত এর অনুগত বাহিনীগুলোর উপর আল-কায়েদা হামলা পরিচালনা করছে। তবে বিভিন্ন অঞ্চলে হাদীর অনুগত কিছু বাহিনী আল-কায়েদার সাথে যুদ্ধে জড়াতে আগ্রহী নয়, তাই মুজাহিদগণ তাদেরকে টার্গেট করছে না। কারণ আল-কায়েদা বড় শত্রু আমেরিকার সাথে বোঝাপড়া করতে এবং সে জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করতে ব্যস্ত। আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সাথে তারা যুদ্ধ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।


    আমেরিকার রণকৌশল পরিবর্তন :

    আমেরিকা যখন বুঝতে পারল যে, আল-কায়েদা ক্রমান্বয়ে তাদের শক্তিক্ষরণের পথে এগুচ্ছে এবং তাদেরকে সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে টেনে আনতে সক্ষম হয়েছে, তখন তারা নিজেদের কৌশল পরিবর্তন নিয়ে ভাবতে শুরু করল। মার্কিন সেনাদেরকে লড়াইয়ে নামানোর বিকল্প খুঁজতে লাগল। সে মতে, র‌্যান্ড কর্পোরেশন (RAND Corporation) তার গবেষণাপত্র মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। সেখানে আল-কায়েদার বিরুদ্ধে লড়তে স্থানীয় শত্রু সৃষ্টির উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বাছাই করা সুন্নি সম্প্রদায়, শিয়া ও মডারেট মুসলিমদেরকে প্রস্তুত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেখানে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়, এরাই আল-কায়েদাকে নির্মূল করার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেবে।

    র‍্যান্ড কর্পোরেশনের প্রতিবেদনসমূহের উল্লেখযোগ্য একটি হলো- Building Moderate Muslim Networks (মডারেট মুসলিম নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা)। এই প্রতিবেদন ইন্টারনেটে বিদ্যমান।

    মার্কিন সাহায্যের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ পেয়েছে শিয়া-সম্প্রদায়। কারণ, আল-কায়েদা এবং সালাফিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আমেরিকা তাদেরকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করেছে। সালাফি-বিরোধী অবস্থান তারা এজন্য গ্রহণ করেছে যে, তারা মনে করে সালাফিগণ আল-কায়েদা ও সন্ত্রাসের উৎপত্তিস্থল।

    যাইহোক, এই পরিকল্পনা মোতাবেক তারা গোষ্ঠীগত যুদ্ধ উস্কে দেয়। মার্কিন সাহায্য ও ‍আধুনিক অস্ত্রের চালান পেয়ে শিয়ারা পরিণত হয় শক্তিশালী পক্ষে, আর আহলুস সুন্নাহ হয়ে যায় দুর্বল পক্ষ। যারা শিয়া-সুন্নি যুদ্ধের খবরাখবর রাখেন, তারা ভালোভাবেই জানেন যে, তৃতীয় একটি পক্ষ সবসময়ই এই যুদ্ধ দীর্ঘ করতে চায়। শিয়ারা যখনই ফাঁদে আটকা পড়ে বা নিশ্চিত পরাজয়ের দিকে যেতে থাকে তখন সেই তৃতীয় পক্ষ সন্ধি ও শান্তির প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়। ইয়েমেনে বিশেষ করে ‘তাইজে’ এমনটি খুব বেশি দেখা যায়।





    আরও পড়ুন​
    তৃতীয় পর্ব ------------------------------------------------------------------------------------- পঞ্চম পর্ব
    Last edited by tahsin muhammad; 5 days ago.

  • #2
    মাশাআল্লাহ, গুরুত্বপূর্ণ কিতাব পাঠচক্র আকারে দেওয়া হচ্ছে। জাযাকাল্লাহু খাইরান
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment


    • #3
      ক) জিহাদ মুষ্টিমেয় মানুষের মাঝে সীমিত ছিল। সরকারের সামর্থ্যের তুলনায় তাদের সামর্থ্য ছিল খুবই নগণ্য।
      ​খ) সরকারের হালচাল ও প্রকৃত অবস্থা সর্বসাধারণ জানত না, তাই তারা আন্দোলনকারীদেরকে সঙ্গ দেয়নি।
      গ) নিজস্ব মিডিয়া না থাকায় ইসলামি আন্দোলনকারীরা নিজেদের বক্তব্য দেশবাসীর কাছে পৌঁছাতে পারেনি।

      এসকল কার্যকারণ বিশ্লেষণ করে মুজাহিদগণ যে সকল সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তা হলো-


      উম্মাহকে ব্যাপকভাবে জিহাদে শরীক করা না গেলে বিজয় লাভ সম্ভব হবে না।​
      বছর ফুরিয়ে যাবে এতো রিসোর্স আছে https://gazwah.net সাইটে

      Comment

      Working...
      X