Announcement

Collapse
No announcement yet.

আলেমদের মাথায় অদৃশ্য বন্দুক

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আলেমদের মাথায় অদৃশ্য বন্দুক

    আলেমদের মুখ থেকে আমাদের পছন্দসই ফতোয়া বের করার জন্য জোরাজুরি করা জায়েজ নেই বলেই জানি। বরং আমরাই নফসকে জোরাজুরি করবো আলেমসমাজের ইখলাসপূর্ণ ফতোয়া অনুসরণ করার জন্য। আলেমগণকে রাখতে হবে ভীতিমুক্ত। এর পর যদি কোনো আলেম নামধারী ব্যক্তি সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করে বা জেনেশুনে সত্য গোপন করে, তাহলে ভিন্ন কথা। কারণ আল্লাহকে ভয় করলে এসব কাজ কেউ করবে না। আর আল্লাহকে ভয় করাকেই কুরআনে আলেমের বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

    কিন্তু আলেমদের মাথায় যে কি পরিমাণ বন্দুক তাক করা থাকে, তা বোঝা যায় বিশেষ বিশেষ উপলক্ষে পত্রিকায় তাঁদের লেখাগুলো পড়লে। বাঙ্গালি ধর্মের চারটি হারাম মাস ফেব্রুয়ারি, মার্চ, আগস্ট, ডিসেম্বর আসলেই বাঙ্গালিরা আবেগে কেমন থরথর করে কাঁপতে থাকে, তা তো অজানা নয়। এরকম আবেগের মাথায় মানুষের হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। প্রায় প্রতিটি জাতীয় দৈনিকের কোনো না কোনো পাতায় 'ধর্ম' নামের একটা চিপা থাকে। সিলেক্টেড কিছু আলেমকে দয়া করে এই চিপায় কিছু লেখার অনুমতি দেওয়া হয়। এই বিশেষ মাসগুলোতে এই আলেমগণ ঐ মাসের হট টপিক নিয়েও যথারীতি লিখে থাকেন। সমস্যা সেখানে না। সমস্যা অন্য জায়গায়।

    তাঁদের এসব লেখায় এইসকল চেতনার ইসলামী বিশ্লেষণ থাকা জরুরি ছিল। চেতনাগুলোর কতখানি ইসলামসম্মত, কোন অংশটুকু ইসলামবিরোধী, কোন অংশটাকে একটু মডিফাই করলে ইসলামের সাথে বিরোধ মিটে যায়, এসব নিয়ে নির্মোহ ও নির্ভীক আলোচনা থাকা উচিত ছিল। কিন্তু এমনটা করার বদলে আলেমদের যেন চেষ্টা থাকে আমাদের বাঙ্গালি আবেগের সামনে কুঁজো হয়ে জি হুজুর জি হুজুর করা। আমাদের আবেগ মহাশয় যেন আচমকা ইসলামের বিরুদ্ধে খেপে গিয়ে তেড়েফুঁড়ে না আসে, তা এনশিউর করা।

    ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত কয়েকটা এমন লেখা পড়ে জানলাম মাতৃভাষা নাকি আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত। তাহলে ইসলাম কি? একটা হাদিস দেখলাম রাসূল (সাঃ) আরবিকে ভালবাসতেন কারণ এটা তাঁর 'মাতৃভাষা' (হাদিস এখানে শেষ, পরেরটা লেখকের কথা)। অতএব আমাদেরো উচিত বাংলাকে ভালবাসা। প্রয়োজনে এজন্য প্রাণ দেওয়া! আমি হাদিস বিশারদও নই, ছাত্রও নই। কিন্তু দলীল উল্লেখবিহীন এই কথাটা কেমন যেন খটকা লাগে। দীনের জন্য প্রাণ দেওয়ার কথা উল্লেখ ছাড়াই ভাষার জন্য প্রাণ দেওয়ার কথা তোলা বাদ দিলাম। কিন্তু 'মাতৃভাষা' শব্দটার প্রতিশব্দ আরবি ইবারতে আসলে কি ছিল? কারণ আমরা যেরকম মনে করি 'মাতৃভাষা' 'মাতৃভূমি' এগুলো ইউনিভারসাল কিছু শব্দ, বাস্তবে আসলে তা নয়। মাতৃভূমি বলতে আজকে জাতিরাষ্ট্রের যুগে আমরা বুঝি যেই 'দেশে' আমরা জন্মেছি, সেটার পুরোটা। কিন্তু আফ্রিকার ট্রাইবাল সোসাইটিগুলোতে গেলে দেখবেন তারা মাতৃভূমি বলতে বোঝে নানাবাড়ি, আর পিতৃভূমি বলতে বোঝে দাদাবাড়ি। ভাষার ক্ষেত্রেও এমনই। তা ছাড়া আরবি ভাষা শেখার গুরুত্ব নিয়ে একটা-দুটা লাইন লিখলে কি খুব ক্ষতি হয়ে যেত?

