Announcement

Collapse
No announcement yet.

উম্মাহ নিউজ || ২০ জুমাদাল উলা, ১৪৪৭ হিজরি || ১২ নভেম্বর, ২০২৫ ঈসায়ী​​

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উম্মাহ নিউজ || ২০ জুমাদাল উলা, ১৪৪৭ হিজরি || ১২ নভেম্বর, ২০২৫ ঈসায়ী​​

    ময়মনসিংহে আওয়ামী দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে বাস চালক নিহত, দুজন দগ্ধ


    ​গত ১০ নভেম্বর গভীর রাতে ফুলবাড়িয়ায় আলম এশিয়া পরিবহনের একটি বাসে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তদের ছোড়া আগুনের ঘটনায় প্রাণ হারান ৩৫ বছর বয়সী চালক জুলহাস মিয়া।

    এ ঘটনায় শহিদুল ইসলাম ও তার মা শারমিন সুলতানা নামে আরও দুজন যাত্রী গুরুতরভাবে দগ্ধ হয়েছেন। তাদের বাড়ি ফুলবাড়িয়ার একটি গ্রামে। মা-ছেলে সেদিন ঢাকা থেকে ফিরছিলেন। গভীর রাত হওয়ায় তারা বাড়িতে না গিয়ে চালকের অনুমতি নিয়ে বাসেই ভোর হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু সূর্য ওঠার আগেই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিক্ষিপ্ত আগুনে পুড়ে যায় তাদের জীবন। বর্তমানে তারা আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

    প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসটি রাত পৌনে তিনটার দিকে ফুলবাড়িয়া পৌঁছে তেল নেওয়ার জন্য একটি পেট্রোল পাম্পের সামনে থামে। যাত্রীরা সবাই নেমে গেলেও চালক জুলহাস ও মা-ছেলে বাসের ভেতরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। ঠিক তখনই তিনজন দুর্বৃত্ত হঠাৎ এসে বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, বের হওয়ার সুযোগ পাননি জুলহাস।

    কৈয়ারচালায় জুলহাসের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, শোকের ছায়া পুরো গ্রামজুড়ে। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বৃদ্ধা মা সাজেদা বেগম। তিনি বলেন, ‘তিন লাখ টাকা ঋণ ছিল ওর। সাতদিন পরপর কিস্তি দিতে হইতো। আমি মানুষের বাড়িতে কাজ করতাম, জুলহাস বলতো— মা, তুমি আর কামে যাইও না, আমি কষ্ট করে সংসার চালামু।’

    জুলহাসের স্ত্রী জাকিয়া আক্তার এক বছর আগে বিয়ে করেছিলেন। স্বামীর মৃত্যুসংবাদে ছুটে এসে তিনি বলেন, ‘এক বছর হলো আমাদের সংসার শুরু। এখন আমি কারে নিয়ে বাঁচব?’

    জুলহাস ছিলেন পরিশ্রমী ও নিরীহ মানুষ। মায়ের কষ্ট লাঘব করতে ঋণের টাকায় ছোট্ট একটি ঘর তুলেছিলেন। সংসারটাকে একটু স্বস্তিতে টেনে নেওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু এক রাতের আগুনে নিঃশেষ হলো সবকিছু। মা হারালেন সন্তানকে, স্ত্রী হারালেন স্বামীকে, আর এক পরিবার হারাল তাদের আশ্রয়-ভরসা।

    স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটা যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসারই ফল, তা সবার জানা। আগুন সন্ত্রাসে সাধারণ মানুষই এখন বলি হচ্ছে।’

    তথ্যসূত্র:
    1. পুড়ে অঙ্গার পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী জুলহাস
    https://tinyurl.com/2zyzp5ds
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

  • #2
    গাজীপুরে দাঁড়িয়ে থাকা ৩ বাসে দুর্বৃত্তদের আগুন



    গাজীপুরের বাসন, কাশিমপুর ও শ্রীপুরে এক রাতে দাঁড়িয়ে থাকা তিনটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

    আজ (১২ নভেম্বর) ভোর ৪ টার দিকে ভোগড়া বাইপাস পেয়ারা বাগান এলাকায় ভিআইপি পরিবহনের একটি বাস ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ভিআইপি পরিবহনের একটি বাসে কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্ত পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দ্রত পালিয়ে যায়।

