Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ০৭ || মুসলিম ভূমিকে প্রতিরক্ষা করা (ঈমান আনার পর প্রথম ফারদ্)|| - শহীদ শাইখ ড. আব্দুল্লাহ আযযাম (রহিমাহুল্লাহ্)|| ৫ম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ০৭ || মুসলিম ভূমিকে প্রতিরক্ষা করা (ঈমান আনার পর প্রথম ফারদ্)|| - শহীদ শাইখ ড. আব্দুল্লাহ আযযাম (রহিমাহুল্লাহ্)|| ৫ম পর্ব

    আত্তিবয়ান পাবলিকেশন্স কর্তৃক পরিবেশিত

    মুসলিম ভূমিকে প্রতিরক্ষা করা
    (ঈমান আনার পর প্রথম ফারদ্)||
    - শহীদ শাইখ ড. আব্দুল্লাহ আযযাম (রহিমাহুল্লাহ্)||
    এর থেকে = ৫ম পর্ব
    ==================================================
    =====
    ১ম অধ্যায়ঃ ঈমান আনার পর প্রথম ফারদ্ দায়িত্ব


    কাফিরদের বিরুদ্ধে দুই ধরনের জিহাদঃ

    ১. আক্রমণাত্মক জিহাদ (যেখানে শত্রুকে তার নিজ এলাকায় আক্রমণ করা হয়):

    এক্ষেত্রে কাফিররা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য একত্রিত হয় না। এই জিহাদ তখন ফরযে কিফায়া হয়, যার জন্য প্রয়োজন হয় স্বল্প সংখ্যক (যথেষ্ট) মু’মিনদের, যাতে তারা সীমানা রক্ষা এবং কুফ্ফারদের ভূমি আক্রমণ করতে পারে। আল্লাহর (দ্বীনের) শত্রুদের অন্তরকে ভীত-সন্ত্রস্ত করার জন্য বছরে অন্তত একবার একটি সৈন্যদলকে শত্রুদের ভূমিতে প্রেরণ করা উচিত। এটি হল ইমামের(খলীফার) দায়িত্ব যে, তিনি বছরে এক অথবা দু’বার জিহাদের উদ্দেশ্যে একটি সৈন্যদল গঠন করবেন এবং তাদেরকে জিহাদের ময়দানে প্রেরণ করবেন। সর্বোপরি, এটি হল মুসলিম জনগোষ্ঠীর উপর একটি দায়িত্ব যে, তারা এই কাজে ইমামকে সহযোগীতা করবে আর তিনি যদি এই সৈন্যদল না প্রেরণ করেন; তাহলে তিনি গুনাহের মধ্যে লিপ্ত হবেন।

    এ ধরনের জিহাদের ব্যাপারে আলিমগণ বলেছেন, “আক্রমণাত্মক জিহাদ হল জিযিয়া আদায়ের জন্য।” যে সকল আলিমগণ দ্বীনের শারীয়াহ সম্পর্কে ইলম রাখেন তাঁরাও বলেছেন, “জিহাদ হল এমন একটা দাওয়াহ্ যার মধ্যে শক্তি আছে এবং এটি হল একটি আবশ্যক দায়িত্ব যা সকল সম্ভাব্য উপায়ে বাস্তবায়ন করতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না সেখানে শুধু মাত্র মুসলিমরা অথবা যারা আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করে তারাই অবস্থান করে।”

    ২. আত্মরক্ষামূলক জিহাদঃ

    এটি হল আমাদের ভূমি হতে কাফিরদের বের করে দেয়া, যা ফারদ-আ’ইন, অর্থাৎ সবার জন্য আবশ্যকীয় কর্তব্য। সকল প্রকার আবশ্যকীয় কর্তব্য গুলোর মধ্যে এটি হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যদি নিম্নের অবস্থাগুলো দৃষ্ট হয়ঃ

    (ক) যদি কাফিররা মুসলিমদের ভূমিতে প্রবেশ করে।

    (খ) যদি দু’টি বাহিনী যুদ্ধের ময়দানে মুখোমুখি এসে দাড়ায় এবং একে অপরকে আহ্বান করতে শুরু করে।

    (গ) যদি খলিফা কোন ব্যক্তি অথবা জনগণকে আহ্বান জানায় তাহলে অবশ্যই বেরিয়ে পরতে হবে।