    একইরকম মার্চ-ডিসেম্বর মাস আসলে শুরু হয় স্বাধীনতাবন্দনা। মানুষ জন্মগত স্বাধীন, স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার, এখন যেই দল ক্ষমতায় আছে সেই দলের নেতাই স্বাধীনতার মহান ঘোষক - এসব সেকুলার বুলিগুলোই নতুন করে আওড়ানো হয়। খালি একটু ইসলামিক ফ্লেভার দিয়ে আরকি। তো এখান থেকে আমরা ইসলামের ব্যাপারে কি শিখলাম? ইসলাম যে আমাদেরকে আল্লাহর দাস হতে বলে, তাগুতের দাসত্ব থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে বলে, সেসব আলোচনা কোথায়? ২৫শে মার্চের গণহত্যা, বঙ্গবন্ধু হত্যা এসব নিয়ে লেখা হয় যে মানুষ হত্যা পাপ। ভাল কথা। তো এসব চেতনার সোল এজেন্ট দাবিদাররা যে স্বাধীনতার পর থেকে এত এত হারাম রক্তপাত করল, সেগুলোর আলোচনা কি একটা-দুইটা শব্দে, অন্তত ইঙ্গিতেও আসতে পারত না?

    আসলে আমার মনে হয় আমরা আমাদের আলেমসমাজকে ঠিকমত সাপোর্ট দিতে পারছি না। ওনারা হক কথা বলে বলার কারণে যদি ওনাদের দিকে বুলেট আসে, তাহলে মাদ্রাসা-জেনারেল উভয় লাইনের হাজারো মানুষ যে নিজের বুক ভেদ করার আগে সেই বুলেট ওনাদের বুকে লাগতে দেবে না, এটা প্রমাণ করে দেখাতে হবে। তাঁদেরকে জানিয়ে দিতে হবে 'আপনাদের জনসমর্থনের কোনো অভাব নেই। আপনারা হক কথা বলুন। সেকুলারদের খায়েশাতকে ইসলামী পরিভাষা দিয়ে রিইনফোর্স করা থামান। জনসমর্থন না থাকলেও হক কথা বলুন। আল্লাহ্* তো আছেন। আল্লাহ্র গায়েবি সেনাবাহিনী তো আছে। আর কি লাগে? কাকে লাগে? কেন লাগে?'

  • #2
    জাযাকাল্লাহ ভাই! সঠিক কথা! আসলে ভাই! যে আলেম তাগুতদের ভয়ে কোটি কোটি মানুষের সামনে আল্লাহর দ্বীনকে বিৃকত করে বা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে উপস্থাপন করে, যার ফলে কোটি মুসলিম বিভ্রান্ত হয়, সে আলেমই না। সে শয়তান।
    আল্লাহ বলেছেন:

    أتخشونهم فالله أحق أن تخشوه

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহ ভাই সুন্দর আলোচনা। আল্লাহ তায়ালা সব আলেমকে হক কথা বলার তাওফিক দান করুন।
      তবে এই প্রজন্মের আলেমদের দ্বারা সম্ভব হবে কি না আল্লাহই ভালো যানেন। আমাদের চেষ্টা মেহনতের দ্বারা পরবর্তি প্রজন্ম যাদি কিছু একটা করে, তাহলে এটাই আমাদের সফলতা।
      আমাদের সধ্যানুযায়ী দীনের কাজ করে যেতে হবে। বাকি আল্লাহ তায়ালা ফায়সালা।

      Comment


      • #4
        দেখুন ইউছুফ আলাইহিচ্ছালাম কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে স্বপনের তাবীর আর তিনি শুরু করে দিলেন তাওহীদের তালীম , লোকেরা জিজ্ঞেস করেছে চাদের হাকিকত, কুরান অনর্থক প্রশ্নের স্বার্থক উত্তর প্রদান করেছে, এর হাকিকত নাবলে বলে দিয়েছে উদ্দ্যেশ্য । এটিই হও্য়া উচিৎ উলামায়ে কিরামের আদর্শ। হাত্তা তানফারিদা সালিফাতী...