    এদিকে ভোর ৫ টার দিকে শ্রীপুরে বেড়াইদের চালা এলাকায় দাড়িয়ে থাকা আরও একটি বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে বাসটির ইঞ্জিন ও সিট পুড়ে গেছে।

    গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের কালিয়াকৈর-নবীনগর সড়কের চক্রবর্তী এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি বাসেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। গত রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

    স্থানীয়রা জানায়, জ্যোতি ফিলিং স্টেশনের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় একজন মিস্ত্রি বাসের নিচে শুয়ে মেরামতের কাজ করছিলেন।

    ঠিক তখনই একটি মোটরসাইকেলে করে দুই যুবক এসে বাসের পাশে থামে এবং মুহূর্তের মধ্যে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

    তথ্যসূত্র:
    1. গাজীপুরে দাঁড়িয়ে থাকা ৩ বাসে দুর্বৃত্তের আগুন
    https://tinyurl.com/5eehsma6
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

    Comment


    • #3
      বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত আরো এক যুবকের মৃত্যু



      মুন্সীগঞ্জ সদরের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের চরডুমুরিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি সমর্থিত দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আরো এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

      গত ১১ নভেম্বর দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যুবকের মৃত্যু হয়।

      উল্লেখ্য যে, গত ১০ নভেম্বর সকালে স্থানীয় আধিপত্যের জেরে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতিক মল্লিক, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওয়াহিদ রায়হান পক্ষের জিন্নত মীর, হোসেন মীরদের সাথে ফ্রান্স প্রবাসী, বিএনপি নেতা আব্দুর রহিম মোল্লা, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি আওলাদ হোসেন পক্ষের আরিফ মীরদের বিরোধের জেরে গুলিবিদ্ধ হয়ে আরিফ মীর (৩৮) নিহত হয়। এসময় ইমরান, রায়হানসহ গুলিবিদ্ধ হয় আরো একাধিক ব্যক্তি।

      তথ্যসূত্র:
      1. বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত আরো এক যুবকের মৃত্যু
      https://tinyurl.com/fd29ez4t
      নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

      Comment


      • #4
        দিল্লিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলাদেশকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যম



        দিল্লিতে সাম্প্রতিক বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলাদেশকে জড়িয়ে একের পর এক মিথ্যা সংবাদ প্রচার করছে ভারতের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম। এসব গণমাধ্যম দাবি করছে, পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার প্রধান হাফিজ সাঈদ নাকি বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারতের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছে।

        তবে ভারতীয় গণমাধ্যমের এই দাবি ভিত্তিহীন ও অবিশ্বাস্য বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। গত ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাই ঘটুক না কেন, ভারতীয় মিডিয়া আমাদের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু এই অভিযোগ বিশ্বাস করার মতো কোনো কারণ নেই। কোনো বুদ্ধিমান ব্যক্তি এসব বিশ্বাস করবে না।

        উল্লেখ্য যে, গত ১০ নভেম্বর দিল্লির লাল কেল্লার কাছে একটি গাড়িতে বিস্ফোরণে অন্তত ১৩ জন নিহত ও বহু লোক আহত হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বিস্ফোরণের পর গোটা ভারতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

        এরপরই ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করে, হাফিজ সাঈদ বাংলাদেশ থেকে হামলার পরিকল্পনা করেছে। তবে এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।

        এর আগেও ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশবিরোধী নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছে। যেমন, তারা দাবি করেছে— বাংলাদেশে হিন্দুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, হিন্দু নারীরা নাকি শাখা-সিঁদুর পরে ঘর থেকে বের হতে পারছে না।

        তাছাড়া, ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যম সম্প্রতি দাবি করেছে, ঢাকায় তুরস্কভিত্তিক এনজিও-সমর্থিত একটি কথিত ইসলামপন্থী সংগঠন ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ আত্মপ্রকাশ করেছে এবং তারা ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’-এর মানচিত্র প্রকাশ করেছে। যেখানে ভারতের কয়েকটি রাজ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এই দাবির পক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ দেয়নি ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো।

        গতবছর ১৩ নভেম্বর পাকিস্তানের করাচি থেকে একটি পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। অথচ ভারতীয় গণমাধ্যম সেটিকে ‘অস্ত্রবোঝাই জাহাজ’ হিসেবে প্রচার করে। একইভাবে, চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের পরও তারা ভ্রান্তভাবে প্রচার করে যে, তিনি নাকি চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবী ছিল এবং সেই কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।

        বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা বেড়েছে। বাংলাদেশভিত্তিক একটি ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা জানিয়েছে, গত বছর থেকে ভারতীয় উৎস থেকে পরিচালিত একাধিক অনলাইন অ্যাকাউন্ট থেকে নিয়মিত ভুয়া তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। শুধু গত এপ্রিল মাসেই তারা ২৯৬টি ভুয়া খবর শনাক্ত করেছে, যার বেশিরভাগই বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে প্রচার করা হয়েছে।

        তথ্যসূত্র:
        1. দিল্লিতে বিষ্ফোরণের ঘটনায় ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের
        https://tinyurl.com/3dkute3s
        2. Misleading reports of attacks on Bangladesh Hindus circulates in India
        https://tinyurl.com/57znctcz
        নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

        Comment


        • #5
          ফরিদগঞ্জে দুর্বৃত্তদের গুলিতে যুবক নিহত


          চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাত ১০টায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে রুহুল আমিন নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। উপজেলার রুস্তুমপুর সমিতি বাজারের আঠিয়াবাড়িতে তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। রুহুল আমিন বেঙ্গল গ্রুপের এস. আর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

          ‎স্থানীয়রা জানান, রুহুল আমিন উপজেলার রুস্তুমপুর বাজার ও তার আশপাশের দোকানগুলোতে বেঙ্গল গ্রুপের চা পাতাসহ কিছু সামগ্রী বিপণন করতেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি দোকানিদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে সমিতি বাজারের কাছে দুর্বৃত্তরা দুটি মোটরসাইকেলে এসে ৪ রাউন্ড গুলি ছুড়ে তাকে হত্যা করে।

          পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় এক মাছ শিকারি টেঁটা ছুড়ে মারলে মোটরসাইকেলের পেছনে বসা এক দুর্বৃত্তের গায়ে বিঁধে যায়। এ অবস্থায়ই তারা পালিয়ে যায়।

          তথ্যসূত্র:
          1. ফরিদগঞ্জে দুর্বৃত্তদের গুলিতে বেঙ্গল গ্রুপের এসআর নিহত
          https://tinyurl.com/3drb4x2j
          নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

          Comment


          • #6
            নামসর্বস্ব সংগঠনের ব্যানারে ফের সক্রিয় ইসকন



            কৌশল পাল্টে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে বিতর্কিত ও উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন। পূজা উদযাপন পরিষদ ও জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের মতো প্রধান ধর্মীয় সংগঠনগুলোর পাশাপাশি রামসেনা, শিবসেনার মতো নামসর্বস্ব সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব দখল করে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে তারা। এ কাজে সহযোগিতা করছে ভারতে পলাতক আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠ কিছু নেতা, যাদের অনেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হচ্ছে ইসকনের গোপন বৈঠকে।

            ১২ নভেম্বর ‘আমার দেশ’ গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, চট্টগ্রামের প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের আন্ডারগ্রাউন্ড অংশ এখন এ সমন্বয়ের কেন্দ্রবিন্দু। সেখানেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে নিয়মিত বৈঠক, যেখানে দেশ ও বিদেশে অবস্থানরত উগ্র হিন্দুত্ববাদী ইসকন নেতারা অংশ নিচ্ছে। বিশেষ করে ভারতের কলকাতা ও ত্রিপুরায় আশ্রয় নেওয়া কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা এসব বৈঠকে নির্দেশনা দিচ্ছে।

            ইতোমধ্যে দেশজুড়ে অন্তত ১৩টি সংগঠনের নামে এক হাজারেরও বেশি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব সংগঠনের ব্যানারে বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবকে সামনে রেখে মাঠপর্যায়ে তৎপরতা বাড়ানো হচ্ছে। ইসকনের কর্মীরা গেরুয়া পোশাক ত্যাগ করে সাধারণ ভক্তের বেশে অংশ নিচ্ছে উৎসব-আয়োজনে, যাতে স্থানীয়ভাবে সন্দেহের মধ্যে পড়তে না হয়।

            অনুসন্ধানে জানা গেছে, যে কোনো সময় যে কোনো ইস্যুতে সংখ্যালঘু ধর্মীয় কার্ড ব্যবহার করে দেশে ফের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার মতো শক্ত অবস্থান ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে তাদের। এই অপচেষ্টা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থাও।

