এক ভাই জানতে চেয়েছেন,
‘বাংলাদেশ দারুল হরব কি’না ? যদি দারুল হরব হয়ে থাকে তাহলে দারুল হরবের সমস্ত মাসয়ালা এখানে পালন করা যাবে কি না ? কুরআন হাদিসের দলিল সহ জানালে ভাল হয়।’
উত্তর:
তবে দারুল হরবের সকল বিধান এখানে পালন করা যাবে না। যেমন, দারুল হরবের একটা বিধান হল, যাকে সামনে পাওয়া যাবে- নারী, শিশু ও এছাড়াও শরীয়ত যাদেরকে হত্যা করতে নিষেধ করেছে তারা বাদে- সকলকেই হত্যা করা যাবে। তবে সুস্পষ্ট আলামত দ্বারা যদি মুসলমান বুঝা যায় তাহলে হত্যা করা যাবে না। অন্যথায় ঢালাওভাবে যাকে পাওয়া যাবে তাকেই হত্যা করা যাবে।
কিন্তু আমাদের এসব দারুল হরবে এ বিধান পালন করা যাবে না। এখানে ঢালাওভাবে যাকে পাওয়া যায় হত্যা করা যাবে না। যারা হত্যার উপযুক্ত তাদেরকেই হত্যা করা যাবে। বাকিদেরকে নয়।
এর কারণ, আসলী দারুল হরবগুলোতে সাধারণত কাফেররাই বসবাস করে। মুসলমান নিতান্তই কম। বিশেষত খেলাফতের যামানায়। এ কারণে ঢালাওভাবে সকলকে হত্যা বৈধ। পক্ষান্তরে আমাদের দেশগুলোর মতো দারুল হরবে সাধারণত মুসলমানরা বসবাস করে। এ কারণে হত্যার আগে বুঝে নিতে হবে, আমি অন্যায়ভাবে কোন মুসলমান হত্যা করছি না তো? এ ব্যবধানের মূল কারণ দারের ভিন্নতা না, মূল কারণ সাধারণ অধিবাসীরা মুসলমান না কাফের- সেটা। অতএব, দারুল হরব হলেও যেহেতু এখানকার অধিবাসীরা সাধারণত মুসলমান, তাই হত্যার আগে বিবেচনা করে দেখতে হবে।
যেমন, দারুল হরবে কোন একটা মহল্লা যদি মুসলমানদের বসবাসের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বরাদ্দ করা হয় এবং সেখানে কয়েক লাখ মুসলমান বসবাস করে- তাহলে কি আপনি তাদের উপর হামলা করতে পারবেন? না! কিছুতেই না। দারুল হরব হওয়ার কারণেই শুধু হামলা করা যাবে না। মূল কথা সেটাই যে, যেখানকার সাধারণ অধিবাসী কাফের, সেখানে ঢালাওভাবে হত্যা জায়েয। আর যেখানকার সাধারণ অধিবাসী মুসলমান সেখানে হত্যা নাজায়েয। হত্যা করতে হলে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে যে, সে হত্যার যোগ্য। দারের ভিন্নতার কারণে এখানে কোন ব্যবধান হবে না।
এজন্য বলা যায়, আমাদের এসব রাষ্ট্র দারুল হরব হলেও আসলী দারুল হরবের সকল বিধান এখানে প্রযোজ্য হবে না। বরং এখানে একটা মাঝামাঝি অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। পূর্ণরূপে দারুল ইসলামের বিধানও প্রয়োগ করা যাচ্ছে না, পূর্ণরূপে দারুল হরবের বিধানও প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. এর একটি ফতোয়া আছে। ‘মারিদিন’ এলাকা- যেটি তাতাররা দখল করে নিয়েছিল কিন্তু সাধারণ জনগণ মুসলমান ছিল, সেটি- সম্পর্কে তিনি এ ফতোয়া দিয়েছিলেন। মাজমুউল ফাতাওয়া থেকে সুওয়াল জওয়াবসহ ফতোয়াটি তুলে দিচ্ছি-