        Comment


        • #5
          তাঁদেরকে জানিয়ে দিতে হবে 'আপনাদের জনসমর্থনের কোনো অভাব নেই। আপনারা হক কথা বলুন। সেকুলারদের খায়েশাতকে ইসলামী পরিভাষা দিয়ে রিইনফোর্স করা থামান। জনসমর্থন না থাকলেও হক কথা বলুন। আল্লাহ্* তো আছেন। আল্লাহ্র গায়েবি সেনাবাহিনী তো আছে। আর কি লাগে? কাকে লাগে? কেন লাগে?'
          প্রিয় ভাই ,
          উনাদেরকে এগুলো জানাতে বলছেন !
          তা কি উনারা কম জানে বলে আপনি ভাবছেন ?
          যদি হয়ে থাকে তাই ,
          তাহলে আপনার ভাবনাটাই হয়তো ভুল ভাই ।
          কেননা যারা ২৫/৩০ বছর যাবত মাদ্রাসার ঠাণ্ডা মেঝেতে বসে বসে পড়লো কলাল্লাহ , কলা-রসুলুল্লাহ
          আপনার আর আমার সেই যোগ্যতা কি আছে তাদের কে বুঝানোর যে কুরআনে কি বলেছেন দয়াময় আল্লাহ !!!
          বস্তুত হেদায়েত যা শুধুই করুণাময় রবের-ই দান
          যা তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে প্রদান করে দেন সম্মান ।
          আর বহু নবী ছিলেন, যাঁদের সঙ্গী-সাথীরা তাঁদের অনুবর্তী হয়ে জেহাদ করেছে; আল্লাহর পথে-তাদের কিছু কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তু আল্লাহর রাহে তারা হেরেও যায়নি, ক্লান্তও হয়নি এবং দমেও যায়নি। আর যারা সবর করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন। (আলে ইমরান ১৪৬)

          Comment


          • #6
            সুন্দর লিখেছেন সম্মানিত ভাই। কিন্তু ভাই বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধবে কে?মানে আলেমদের কে বোঝাবে?

            তবে আপনি এখানে একটা পয়েন্ট সামনে এনেছেন যে, চেতনার এই চার মাস থেকে শিক্ষা নেয়া। এই মাসগুলোর শিক্ষাকে আমাদের অর্থাৎ ইসলামপন্থিদের মত করে ব্যাখ্যা করা। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের আল কায়েদার মুজাহিদ মিকদাদ ভাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যযেভাবে ব্যাখ্যা করেছেন সেভাবে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মিকদাদ ভাইয়ের লেখাটা অনেক সুন্দর ছিল, আমি অনেক ভাইকে ঐ লেখাটা পড়তে দিয়েছিলাম। ভাইরা আমাকে বলছেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তারা আগে যেভাবে চিন্তা করতেন লেখাটা পড়ার পর তা পাল্টে গেছে।
            মুমিনদের মধ্যে কিছু লোক সত্যবাদী ছিল আল্লাহর প্রতি তাদের ওয়াদার বিষয়ে। তাদের মধ্যে কিছু লোক এই ওয়াদাকে পূরণ করেছে (এবং মৃত্যুবরণ করেছে) এবং তাদের মধ্যে কিছু লোক অপেক্ষা করছে ( সুযোগের জন্য)। তারা তাদের সংকল্পকে (ওয়াদার শর্ত) মোটেই পরিবর্তন করেনি

            Comment


            • #7
              না, তাঁরা কম জানেন তা ভাবছি না। কিন্তু মুসলিমদের প্রতি সুধারণা রাখার মূলনীতি প্রয়োগ করার চেষ্টা করলাম।

              Comment


              • #8
                সহীহ। এমনকি সেকুলারদের লেখা কিছু বই (ডেড রেকনিং, লিগেসি অব ব্লাড) পড়লেও বাংলার মানুষ অন্তত এটা বুঝতো যে ছোটকাল থেকে শিখে আসা ইতিহাসকে অনেকভাবে এনালাইসিস করা যায়।

                Comment


                • #9
                  জাজাকাল্লাহ

                  Comment

                  Working...
                  X