এক বছর ধরে হিন্দুত্ববাদের কারাগারে আটক কাশ্মীরি মানবাধিকার কর্মী খুররম পারভেজ
ফাইল ছবিঃ হিন্দুত্ববাদীদের কারাগারে আটক খুররম পারভেজ
কাশ্মীরি মানবাধিকার রক্ষক খুররম পারভেজকে এক বছর, আগে ২২শে নভেম্বর ২০২১ তারিখে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে সন্ত্রাসবাদ এবং অন্যান্য অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
জনাব পারভেজ কাশ্মীর কোয়ালিশন অফ সিভিল সোসাইটির (JKCCS) সমন্বয়কারী এবং এশিয়ান ফেডারেশন এগেইনস্ট ইনভলন্টরী ডিসাপ্যারেন্স-এর (Asian Federation Against Involuntary Disappearances, AFAD) চেয়ারপার্সন, জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চল সহ মানবাধিকার ওকালতি, ডকুমেন্টেশন এবং তদন্তের জন্য তিনি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন।
২২ নভেম্বর ২০২১-এ ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা, ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) প্রায় ১৪ ঘন্টা ধরে পারভেজের বাড়িতে এবং অফিসে অভিযান চালায় এবং তার পরিবারের সদস্যদের ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও বই জব্দ করে। এরপর তাকে এনআইএ অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। যেখানে ৬ নভেম্বর, ২০২১-এ এনআইএ দায়ের করা একটি তথ্য প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের কারণ হিসেবে বলা হয় যে, পারভেজের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং বেআইনি আইনের অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট (UAPA), ভারতের অপমানজনক সন্ত্রাসবিরোধী আইন, যে মামলা থেকে জামিন পাওয়া প্রায় অসম্ভব। বিশেষত, তার বিরুদ্ধে “অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র,” “ভারত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো বা যুদ্ধ করার চেষ্টা করা বা যুদ্ধে উৎসাহিত করা,” ও “তহবিল সংগ্রহের” অভিযোগ আনা হয়েছিল।
ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী কর্তৃপক্ষ বারবার খুররম পারভেজকে তার মানবাধিকার কাজ বন্ধ করার জন্য তাকে ভয়ভীতি দেখিয়েছে।
বছরের পর বছর ধরে এনআইএ এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী হিন্দুত্ববাদী সংস্থাগুলি বিনা প্রমাণে তাকে এই অঞ্চলে “বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ পরিচালনা” করার জন্য অভিযুক্ত করেছে। এবং তার বাড়িতে এবং অফিসে অভিযান পরিচালনা করেছে।
২০১৬ সালে হিন্দুত্ববাদী কর্তৃপক্ষ তাকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের অধিবেশনে যোগদানের জন্য সুইজারল্যান্ড ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এবং তারপরে তাকে জম্মু ও কাশ্মীর কথিত জননিরাপত্তা আইন (PSA) এর অধীনে ৭৬ দিনের জন্য জেল দেয়।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে এমনকি জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা পর্যন্ত ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে পারভেজকে টার্গেট করা বন্ধ করার আহ্বান জানায়।
এছাড়া, অ্যামনেস্টিসহ বেশ কিছু সংস্থা কাশ্মীরি মানবাধিকার রক্ষক খুররম পারভেজের অবিলম্বে এবং নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন তাদের এসব ঠুনকো আহ্বানের কোন তোয়াক্কায় করেনি।
১৩ মে ২০২২ তারিখে আটকের ১৭৩ দিন পরে, এনআইএ পারভেজের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লিতে এনআইএ বিশেষ আদালতে একটি প্রাথমিক চার্জশিট দাখিল করে। সেখানে বলা হয় যে, তারা এই মামলার তদন্ত চালিয়ে যাবে। এনআইএ পারভেজকে পাকিস্তান-ভিত্তিক সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) এর গ্রাউন্ড ওয়ার্কারদের একটি নেটওয়ার্ক চালানোর জন্য এলইটি-এর কার্যকলাপকে আরও এগিয়ে নেওয়া এবং ভারতে সন্ত্রাসী হামলা করার জন্য” অভিযুক্ত করেছে।
শুধু খুররম পারভেজ একাই নন, এমন হাজারো মুসলিমকে হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন মিথ্যে মামলা দিয়ে কারাগারে আটকে রেখেছে। হিন্দুত্ববাদী ভারত তার সকল বাহিনিকে লেলিয়ে দিয়েছে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে। আর এটা তারা বিচার করবে না যে, ঐ মুসলিম কি কথিত সেক্যুলার মতবাদে বিশ্বাসী, নাকি ইসলাম পালনকারী সাচ্চা মুসলিম। মুসলিম হওয়াটাই যেন এখন বড় অপরাধ ভারতে।
মুসলিমদের প্রতি তাদের জিঘাংসা এতই মারাত্মক যে, কোন মুসলিম কুফফার জাতিসঙ্ঘের বেঁধে দেওয়া সীমা অনুযায়ী কেউ প্রতিবাদ করলেও, সেটা তারা মেনে নিবে না; তাকেও তারা সর্বশক্তি দিয়ে নির্মূল করার চেষ্টা করবে। আর ঠিক এমনটাই করা হয়েছে জনাব খুররমের সাথে।
তথ্যসূত্র:
——–
1. India: Kashmiri human rights defender Khurram Parvez must be immediately released ( Amnesty )
