এক আলেম ভাই। আমার একপ্রকার মুরব্বী। অত্যন্ত মেধাবী। ভালো মুফতিও বটে। আরবি ভাষায় অনেক ব্যুৎপত্তি অর্জন করেছেন। কিন্তু তিনি ব্যক্তি জীবনে মাওলানা আবু তাহের মিছবাহ কিংবা কবি মুসা আল হাফিজদের দ্বারাই প্রভাবিত।
তার ইলমখানায় গিয়ে বসলাম। প্রায়ই যাওয়া হয়। দেখলাম মুতালাআ করছেন। দেখেই জিজ্ঞেস করলেন, আপনাদের জিহাদ ঘোষণা কবে দিবেন? মানহাজিরা কি করতেছে?
মানহাজী বলতে বোঝালেন কওমি মাদ্রাসার তালিবুল ইলম যারা জিহাদকে ভালোবাসে।
বললাম, ভাই, এখনও তো পরিস্থিতি অনুকূলে না।
তিনি বললেন, "এদেশে জিহাদ সম্ভব না। মানহাজীরা খালিই লাফায়। আমাদের মাদ্রাসায় কয়ডা আছে, এগুলারে সাপ্তাহিক বক্তৃতায় উঠতে দিলেই জিহাদী বক্তব্য শুরু করে। এদের মাদ্রাসা থেকে বহিস্কার করার চিন্তা করছেন উস্তাযগণ।"
এরপর বললেন, "মানহাজিরা হলো ক্লাসের বাদ মার্কা ছাত্র। কিছুই পারে না।"
আমি অভিযোগটা শুনে গেলাম। শুনেই যে তর্কে লিপ্ত হবো এতটা গরম মাথা নাই। ঠাণ্ডা রেখেই যে বেহাল দশা।
তিনি আরো বললেন, "এরা বেয়াদব। উস্তাদকে মানে না। অতি জযবাতি। আপনাদের আলী হাসান উসামাকেও মারকাজুদ্দাওয়া থেকে বহিস্কার করা হয়। এই লোক মান'হাজি গোষ্ঠীর প্রধান মুফতি!!"।
__________________________
এই ভাইদের এসব অভিযোগ আসলেই একেবারে দূর্বল। একটা তালিবুল ইলম যদি পড়াশোনায় মেধাবীও হয়ে থাকে, সে জিহাদী বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করলে পড়াশোনায় দূর্বল হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক।
.
বর্তমান জাহেলি সমাজে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করাকে কল্যাণকর বলে মনে করা হয়। কিন্তু ছাত্রাবস্থায় কেউ যদি এই রাজনীতিতে জড়িয়ে যায় তার পড়াশোনা কোন লাটে উঠবে সেটা সবাই জানে। অথচ এই রাজনীতিকে বলা হচ্ছে দেশ ও জাতির কল্যাণেরই কাজ। তাহলে যে ছেলেটা পড়াশোনা নষ্ট করে.....দেশ ও জাতির কল্যাণের কাজে নিয়োজিত হলো তার ব্যাপারে কি বলা হবে??
এখন প্রশ্ন হলো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত থাকা একটা ছাত্রের পড়াশোনা যদি লাটে উঠে, তাহলে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত একটা ছেলের পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়া কি স্বাভাবিক নয়?
.
তেমনি ইসলামে জিহাদ স্বতন্ত্র একটা সেক্টর, যা নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন। শত্রুর সাথে সামরিক ও মনস্তাত্বিক যুদ্ধের রেখা আঁকতেও মেধা ও দক্ষতা লাগে।
মুফতি তাকি উসমানী(হাফি) ইসলামী অর্থনীতির সেক্টরে কিংবদন্তিতুল্য হতে পারেন। কিন্তু তিনি নাইন ইলেভেনের তাৎপর্য নাই বুঝতে পারেন... আমেরিকার সাথে সংঘাত এড়াতে শায়খ উসামাকে আমেরিকার হাতে তুলে দেয়ার জন্য আমিরুল মুমিনিন মোল্লা উমরকে অনুরোধ করতেই পারেন পারেন। স্ট্র্যাটেজিক ও ট্যাকটিক্যাল জিহাদের সেক্টরের ব্যাপারে তিনি দক্ষ নাই হতেই পারেন।
কারণ জিহাদ স্বতন্ত্র একটা শাখা। যেটা নিয়ে আলাদা গবেষণা প্রয়োজন। প্রয়োজন এই যুগের আসল শত্রুকে চিহ্নিত করার মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে সামরিক ও মনস্তাত্বিক যুদ্ধের রেখা অঙ্কন করা।
.
