কিয়ামতের আলামাত — পর্ব-৫
ইমাম মাহদি রা. এর চারটি বড় যুদ্ধ ও তাবুতে সাকিনা’র প্রকাশ এবং বর্তমান হাশেমী গোত্রের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
মাওলানা মাসউদ কাওসার
ইমাম মাহদি রা. এর চারটি বড় যুদ্ধ ও তাবুতে সাকিনা’র প্রকাশ এবং বর্তমান হাশেমী গোত্রের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
মাওলানা মাসউদ কাওসার
(কিয়ামতের পূর্বে এমন কিছু অবস্থা ও প্রেক্ষাপট তৈরি হবে যার সাথে মুমিনদের জান্নাত ও জাহান্নামের সম্পর্ক। শেষ যমানার ব্যাপারে সবচেয়ে সত্যবাদী সংবাদ প্রদানকারী নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদিসের সারাংশ হল শেষ যমানায় পুরো পৃথিবী দুইটি তাবুতে বিভক্ত হয়ে যাবে। একটি হবে মুমিনদের তাবু যেখানে নিফাকের অস্তিত্ব থাকবে না। আরেকটি তাবু হবে মুনাফিকদের তাবু যেখানে ইমানের অস্তিত্ব থাকবে না। মাওলানা মাসউদ কাওসার মা: জি: এর এই আলোচনাটি সেই সফলতা ও ব্যর্থতার সাথেই সম্পৃক্ত। এই বয়ানটিতে মুমিনদের চিন্তার খোরাক রয়েছে। মাওলানা সাহেব আলোচনাটি একটি সাধারণ মজলিসে করেছিলেন। যেখানে সম্মানিত ভাই হাফেজ শাহযাদ (মুহিব্বুল্লাহ) শহিদ রহ. উপস্থিত ছিলেন। ভাই হাফেজ শাহযাদ শহিদ রহ. অনেক গুরুত্বসহকারে বয়ানটি রেকর্ড করেন। আর অডিও সেই দরসগুলো ভাই খাইরুদ্দীন লেখার আকৃতিতে নিয়ে আসেন। ইনশাআল্লাহ এই দরসগুলো ধারাবাহিকভাবে আপনাদের সামনে পেশ করা হবে।)
إن الحمد لله نحمده و نستعينه ونستغفره ونؤمن به و نتوكل عليه ونعوذ بالله من شرور أنفسنا و من سيئات أعمالنا من يهده الله فلا مضل له ومن يضلله فلا هادي له ونشهد أن لا إله إلا الله وحده لا شريك له ونشهد أن سيدنا ومولانا محمدا عبده ورسوله أما بعد..ইমাম মাহদি রা. এর প্রথম যুদ্ধ। হযরত রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: تقاتلون من جزيرة العرب...... (তোমরা আরব উপদ্বীপে লড়াই করবে)। সুতরাং প্রথম যুদ্ধ হবে আরব উপদ্বীপে। এটি নামধারী মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে হবে। যারা শুধু ইসলামের নামটাই ব্যবহার করছে। এছাড়া অন্য কিছু করছে না। তারা নিজেদের শাসন মাহদি রা. এর কাছে সোপর্দ করবে না। কারণ, হযতর মাহদি রা. এসে ইসলামি শরীয়ত, ইসলামি আইন বাস্তবায়ন করবেন। তিনি হুদুদুল্লাহ বাস্তবায়ন করবেন।
রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : فيفتحه الله অর্থাৎ প্রথম যুদ্ধে আল্লাহ তাআলা হযরত মাহদি রা.কে বিজয় দান করবেন। আর এই যুদ্ধ চলাকালীন হযরত মাহদি রা. এর হাতে দু’টি জিনিস সংঘটিত হবে। এটি তার বরকতের কারণেই হবে। তার হাতে বাইআত গ্রহণকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। তার দিকে ফিরে আসা লোকদের সংখ্যা বেড়ে যাবে। আনুগত্যকারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। তার বাহিনী বড় হবে। এটি তো স্পষ্ট বিষয় যে, আরবে এবং আরব ভূখ-ে তিনি বিজয়ী হবেন।
কিন্তু এছাড়া আরও দু’টি জিনিস আছে এবং সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই দু’টি বিষয়ের কথাই সহিহ বুখারিতে বর্ণিত হয়েছে। তার সত্যবাদী হওয়ার জন্য এটি একটি দলিল হবে। আলেম ও ওলিদের জামাত তার হাতে বাইআত হয়েছেন এবং আরবে তিনি বিজয় লাভ করেছেন এটিও একটি মৌলিক দলিল। কিন্তু আরেকটি দলিল হল রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন যে, শাম থেকে বারো হাজারের একটি সৈন্যদল মাহদি রা. এর সাথে লড়াই করার জন্য আগমন করবে। এরা কারা? এটি ভিন্ন আলোচনা। এতটুকু বুঝে নেন যে, বারো হাজারের একটি সেনাদল মাহদি রা. এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আগমন করবে। বুখারি শরিফে আছে যে, উম্মুল মুমিনিন সাইয়্যেদা আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন তারা বাইদা (সমতল মরুপ্রান্তর) পৌঁছবে তখন তাদের প্রথম ও শেষ ব্যক্তি সবাইকে জমিনে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। জমিন ফেটে যাবে এবং তাদের সবাই তাতে ধ্বসে যাবে।
বাইদা বলা হয় সমতল মরু এলাকাকে। অবশ্য সে বাহিনীর একজন সদস্য বেঁচে থাকবে যে ফিরে গিয়ে নিজেদের ধ্বসে যাওয়ার খবর দেবে। নিজেদের লোকদেরকে গিয়ে ব্যর্থতার সংবাদ দেবে। সবাই জানবে যে, অমুক বাহিনী রওয়ানা হয়েছে এবং অমুক জায়গা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এখন তারা মক্কায় প্রবেশ করবে। এরা হযতর মাহদি রা. এর সাথে লড়াই করবে। এই সময় বাহিনীর লোকজন প্রস্তুতি গ্রহণ করবে যে, মাহদি রা. এর মুখোমুখি হতে হবে। কিন্তু তার পূর্বেই সবাইকে জমিনে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। এই হাদিসে হযরত আয়েশা রা. বর্ণনা করেন যে, আমি নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম: হে আল্লাহর রাসুল! কেমন করে তাদের প্রথম ও শেষ সবাইকে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে? অথচ সে বাহনিীতে তাদের বাজারের (পন্য-সামগ্রী বহনকারী) লোকও থাকবে এবং এমন লোকও থাকবে যারা তাদের দলভুক্ত নয়? তাদের কী দোষ? তারা তো সেনাবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত নয়?
রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:“তাদেরকে (কিয়ামতের দিন) তাদের নিজেদের নিয়্যাত অনুযায়ী উত্থান করা হবে।” প্রত্যেকেই তার নিয়্যত অনুযায়ী প্রতিদান পাবে এবং তার নিয়্যত অনুযায়ীই তার সাথে ব্যবহার করা হবে। যে ব্যক্তি এই বাহিনীর সাথে আসবে, কিন্তু তার নিয়্যত বাহিনীর বিরোধিতা করা তাকেও ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে এবং যে ব্যক্তি মাহদি রা. এর বিরোধিতার নিয়্যতে এসেছে তাকেও ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। রাসুল আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: কিছু লোক এমনও থাকবে যারা অপারগ হয়ে হয়ে তাদের সাথে প্রবেশ করেছে। আম্মাজান আয়েশা রা. ইরশাদ করেন: আমি রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম: হে আল্লাহর রাসুল! যারা বাধ্য হয়ে এখানে অন্তর্ভ্ক্তু হয়েছে তাদের কী অবস্থা হবে? নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: তারা তাদের নিয়্যত অনুযায়ী উত্থিত হবে। যদি তাদের নিয়্যত ইমাম মাহদি রা. এর বিরোধিতা হয়ে থাকে তাহলে তারা আখিরাতে শাস্তি পাবে। অন্যথায় তারা এই গুনাহ থেকে মুক্ত হবে।
এটি মাহদি রা. এর সত্যায়নের জন্য সর্বপ্রথম সবচেয়ে বড় ঘটনা এটি। এই ঘটনার ফলে পুরো দুনিয়ায় তার সত্যতার খবর ছড়িয়ে পড়বে এবং যে সকল মুসলিমরা আকিদার অধিকারী এবং আলিমদের সাথে যুক্ত থাকবেন তারা তো প্রথমেই ইমান নিয়ে আসবেন। কিছু লোক বিজয়ের পর ইমান আনবেন। আর বাকি যে সকল মুসলিম দ্বিধা ও সন্দেহে থাকবেন তারা এই ঘটনার পর ইমান নিয়ে আসবেন। বুখারি ও মুসলিমের বর্ণিত এই হাদিসটি ইমাম মাহদির সত্য হওয়ার অনেক বড় একটি খবর।
রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: এই সময় আরও একটি ঘটনা ঘটবে যার ফলে সারা পৃথিবীতে একটি নতুন বিপ্লব ঘটবে। পুরো পৃথিবীতে হৈচৈ পড়ে যাবে। এর ফলে শুধু মুসলিমরাই ইমাম মাহদি রা. এর সহযোগী হবেন না। বরং এই ঘটনার ফলে ইহুদী, খৃষ্টান এবং বড় বড় ব্যক্তিত্বরাও তার বাহিনীতে শামিল হয়ে যাবে। এটি বড়ই চিত্তাকর্ষক এক ঘটনা। এই ঘটনার বাস্তবতা বুঝতে হলে কুরআনের দ্বিতীয় পারার কিছু আয়াত বুঝতে হবে এবং আনুমানিক তিন হাজার বছর পিছনে যেতে হবে।
হযরত মুসা আ. বনি ইসরাইলের কাছে প্রেরিত হয়েছিলেন এবং তার ইনতিকালও হয়ে গেছে। মুসা আ. এর সম্প্রদায়ের উপর জিহাদ ফরজ করা হয়েছিল। মুসা আ. এবং হারুন আ. জীবদ্দশায় জিহাদ করেছিলেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন যে, এই দুই নবির মৃত্যুর পর তারা জিহাদকে ভুলতে বসেছিল। বাস্তবেই তা হয়েছিল। আল্লাহ তাআলা সে সময়কার নবি, কোন কোন মুফাসসিরের মতে হযরত মুসা আ. এর খাদেম ইউশা’ বিন নুন আ. যিনি খিজির আ. এর সাক্ষাতের সময় হযরত মুসা আ. এর সাথে ছিলেন, সুরায়ে কাহফে যার ঘটনা উল্লেখ আছে: وَإِذْ قَالَ مُوسَىٰ لِفَتَاهُ (আর স্মরণ করো! মুসা তার ভৃত্যকে বললেন)। এই যুবক ছিলেন ইউশা’ বিন নুন আ.। আল্লাহ তাআলা তার উপর ওহী নাজিল করলেন যে, আমি আপনার উপর পুনরায় জিহাদকে ফরজ করলাম। আপনি জিহাদকে প্রতিষ্ঠা করুন এবং লোকদেরকে জিহাদের জন্য নিয়ে যান। মুসা আ. এর পর কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদের ধারাবাহিকতা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন নতুনভাবে এর নবায়ন সে সময়ের নবি হযরত ইউশা’ বিন নুন আ. এর মাধ্যমে করা হল। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে এই নির্দেশ ছিল যে, নবি নিজে জিহাদে শরিক হবেন না। বরং তিনি দাওয়াতের কাজ করতে থাকবেন। তিনি আল্লাহর কালিমাকে লোকদের কাছে পৌঁছিয়ে দেবেন। আর ভিতরে একজন বাদশা নির্ধারণ করা হবে যিনি সেনাবাহিনীর আমিরও হবেন এবং যেখানে যেখানে বিজয় ঘটবে সেখানকার বাদশা ও শাসকও তিনি হবেন। তিনি নবির হেদায়াত ও পথ নির্দেশ গ্রহণ করতে থাকবেন। জিহাদের ক্ষেত্রেও এবং শাসনের ক্ষেত্রেও। তিনি তাদের মালিক বা বাদশাহ নির্ধারিত হবেন।
এখন প্রশ্ন হল কে বাদশাহ হবেন? প্রত্যেকেই প্রস্তুত। জিহাদ ফরজ। প্রত্যেকেই জিহাদ করবে। কিন্তু এখন বাদশাহ কে হবে? এটি আল্লাহ তাআলা নির্ধারণ করে দিবেন। ওহী অবতীর্ণ হল এবং একজনকে বাদশাহ নির্ধারণ করা হল।কিন্তু বনি ইসরাইল তাকে বাদশাহ মানতে অস্বীকার করল। দ্বিতীয় পারার এই আয়াতটি পড়েন:
أَلَمْ تَرَ إِلَى الْمَلَإِ مِن بَنِي إِسْرَائِيلَ مِن بَعْدِ مُوسَىٰ إِذْ قَالُوا لِنَبِيٍّ لَّهُمُ ابْعَثْ لَنَا مَلِكًا نُّقَاتِلْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۖ قَالَ هَلْ عَسَيْتُمْ إِن كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ أَلَّا تُقَاتِلُوا