وَسُئِلَ - رَحِمَهُ اللَّهُ -:
عَنْ بَلَدِ "مَارِدِينَ" هَلْ هِيَ بَلَدُ حَرْبٍ أَمْ بَلَدُ سِلْمٍ؟ وَهَلْ يَجِبُ عَلَى الْمُسْلِمِ الْمُقِيمِ بِهَا الْهِجْرَةُ إلَى بِلَادِ الْإِسْلَامِ أَمْ لَا؟ وَإِذَا وَجَبَتْ عَلَيْهِ الْهِجْرَةُ وَلَمْ يُهَاجِرْ وَسَاعَدَ أَعْدَاءَ الْمُسْلِمِينَ بِنَفْسِهِ أَوْ مَالِهِ هَلْ يَأْثَمُ فِي ذَلِكَ؟ وَهَلْ يَأْثَمُ مَنْ رَمَاهُ بِالنِّفَاقِ وَسَبَّهُ بِهِ أَمْ لَا؟
فَأَجَابَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ، دِمَاءُ الْمُسْلِمِينَ وَأَمْوَالُهُمْ مُحَرَّمَةٌ حَيْثُ كَانُوا فِي "مَارِدِينَ" أَوْ غَيْرِهَا. وَإِعَانَةُ الْخَارِجِينَ عَنْ شَرِيعَةِ دِينِ الْإِسْلَامِ مُحَرَّمَةٌ سَوَاءٌ كَانُوا أَهْلَ مَارِدِينَ أَوْ غَيْرَهُمْ. وَالْمُقِيمُ بِهَا إنْ كَانَ عَاجِزًا عَنْ إقَامَةِ دِينِهِ وَجَبَتْ الْهِجْرَةُ عَلَيْهِ. وَإِلَّا اُسْتُحِبَّتْ وَلَمْ تَجِبْ. وَمُسَاعَدَتُهُمْ لِعَدُوِّ الْمُسْلِمِينَ بِالْأَنْفُسِ وَالْأَمْوَالِ مُحَرَّمَةٌ عَلَيْهِمْ وَيَجِبُ عَلَيْهِمْ الِامْتِنَاعُ مِنْ ذَلِكَ بِأَيِّ طَرِيقٍ أَمْكَنَهُمْ مِنْ تَغَيُّبٍ أَوْ تَعْرِيضٍ أَوْ مُصَانَعَةٍ؛ فَإِذَا لَمْ يُمْكِنْ إلَّا بِالْهِجْرَةِ تَعَيَّنَتْ. وَلَا يَحِلُّ سَبُّهُمْ عُمُومًا وَرَمْيُهُمْ بِالنِّفَاقِ؛ بَلْ السَّبُّ وَالرَّمْيُ بِالنِّفَاقِ يَقَعُ عَلَى الصِّفَاتِ الْمَذْكُورَةِ فِي الْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ فَيَدْخُلُ فِيهَا بَعْضُ أَهْل مَارِدِينَ وَغَيْرُهُمْ.
وَأَمَّا كَوْنُهَا دَارَ حَرْبٍ أَوْ سِلْمٍ فَهِيَ مُرَكَّبَةٌ: فِيهَا الْمَعْنَيَانِ؛ لَيْسَتْ بِمَنْزِلَةِ دَارِ السِّلْمِ الَّتِي تَجْرِي عَلَيْهَا أَحْكَامُ الْإِسْلَامِ؛ لِكَوْنِ جُنْدِهَا مُسْلِمِينَ؛ وَلَا بِمَنْزِلَةِ دَارِ الْحَرْبِ الَّتِي أَهْلُهَا كُفَّارٌ؛ بَلْ هِيَ قِسْمٌ ثَالِثٌ يُعَامَلُ الْمُسْلِمُ فِيهَا بِمَا يَسْتَحِقُّهُ وَيُقَاتَلُ الْخَارِجُ عَنْ شَرِيعَةِ الْإِسْلَامِ بِمَا يَسْتَحِقُّهُ. مجموع الفتاوى، ج:28، ص:240-241
“শাইখুল ইসলাম রাহিমাহুল্লাহর কাছে মারিদিন শহর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল যে, সেটা কি দারুল হরব না দারুল ইসলাম? সেখানকার মুসলমানদের কি অন্যান্য দারুল ইসলামে হিজরত করতে হবে না’কি হবে না? হিজরত আবশ্যক হলে যদি হিজরত না করে বরং মুসলিমদের দুশমনদেরকে নিজের জান-মাল দিয়ে সাহায্য করে তাহলে কি গুনাহগার হবে? এমন ব্যক্তিকে যে মুনাফিক বলবে এবং এ বলে তাকে গালি দেবে সে কি গুনাহগার হবে?