"কাউন্টার টেরোরিজম" এই নামে পশ্চিমা বিশ্বের ভার্সিটিগুলোতে এই জিহাদ প্রতিরোধের জন্য স্বতন্ত্র শাখা আছে! প্রচুর ছাত্র এই শাখার ওপর ডিগ্রি অর্জন করছে। অনেকেই জানেন, গ্লোবাল জিহাদের একজন কিংবদন্তি শায়খ আসিম আল মাক্বদিসি(হাফি) এর উপর গবেষণা করে পশ্চিমে এক ব্যক্তি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছে।
মানে পশ্চিমাদের কাছেও এই জিহাদটা অনেক ইমারজেন্সি জিনিস যা প্রতিরোধে তারা একদল দক্ষ লোক চায়। আর এটার জন্য তারা ভার্সিটির সাবজেক্ট বানিয়েছে। একদল মেধাবী স্টুডেন্টকে দক্ষ করে গড়ে তুলছে জিহাদ প্রতিরোধের জন্য।
তাইলে যারা এই জিহাদ কিভাবে ছড়িয়ে দেয়া যায় এই চিন্তায় ব্যস্ত, তাদের কতটা পরিশ্রম ও সাধনার প্রয়োজন?
.
সর্বশেষ একটা কথা বলি। ফরাসি বিপ্লবের ব্যাপারে বলা হচ্ছে, "France was saved by her Idlers!" অর্থাৎ ক্লাসের পিছিয়ে পড়া স্টুডেন্টরাই ফরাসি বিপ্লবের সূত্রপাত ঘটায়। তারা ফ্রান্সের একনায়ক শাসনের পতন ঘটিয়ে নিজেদের শাসন কায়েম করে।
আর যারা ক্লাসের ভালো ছাত্র ছিলো, তারা চাকরি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলো। বিপ্লব থেকে দূরে অবস্থান করে। ফলে বিপ্লবের আগে তারা একনায়কের আন্ডারে চাকরি করেছে বিপ্লবের পরে তাদেরই গাধা সহপাঠীদের আনুগত্য করেছে।
.
কাজেই ওই মেধাবী আলেম ভাইটাকে বলি, আপনি আপনার খানকা, ইলমখানা আর দরসগাহ নিয়ে ব্যস্ত থাকুন, ত্বাগু-তের নির্যাতন সহ্য করে যান, আর আপনার সহপাঠী তথা পিছিয়ে পড়া ছাত্ররা প্রস্তুতি নিতে থাকুক, এক বিশাল ইসলামী বিপ্লবের, যা এদেশে এনে দেবে সুন্দর ইসলামী শাসন।
তার ইলমখানায় গিয়ে বসলাম। প্রায়ই যাওয়া হয়। দেখলাম মুতালাআ করছেন। দেখেই জিজ্ঞেস করলেন, আপনাদের জিহাদ ঘোষণা কবে দিবেন? মানহাজিরা কি করতেছে?
মানহাজী বলতে বোঝালেন কওমি মাদ্রাসার তালিবুল ইলম যারা জিহাদকে ভালোবাসে।
বললাম, ভাই, এখনও তো পরিস্থিতি অনুকূলে না।
তিনি বললেন, "এদেশে জিহাদ সম্ভব না। মানহাজীরা খালিই লাফায়। আমাদের মাদ্রাসায় কয়ডা আছে, এগুলারে সাপ্তাহিক বক্তৃতায় উঠতে দিলেই জিহাদী বক্তব্য শুরু করে। এদের মাদ্রাসা থেকে বহিস্কার করার চিন্তা করছেন উস্তাযগণ।"
এরপর বললেন, "মানহাজিরা হলো ক্লাসের বাদ মার্কা ছাত্র। কিছুই পারে না।"
আমি অভিযোগটা শুনে গেলাম। শুনেই যে তর্কে লিপ্ত হবো এতটা গরম মাথা নাই। ঠাণ্ডা রেখেই যে বেহাল দশা।
তিনি আরো বললেন, "এরা বেয়াদব। উস্তাদকে মানে না। অতি জযবাতি। আপনাদের আলী হাসান উসামাকেও মারকাজুদ্দাওয়া থেকে বহিস্কার করা হয়। এই লোক মান'হাজি গোষ্ঠীর প্রধান মুফতি!!"।
__________________________
এই ভাইদের এসব অভিযোগ আসলেই একেবারে দূর্বল। একটা তালিবুল ইলম যদি পড়াশোনায় মেধাবীও হয়ে থাকে, সে জিহাদী বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করলে পড়াশোনায় দূর্বল হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক।
.