তুমি কি মূসার পরবর্তীকালে ইসরাইলের বংশধরদের প্রধানদের বিষয়ে ভেবে দেখ নি, যখন তারা তাদের নবীকে বলেছিল -- ''আমাদের জন্য একজন রাজা উত্থাপন করো যেন আমরা আল্লাহ্র পথে লড়তে পারি’’? তিনি বলেছিলেন -- ''এমনটা কি তোমাদের হবে যে তোমাদের জন্য যুদ্ধ বিধিবদ্ধ করা হলে তোমরা যুদ্ধ করবে না? (সুরা আল-বাকারাহ: ২/২৪৬)
যদি জিহাদ ফরজ করা হয় তাহলে তোমরা কি জিহাদ করবে না? তারা বলল: وَمَا لَنَا কেন নয়? আমরা জিহাদ করবো। أُخْرِجْنَا مِن دِيَارِنَا وَأَبْنَائِنَا আমরা কাফেরদের পক্ষ থেকে জুলুম সহ্য করেছি। আমরা অবশ্যই জিহাদে অংশ গ্রহণ করবো।
জিহাদের ব্যাপারে তারা ওয়াদা করল। وَقَالَ لَهُمْ نَبِيُّهُمْ তাদের নবি তাদেরকে বলল যে, একজন বাদশাহ নির্বাচন করা হবে। এখন আল্লাহর নবির মাধ্যমে তারা দুআ করছে, হে আল্লাহ! আপনি বাদশাহ নির্ধারণ করে দিন! আল্লাহ তাআলা তাদেরকে বললেন:
إِنَّ اللَّهَ قَدْ بَعَثَ لَكُمْ طَالُوتَ مَلِكًا
আমি তোমাদের জন্য তালুতকে বাদশাহ নির্ধারণ করলাম। এটি মুসা আ. এর পর হযরত ইউশা’ বিন নুন আ. এর যুগের ঘটনা। এই সময়ে তালুত বাদশাহ নির্বাচিত হয়েছিলেন। যে সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে জিহাদ ছিল তারা হল আমালিকা সম্প্রদায়। তাদের সর্দার ছিল জালুত। তাদের একটি সেনাদল যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল। কিন্তু এখন যখন বনি ইসরাইল জানতে পারল যে, তালুত আমাদের বাদশাহ নির্বাচিত হয়েছে তখন তারা বলতে লাগল: আমরা তাকে মানতে পারব না। কেন মানতে পারবে না? আমরা এজন্য তাকে মানতে পারব না যে, সে কোন সর্দার বংশের লোক নয়। একজন গরিব মানুষ এবং মেহনত ও মজদুরি করে। কাঠ কাটে এবং ফার্নিচারের কাজ করে। বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করে। ইমানদার হওয়ার বিষয়টি আলাদা। কিন্তু তিনি তো সর্দার পরিবারের লোক নয়। তখন আল্লাহ তাআলা বললেন: কারও বাদশাহ হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, তাকে আল্লাহ তাআলা নির্বাচন করেছেন। এছাড়া তালুত এমন পূর্ণ ইলমের অধিকারী যা যে কোন বিজয়ী মুজাহিদের প্রয়োজন এবং একজন বাদশাহ’র যে জ্ঞান থাকা দরকার তাও তার মাঝে ছিল। ইমানও আছে, ইলমও আছে এবং জিহাদের জন্য দেহ এবং জিহাদি শক্তিও তার মাঝে আছে।
কিন্তু তারা আপত্তি করল যে, وَلَمْ يُؤْتَ سَعَةً مِّنَ الْمَالِ তিনি তো সম্পদশালীদের অন্তর্ভুক্ত কেউ নয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: إِنَّ اللَّهَ اصْطَفَاهُ عَلَيْكُمْ তার সত্যতার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, আল্লাহ তাআলা তাকে তোমাদের জন্য নির্বাচন করেছেন। وَزَادَهُ بَسْطَةً فِي الْعِلْمِ وَالْجِسْمِ আল্লাহ তাআলা তাকে ইলম এবং দেহে তোমাদের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। তিনি ইলমেও তোমাদের উপরে এবং জিহাদের জন্য যে দেহ ও শক্তির প্রয়োজন তাতেও তোমাদের থেকে বেশি শক্তিশালী। আর বাকি তোমরা আল্লাহর নির্বাচনের উপর আপত্তি করতে পার না। وَاللَّهُ يُؤْتِي مُلْكَهُ مَن يَشَاءُ আল্লাহ তাআলা যাকে চান তাকে এই বাদশাহি দান করেন। তারা বলল: আমরা তাকে মানি না। অন্য কাউকে নির্বাচন করা হোক। তখন নবি আ. বললেন: আল্লাহ তাআলার আদেশ হলেন তোমাদের মধ্য থেকে যার কাছে তাবুতে সাকিনা হবে সেই বাদশাহ হবে। এখন বনি ইসরাইল নবির সাথে ঝগড়া শুরু করল যে, আপনি কেন আল্লাহর কাছে বলে তাকে বাদশাহ বানালেন? আল্লাহ তাআলা যাকে বাদশাহ নির্ধারণ করলেন তারা বলল, তার সত্য হওয়ার প্রমাণ কী যে, ইনিই সত্যিকার বাদশাহ এবং তাকেই আমাদের আমির নির্ধারণ করা হয়েছে? তখন নবি আ. বললেন: إِنَّ آيَةَ مُلْكِهِতার বাদশাহির আলামত এটি: أَن يَأْتِيَكُمُ التَّابُوتُ فِيهِ سَكِينَةٌ مِّن رَّبِّكُمْ তার কাছে তাবুতে সাকিনা থাকবে। তাবুতে সাকিনা কী? তাবুত তো বলা হয় বড় বড় বাক্সকে যা কাঠের বা লোহার তৈরি হয়ে থাকে। এটি বনি ইসরাইলের কাছে ছিল যাতে পূর্বেকার নবি মুসা আ. এবং হারুন আ. এর ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিস, মুসা আ. এর লাঠি যা সাপ হয়ে যেত এবং মুসা আ. এর কাপড় এবং তার ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিস ছিল। তাদের স্মৃতি সম্বলিত বিভিন্ন জিনিস এই বক্সে ছিল। বনি ইসরাইল যখনই কোন সমস্যায় পড়ত, যখন বৃষ্টি হত না তখন এই তাবুত উঠিয়ে নিয়ে আসত এবং