            গোয়েন্দাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গত এক বছরে ইসকন সদস্যরা এসব সংগঠনের ছত্রছায়ায় নিজেদের নেটওয়ার্ক বিস্তারের পাশাপাশি ধর্মীয় পরিচয়ের আড়ালে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকারের নামে উগ্রবাদী এজেন্ডা চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে, যা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির পটভূমি হতে পারে।

            একই সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে গত ফেব্রুয়ারির শিব চতুর্দশী মেলায় ইসকনের প্রথম এ নতুন কৌশল ধরা পড়ে। রামসেনাসহ তিনটি সংগঠনের ব্যানারে একই ধরনের টি-শার্ট পরা শতাধিক তরুণের আচরণে ইসকনের ছাপ স্পষ্টভাবে লক্ষ করেন গোয়েন্দারা। এরই মাঝে জন্মাষ্টমীর র‌্যালিতে হঠাৎ করে চিন্ময়ের মুক্তি চাই লেখা প্লাকার্ড প্রদর্শন করে উগ্রবাদী সংগঠন রাম সেনার সদস্যরা। পরবর্তী সময়ে কয়েকজনকে আটক করা হলেও স্থানীয় ইসকন নেতাদের প্রভাবে তারা মুক্তি পেয়ে যায়।

            সূত্র জানায়, হাসিনার পতনের পর যে কটি সংগঠন ও সংস্থার কাঁধে ভর করে ফেরার অপচেষ্টা করে ফ্যাসিবাদী শক্তি, তার অন্যতম ইসকন। এক মাসের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১৬টি মহাসমাবেশ করে এ উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটি, যেখানে অংশ নেয় আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এসব সমাবেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনসহ নানা বায়বীয় অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক মহলে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করে সংগঠনটি।

            জানা গেছে, অবাস্তব কিছু দাবি-দাওয়া দিয়ে সরকারকে বেকায়দায়ও ফেলে ইসকনের তখনকার নেতা চন্দন ধর ওরফে চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ। সনাতনী জাগরণী জোট নামের তথাকথিত একটি সংগঠনের ব্যানারে ওইসব কর্মসূচির আয়োজন করা হলেও এর নেপথ্যে সর্বশক্তি নিয়ে কাজ করে ইসকন। ভারতীয় মিডিয়ায় ইসকনের সে শো-ডাউনগুলো ফলাও করে প্রকাশের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে হাসিনার পতনকে মৌলবাদের উত্থান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টা চালানো হয়।

            ভারতের উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ

            সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব ধর্মীয় সংগঠনের অধিকাংশই আগে ছিল নামসর্বস্ব; গত এক বছরে এগুলো হঠাৎ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তদন্তে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের তথাকথিত ক্লিন ইমেজধারী হিন্দু নেতাদের নেতৃত্বে এসব সংগঠন মূলত চট্টগ্রাম থেকে পরিচালিত হচ্ছে। তাদের অনেকের সঙ্গে ভারতের উগ্রবাদী রাজনৈতিক দল বিজেপি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএসের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে।


            তথ্যসূত্র:
            1. নামসর্বস্ব সংগঠনের ব্যানারে ফের সক্রিয় ইসকন
            https://tinyurl.com/8nzsfrp7
            নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

            Comment


            • #7
              ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রল ঢেলে আগুন



              ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে গ্রামীণ ব্যাংকের একটি শাখায় পেট্রল ঢেলে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। ১২ নভেম্বর দিবাগত রাত ২টার দিকে চান্দুরা এলাকায় গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখায় এ ঘটনা ঘটে। আগুনে অফিসের আসবাবপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে গেলেও টাকার ভল্ট অক্ষত রয়েছে।

              ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. কলিম উদ্দিন জানান, রাত আনুমানিক ২টার দিকে বাইরে থেকে পেট্রল ঢেলে আগুন দেয়া হয়। নাইটগার্ড বিষয়টি বুঝতে পেরে দ্রুত স্থানীয়দের খবর দেন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রাথমিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন পুরোপুরি নেভায়।

              তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় ব্যাংকের আসবাবপত্র ও কিছু কাগজপত্র পুড়ে গেলেও টাকার ভল্টের কোনো ক্ষতি হয়নি।

              তথ্যসূত্র:
              1. ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রল ঢেলে আগুন
              https://tinyurl.com/yntcrcb2
              নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