তিনি উত্তর দেন: আলহামদু লিল্লাহ। মারিদিন বা অন্য যেখানেই থাকুক মুসলমানের জান-মালের ক্ষতিসাধন হারাম। মারিদিন হোক বা অন্য কোন ভূখণ্ড হোক- ইসলামী শরীয়ত থেকে বহিষ্কৃত (কাফের)দের সাহায্য করা সর্বাবস্থায় হারাম। সেখানে বসবাসরত মুসলিম যদি নিজের দ্বীন কায়েমে অপারগ হয়, তাহলে হিজরত ফরয। অন্যথায় মুস্তাহাব, ফরয নয়। জান-মাল দিয়ে মুসলমানদের দুশমনদের সাহায্য করা তাদের জন্য হারাম। যেকোনভাবে সম্ভব তাদেরকে এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। আত্মগোপন করে, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথা বলে বা তোষামোদ করে- যেভাবেই হোক। হিজরত করা ব্যতীত সম্ভব না হলে হিজরত করাই আবশ্যক। ব্যাপকভাবে তাদের সকলকে গালি দেয়া বা মুনাফিক বলা বৈধ হবে না। কুরআন সুন্নাহয় (মুনাফিকদের) যেসব সিফাত উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলোর ভিত্তিতে গালি দেয়া হবে বা মুনাফিক বলা হবে। মারিদিন ও অন্যান্য ভূখণ্ডের কতক অধিবাসী এসব সিফাতের মধ্যে পড়বে।
আর তা দারুল হরব কি দারুল ইসলাম- তো এ ব্যাপারে কথা হচ্ছে: তা দারে মুরাক্কাবা। এতে উভয় দিকই বিদ্যমান। দারুল ইসলামের মতো নয়, যেখানকার সৈনিকরা মুসলিম হওয়ায় সেখানে ইসলামী বিধি বিধান চলে। আবার এমন দারুল হরবের মতোও নয়, যেখানকার অধিবাসীরা কাফের। বরং তা তৃতীয় এক প্রকার। সেখানকার মুসলমানদের সাথে তাদের প্রাপ্য অনুযায়ী মুআমালা হবে, আর শরীয়ত থেকে বহিষ্কৃত (কাফের)দের সাথে তাদের প্রাপ্য অনুযায়ী যুদ্ধ করা হবে।”-মাজমুউল ফাতাওয়া: খণ্ড-২৮, পৃষ্ঠা-২৪০-২৪১
শায়খুল ইসলামের উদ্দেশ্য, মারিদিন যদিও দারুল হরব, তবে বিধানের দিক থেকে এটি মাঝামাঝি একটা প্রকার। এমনটি উদ্দেশ্য নয় যে, তা দারুল ইসলামও নয়, দারুল হরবও নয়। কেননা, এটি আহলুস সুন্নাহর আকীদা পরিপন্থী। দার হয়তো দারুল ইসলাম, নতুবা দারুল হরব। মাঝামাঝি কোন সূরত নেই। ওয়াল্লাহু তাআলা আ’লাম।
‘বাংলাদেশ দারুল হরব কি’না ? যদি দারুল হরব হয়ে থাকে তাহলে দারুল হরবের সমস্ত মাসয়ালা এখানে পালন করা যাবে কি না ? কুরআন হাদিসের দলিল সহ জানালে ভাল হয়।’