আল্লাহর কাছে দুআ করত, আর তখনই বৃষ্টি শুরু হয়ে যেত। শত্রুর বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করতে পারছিল না, তখন এটি নিয়ে এসে বিজয়ের জন্য দুআ করত তখন এর বরকতে বিজয় অর্জিত হত। আর এই তাবুত না বনি ইসরাইলের দখলে ছিল আর না তাদের নাগালের ভিতরে ছিল যে, যখন ইচ্ছা এটি সামনে নিয়ে আসবে। আল্লাহ তাআলা নিজেই বলেন যে, এটি আল্লাহ তাআলার কুদরতে সংরক্ষিত ছিল এবং এটি ফেরেশতাদের তত্ত্বাবধানে ছিল। আল্লাহ তাআলা যখন চাইতেন তখন ফেরেশতারা এটি নিয়ে এসে বনি ইসরাইলের মাঝে রেখে দিতেন এবং আল্লাহ যখন চাইতেন তখন ফেরেশতারা উঠিয়ে নিয়ে যেতেন। কুরআনের আয়াতে বলা হচ্ছে:
وَقَالَ لَهُمْ نَبِيُّهُمْ إِنَّ آيَةَ مُلْكِهِ أَن يَأْتِيَكُمُ التَّابُوتُ فِيهِ سَكِينَةٌ مِّن رَّبِّكُمْ
“আর তাদের নবী তাদের বলেছিলেন -- ''নিঃসন্দেহ তার রাজত্বের লক্ষণ এই যে তোমাদের কাছে আসবে 'তাবুত’ যাতে আছে তোমাদের প্রভুর তরফ থেকে প্রশান্তি।”
এক তো হল আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রশান্তি এবং রহমত।
وَبَقِيَّةٌ مِّمَّا تَرَكَ آلُ مُوسَىٰ وَآلُ هَارُونَ
“এবং মূসার বংশধরেরা ও হারূনের অনুগামীরা যা ছেড়ে গেছেন তার শ্রেষ্ঠাংশ।”
আর এটি তোমাদের নাগালে নেই تَحْمِلُهُ الْمَلَائِكَةُ তা বহন করছে ফেরেশতাগণ। ফেরেশতারা তা উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং ফেরেশতারাই তা নিয়ে আসে।
এখন বনি ইসরাইলের লোকেরা বলল: ঠিক আছে। যদি তালুত সকালবেলা ঘর থেকে বের হওয়ার সময় তাবুতে সাকিনা নিয়ে বের হয় তাহলে এটি একথার প্রমাণ হবে যে, তাকে এটি ফেরেশতারা দিয়ে গেছেন এবং ফেরেশতারা যদি তাকে তার বাদশাহির নিশান দিয়ে যায় তাহলে আমরা তাকে মানতে কোন সমস্যা নেই। পরের দিন তালুত আ. তাবুতে সাকিনা নিয়ে তার ঘর থেকে বের হলেন। এতদিন যারা তাকে মানেনি তারাও আজ তাকে মেনে নিল। বাদশাহ নির্ধারিত হয়ে গেল। তার নেতৃত্বে তারা যে সব যুদ্ধ করেছে সেগুলো অনেক লম্বা বিবরণ যা আমাদের আলোচ্য বিষয় নয়।
এখন তাবুতে সাকিনা কোন মানুষের নাগালে নেই। কোন সম্প্রদায়ের নাগালে নেই। বরং ফেরেশতারা এটি বহন করে নিয়ে আসে এবং তারাই আবার বহন করে নিয়ে যায়। কথা এখানেই শেষ।
নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: হযরত মাহদি রা. এর সত্য হওয়ার একটি আলামত এটিও হবে যে, তিন হাজার বছর পর পৃথিবীবাসী তাবুতে সাকিনা দেখতে পাবে। أَن يَأْتِيَكُمُ التَّابُوتُ فِيهِ سَكِينَةٌ ফেরেশতাগণ তাবুতে সাকিনা নিয়ে আসবেন এবং হযরত মাহদি রা. দুনিয়াতে এটি প্রকাশ করে দেবেন। এটি হল তাবুতে সাকিনা এবং এটি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে রহমতের নিদর্শন। এতে নবিদের স্মৃতি জড়িত জিনিসগুলো আছে। এটি মাহদি রা. এর সত্যবাদী হওয়ার আলামত। তালুতের বাদশাহীকে সত্যায়নের জন্য যেমনিভাবে আল্লাহ তাআলা তাবুতে সাকিনা পাঠিয়েছেন, হাদিসে এসেছে নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন যে, মাহদি রা. এর সত্যায়নের জন্য ফেরেশতারা দ্বিতীয়বার এটি দুনিয়াতে নিয়ে আসবে। এটি দুনিয়ার কোথায় আছে তা আল্লাহ তাআলাই জানেন। আল্লাহ তাআলা এটি প্রকাশ করে দ্বিতীয়বারের মতো ফেরেশতাদের মাধ্যমে হযরত মাহদি রা. এর কাছে পৌঁছে দেবেন।
মুসলিমরা তো প্রথম থেকেই হযরত মাহদি রা. এর সহযোগী এবং তার হাতে ইতিমধ্যেই বাইআত গ্রহণ করেছেন। কিন্তু এই তাবুত দেখে অনেক খৃষ্টান, অনেক ইহুদী এবং আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অন্যান্য আরও অনেক জাতি তার হাতে বাইআত গ্রহণ করবেন এবং মাহদি রা. এর সহযোগী এবং তার হাতে বাইআত গ্রহণকারী বাহিনীর সংখ্যা লক্ষ লক্ষ এবং কোটি পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। এটি মাহদি রা. এর সত্যবাদী হওয়ার একটি আলামত। বাহিনী ধ্বসে যাওয়া এবং তাবুতে সাকিনা তার হাতে প্রকাশ পাওয়ার এই দুই ঘটনা তার বাহিনীর সংখ্যা এবং তার সহযোগীদের সংখ্যা বাড়িয়ে দেবে এবং পৃথিবীতে একটি হৈচৈ ফেলে দেবে।
এখানে রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন যে, শুধু এই ভূমিই নয়,বরং জাযিরাতুল আরব, আরবের পুরো রাজত্ব, যেখানে যেখানে আরবের নেতৃত্ব চলে, আরবের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা আছে হযরত মাহদি রা. এর প্রথম যুদ্ধের ফলে এসব এলাকার সবই বিজয় হবে এবং এখানে ইসলাম বাস্তবায়িত হবে।