              Comment


              • #8
                ২১টি আলাদা সার্টিফিকেটের বেড়াজালে মন্থর দেশজ কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প



                কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। তবে এ শিল্পের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হলে একাধিক সরকারি ও আন্তর্জাতিক লাইসেন্স, অনুমোদন এবং সার্টিফিকেট থাকতে হয়। একই কাগজপত্র একাধিক সংস্থায় বারবার জমা দিতে হচ্ছে। সাত সংস্থা থেকেই ব্যবসায়ীদের প্রায় ২১টি সনদ নিতে হয়। এসব সনদের বেড়াজালে পড়তে হয় এ খাতের উদ্যোক্তাদের। এ প্রক্রিয়া প্রশাসনিক ব্যয় বৃদ্ধি করে এবং কার্য সম্পাদনেও বিলম্ব ঘটায়। বর্তমানে এ খাতে বিপুল সম্ভবনা থাকলেও সনদ জটিলতাসহ বেশকিছু কারণে পিছিয়ে রয়েছে।

                গত ১১ নভেম্বর রাজধানীর একটি হোটেলে ‘কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প : দেশের সার্বিক উন্নয়নে গণমাধ্যমকর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়। প্রাণ গ্রুপের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা অংশ নেন। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

                মূল প্রবন্ধে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করছে অ্যাগ্রো প্রসেসিং খাত। তবে সাপ্লাই চেইনের দুর্বলতা ও শিল্প কাঠামোর কেন্দ্রীভূত চিত্র এখন বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। অ্যাগ্রো প্রসেসিং খাত কৃষি ও ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের মধ্যবর্তী একটি সেক্টর। এটি প্রতি বছর প্রায় ৭০ মিলিয়ন টন কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করে। দেশের জিডিপিতে খাতটির অবদান প্রায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ম্যানুফ্যাকচারিং মূল সংযোজন মাত্র ১৩ শতাংশ। বর্তমান বাজারের আকার প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার, যা ২০৩০ সালে ছয় বিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে। দেশের প্রায় এক হাজার প্রসেসিং ইউনিটের মধ্যে প্রায় ২৫০টি রপ্তানির সঙ্গে জড়িত।

                এ খাতের অগ্রগতিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে তিনি বলেন, কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পের কার্যক্রম চালানোর জন্য উদ্যোক্তাদের সাত মন্ত্রণালয় থেকে ২১টি সনদ নিতে হয়। এর মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে চারটি, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুারো থেকে ছয়টি, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ থেকে পাঁচটি, কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট থেকে তিনটি এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে একটি করে সার্টিফিকেট নিতে হয়। তাও সবগুলো একই কাগজপত্র দিয়ে।

                সাপ্লাই চেইনের দুর্বলতা তুলে ধরে তিনি বলেন, খাতের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো মানসম্পন্ন কাঁচামালের অভাব। কৃষকরা যা উৎপাদন করেন, তা প্রায়ই শিল্পে ব্যবহারের উপযোগী নয়। দেশে উৎপাদিত কাঁচামালের মাত্র ১৩ শতাংশ প্রক্রিয়াজাত করা যায়। মান নিয়ন্ত্রণ ও গ্রেডিং যথাযথভাবে না হওয়ায় পণ্যের মানে পার্থক্য দেখা যায় এবং বিদেশি বাজারে স্বাদ ও গুণগতমানে অসামঞ্জস্য দেখা দেয়। এছাড়া কোল্ড চেইন, কোল্ড স্টোরেজ এবং ফ্রোজেন ভ্যানের অভাব বিদ্যমান। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়।

                তথ্যসূত্র:
                1. ২১ সনদের বেড়াজালে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প
                https://tinyurl.com/2tns6hrv
                নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

                Comment


                • #9
                  রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে বাংলাদেশিরা: শ্রম রপ্তানির আড়ালে দালাল চক্রের ভয়াবহ প্রতারণা



                  শ্রম রপ্তানির নামে বাংলাদেশি নাগরিকদের রাশিয়ায় পাঠিয়ে সৈনিক হিসেবে যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। ভালো চাকরির লোভ দেখিয়ে তারা দেশের বিভিন্ন জেলার যুবকদের যুদ্ধের ময়দানে ঠেলে দিচ্ছে। মূলত ঢাকার বাইরের ২৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সি তরুণ-যুবকদেরই টার্গেট করছে এ নেটওয়ার্ক।

