ইমারতে ইসলামিয়া হতে পারে অঞ্চলীয় বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু : মাওলানা মুত্তাকী

আফগানিস্তান তার ভৌগোলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনার কারণে এই অঞ্চলের ট্রানজিট ও বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে পারে, এমন মন্তব্য করেছেন ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাওলানা আমীর খান মুত্তাকী হাফিযাহুল্লাহ।
গত ২৭ মে আফগান গণমাধ্যমগুলো জানায়, সম্প্রতি চীনের পশ্চিমাঞ্চলে অনুষ্ঠিত ‘ওয়েস্ট চায়না ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে দেওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
মাওলানা মুত্তাকী বলেন, পশ্চিম চীন বর্তমানে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে এক সেতুবন্ধনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। একইভাবে, আফগানিস্তানও আর আগের মতো কোনো ‘ভূ-আবদ্ধ’ দেশ নয়; বরং এটি এখন এক স্থলসেতু, যা জাতি, বাজার ও সভ্যতাকে সংযুক্ত করতে সক্ষম।
তিনি জানান, আফগানিস্তান তার বিস্তীর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ, তরুণ জনগোষ্ঠী, কৃষি উৎপাদন এবং কৌশলগত অবস্থানের কারণে আঞ্চলিক ট্রানজিট ও বাণিজ্যের চারমুখী সংযোগস্থলে পরিণত হওয়ার সক্ষমতা রাখে। ইতোমধ্যে আফগান জনগণ প্রতিবেশী ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতার বাস্তব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যা দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়নের পথ সুদৃঢ় করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান একটি অর্থনীতি-কেন্দ্রিক এবং ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে। দেশটি ইতোমধ্যে সকল রাষ্ট্রের প্রতি ইতিবাচক সম্পর্ক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে।
তিনি জানান, আফগানিস্তানে বর্তমানে বিনিয়োগ এবং ব্যবসার জন্য নিরাপদ ও স্থিতিশীল পরিবেশ গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ীরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বিনিয়োগ এবং ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন। তার ভাষ্যমতে, দেশটির শিল্পখাত খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ২,০০০ নতুন কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
মাওলানা মুত্তাকী আরও বলেন, আফগান সরকার দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকল অর্থনৈতিক অংশীদারের সঙ্গে সমতা এবং স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সম্পর্ক বজায় রাখছে। এই নীতির কারণেই আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আফগানিস্তানের প্রতি একটি বিশেষ আস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
চীনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চীন কেবল আফগানিস্তানের প্রতিবেশীই নয়, বরং একটি নির্ভরযোগ্য অর্থনৈতিক অংশীদারও। কৃষি, প্রযুক্তি এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে চীনের অবদানকে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে তিনি জানান, এই খাতগুলোতে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সহযোগিতা গড়ে তোলার প্রয়াস চালানো হচ্ছে।
বক্তব্যের শেষ অংশে, মাওলানা আমীর খান মুত্তাকী হাফিযাহুল্লাহ আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা আন্তরিকভাবে আফগানিস্তানের সঙ্গে কাজ করতে চান, তাদের জন্য এই দেশের দরজা সর্বদা উন্মুক্ত রয়েছে।
তথ্যসূত্র:
1. Muttaqi: Afghanistan Now Offers Safe Climate for Investment
– https://tinyurl.com/2cub3udt
2. RTA English Breaking News
– https://tinyurl.com/y5yma7c2
Comment