ইমাম মাহদির দ্বিতীয় যুদ্ধ; রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:“তোমাদের দ্বিতীয় যুদ্ধ হবে পারস্যের সাথে। পারস্য হল ইরানের পুরাতন নাম। পারস্যের সাথে যুদ্ধের সুরত হল আপনারা সবাই জানেন পারস্যবাসী তথা ইরানিদের মাহদির দৃষ্টিভঙ্গি উপরুক্ত মাহদি রা. এর দৃষ্টিভঙ্গির সম্পূর্ণ বিপরীত। তারা এমন মাহদিকে মানবে না যিনি এসে শরীয়ত বাস্তবায়নের কথা বলবেন বা যিনি এসে আহলে সুন্নাহ’র অনুযায়ী শরীয়ত বাস্তবায়ন করবেন। তিনি তো জিহাদের মাধ্যমে শরীয়ত বাস্তবায়ন করবেন এবং মুসলিমদের ঐক্যপূর্ণ আকিদা অনুযায়ী বাইআত গ্রহণ করবেন এবং সে অনুযায়ী জিহাদ পরিচালনা করবেন। তাদের মাহদির দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের মাহদির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তারা তো এই মাহদি রা.কে অস্বীকার করবে এবং নিজেদের শক্তি ও বাহিনীর বলে হযরত মাহদি রা.কে চ্যালেঞ্জ দেবে যে, আপনার সাথে আমাদের খোলা যুদ্ধ হবে। আমরা আপনাকে মানি না। রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: তোমাদের দ্বিতীয় যুদ্ধ হবে পারস্যের সাথে। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে অপদস্থ ও লাঞ্ছিত করবেন এবং মুসলিমদেরকে শক্তিশালী বিজয় দান করবেন এবং পারস্য ও তার আশপাশের সকল এলাকা এই দ্বিতীয় যুদ্ধে বিজিত হবে।
এই দুইটি দীর্ঘ ও বড় বিজয়ের পর হযরত মাহদি রা. এর তৃতীয় যুদ্ধটি সংঘটিত হবে যা মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় যুদ্ধ; যা কুফর ও ইসলামের মাঝে সংঘটিত হবে। যাকে হাদিসের ভাষায় الملحمة العظمى يا الملحمة الكبرى (মহাযুদ্ধ বা বড় যুদ্ধ) বলা হয়েছে। হযরত মাহদি রা. এর নেতৃত্বে সংঘটিত এটি তৃতীয় যুদ্ধ। এই যুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি কারা? রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিপক্ষ শক্তির নাম বলেছেন: রোম। ثم تقاتلون الروم এরপর তোমরা রোমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। মুহাদ্দিসদের পরিভাষায় “আর-রুম” শব্দটি যখন ব্যবহার করা হয় তখন কয়েকটি অর্থ উদ্দেশ্য হয়। একটি উদ্দেশ্য তো স্বয়ং রোম নগরী। রোমের নাম পরিবর্তন হতে হতে বর্তমান ইতালি নাম ধারণ করেছে। ইতালির এলাকাটাই সাবেক রোম। “আর-রোম” দ্বারা দ্বিতীয় উদ্দেশ্য আহলে কিতাব (খৃষ্টানরা) ও হতে পারে। মুহাদ্দিসগণ বলেন, এই হাদিসের যেখানে যেখানে ثم تقاتلون الروم বলা হয়েছে সেখানে এলাকা উদ্দেশ্য নয়। বরং উদ্দেশ্য হল মাজহাব বা ধর্ম। কখনও কখনও কওম অর্থেও রোম শব্দটির ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কখনও এটি এলাকার অর্থে এবং কখনও ধর্মের অর্থেও ব্যবহার হয়। এখানে রোম শব্দ দ্বারা ধর্ম উদ্দেশ্য। আপনি বলতে পারেন যে, হযরত মাহদি রা. এর তৃতীয় যুদ্ধ খৃষ্টান ও তাদের সমমনাদের সাথে সংঘটিত হবে। তারা ন্যাটোর আকৃতিতে হোক বা সে সময় যে কোন আকৃতিতে হোক। মোট কথা হল বিরোধী শক্তি হবে খৃষ্টবাদ।
তৃতীয় এই যুদ্ধটি কোথায় সংঘটিত হবে? নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন যে, এটি সিরিয়ার দাবেক এলাকায় ষংঘটিত হবে। এই এলাকাটিকে আ’মাকও বলা হয়ে থাকে। দাবেক ও আ’মাক একই এলাকার দু’টি নাম। এটি সিরিয়ার একটি উন্মুক্ত এলাকা যেখানে এই লড়াই সংঘটিত হবে। যাকে الملحمة الكبرى বলা হয়ে থাকে।
নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: কাফেরদের পক্ষ থেকে আশিটি ডিভিশন আসবে। ثمانينة رايتا এই হাদিসটি আবু দাউদ শরীফে আছে। সহিহ মুসলিম ও সুনানে ইবনে মাজাহ’তেও আছে। মিশকাতুল মাসাবিহ’তেও উল্লেখ আছে। ثمانينة رايتا আশি ডিভিশন। সেনাবাহিনীতে তাদের সেনা সংখ্যা অনুযায়ী একটি ভাগ আছে। আরবিতে এটিকে راية বলা হয়ে থাকে। যার প্রতিটি দলের কাছে পৃথক একটি ঝা-া বা নিশান থাকে। সেনাবাহিনীতে যেমন অমুক রেজিমেন্ট অথবা অমুক রেজিমেন্ট বলা হয়ে থাকে বা অমুক পুরো ডিভিশন বলা হয়ে থাকে আরবীতে এটিকে বলা হয় راية । আশি ডিভিশনের কাফের বাহিনী সংঘটিত হয়ে আসবে। تحت كل راية اثنا عشرة الفا প্রত্যেক ডিভিশনে বারো হাজার সৈনিক থাকবে। বারো হাজারকে আশি দিয়ে গুণ দিলে নয় লক্ষ ষাট হাজার হয়। কাফেরদের পক্ষ থেকে এই সৈন্যরা ময়দানে নামবে এবং মোকাবেলা করবে। এরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে খৃষ্টানদেরকে সাহায্য করবে। তাদের আশি ডিভিশন তথা নয় লক্ষ ষাট হাজার সৈন্যের সাথে মুসলিমদের যুদ্ধ হবে। হযরত মাহদি রা. এর সাথে তাদের যুদ্ধ হবে। রাসুলে আকদাসা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: এই যুদ্ধটি তিন দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে এবং তৃৃতীয় দিন আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে বিজয় দান করবেন।