                  ১২ নভেম্বর ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবার সূত্রে একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রথমে স্থানীয় দালালরা বিদেশে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখায়। পরে তাদের নিয়ে আসা হয় রিক্রুটিং এজেন্সিতে। এসব এজেন্সি বিদেশি কোম্পানিতে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে পাঠায় রুশ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায়। সেখান থেকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের বিভিন্ন ফ্রন্টে অংশ নিতে তাদের বাধ্য করা হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করতে কাজ করছে একটি শক্তিশালী চক্র।

                  শ্রমিক ভিসায় গিয়ে রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া এবং পরবর্তী সময়ে নিখোঁজ হওয়া অন্তত ১৫টি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে গণমাধ্যমের কর্মীরা। তারা জানে না তাদের ছেলে-স্বামী ‍কিংবা বাবার সর্বশেষ অবস্থা। জানা গেছে, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিদেশে, বিশেষ করে রাশিয়ায় গিয়ে নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের অধিকাংশই লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, সাভার, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলার বাসিন্দা।

                  বিভিন্ন নথিপত্র ও পারিবারিক তথ্য অনুযায়ী, বন্যা বিজয় ওভারসিজ লিমিটেড (আরএল ১৩৩৪), এসপি গ্লোবাল রিসোর্স (আরএল ২২৫৩), ম্যানিজ পাওয়ার করপোরেশন (আরএল ৯৭৩) ও ফ্রেন্ডশিপ অ্যান্ড কো-অপারেশন রিক্রুটমেন্ট লিমিটেড নামের চারটি এজেন্সি রাশিয়ায় লোক পাঠায়।

                  প্রথমে তাদের স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে প্রলোভন দেখিয়ে এসব রিক্রুটিং এজেন্সিতে নেওয়া হয়। এরপর এজেন্সি এক থেকে দেড় লাখ টাকা বেতনের কথা বলে ৫-১১ লাখ টাকার চুক্তি করে। এসব লোকজনকে ‘সিনোপেক ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ রাশিয়া এলএলসি’ নামের একটি চীনা প্রতিষ্ঠানে কাজের কথা বলে পাঠানো হয়, কিন্তু সেখানে পৌঁছেই তারা জানতে পারেন, গন্তব্য আসলে যুদ্ধক্ষেত্র।

                  চুয়াডাঙ্গার কমলাপুরের লিপি বেগমের স্বামী মনিরুল ইসলাম সাত মাস ধরে নিখোঁজ। ঢাকার রেডিও কলোনিতে তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন তিনি। লিপির ভাষায়, আমার স্বামী ঢাকায় গাড়ির দোকানে কাজ করতেন। স্থানীয় দালাল রবিন ও তার মামা সজল রাশিয়ায় ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখায়। প্রায় ১১ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তিতে বন্যা বিজয় এজেন্সির মাধ্যমে তাকে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়। পৌঁছার কিছুদিন পর তাকে জোর করে সেনা প্রশিক্ষণে নিয়ে যায়। প্রশিক্ষণের পর রাশিয়ার হয়ে তাকে ইউক্রেনে যুদ্ধে পাঠানো হয়েছে। মনিরুলের সর্বশেষ বার্তা ছিল ১৬ এপ্রিল, আমি খুব বিপদে আছি। হয়তো আর কথা হবে না। মেয়ের খেয়াল রেখো। বিষয়টি স্থানীয় দালাল রবিনকে জানালে সে পাল্টা হুমকি দেয়। পরবর্তী সময়ে এজেন্সিও কোনো দায় নেয়নি।

                  ২৫ বছর বয়সি গাজীপুরের অয়ন বন্যা বিজয়ের মাধ্যমেই রাশিয়া যান। তার বাবা রতন মণ্ডল জানান, স্থানীয় দালাল ইব্রাহিম ছয় লাখ টাকার চুক্তিতে ভালো চাকরির লোভ দেখিয়ে অয়নকে রাশিয়া পাঠায়। এক মাস পর অয়ন জানায়, তাকে সেনাক্যাম্পে নেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে ইউক্রেন সীমান্তে পাঠানো হয়েছে। মে মাসের ১২ তারিখে সে জানায়, আমি নেটওয়ার্কের বাইরে চলে আসছি। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এর পর থেকে তার কোনো খোঁজ নেই। দালাল ইব্রাহিমের নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