– https://tinyurl.com/23r7tjch
ফাইল ছবিঃ হিন্দুত্ববাদীদের কারাগারে আটক খুররম পারভেজ
কাশ্মীরি মানবাধিকার রক্ষক খুররম পারভেজকে এক বছর, আগে ২২শে নভেম্বর ২০২১ তারিখে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে সন্ত্রাসবাদ এবং অন্যান্য অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
জনাব পারভেজ কাশ্মীর কোয়ালিশন অফ সিভিল সোসাইটির (JKCCS) সমন্বয়কারী এবং এশিয়ান ফেডারেশন এগেইনস্ট ইনভলন্টরী ডিসাপ্যারেন্স-এর (Asian Federation Against Involuntary Disappearances, AFAD) চেয়ারপার্সন, জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চল সহ মানবাধিকার ওকালতি, ডকুমেন্টেশন এবং তদন্তের জন্য তিনি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন।
২২ নভেম্বর ২০২১-এ ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা, ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) প্রায় ১৪ ঘন্টা ধরে পারভেজের বাড়িতে এবং অফিসে অভিযান চালায় এবং তার পরিবারের সদস্যদের ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও বই জব্দ করে। এরপর তাকে এনআইএ অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। যেখানে ৬ নভেম্বর, ২০২১-এ এনআইএ দায়ের করা একটি তথ্য প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের কারণ হিসেবে বলা হয় যে, পারভেজের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং বেআইনি আইনের অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট (UAPA), ভারতের অপমানজনক সন্ত্রাসবিরোধী আইন, যে মামলা থেকে জামিন পাওয়া প্রায় অসম্ভব। বিশেষত, তার বিরুদ্ধে “অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র,” “ভারত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো বা যুদ্ধ করার চেষ্টা করা বা যুদ্ধে উৎসাহিত করা,” ও “তহবিল সংগ্রহের” অভিযোগ আনা হয়েছিল।
ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী কর্তৃপক্ষ বারবার খুররম পারভেজকে তার মানবাধিকার কাজ বন্ধ করার জন্য তাকে ভয়ভীতি দেখিয়েছে।
বছরের পর বছর ধরে এনআইএ এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী হিন্দুত্ববাদী সংস্থাগুলি বিনা প্রমাণে তাকে এই অঞ্চলে “বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ পরিচালনা” করার জন্য অভিযুক্ত করেছে। এবং তার বাড়িতে এবং অফিসে অভিযান পরিচালনা করেছে।
২০১৬ সালে হিন্দুত্ববাদী কর্তৃপক্ষ তাকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের অধিবেশনে যোগদানের জন্য সুইজারল্যান্ড ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এবং তারপরে তাকে জম্মু ও কাশ্মীর কথিত জননিরাপত্তা আইন (PSA) এর অধীনে ৭৬ দিনের জন্য জেল দেয়।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে এমনকি জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা পর্যন্ত ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে পারভেজকে টার্গেট করা বন্ধ করার আহ্বান জানায়।
এছাড়া, অ্যামনেস্টিসহ বেশ কিছু সংস্থা কাশ্মীরি মানবাধিকার রক্ষক খুররম পারভেজের অবিলম্বে এবং নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন তাদের এসব ঠুনকো আহ্বানের কোন তোয়াক্কায় করেনি।
১৩ মে ২০২২ তারিখে আটকের ১৭৩ দিন পরে, এনআইএ পারভেজের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লিতে এনআইএ বিশেষ আদালতে একটি প্রাথমিক চার্জশিট দাখিল করে। সেখানে বলা হয় যে, তারা এই মামলার তদন্ত চালিয়ে যাবে। এনআইএ পারভেজকে পাকিস্তান-ভিত্তিক সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) এর গ্রাউন্ড ওয়ার্কারদের একটি নেটওয়ার্ক চালানোর জন্য এলইটি-এর কার্যকলাপকে আরও এগিয়ে নেওয়া এবং ভারতে সন্ত্রাসী হামলা করার জন্য” অভিযুক্ত করেছে।
শুধু খুররম পারভেজ একাই নন, এমন হাজারো মুসলিমকে হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন মিথ্যে মামলা দিয়ে কারাগারে আটকে রেখেছে। হিন্দুত্ববাদী ভারত তার সকল বাহিনিকে লেলিয়ে দিয়েছে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে। আর এটা তারা বিচার করবে না যে, ঐ মুসলিম কি কথিত সেক্যুলার মতবাদে বিশ্বাসী, নাকি ইসলাম পালনকারী সাচ্চা মুসলিম। মুসলিম হওয়াটাই যেন এখন বড় অপরাধ ভারতে।
মুসলিমদের প্রতি তাদের জিঘাংসা এতই মারাত্মক যে, কোন মুসলিম কুফফার জাতিসঙ্ঘের বেঁধে দেওয়া সীমা অনুযায়ী কেউ প্রতিবাদ করলেও, সেটা তারা মেনে নিবে না; তাকেও তারা সর্বশক্তি দিয়ে নির্মূল করার চেষ্টা করবে। আর ঠিক এমনটাই করা হয়েছে জনাব খুররমের সাথে।
তথ্যসূত্র:
——–
1. India: Kashmiri human rights defender Khurram Parvez must be immediately released ( Amnesty )
– https://tinyurl.com/23r7tjch
Comment