উত্তর:
বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম
বাংলাদেশ দারুল হরব। কারণ, এখানকার শাসনক্ষমতা মুরতাদ কাফেরদের হাতে। তবে দারুল হরবের সকল বিধান এখানে পালন করা যাবে না। যেমন, দারুল হরবের একটা বিধান হল, যাকে সামনে পাওয়া যাবে- নারী, শিশু ও এছাড়াও শরীয়ত যাদেরকে হত্যা করতে নিষেধ করেছে তারা বাদে- সকলকেই হত্যা করা যাবে। তবে সুস্পষ্ট আলামত দ্বারা যদি মুসলমান বুঝা যায় তাহলে হত্যা করা যাবে না। অন্যথায় ঢালাওভাবে যাকে পাওয়া যাবে তাকেই হত্যা করা যাবে।
কিন্তু আমাদের এসব দারুল হরবে এ বিধান পালন করা যাবে না। এখানে ঢালাওভাবে যাকে পাওয়া যায় হত্যা করা যাবে না। যারা হত্যার উপযুক্ত তাদেরকেই হত্যা করা যাবে। বাকিদেরকে নয়।
এর কারণ, আসলী দারুল হরবগুলোতে সাধারণত কাফেররাই বসবাস করে। মুসলমান নিতান্তই কম। বিশেষত খেলাফতের যামানায়। এ কারণে ঢালাওভাবে সকলকে হত্যা বৈধ। পক্ষান্তরে আমাদের দেশগুলোর মতো দারুল হরবে সাধারণত মুসলমানরা বসবাস করে। এ কারণে হত্যার আগে বুঝে নিতে হবে, আমি অন্যায়ভাবে কোন মুসলমান হত্যা করছি না তো? এ ব্যবধানের মূল কারণ দারের ভিন্নতা না, মূল কারণ সাধারণ অধিবাসীরা মুসলমান না কাফের- সেটা। অতএব, দারুল হরব হলেও যেহেতু এখানকার অধিবাসীরা সাধারণত মুসলমান, তাই হত্যার আগে বিবেচনা করে দেখতে হবে।
যেমন, দারুল হরবে কোন একটা মহল্লা যদি মুসলমানদের বসবাসের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বরাদ্দ করা হয় এবং সেখানে কয়েক লাখ মুসলমান বসবাস করে- তাহলে কি আপনি তাদের উপর হামলা করতে পারবেন? না! কিছুতেই না। দারুল হরব হওয়ার কারণেই শুধু হামলা করা যাবে না। মূল কথা সেটাই যে, যেখানকার সাধারণ অধিবাসী কাফের, সেখানে ঢালাওভাবে হত্যা জায়েয। আর যেখানকার সাধারণ অধিবাসী মুসলমান সেখানে হত্যা নাজায়েয। হত্যা করতে হলে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে যে, সে হত্যার যোগ্য। দারের ভিন্নতার কারণে এখানে কোন ব্যবধান হবে না।