                  চট্টগ্রামের আনোয়ারার ৩০ বছর বয়সি অমিত বড়ুয়া শরিফুল্লাহ নামের এক দালালের মাধ্যমে বন্যা বিজয় এজেন্সিতে যোগাযোগ করে। ভালো বেতনে চাকরির প্রস্তাবে প্রায় ৮ লাখ টাকার বিনিময়ে রাশিয়া পাড়ি দেয়। ৭ মাস ধরে নিখোঁজ। পরিবারের সঙ্গে শেষ কথা হয় এপ্রিলের ২৮ তারিখে। তার ভাই সুমিত বড়ুয়া বলে, তার এক সহকর্মী ভয়েস মেসেজে জানায়, ইউক্রেনে যুদ্ধের সময় রকেট হামলায় অমিত নিহত হয়েছে। ওই ভয়েস বার্তায় শোনা যায়, ‘আমি সোহাগ (মানিকগঞ্জ) ও অমিতের রুমমেট। অমিত আর নেই। রকেট হামলায় ও মারা গেছে, সোহাগ আহত। পরে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সোহাগও নিহত হয়েছে। অমিতকে রাশিয়ায় পাঠানো দালাল শরিফুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ হলে সে বলে, অমিতের সঙ্গে আমার অনেক বছরের পরিচয়। আমি তো শুধু বন্যা বিজয়ের কাছে নিয়ে গেছি। আমিও চাই পরিবার যেন অমিতের সন্ধান পায়।

                  লক্ষ্মীপুর সদরের ভবানিগঞ্জের সাজ্জাদ হোসেন ছিলেন পরিবারের প্রধান চালিকাশক্তি। স্থানীয় দালাল আজাদ তাকে রাশিয়ায় উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখায়। পরে তাকে এস.পি গ্লোবাল রিসোর্সের মাধ্যমে প্রায় ১০ লাখ টাকার চুক্তিতে রাশিয়ায় পাঠানো হয়। পরিবার বলছে, সেখানে পৌঁছে তাকে জোর করে সেনাবাহিনীতে যোগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।

                  সাজ্জাদের পিতা সিরাজ মিয়া জানান, জানুয়ারির ১৪ তারিখে রাশিয়া গেলে তাকে প্রশিক্ষণের নামে আলাদা একটি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সে সময় সাজ্জাদ জানিয়েছিল, যুদ্ধ না করলে দেশে ফিরতে পারব না, মেরে ফেলারও আশঙ্কা আছে। তাই বাধ্য হয়ে রাজি হয়েছি। পরিবারের সঙ্গে তার শেষ যোগাযোগ হয়েছিল ফেব্রুয়ারিতে; তখন তিনি জানান, বড় ঝুঁকির মধ্যে আছেন। দালাল আজাদের ফোনে বারবার কল করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

                  ময়মনসিংহের রসুলপুরের মহসিন আহমদের বিষয়টিও একই রকম। তিনি ফ্রেন্ডশিপ অ্যান্ড কো-অপারেশন রিক্রুটমেন্টের মাধ্যমে আগস্টে রাশিয়া গিয়েছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী ওয়েল্ডারের কাজ পাওয়ার কথা থাকলেও পরে তাকে সেনা ক্যাম্পে পাঠানো হয়। তার ভাই মাহফুজ মিয়া জানান, এজেন্সি চুক্তি ভঙ্গ করেছে এবং মহসিনকে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। বর্তমানে পরিবার ভয়ের মধ্যে আছে, কারণ ইউক্রেনে রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধরত অবস্থায় তার জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

                  ভুক্তভোগী পরিবারগুলো বলছেন, কেউ কি তাদের স্বামী-সন্তান কিংবা ছেলেকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে চাইবে; তা-ও টাকা দিয়ে? আমাদের সবার সঙ্গে দালাল ও এজেন্সি প্রতারণা করেছে। আমাদের স্বামী-সন্তানকে সেনাবাহিনীতে বিক্রি করে দিয়েছে। এখন তারা কিছু জানে না বলে আবারও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে।


                  তথ্যসূত্র:
                  1. শ্রম রপ্তানির আড়ালে রাশিয়ায় সৈনিক নিয়োগের সিন্ডিকেট
                  https://tinyurl.com/yfekds5w
                  নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

                  Comment

                  Working...
                  X