এটি ভয়াবহ এক যুদ্ধ। এতে অংশগ্রহণ কারীদের সংখ্যাও অনেক। যেহেতু মুসলিমদের পক্ষ থেকে অংশ গ্রহণকারীদের সংখ্যা এই যুদ্ধে অনেক বেশি, তাই রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: এই যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী মুসলিমরা তিনটি দলে বিভক্ত হবে। একটি হল সেই দল যারা যুদ্ধ থেকে পলায়ন করবে। তারা বলবে, আমরা যুদ্ধ চাই না। এরা হল মুনাফিক। রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: لا يتوب الله عليهم أبدا আল্লাহ কখনই তাদের তওবা কবুল করবেন না। তাদের তওবার তাওফিকই হবে না। তারা এই নিফাক ও কুফরির উপরই ইনতিকাল করবে। মুসলিমদের দ্বিতীয় দলের ব্যাপারে বলা হয়েছে يقتلون তাদেরকে শহিদ করে দেওয়া হবে। মুসলিমদের এক তৃতীয়াংশ লোক এই যুদ্ধে শহিদ হয়ে যাবে। রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: هم أفضل الشهداء عند الله আল্লাহর কাছে এরা হবেন শ্রেষ্ঠ শহিদ। শাহাদের উচ্চ মর্যাদা তাদেরকে প্রদান করা হবে। আর এক তৃতীয়াংশের ব্যাপারে বলা হয়েছে فيفتحون তারা বিজয় অর্জন করবে। যাদেরকে আল্লাহ তাআলা বিজয় দান করবেন তারা لا يفتتنون أبدا এই মহাযুদ্ধের পর আল্লাহ তাআলা তাদেরকে কোন বড় ফিতনায় নিমজ্জিত করবেন না। এই মহাযুদ্ধ অনেক বড় এক যুদ্ধ এবং ইসলামের অনেক বড় এক বিজয়।
রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন যে, এই যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে হযরত মাহদি রা. বিভিন্ন এলাকায় নিজের কমান্ডারদের মাধ্যমে এবং অধীনস্ত লোকদের মাধ্যমে ছোট ছোট যুদ্ধ পরিচালনা করবেন। আর নিজে অংশ গ্রহণ করবেন এই বড় যুদ্ধে। এই যুদ্ধের অধীনেই আরেকটি যুদ্ধের কথা আলোচিত হয়েছে। সেটি হল হিন্দুস্তানের যুদ্ধ। নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন হিন্দুস্তানকে আল্লাহ তাআলা বিজয় দান করবেন এবং হিন্দুস্তানের শাসকদেরকে শিকলে বেঁধে হযরত মাহদি রা. এর সামনে পেশ করা হবে এবং এখানকার পুরো এলাকায় ইসলাম বিজয়ী হবে এবং আল্লাহ তাআলা ইসলামকে বিজয় দান করবেন।
খৃষ্টানদের সাথে সংঘটিত এই মহাযুদ্ধে মুসলিমদের বিজয় পুরো দুনিয়ায় মুসলিমদের বিজয়ের পথ খুলে দেবে এবং খৃষ্টানদের প্রতিষ্ঠিত ছোট ছোট যে সব দেশ ছিল বা তাদের সাহায্যে প্রতিষ্ঠিত ছিল তা নিজে নিজেই শেষ হয়ে যাবে। হিন্দুস্তান বিজিত, তার আশপাশ এলাকাগুলো বিজিত। নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন এসব বিজয় আল্লাহ তাআলা হযরত মাহদি রা.কে দান করবেন।
হযরত মাহদি রা. চতুর্থ যুদ্ধ; হাদিস শরিফে এসেছে: ثم تغزون القسطنطنية এরপর তোমরা কনস্টান্টিনোপলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। আর মানব ইতিহাসে এটি হল বিস্ময়কর বিরল এক যুদ্ধ। এধরণের যুদ্ধ না ইতিপূর্বে হয়েছে, আর না এর পরে কখনও হবে।
নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: খৃষ্টানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিজয় লাভের পর ইসলাম বিজয়ী হতে থাকবে। হেরাক্লিসের শহর কনস্টান্টিনোপল। বর্তমান তুরস্কের ইস্তাম্বুলের পুরাতন নাম। এই শহরটি বাকি থাকবে। এখানকার শাসক কুফরি জোটের সাথে থাকবে। সে নিজের শহর মাহদি রা. এর কাছে সমর্পণ করবে না। সে এই শহরের খেলাফতের অংশ হতে দেবে না। তখন মাহদি রা. এর কাছে আসবেন এবং তার উপর আক্রমণ করবেন। পৃথিবীতে এটি এমন এক যুদ্ধ যা কোন ধরণের অস্ত্র ছাড়াই সংঘটিত হবে। যেখানে কোন তলোয়ার, কোন তীর বা গুলি কিছুই ব্যবহার করা হবে না। অস্ত্র ছাড়াই এই যুদ্ধ সংঘটিত হবে। কনস্টান্টিনোপল শহরটি যারা দেখেছেন বা ছবিতে যারা দেখেছেন তারা জানেন যে, এটি সমুদ্রের তীরে অবস্থিত একটি শহর। নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: মুসলিমদের বাহিনী কনস্টান্টিনোপল (ইস্তাম্বুল) কে ঘিরে নেবে এবং পূর্ব পাশের মুসলিমদের যে সেনাদল দাঁড়িয়ে আছে তারা মিলে উচ্চ আওয়াজে লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ পড়বে। আর সাথে সাথে পূর্ব পাশের দরজাগুলো খুলে যাবে এবং সেখানে থাকা একটি প্রাচীর যা বর্তমানেও আছে তা নিজে নিজে ধ্বসে পড়বে। মুসলিমরা সেই দরজাগুলো দিয়ে পূর্ব দিক থেকে প্রবেশ করবে। কাউকে হত্যা করা ছাড়াই ভিতরে প্রবেশ করতে থাকবেন। তারপর পশ্চিম পাশে যারা দাঁড়িয়ে আছেন তারা এখানে দাঁড়িয়ে উচ্চ আওয়াজে লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ পড়লে এখানকার দেয়াল ধ্বসে পড়বে এবং দরজাগুলো খুলে যাবে। তারা এদিক দিয়েই শহরে প্রবেশ করবেন। ইস্তাম্বুলের এই লোকগুলো ভয় ও প্রভাবের কারণে নিজেদের রাজত্ব ছেড়ে দেবে। সেখানে কোন তলোয়ার চলবে না, কোন তীর চলবে না, কেউ আহত হবে এবং কেউ নিহতও হবে না। পুরো কনস্টান্টিনোপলের শহর বিজয় হয়ে যাবে। এটি হল সেই লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহর সে জিকির যার বরকতে আল্লাহ তাআলা বিজয় দান করবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন: وَلَذكر الله اكبر আল্লাহর জিকির অনেক বড় জিনিস। জিকির তো আজও হয়। প্রশ্ন হল জিকিরকারীদের সংখ্যা ইতিপূর্বেও দুনিয়াতে ছিল আজও আছে। দুনিয়াতে জিকিরকারী আল্লাহর অনেক বান্দা আছেন। কিন্তু এমন জিকিরকারী কারা যাদের জিকিরে বিজয় অর্জন করা যায়। জিকিরের মাধ্যমে বিজয় কখন আসে? আলিমগণ লিখেছেন জিকিরের মাধ্যমে বিজয় তখনই হয় যখন আল্লাহর ভয়ের সাথে সাথে আল্লাহর মহব্বতেও জিকির হয় এবং সাথে সাথে হরকতও (নড়াচড়া) হয়। খানকার যে জিকির তা তো থাকবেই সাথে সাথে জিহাদি কার্যক্রমও চলবে। জিকিরকারীদের জবান আল্লাহর জিকিরে তরু-তাজা থাকবে এবং তাদের কদমগুলো গুনাহের দিকে বাড়বে না। যাদের জবান আল্লাহর জিকিরে সতেজ তাদের জবান হল পবিত্র জবান এবং গুনাহমুক্ত হাত ও পা যখন আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য বের হবে তখন তাদের জিকির তাদের অস্ত্র হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে বিজয় দান করবেন।
দ্বিতীয় যে জিকির তা হল খেলাফতের অধীনস্থ। এই জিকিরের মাধ্যমে বিজয় এজন্য আসবে যে, তা এক খলিফার অধীনে রয়েছে। এই ইবাদাত হল দ্বীন পরিপূর্ণভাবে প্রকাশিত হওয়ার পরের ইবাদাত। যেখানে নামাজ পড়া হচ্ছে খেলাফতের অধীনে। যেখানে বাজার চলে তো খেলাফতের অধীনে চলে। যেখানে দোকানদারি ও ব্যবসা চলে তো খেলাফতের মূলনীতি অনুযায়ী চলে। সে যুগে কোন সুদ থাকবে না। খেলাফতের অধীনে কোন মিশ্রণ নেই। খেলাফতের অধীনে মিথ্যে নেই। খেলাফতের অধীনে মুনাফেকি নেই। তাই জিকিরকারীদের জিকিরের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা যে যমানায় আছে তাতে সুদের হাওয়া নেই। তাদের বাজারে সুদ চলে না। খেলাফতের অধীনে চলা ব্যবসা-বাণিজ্যে সুদ নেই। তারা যে পোশাক পরিধান করছে তাতে দ্বিধা-সন্দেহ বা সুদ নেই। তাই তাদের ইবাদাতের মূল্য এবং তাদের জিকিরের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং তা এই মূল্যমান পর্যন্ত পৌঁছেছে যে, আল্লাহ তাআলা তাদের মাধ্যমে বিজয় দান করেছেন।
আর সাহাবায়ে কেরামের যুগেও এভাবেই বিজয় এসেছে। এমনটি অনেক যুদ্ধে ঘটেছে যে সাহাবায়ে কেরাম সেখানে পৌঁছার পর কাফেররা তাদের পোশাক ও আকৃতি দেখেই বলে দিয়েছে যে, আমরা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে পারব না। জিযিয়া নাও, সন্ধি করো। আমরা আপনাদের সাথে যুদ্ধ করবো না, সন্ধি করবো। আবার কিছু কিছু জায়গায় মুসলিমদের যেতেও হয়নি। একটি চিঠি লিখে পাঠিয়ে দিলে হযরত ওমর রা. এবং তার এই চিঠিতেই বিজয় হয়ে গেছে। তার পয়গাম এবং লিখিত বার্তার মাধ্যমেই আল্লাহ বিজয় দান করেছেন।
এই হল হযরত মাহদি রা. এর চারটি বড় বড় যুদ্ধ। এর অধীনে ছোট ছোট যুদ্ধ হবে। যার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকা বিজয় দান করবেন।
আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, এসব যুদ্ধে একজন সহযোগী হচ্ছেন এবং আরেকজন বিরোধী হচ্ছেন। রাসুলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মোবারক হাদিসগুলোর মাধ্যমে সারাংশ হিসেবে এটি বুঝে আসে যে, ইমাম মাহদি রা. এর তিনদল সহযোগী এবং তিনদল বড় বিরোধী হবে। হযরত মাহদি রা. এর বড় তিন দল সহযোগী কে হবে? প্রথম দল হল আলেম ও ওলিদের সে জামাত যারা তার হাতে বাইআত গ্রহণ করবে। পিছনে তাদের আলোচনা শুনেছেন। তারা ইমাম মাহদি রা. এর প্রথম সহযোগী হবেন এবং তারা তো অবশ্যই তার তালাশ করতে থাকবেন। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী ইমামা মাহদির রা. এর হাতে প্রথম বাইআতকারী এবং আরবে তাকে সাহায্যকারীগণ আরবে বসবাসকারী ঐসকল লোক হবেন যারা জিহাদের সাথে সম্পৃক্ত এবং ইসলামি শরীয়তের দাবিদার হবেন এবং তারা বনি হাশেমের সাথে সম্পৃক্ত হবেন। তারা স্বয়ং হযরত মাহদি রা. এর বংশধর হবেন।
