Announcement

Collapse
No announcement yet.

মাদ্রাসার কম মেধাবী ছেলেরাই জিহাদপ্রেমী হয়!!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • মাদ্রাসার কম মেধাবী ছেলেরাই জিহাদপ্রেমী হয়!!

    এক আলেম ভাই। আমার একপ্রকার মুরব্বী। অত্যন্ত মেধাবী। ভালো মুফতিও বটে। আরবি ভাষায় অনেক ব্যুৎপত্তি অর্জন করেছেন। কিন্তু তিনি ব্যক্তি জীবনে মাওলানা আবু তাহের মিছবাহ কিংবা কবি মুসা আল হাফিজদের দ্বারাই প্রভাবিত।

    তার ইলমখানায় গিয়ে বসলাম। প্রায়ই যাওয়া হয়। দেখলাম মুতালাআ করছেন। দেখেই জিজ্ঞেস করলেন, আপনাদের জিহাদ ঘোষণা কবে দিবেন? মানহাজিরা কি করতেছে?

    মানহাজী বলতে বোঝালেন কওমি মাদ্রাসার তালিবুল ইলম যারা জিহাদকে ভালোবাসে।

    বললাম, ভাই, এখনও তো পরিস্থিতি অনুকূলে না।

    তিনি বললেন, "এদেশে জিহাদ সম্ভব না। মানহাজীরা খালিই লাফায়। আমাদের মাদ্রাসায় কয়ডা আছে, এগুলারে সাপ্তাহিক বক্তৃতায় উঠতে দিলেই জিহাদী বক্তব্য শুরু করে। এদের মাদ্রাসা থেকে বহিস্কার করার চিন্তা করছেন উস্তাযগণ।"

    এরপর বললেন, "মানহাজিরা হলো ক্লাসের বাদ মার্কা ছাত্র। কিছুই পারে না।"

    আমি অভিযোগটা শুনে গেলাম। শুনেই যে তর্কে লিপ্ত হবো এতটা গরম মাথা নাই। ঠাণ্ডা রেখেই যে বেহাল দশা।

    তিনি আরো বললেন, "এরা বেয়াদব। উস্তাদকে মানে না। অতি জযবাতি। আপনাদের আলী হাসান উসামাকেও মারকাজুদ্দাওয়া থেকে বহিস্কার করা হয়। এই লোক মান'হাজি গোষ্ঠীর প্রধান মুফতি!!"।
    __________________________

    এই ভাইদের এসব অভিযোগ আসলেই একেবারে দূর্বল। একটা তালিবুল ইলম যদি পড়াশোনায় মেধাবীও হয়ে থাকে, সে জিহাদী বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করলে পড়াশোনায় দূর্বল হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক।
    .

    বর্তমান জাহেলি সমাজে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করাকে কল্যাণকর বলে মনে করা হয়। কিন্তু ছাত্রাবস্থায় কেউ যদি এই রাজনীতিতে জড়িয়ে যায় তার পড়াশোনা কোন লাটে উঠবে সেটা সবাই জানে। অথচ এই রাজনীতিকে বলা হচ্ছে দেশ ও জাতির কল্যাণেরই কাজ। তাহলে যে ছেলেটা পড়াশোনা নষ্ট করে.....দেশ ও জাতির কল্যাণের কাজে নিয়োজিত হলো তার ব্যাপারে কি বলা হবে??

    এখন প্রশ্ন হলো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত থাকা একটা ছাত্রের পড়াশোনা যদি লাটে উঠে, তাহলে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত একটা ছেলের পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়া কি স্বাভাবিক নয়?
    .

    তেমনি ইসলামে জিহাদ স্বতন্ত্র একটা সেক্টর, যা নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন। শত্রুর সাথে সামরিক ও মনস্তাত্বিক যুদ্ধের রেখা আঁকতেও মেধা ও দক্ষতা লাগে।

    মুফতি তাকি উসমানী(হাফি) ইসলামী অর্থনীতির সেক্টরে কিংবদন্তিতুল্য হতে পারেন। কিন্তু তিনি নাইন ইলেভেনের তাৎপর্য নাই বুঝতে পারেন... আমেরিকার সাথে সংঘাত এড়াতে শায়খ উসামাকে আমেরিকার হাতে তুলে দেয়ার জন্য আমিরুল মুমিনিন মোল্লা উমরকে অনুরোধ করতেই পারেন পারেন। স্ট্র্যাটেজিক ও ট্যাকটিক্যাল জিহাদের সেক্টরের ব্যাপারে তিনি দক্ষ নাই হতেই পারেন।

    কারণ জিহাদ স্বতন্ত্র একটা শাখা। যেটা নিয়ে আলাদা গবেষণা প্রয়োজন। প্রয়োজন এই যুগের আসল শত্রুকে চিহ্নিত করার মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে সামরিক ও মনস্তাত্বিক যুদ্ধের রেখা অঙ্কন করা।
    .