এজন্য বলা যায়, আমাদের এসব রাষ্ট্র দারুল হরব হলেও আসলী দারুল হরবের সকল বিধান এখানে প্রযোজ্য হবে না। বরং এখানে একটা মাঝামাঝি অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। পূর্ণরূপে দারুল ইসলামের বিধানও প্রয়োগ করা যাচ্ছে না, পূর্ণরূপে দারুল হরবের বিধানও প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. এর একটি ফতোয়া আছে। ‘মারিদিন’ এলাকা- যেটি তাতাররা দখল করে নিয়েছিল কিন্তু সাধারণ জনগণ মুসলমান ছিল, সেটি- সম্পর্কে তিনি এ ফতোয়া দিয়েছিলেন। মাজমুউল ফাতাওয়া থেকে সুওয়াল জওয়াবসহ ফতোয়াটি তুলে দিচ্ছি-
وَسُئِلَ - رَحِمَهُ اللَّهُ -:
عَنْ بَلَدِ "مَارِدِينَ" هَلْ هِيَ بَلَدُ حَرْبٍ أَمْ بَلَدُ سِلْمٍ؟ وَهَلْ يَجِبُ عَلَى الْمُسْلِمِ الْمُقِيمِ بِهَا الْهِجْرَةُ إلَى بِلَادِ الْإِسْلَامِ أَمْ لَا؟ وَإِذَا وَجَبَتْ عَلَيْهِ الْهِجْرَةُ وَلَمْ يُهَاجِرْ وَسَاعَدَ أَعْدَاءَ الْمُسْلِمِينَ بِنَفْسِهِ أَوْ مَالِهِ هَلْ يَأْثَمُ فِي ذَلِكَ؟ وَهَلْ يَأْثَمُ مَنْ رَمَاهُ بِالنِّفَاقِ وَسَبَّهُ بِهِ أَمْ لَا؟
فَأَجَابَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ، دِمَاءُ الْمُسْلِمِينَ وَأَمْوَالُهُمْ مُحَرَّمَةٌ حَيْثُ كَانُوا فِي "مَارِدِينَ" أَوْ غَيْرِهَا. وَإِعَانَةُ الْخَارِجِينَ عَنْ شَرِيعَةِ دِينِ الْإِسْلَامِ مُحَرَّمَةٌ سَوَاءٌ كَانُوا أَهْلَ مَارِدِينَ أَوْ غَيْرَهُمْ. وَالْمُقِيمُ بِهَا إنْ كَانَ عَاجِزًا عَنْ إقَامَةِ دِينِهِ وَجَبَتْ الْهِجْرَةُ عَلَيْهِ. وَإِلَّا اُسْتُحِبَّتْ وَلَمْ تَجِبْ. وَمُسَاعَدَتُهُمْ لِعَدُوِّ الْمُسْلِمِينَ بِالْأَنْفُسِ وَالْأَمْوَالِ مُحَرَّمَةٌ عَلَيْهِمْ وَيَجِبُ عَلَيْهِمْ الِامْتِنَاعُ مِنْ ذَلِكَ بِأَيِّ طَرِيقٍ أَمْكَنَهُمْ مِنْ تَغَيُّبٍ أَوْ تَعْرِيضٍ أَوْ مُصَانَعَةٍ؛ فَإِذَا لَمْ يُمْكِنْ إلَّا بِالْهِجْرَةِ تَعَيَّنَتْ. وَلَا يَحِلُّ سَبُّهُمْ عُمُومًا وَرَمْيُهُمْ بِالنِّفَاقِ؛ بَلْ السَّبُّ وَالرَّمْيُ بِالنِّفَاقِ يَقَعُ عَلَى الصِّفَاتِ الْمَذْكُورَةِ فِي الْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ فَيَدْخُلُ فِيهَا بَعْضُ أَهْل مَارِدِينَ وَغَيْرُهُمْ.