    (ঘ) যদি কাফিররা মুসলিমদের মধ্য থেকে কিছু মানুষকে বন্দী করে ফেলে।

    প্রথম শর্তঃ যদি কাফিররা মুসলিমদের ভূমিতে প্রবেশ করে

    সলফে সালেহীনগণ, তাদের উত্তরসূরিগণ, চার মাযহাবের আলিমগণ (মালিকী, হানাফী, শাফেঈ, হাম্বলী), মুহাদ্দিসগণ এবং মুফাসসীরগণ সকলেই এবং ইসলামের ইতিহাসের সকল সময়ে একমত পোষণ করেছেন যে, এই শর্তানুযায়ী জিহাদ র্ফাদ আ’ইন হয়ে যায়। র্ফাদ আ’ইন ঐ সকল মুসলিমদের উপর যাদের ভূমি কাফিররা আক্রমণ করেছে অথবা যারা আক্রান্ত মুসলিম ভূমির কাছাকাছি রয়েছে এরূপ পরিস্থিতিতে জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য সন্তানকে তার পিতা-মাতার কাছ থেকে, স্ত্রীকে তার স্বামীর কাছ থেকে, দাসকে তার মনিবের কাছ থেকে এবং দেনাদারকে তার পাওনাদারের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু ঐ আক্রান্ত অঞ্চলের মুসলমানদের যখন সৈন্যের ঘাটতির কারণে অথবা অক্ষমতা কিংবা গাফলতির কারণে কাফিরদেরকে তাদের ভূমি হতে বিতাড়িত করতে না পারে তখন এই র্ফাদ আ’ইনের হুকুমটি ঐ আক্রান্ত ভূমির নিকটবর্তী মুসলিমদের উপর, তারপর তার নিকটবর্তী মুসলিমদের উপর প্রযোজ্য হবে। আর যদি তাদেরও গাফলতি অথবা জনশক্তির ঘাটতি থাকে তাহলে পরবর্তী অতপর পরবর্তী এলাকার মুসলিমদের উপর এই হুকুম বর্তাতে থাকে; যতক্ষণ পর্যন্ত না এই ঘাটতি পূরণ হয় ততক্ষণ পর্যন্ত এটি চলতে থাকবে এবং এক পর্যায়ে এটি পুরো দুনিয়ার মুসলিমদের উপর র্ফাদ আ’ইন হয়ে যাবে।

    এই বিষয়ের উপর শাইখ ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহিমাহুল্লাহ্) বলেন, “প্রতিরক্ষামূলক জিহাদ, যার মাধ্যমে আগ্রাসী শত্রুদের (মুসলিমদের ভূমি থেকে) বের করে দেয়া হয়, এটি জিহাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি জিহাদ। সর্বজন স্বীকৃত যে, দ্বীন এবং নিজেদের সম্মান রক্ষা করা হচ্ছে একটি আবশ্যক দায়িত্ব। ঈমান আনার পর প্রথম বাধ্যতামূলক দায়িত্ব হল আগ্রাসী শত্রুদেরকে পার্থিব ও দ্বীনের উপর আগ্রাসনকে প্রতিহত করা। এক্ষেত্রে কোন ওজর-আপত্তি করার কোন সুযোগ নেই; যেমনঃ সরবরাহ অথবা পরিবহন, বরং যার যতটুকু সামর্থ্য আছে তা নিয়েই জিহাদ চালিয়ে যেতে হবে। আলিমগণ, আমাদের সহকর্মীগণ এবং অন্যান্যরাও এ বিষয়ের উপর একমত।”

    ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহিমাহুল্লাহ্) কাজীর বক্তব্যের প্রতি দ্বিমত পোষণ করেছিলেন, যিনি যানবাহনকে শর্ত হিসেবে উল্লেখ করে বলেছিলেন, “জিহাদ যদি কোন দেশে ‘র্ফাদুল আ’ইন’ হয় তখন হজ্জের ক্ষেত্রে যেমন যানবাহন থাকা জরুরী ঠিক জিহাদের ক্ষেত্রেও যানবাহন থাকা জরুরী (যদি শত্রুদের দূরত্ব সফরের দূরত্বের সমান হয়)।”

    ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহিমাহুল্লাহ্) আরও বলেন, “কাজী হজ্জের সাথে তুলনার ক্ষেত্রে যে কথা বলেছেন তা এর পূর্বে অন্য কেউ বলেনি এবং এটি হচ্ছে একটা দূর্বল উক্তি। জিহাদ হচ্ছে ফারদ্ কারণ এর মাধ্যমে শত্রুদের দ্বারা ক্ষতিকে দূর করতে হয় এবং এই কারণেই এটি হজ্জের উপর অগ্রাধিকার পায়। হজ্জের জন্য কোন যানবাহন অত্যাবশ্যকীয় নয়। জিহাদের ক্ষেত্রকে অনেকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। অন্য একটি সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, উবাদা বিন সামিত (রদিআল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত নাবী বলেছেন, ‘মুসলিমদের উপর বাধ্যবাধকতা যে, তাকে শুনতে ও মানতে হবে কঠিন এবং সহজ সময়ে, তার পছন্দ হোক বা অপছন্দ এবং যদিও তার অধিকার তাকে না দেয়া হয়।’ তাই এই আবশ্যক দায়িত্বের একটি খুঁটি হচ্ছে জিহাদে বেরিয়ে পড়তে হবে, যদিও আমাদের কঠিন অথবা সহজ সময় হয়। যেভাবে হজ্জের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে যে, র্ফাদ কাজগুলো কঠিনতর সময়গুলোতেও বহাল থাকে। এবং এটা হলো আক্রমণাত্মক জিহাদের বেলায়। কিন্তু প্রতিরোধমূলক জিহাদের ক্ষেত্রে এই র্ফাদ কাজটির প্রয়োজনীয়তা আরও অনেক গুনে বেড়ে যায়। দ্বীন এবং পবিত্র বিষয়গুলো আগ্রাসী শত্রুদের হতে রক্ষা করা হলো র্ফাদ- এক্ষেত্রে সবাই একমত। ঈমান আনার পর প্রথম বাধ্যতামূলক দায়িত্ব হল আগ্রাসী শত্রুদেরকে পার্থিব ও দ্বীনের উপরে আগ্রাসনকে প্রতিহত করা।”



    আরও পড়ুন
    ৪র্থ পর্ব ------------------------------------------------------------------------------------------------- ৬ষ্ঠ পর্ব
    Last edited by tahsin muhammad; 10-24-2023, 08:37 PM.

  • #2
    আল্লাহ্‌ তাআলা আমাদের সহিহ সমঝ দান করুন, আমীন

    Comment

    Working...
    X