    "কাউন্টার টেরোরিজম" এই নামে পশ্চিমা বিশ্বের ভার্সিটিগুলোতে এই জিহাদ প্রতিরোধের জন্য স্বতন্ত্র শাখা আছে! প্রচুর ছাত্র এই শাখার ওপর ডিগ্রি অর্জন করছে। অনেকেই জানেন, গ্লোবাল জিহাদের একজন কিংবদন্তি শায়খ আসিম আল মাক্বদিসি(হাফি) এর উপর গবেষণা করে পশ্চিমে এক ব্যক্তি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছে।

    মানে পশ্চিমাদের কাছেও এই জিহাদটা অনেক ইমারজেন্সি জিনিস যা প্রতিরোধে তারা একদল দক্ষ লোক চায়। আর এটার জন্য তারা ভার্সিটির সাবজেক্ট বানিয়েছে। একদল মেধাবী স্টুডেন্টকে দক্ষ করে গড়ে তুলছে জিহাদ প্রতিরোধের জন্য।

    তাইলে যারা এই জিহাদ কিভাবে ছড়িয়ে দেয়া যায় এই চিন্তায় ব্যস্ত, তাদের কতটা পরিশ্রম ও সাধনার প্রয়োজন?
    .

    সর্বশেষ একটা কথা বলি। ফরাসি বিপ্লবের ব্যাপারে বলা হচ্ছে, "France was saved by her Idlers!" অর্থাৎ ক্লাসের পিছিয়ে পড়া স্টুডেন্টরাই ফরাসি বিপ্লবের সূত্রপাত ঘটায়। তারা ফ্রান্সের একনায়ক শাসনের পতন ঘটিয়ে নিজেদের শাসন কায়েম করে।

    আর যারা ক্লাসের ভালো ছাত্র ছিলো, তারা চাকরি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলো। বিপ্লব থেকে দূরে অবস্থান করে। ফলে বিপ্লবের আগে তারা একনায়কের আন্ডারে চাকরি করেছে বিপ্লবের পরে তাদেরই গাধা সহপাঠীদের আনুগত্য করেছে।
    .

    কাজেই ওই মেধাবী আলেম ভাইটাকে বলি, আপনি আপনার খানকা, ইলমখানা আর দরসগাহ নিয়ে ব্যস্ত থাকুন, ত্বাগু-তের নির্যাতন সহ্য করে যান, আর আপনার সহপাঠী তথা পিছিয়ে পড়া ছাত্ররা প্রস্তুতি নিতে থাকুক, এক বিশাল ইসলামী বিপ্লবের, যা এদেশে এনে দেবে সুন্দর ইসলামী শাসন।

    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 07-20-2022, 03:09 PM.

  • #2
    মুহতারাম্ ভাই, তাই বলে বেশি আবেগি হওয়া যাবে না, ইলম ও প্রয়োজন । দাওয়াত এর কাজে ইলমের গুরুত্ব অনে্ক।
    শাইখ ঈসা রহি,শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রহি ,সাইয়্যিদ কুতুব রহি তারা তো তাদের ইলমের জোরে বিশ্বকে নারিয়ে দিয়েছিলেন।



    তবে সর্বশেষ আপনার কথাটাই সত্য "France was saved by her idlers!"

    মাআশাল্লাহ, সময়োপযোগী পোস্ট ছিল।

    ''এই উম্মাহর অবস্থা পরিবর্তন হবে না , যদি না মুসলিমরা সাহাবায়ে কেরাম যা করেছিলেন তার দিকে ফিরে যায়'' - শাইখ আনোয়ার আল আওলাকি রহি.

    Comment


    • #3
      আর আপনার ধারনাটা পুরোপুরি সত্য নয়। আমি আমার জীবনে যত জিহাদ প্রেমী আলেম ও তালিবুল ইলম দেখেছি তারা তো অনেক মেধাবী । তাদের মধ্যে অনেকে তো এমন , যাদের ইলম এর গভীরতা এত বেশি যে তাদের কথার বিরুদ্ধে পুরো জেলার কোন আলেম কথা বলতে সাহস পায় না।
      Last edited by Muhammad Hassan; 07-22-2022, 01:19 AM.
      ''এই উম্মাহর অবস্থা পরিবর্তন হবে না , যদি না মুসলিমরা সাহাবায়ে কেরাম যা করেছিলেন তার দিকে ফিরে যায়'' - শাইখ আনোয়ার আল আওলাকি রহি.

