ইসরায়েলি বর্বরতায় গাজা এখন ‘শিশুদের কবরস্থান’

দখলদার ইহুদিবাদী ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনে বিপর্যস্ত গাজায় মানবিক বিপর্যয় ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, গাজা এখন শিশুদের কবরস্থান ও অনাহারের রাজ্যে পরিণত হয়েছে। ১১ জুলাই, শুক্রবার আলজাজিরার একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর কমিশনার-জেনারেল ফিলিপ ল্যাজারিনি জানায়, সন্ত্রাসী ইসরায়েল গাজায় একটি নিষ্ঠুর ও পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের ফাঁদ তৈরি করেছে। গাজার মানুষ এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যেখানে তাদের সামনে বেছে নেওয়ার মতো মাত্র দুটি পথ রয়েছে। ক্ষুধায় মারা যাওয়া অথবা গুলিতে প্রাণ হারানো।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৮১৯ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন কেবল খাদ্য সহায়তা সংগ্রহের সময়। এর মধ্যে অন্তত ৬৩৪ জন শহীদ হয়েছে মার্কিন ও ইসরায়েল সমর্থিত এনজিও জিএইচএফ পরিচালিত বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে।
শুক্রবার গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ১৫ জন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে শহীদ করা হয়, যাদের মধ্যে ৯ জন শিশু ও ৪ জন নারী। একই দিন রাফাহ শহরে সহায়তা সংগ্রহের সময় আরও অন্তত ১১ জন শহীদ হন।
জিএইচএফের সঙ্গে যুক্ত মার্কিন ঠিকাদার ও দখলদার ইসরায়েলি সেনারা স্বীকার করেছে যে, তারা কখনও কখনও নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করেছে, যারা খাবারের আশায় জড়ো হয়েছিলেন।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) উপপ্রধান কার্ল স্কাউ গাজার পরিস্থিতিকে তার জীবনে দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে অভিহিত করেছে। সে জানায়, গাজার জনসাধারণের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য মজুদ রয়েছে, কিন্তু এসব ত্রাণ ট্রাক দিয়ে গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে বিতর্কিত জিএইচএফ কেন্দ্রগুলোর ওপর নির্ভর করছে।
এদিকে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সংকটে হাসপাতালগুলো কার্যত অচল। অনেক জরুরি সেবা বন্ধ হয়ে গেছে, বন্ধ হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স চলাচলও। ফলে আহতদের গন্তব্যে নিতে হচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি বা পশুবাহনে।
তথ্যসূত্র:
1. Israel turning Gaza into ‘graveyard of children and starving’: UNRWA chief
– https://tinyurl.com/3ex5jvvw
2.Under our watch, #Gaza has become the graveyard of children & starving people
– https://tinyurl.com/z4kyjsmp
Comment