وَأَمَّا كَوْنُهَا دَارَ حَرْبٍ أَوْ سِلْمٍ فَهِيَ مُرَكَّبَةٌ: فِيهَا الْمَعْنَيَانِ؛ لَيْسَتْ بِمَنْزِلَةِ دَارِ السِّلْمِ الَّتِي تَجْرِي عَلَيْهَا أَحْكَامُ الْإِسْلَامِ؛ لِكَوْنِ جُنْدِهَا مُسْلِمِينَ؛ وَلَا بِمَنْزِلَةِ دَارِ الْحَرْبِ الَّتِي أَهْلُهَا كُفَّارٌ؛ بَلْ هِيَ قِسْمٌ ثَالِثٌ يُعَامَلُ الْمُسْلِمُ فِيهَا بِمَا يَسْتَحِقُّهُ وَيُقَاتَلُ الْخَارِجُ عَنْ شَرِيعَةِ الْإِسْلَامِ بِمَا يَسْتَحِقُّهُ. مجموع الفتاوى، ج:28، ص:240-241
“শাইখুল ইসলাম রাহিমাহুল্লাহর কাছে মারিদিন শহর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল যে, সেটা কি দারুল হরব না দারুল ইসলাম? সেখানকার মুসলমানদের কি অন্যান্য দারুল ইসলামে হিজরত করতে হবে না’কি হবে না? হিজরত আবশ্যক হলে যদি হিজরত না করে বরং মুসলিমদের দুশমনদেরকে নিজের জান-মাল দিয়ে সাহায্য করে তাহলে কি গুনাহগার হবে? এমন ব্যক্তিকে যে মুনাফিক বলবে এবং এ বলে তাকে গালি দেবে সে কি গুনাহগার হবে?
তিনি উত্তর দেন: আলহামদু লিল্লাহ। মারিদিন বা অন্য যেখানেই থাকুক মুসলমানের জান-মালের ক্ষতিসাধন হারাম। মারিদিন হোক বা অন্য কোন ভূখণ্ড হোক- ইসলামী শরীয়ত থেকে বহিষ্কৃত (কাফের)দের সাহায্য করা সর্বাবস্থায় হারাম। সেখানে বসবাসরত মুসলিম যদি নিজের দ্বীন কায়েমে অপারগ হয়, তাহলে হিজরত ফরয। অন্যথায় মুস্তাহাব, ফরয নয়। জান-মাল দিয়ে মুসলমানদের দুশমনদের সাহায্য করা তাদের জন্য হারাম। যেকোনভাবে সম্ভব তাদেরকে এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। আত্মগোপন করে, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথা বলে বা তোষামোদ করে- যেভাবেই হোক। হিজরত করা ব্যতীত সম্ভব না হলে হিজরত করাই আবশ্যক। ব্যাপকভাবে তাদের সকলকে গালি দেয়া বা মুনাফিক বলা বৈধ হবে না। কুরআন সুন্নাহয় (মুনাফিকদের) যেসব সিফাত উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলোর ভিত্তিতে গালি দেয়া হবে বা মুনাফিক বলা হবে। মারিদিন ও অন্যান্য ভূখণ্ডের কতক অধিবাসী এসব সিফাতের মধ্যে পড়বে।
আর তা দারুল হরব কি দারুল ইসলাম- তো এ ব্যাপারে কথা হচ্ছে: তা দারে মুরাক্কাবা। এতে উভয় দিকই বিদ্যমান। দারুল ইসলামের মতো নয়, যেখানকার সৈনিকরা মুসলিম হওয়ায় সেখানে ইসলামী বিধি বিধান চলে। আবার এমন দারুল হরবের মতোও নয়, যেখানকার অধিবাসীরা কাফের। বরং তা তৃতীয় এক প্রকার। সেখানকার মুসলমানদের সাথে তাদের প্রাপ্য অনুযায়ী মুআমালা হবে, আর শরীয়ত থেকে বহিষ্কৃত (কাফের)দের সাথে তাদের প্রাপ্য অনুযায়ী যুদ্ধ করা হবে।”-মাজমুউল ফাতাওয়া: খণ্ড-২৮, পৃষ্ঠা-২৪০-২৪১
শায়খুল ইসলামের উদ্দেশ্য, মারিদিন যদিও দারুল হরব, তবে বিধানের দিক থেকে এটি মাঝামাঝি একটা প্রকার। এমনটি উদ্দেশ্য নয় যে, তা দারুল ইসলামও নয়, দারুল হরবও নয়। কেননা, এটি আহলুস সুন্নাহর আকীদা পরিপন্থী। দার হয়তো দারুল ইসলাম, নতুবা দারুল হরব। মাঝামাঝি কোন সূরত নেই। ওয়াল্লাহু তাআলা আ’লাম।
Comment