এখনো দখলদার ইসরায়েলকে সামরিক সরঞ্জাম দিচ্ছে জার্মানি

যখন গোটা পৃথিবী ইসরায়েলের নির্মম ও বর্বর গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার, তখন কিছু তথাকথিত মানবাধিকারপন্থী পশ্চিমা শক্তি সেই একই দখলদার ইসরায়েলের যুদ্ধযন্ত্রে প্রাণসঞ্চার করছে। একদিকে মুসলিম শিশুদের কান্না, নারীদের আহাজারি এবং বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি—অন্যদিকে পাশ্চাত্য ধোঁকাবাজির নিঃশব্দ প্রশ্রয়। এরই এক জ্বলন্ত প্রমাণ হয়ে উঠেছে জার্মানির সামরিক রপ্তানির সাম্প্রতিক তথ্য, যা দখলদার ইসরায়েলের নির্মমতা আরও দীর্ঘায়িত করছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ২৬ জুন পর্যন্ত সময়ে জার্মানি দখলদার ইসরায়েলে প্রায় ২৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্র রপ্তানি অনুমোদন করেছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে জার্মান সরকার নিজেই, যা আনাদোলু এজেন্সি এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালেই অনুমোদিত রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৮৬.৫ মিলিয়ন ডলার, আর ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে তা দাঁড়ায় ৩২.৫ মিলিয়ন ডলারে। এই অনুমোদন এমন এক সময় এসেছে, যখন জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিনিধিরা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়ে আসছে।
এর আগে ২০২৪ সালে নিকারাগুয়া, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে জার্মানির বিরুদ্ধে ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি করে গণহত্যায় সহায়তা করার অভিযোগ দায়ের করে। তখন সাময়িকভাবে রপ্তানি স্থগিত করা হলেও, জার্মান সরকার পরবর্তীতে পুনরায় অস্ত্র সরবরাহ শুরু করে।
জার্মানি বহু দশক ধরে সন্ত্রাসী ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র। নাৎসি অতীত এবং হলোকাস্টের দায় এড়িয়ে যাওয়ার কৌশলে তারা এখন যেন আরেকটি মুসলিম জনগোষ্ঠীর উপর সেই ‘ঐতিহাসিক দায়’ মেটাতে চাইছে—তাও সরাসরি রক্ত আর ধ্বংসের বিনিময়ে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের বর্বর অভিযান শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত গাজায় ৫৮ হাজারেরও বেশি নিরপরাধ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন এবং এক লাখেরও বেশি মানুষ আহত, যাদের বড় অংশই নারী ও শিশু। গত একদিনেই ৯৩ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন।
এই অমানবিক এবং নির্লজ্জ রপ্তানী নীতির মাধ্যমে জার্মানি শুধু সন্ত্রাসী ইসরায়েলকে নয়, বরং ইতিহাসকেও উপহাস করছে। একটি গণহত্যার দায় আরেক গণহত্যা দিয়ে মোচন করার প্রবণতা শুধু নৈতিক দেউলিয়াপনার প্রকাশই নয়, বরং এটি পশ্চিমা বর্ণবাদ ও ইসলাম বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ।
তথ্যসূত্র:
1. Germany continues military exports to Israel amid mounting criticism
– https://tinyurl.com/4rj7vnj8
Comment