ফিলিস্তিনের জন্য সব মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর জিহাদ ফরজ: মুফতি ত্বকী উসমানি

ফিলিস্তিনের বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানসহ সব মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র জিহাদ ফরজ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বের প্রখ্যাত ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও পাকিস্তান সুপ্রিমকোর্টের শরিয়াহ বেঞ্চের সাবেক বিচারপতি মুফতি মুহাম্মদ ত্বকী উসমানি হাফিযাহুল্লাহ।
তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক, আর্থিক ও বাস্তবিক সাহায্য করা মুসলিম উম্মাহর ওপর ফরজ। পাকিস্তানসহ সকল মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র জিহাদ ফরজ হয়ে গেছে। শুধু মুখরোচক কথা দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব থেকে মুক্ত হওয়া আর সম্ভব নয়।
গত ১০ এপ্রিল পাকিস্তানি গণমাধ্যম জিয়ো নিউজ জানিয়েছে, পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে জাতীয় ফিলিস্তিন সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে মুফতি তাকি উসমানি এসব কথা বলেছেন।
মুফতি ত্বকী উসমানি বলেন, ‘এক বছর আগে এই একই সম্মেলন কেন্দ্রে আমরা একটি বিশাল সমাবেশ করেছিলাম। তখন আমরা বলেছিলাম, আমরা ফিলিস্তিনিদের পাশে আছি এবং সবদিক থেকে তাদের সহায়তা করব। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমরা কেবল বক্তৃতা দিয়েই সীমাবদ্ধ থেকেছি, কোনো বাস্তব পদক্ষেপ নিইনি। আমাদের উচিত ছিল এখানে নয়, বরং গাজায় গিয়ে জড়ো হওয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা নফল ওমরাহ করার নিয়তে টাকা জমাচ্ছেন, তাদের উচিত সেই অর্থ ফিলিস্তিনের জিহাদে ব্যয় করা।’
মুফতি ত্বকী উসমানী হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘বেদনার বিষয় হচ্ছে, আমরা ফিলিস্তিনি মুজাহিদদের জন্য বাস্তবে কিছুই করতে পারছি না। উম্মাহ আজ যেন শুধু এক দর্শক, সবাই কেবল নিন্দা জ্ঞাপন করে যাচ্ছে। শুধু সম্মেলন আর প্রস্তাবনায় আটকে থেকে দায়িত্ব থেকে মুক্ত হওয়া যাবে না। যখন হাজার হাজার মুসলিমকে হত্যা করা হচ্ছে, তখনও যদি জিহাদ ফরজ না হয়, তাহলে কখন হবে?’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম ক্বিবলা হেফাজতে যারা লড়াই করছে, তাদের পাশে দাঁড়াতে উম্মাহ ব্যর্থ হয়েছে। উচিৎ ছিল, সমগ্র মুসলিম দুনিয়া জিহাদের ঘোষণা দিবে। আজ গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি সত্ত্বেও বোমাবর্ষণ বন্ধ হয়নি। ইসরায়েল কোনো নৈতিকতা বা আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা করে না। তাদের কোনো ধর্ম, বিশ্বাস বা প্রতিশ্রুতির প্রতি শ্রদ্ধা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েল আমেরিকার অস্ত্র ও সমর্থনে মুসলিম দেশগুলোকে ভয় দেখাতে চাচ্ছে। গাজার এক চিকিৎসক বার্তা পাঠিয়েছেন, ‘গাজা শেষ নিশ্বাস নিচ্ছে। আমরা বহু অপেক্ষা করেছি, তোমরা আসোনি, এখন বিদায়।’ আজ স্পষ্টভাবে গাজাকে দখল ও মুসলিমদের কবরস্থানে রূপান্তর করার পরিকল্পনা প্রকাশ পাচ্ছে। ট্রাম্প বলেছে, গাজা ফিলিস্তিনিদের থেকে খালি করে দেওয়া হবে, যেখানে শতাব্দীর পর শতাব্দী তারা বসবাস করে আসছে। সেখানে সে বিনোদন কেন্দ্র ও অন্যান্য স্থাপনা বানাতে চায়। মনে হচ্ছে ট্রাম্প গোটা পৃথিবীকেই নিজের সম্পত্তি মনে করতে শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব গাজাকে বাঁচিয়ে রাখা। এজন্য ইসরায়েল এবং তার সমর্থকদের পণ্য সম্পূর্ণভাবে বয়কট করা জরুরি। যারা ইসরায়েলকে সাহায্য করে, তাদের কোম্পানির পণ্যও বয়কট করতে হবে।’
শেষে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘পাকিস্তান এখনো ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি। কায়েদে আজম এটিকে ‘নাজায়েজ সন্তান’ বলেছিলেন। আমাদের অবস্থান কখনোই পরিবর্তন হবে না, ইসরায়েলের যত শক্তিই থাকুক না কেন। যেহেতু আমাদের কোনো চুক্তি নেই তাদের সঙ্গে, তাই কোনো অজুহাতও নেই। আর তারা চুক্তি ভঙ্গ করেছে বহুবার—তবে কোন চুক্তির কাছে আমরা বাঁধা?’
তথ্যসূত্র:
1. اہل فلسطین کی مدد فرض ہے، ہماری حکومت سمیت تمام اسلامی حکومتوں پر جہاد فرض ہوچکا: مفتی تقی عثمانی
– https://tinyurl.com/5x3syrt2
Comment