বর্তমান জাহেলি সমাজে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করাকে কল্যাণকর বলে মনে করা হয়। কিন্তু ছাত্রাবস্থায় কেউ যদি এই রাজনীতিতে জড়িয়ে যায় তার পড়াশোনা কোন লাটে উঠবে সেটা সবাই জানে। অথচ এই রাজনীতিকে বলা হচ্ছে দেশ ও জাতির কল্যাণেরই কাজ। তাহলে যে ছেলেটা পড়াশোনা নষ্ট করে.....দেশ ও জাতির কল্যাণের কাজে নিয়োজিত হলো তার ব্যাপারে কি বলা হবে??
এখন প্রশ্ন হলো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত থাকা একটা ছাত্রের পড়াশোনা যদি লাটে উঠে, তাহলে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত একটা ছেলের পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়া কি স্বাভাবিক নয়?
.
তেমনি ইসলামে জিহাদ স্বতন্ত্র একটা সেক্টর, যা নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন। শত্রুর সাথে সামরিক ও মনস্তাত্বিক যুদ্ধের রেখা আঁকতেও মেধা ও দক্ষতা লাগে।
মুফতি তাকি উসমানী(হাফি) ইসলামী অর্থনীতির সেক্টরে কিংবদন্তিতুল্য হতে পারেন। কিন্তু তিনি নাইন ইলেভেনের তাৎপর্য নাই বুঝতে পারেন... আমেরিকার সাথে সংঘাত এড়াতে শায়খ উসামাকে আমেরিকার হাতে তুলে দেয়ার জন্য আমিরুল মুমিনিন মোল্লা উমরকে অনুরোধ করতেই পারেন পারেন। স্ট্র্যাটেজিক ও ট্যাকটিক্যাল জিহাদের সেক্টরের ব্যাপারে তিনি দক্ষ নাই হতেই পারেন।
কারণ জিহাদ স্বতন্ত্র একটা শাখা। যেটা নিয়ে আলাদা গবেষণা প্রয়োজন। প্রয়োজন এই যুগের আসল শত্রুকে চিহ্নিত করার মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে সামরিক ও মনস্তাত্বিক যুদ্ধের রেখা অঙ্কন করা।
.
"কাউন্টার টেরোরিজম" এই নামে পশ্চিমা বিশ্বের ভার্সিটিগুলোতে এই জিহাদ প্রতিরোধের জন্য স্বতন্ত্র শাখা আছে! প্রচুর ছাত্র এই শাখার ওপর ডিগ্রি অর্জন করছে। অনেকেই জানেন, গ্লোবাল জিহাদের একজন কিংবদন্তি শায়খ আসিম আল মাক্বদিসি(হাফি) এর উপর গবেষণা করে পশ্চিমে এক ব্যক্তি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছে।
মানে পশ্চিমাদের কাছেও এই জিহাদটা অনেক ইমারজেন্সি জিনিস যা প্রতিরোধে তারা একদল দক্ষ লোক চায়। আর এটার জন্য তারা ভার্সিটির সাবজেক্ট বানিয়েছে। একদল মেধাবী স্টুডেন্টকে দক্ষ করে গড়ে তুলছে জিহাদ প্রতিরোধের জন্য।
তাইলে যারা এই জিহাদ কিভাবে ছড়িয়ে দেয়া যায় এই চিন্তায় ব্যস্ত, তাদের কতটা পরিশ্রম ও সাধনার প্রয়োজন?
.
সর্বশেষ একটা কথা বলি। ফরাসি বিপ্লবের ব্যাপারে বলা হচ্ছে, "France was saved by her Idlers!" অর্থাৎ ক্লাসের পিছিয়ে পড়া স্টুডেন্টরাই ফরাসি বিপ্লবের সূত্রপাত ঘটায়। তারা ফ্রান্সের একনায়ক শাসনের পতন ঘটিয়ে নিজেদের শাসন কায়েম করে।
আর যারা ক্লাসের ভালো ছাত্র ছিলো, তারা চাকরি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলো। বিপ্লব থেকে দূরে অবস্থান করে। ফলে বিপ্লবের আগে তারা একনায়কের আন্ডারে চাকরি করেছে বিপ্লবের পরে তাদেরই গাধা সহপাঠীদের আনুগত্য করেছে।
.
কাজেই ওই মেধাবী আলেম ভাইটাকে বলি, আপনি আপনার খানকা, ইলমখানা আর দরসগাহ নিয়ে ব্যস্ত থাকুন, ত্বাগু-তের নির্যাতন সহ্য করে যান, আর আপনার সহপাঠী তথা পিছিয়ে পড়া ছাত্ররা প্রস্তুতি নিতে থাকুক, এক বিশাল ইসলামী বিপ্লবের, যা এদেশে এনে দেবে সুন্দর ইসলামী শাসন।
Comment