আশ্চর্যের বিষয় হল বর্তমান সরকার এবং আরব প্রশাসন হাশেম গোত্রের লোকদেরকে কোন ভুল ও অপরাধ ছাড়াই বিনা কারণেই যারা সামান্য লেখাপড়া করেছে এবং দ্বীনের প্রতি আগ্রহী তাকে উঠিয়ে নির্বাসনে দিয়ে দেয় বা নজরবন্দী করে রাখে। আমি হাশেম গোত্রের শাইখ ইবরাহিম ফায়েয আল-হাশেমিকে ভালভাবে জানি। মক্কায় বংশীয় ব্যবস্থাপনা তিনিই পরিচালনা করেন। আব্দুল মুত্তালিবের যে গোত্রীয় সিস্টেম ছিল তা আজও হাশেম গোত্রে এবং কুরাইশদের মাঝে বিদ্যমান আছে। আর এক্ষেত্রে তাদের অথরীটি রয়েছে। যেমনিভাবে পাকিস্তানে পাঞ্জায়েত বা জিরগার আইন চলে, পাঞ্জায়েতের সিদ্ধান্ত বা জিরগার সিদ্ধান্তকে আইন হিসেবে মান্য করা হয়; তেমনিভাবে আরবে গোত্রীয় সর্দার যদি কোন ফয়সালা দেন তাহলে তাকে চ্যালেঞ্জ করা যায় না, তাকে আইনের অংশ মনে করা হয়। সেটি আমলযোগ্য বিষয়ে পরিণত হয়। আমি এই শাইখকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করলাম: হাশেম গোত্রের যুবকদের কী অবস্থা? তিনি বললেন: আমার কাছে হাজারও যুবকের নাম আছে যাদের নামে কেইস চলমান। বিনা অপরাধে তাদেরকে জেলে বন্দী করে রাখা হয়েছে। অপরাধ শুধু এতটুকুই যে তাদের সম্পর্ক হাশেম গোত্রের এবং তারা দ্বীনদার। সরকার এই ভয় করছে যে, এই যুবকরা মিলে এমন কোন দল তৈরি করে ফেলবে যার ফলে সরকারের ক্ষতি হবে অথবা তারা কোন আন্দোলন তৈরি করবে। বিশেষ করে তিউনিসিয়া এবং মিশরের আন্দোললেন পর এখানকার হাশেমী গোত্রের উপর বহুত কঠোরতা করা হয়েছে এবং হাজার হাজার যুবককে বিনা কারণে ও বিনা অপরাধে জেলে বন্দী করে দেওয়া হয়েছে। হাদিসের একটি কিতাব البرهان في علامات مهدي آخر الزمان । এই কিতাবে মাহদি রা. এর সাথে সম্পৃক্ত হাদিসগুলো জমা করা হয়েছে। الفتن হাদিসের একটি কিতাব। এমন সব হাদিস এগুলোতে বর্ণিত হয়েছে যা শুনে আপনি হয়রান হয়ে যাবেন। হাদিসে বর্ণিত আছে যে, হযরত মাহদি রা. নিজের মাহদিয়াতের ঘোষণা এবং বাইআত গ্রহণের পর জিহাদের যাওয়ার আগে প্রথম কাজ করবেন: يستخرج من كان في السجن من بنى هاشم নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: ইমাম মাহদি রা. জেলে বন্দী থাকা নিরাপরাধ হাশেমী গোত্রের যুবকদেরকে বের করে আনবেন। এটি হাদিসে বর্ণিত আছে এবং সম্ভাব্য সুরতটিও আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, হাজার হাজার যুবক এখনও বন্দী আছে।
হযরত মাহদি রা. এর সহযোগীদের মধ্যে আমাদের অঞ্চলের লোকদেরও সৌভাগ্য যে,রাসুলে আকদাসা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন মাহদি রা. নিজের মাহদি হওয়ার ঘোষণা করবেন তখন তার সহযোগীদের বড় একটি দল: قد جاءت من قبل خراسانখোরাসানের দিক থেকে আসবে। আফগানিস্তানের পুরাতন নাম হল খোরাসান। পুরাতন নাম খোরাসানে আফগানিস্তান,পাকিস্তানের কাবায়েলি এলাকা এবং ইরানের কিছু অংশ আছে যা খোরাসানের অন্তর্ভুক্ত।
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন তোমরা দেখবে যে,এদিক থেকে কালো পাতাবাহীদের দল আসছে তখন তোমরা তাদের সাথে শামিল হয়ে যাবে। فأن فيها خليفة الله المهدي কারণ, এসব হযরতগণ মাহদি রা. এর সবচেয়ে বড় সাহায্য ও সহযোগিতাকারী হবে। আল্লাহ তাআলা এই এলাকাকে এবং এই এলাকার লোকদেরকে এই শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন যে, হযরত মাহদি রা. এর সহযোগীদের বড় একটি সংখ্যা এখানকার লোকেরা হবে
মাহদি রা. এর বিরোধীদের সর্বপ্রথম অংশ হল আরবের শাসকশ্রেণি। দ্বিতীয় হল শাম থেকে আগত সেনাবাহিনী যাদের সংখ্যা হবে বারো হাজার এবং তারা মাহদি রা. এর বিরুদ্ধে লড়াই করবে। আর তৃতীয় দলটি হল কুফর বিশ^ যাদের বিরুদ্ধে মাহদি রা. পারস্যবাসীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন এবং রোম (খৃষ্টানদের) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে মাহদি রা. এর বাহিনীতে শামিল করুন। হযরত মাহদি রা. এর ব্যাপারে আরও দুই তিনটি বিষয় আলোচনা বাকি রয়ে গেছে। হযরত মাহদি রা. এসে খেলাফত প্রতিষ্ঠার পর কি করবেন? তার বৈশিষ্ট্যাবলী কী কী এবং গুণাবলী কী এবং তিনি কত বছর দুনিয়াতে থাকবেন এবং কখন তার মৃত্যু হবে। তার জানাযার নামাজ কে পড়াবেন এবং তার দাফন হবে কোথায় তা সামনের পর্বে আলোচনা করা হবে।
চলবে ইশাআল্লাহ.....................
সূত্র:নওয়ায়ে গাযওয়ায়ে হিন্দ- মে-২০২০ইং সংখ্যা থেকে অনূদিত
১ম পর্বের লিংক:
https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A6%BE%E0%A6%B0
২য় পর্বের লিংক:
https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A6%BE%E0%A6%B0
৩য় পর্বের লিংক:
https://dawahilallah.com/forum/%E0%A...A6%BE%E0%A6%B0
৪র্থ পর্বের লিংক:
Comment