      Comment


      • #4
        عن عبد الرحمان بن زيد بن أسلم عن أبيه: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: لا يزال الجهاد حلوا أخضر ما قطر القطر من السماء، وسيأتي على الناس زمان يقول فيه قراء منهم: ليس هذا زمن جهاد، فمن أدرك ذلك الزمان، فنعم زمان الجهاد، قالو يا رسول الله : واحد يقول ذلك؟ قال نعم... من عليه لعنة الله والملاءكته والناس أجمعين.

        নবীজী ইরশাদ করেন,যতদিন পর্যন্ত আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষিত হবে, ততদিন পর্যন্ত জিহাদ সতেজ ও সুমিষ্ট থাকবে। আর অদূর ভবিষ্যতে মানুষের জীবনে এমন একটি সময় আসবে, যে যুগের শিক্ষিত লোকেরা (আলেম কিংবা ইংরেজি শিক্ষিত দ্বীনদার ব্যক্তিরা) বলবে, এটি জিহাদের যুগ নয়। অতএব, যে ব্যক্তি সে যুগটি পাবে, তার জন্য সেটি হবে জিহাদের শ্রেষ্ঠ যুগ।” সাহাবায়ে কেরাম অবাক হয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! একজন মুসলমান কি এমন কথা বলতে পারে? (How Strange!!!) নবীজী বললেন, হ্যাঁ, এমন মুসলমানরা বলবে, যারা আল্লাহ, ফেরেশতা ও সমস্ত মানুষের অভিশাপে অভিশপ্ত।” (আস্সুনানুল ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান, খ. ৩, পৃ. ৭৫১)

        আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
        মুহতারাম ওমায়ের তাসনীম বিনইয়ামীন ভাই!
        আপনার মনের ব্যথা ও কষ্ট অনুভব করতে পারছি ভাই! আসলে আমাদের সমাজে এ ধরনের অভিশপ্ত (উপরের হাদীস অনুযায়ী), তথাকথিত দ্বীনদার ও উলামায়ে সু-এর অভাব নেই, যারা দ্বীন থেকে জিহাদকে আলাদা করে ফেলেছে। আল্লাহ্ পাক হেফাযত করেন।

        মুহতারাম ভাই!
        আমাদের মনে এরকম আরো অনেক ব্যথা আছে যেগুলো আমরা প্রকাশ করতে পারিনা। বা যারা এ ধরণের কথা বলে তাদের উত্তর দিতে পারি না। আমাদের এক ভাই, মুহতারাম মুসআব ইলদিরিম ভাই একটি দুর্দান্ত কিতাব লিখেছেন আমাদের মনের অব্যক্ত কথা ও ব্যথাগুলো নিয়ে, সেটা পড়তে পারেন। কিছুটা হলেও মনের কষ্ট লাঘব হবে ইনশাআল্লাহ। আর সম্ভব হলে (নিরাপত্তার কোনো সমস্যা না হলে) ঐ আলেম ভাইকেও কিতাবটি পড়ার জন্য দিতে পারেন। আশাকরি তিনি তার কথাগুলোর জবাব সুন্দরভাবে পেয়ে যাবেন।ইনশাআল্লাহ।কিতাবের লিংক-কিতাবুত তাহরীদ ‘আলাল ক্বিতাল”, পর্ব-১

        জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।

        Comment


        • #5
          আমি অধমের দৃষ্টিতে আজ পর্যন্ত এরকম কোন দূর্বল তালেবুল ইলম দেখিনি আলহামদুলিল্লাহ -যারা নাকি বর্তমান গ্লোবাল জিহাদের সাথে (সরাসরি) জড়িত! -বরং যাদেরকেই পেয়েছি ও দেখেছি আলহামদুলিল্লাহ ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ তারা প্রচুর মেধাবী ও ক্লাসের প্রথম সিরিয়ালের ছাত্র।।

          তাছাড়া এই ক্বিতাল ফি সাবিলিল্লাহ এর সাথে জড়ালে যে, ইলম অন্বেষণে ঘাটতি পরে -এই কথার সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করছি কারণ আমার দেখা মত (যারাই জিহাদ ও ইলম তলবের মাঝে বৈপরীত্য দাড় না করিয়ে) জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ এর সাথে জড়িয়েছেন তারাই নিজেদের ইলমের মধ্যে বারাকাহ পেয়েছেন এবং প্রকৃত ইলমের স্বাদ আস্বাদন করতে পেরেছেন -যাদের ইস্তেদলাল ও ফাক্বাহাতের উপর হাত দিতে পর্যন্ত কেউ সাহস পায়না আলহামদুলিল্লাহ।।

          Comment

          Working...
          X