অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক হত্যাযজ্ঞের হোতা ও মামলার আসামি এখন পানি মন্ত্রণালয়ের সচিব

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গতবছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যায় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৫ বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী সরকার ক্ষমতা হারায়। হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে শুধু দলের লোক নয়; গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা।
হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে দেশের বিভিন্ন জেলায় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে বিরোধী দলের ওপর হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতন চালানো হতো। এরই অংশ হিসেবে ২০১৩ সালের দিকে সাতক্ষীরায় জামায়াত-বিএনপি নিধনে অভিযান চালিয়ে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতন চালানো হয়। এতে মূল নেতৃত্ব দেয় সাতক্ষীরা জেলার তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নাজমুল আহসান ও পুলিশ সুপার (এসপি) চৌধুরি মঞ্জুরুল কবির।
তবে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালানোর পরে চৌধুরি মঞ্জুরুল কবির দেশ ছেড়ে পালালেও এখনো অন্তর্বর্তী সরকারে সচিবের দায়িত্বে আছে নাজমুল।
জানা গেছে, নাজমুল আহসান পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে আছে। সে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক থাকাকালে বিএনপি, জামায়াত ও বিরোধী দলের ওপর হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতনের নায়ক। সে ফ্যাসিস্ট হাসিনার অতি প্রিয়ভাজন ছিল। তার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় ফৌজদারি মামলা হওয়া সত্ত্বেও সে সচিব পদে বহাল আছে।
গত ২৬ মে সচিব ও সাতক্ষীরার সাবেক জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, এসপি চৌধুরি মঞ্জুরুল কবিরসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলাটি সাতক্ষীরার আদালত ১ বিচারক মো. মাঈনুদ্দিন ইসলাম আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ মামলার বাদি মো. ওবায়দুল্যাহ অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১৪ সালে পহেলা জানুয়ারি তার বাড়ি ঘর বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিয়ে লুটপাট করে তৎকালীন সরকারের পেটুয়া বাহিনী। যার নেতৃত্বে ছিলে তৎকালীন ডিসি নাজমুল আহসান।
গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির ও ডিসি নাজমুল আহসানের নেতৃত্বে ২০১৩-১৪ সালে সাতক্ষীরায় পুলিশের গুলিতে অর্ধশতাধিক জামায়াত ও বিএনপির নেতাকর্মী হত্যার শিকার হয় । ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তার আস্থাভাজন এসপি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে এখনো বহাল তবিয়তে আছে হাসিনার অবৈধ নির্বাচন ও গুম-খুনে অংশ নেওয়া পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিব নাজমুল।
নাজমুল জেলা প্রশাসক থাকাকালে রাজনৈতিক সহিংসতায় ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে যৌথবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন ২৭ জন। এদের সবাই স্থানীয় বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী। এ ছাড়া আরও ২৫ জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ এবং আহত হয়েছেন কয়েক শতাধিক ব্যক্তি।
শুধু তাই নয়, বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর আগুন ও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিত সাবেক ডিসি নাজমুল।
তথ্যসূত্র:
১.হত্যাযজ্ঞের হোতা এখন পানি মন্ত্রণালয়ের সচিব
-https://tinyurl.com/3384w5xr











Comment