আল-হিকমাহ মিডিয়া পরিবেশিত
‘তুফানুল আকসা’ অভিযান এবং তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কিত কয়েকটি প্রশ্নোত্তর
|| শায়খ খালিদ বিন উমর বাতারফি হাফিযাহুল্লাহ
এর থেকে || ৩য় পর্ব
===================
‘তুফানুল আকসা’ অভিযান এবং তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কিত কয়েকটি প্রশ্নোত্তর
|| শায়খ খালিদ বিন উমর বাতারফি হাফিযাহুল্লাহ
এর থেকে || ৩য় পর্ব
===================
ফিলিস্তিনের ভাই বোনদের প্রতি বার্তা
প্রশ্ন: গাজা ও ফিলিস্তীনে আমাদের ভাই-বোনদের উদ্দেশ্যে আপনারা কী বলবেন?
আমরা গাজা এবং সাধারণভাবে গোটা ফিলিস্তীনে আমাদের ভাই-বোনদেরকে বলবো: আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা যেন আপনাদের ব্যাপারেই কিছু আয়াত নাযিল করেছেন। সেই আয়াতগুলো আমি তিলাওয়াত করবো। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা বলেন:
قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِكُمْ سُنَنٌ فَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَانظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ ﴿١٣٧﴾ هَٰذَا بَيَانٌ لِّلنَّاسِ وَهُدًى وَمَوْعِظَةٌ لِّلْمُتَّقِينَ ﴿١٣٨﴾ وَلَا تَهِنُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَنتُمُ الْأَعْلَوْنَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ ﴿١٣٩﴾ إِن يَمْسَسْكُمْ قَرْحٌ فَقَدْ مَسَّ الْقَوْمَ قَرْحٌ مِّثْلُهُ ۚ وَتِلْكَ الْأَيَّامُ نُدَاوِلُهَا بَيْنَ النَّاسِ وَلِيَعْلَمَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَيَتَّخِذَ مِنكُمْ شُهَدَاءَ ۗ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ الظَّالِمِينَ ﴿١٤٠﴾ وَلِيُمَحِّصَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَيَمْحَقَ الْكَافِرِينَ ﴿١٤١﴾
অর্থ:“তোমাদের আগে অতীত হয়েছে অনেক ধরনের জীবনাচরণ। তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তাদের পরিণতি কি হয়েছে। এই হলো মানুষের জন্য বর্ণনা। আর যারা ভয় করে তাদের জন্য উপদেশবাণী। আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না। যদি তোমরা মুমিন হও তবে, তোমরাই জয়ী হবে। তোমরা যদি আহত হয়ে থাকো, তবে তারাও তো তেমনি আহত হয়েছে। আর এ দিনগুলোকে আমি মানুষের মধ্যে পালাক্রমে আবর্তন ঘটিয়ে থাকি। এভাবে আল্লাহ জানতে চান কারা ঈমানদার আর তিনি তোমাদের কিছু লোককে শহীদ হিসাবে গ্রহণ করতে চান। আর আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে ভালোবাসেন না। আর এ কারণে আল্লাহ ঈমানদারদেরকে পাক-সাফ করতে চান এবং কাফেরদেরকে ধ্বংস করে দিতে চান।” [সূরা আলে-ইমরান ০৩: ১৩৭-১৪১]
হে গাজাবাসী! হে ফিলিস্তীনবাসী!! এই আয়াতগুলো যেন আপনাদের কথাই বলছে!
পৃথিবীর যে কোনো জায়গার হে ঈমানদার ভাইয়েরা! এই আয়াতগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম রাযিয়াল্লাহু আনহুম থেকে শুরু করে সমগ্র মুসলিম সম্প্রদায়কে উহুদের পরাজয়ে সান্ত্বনা দান করেছেন। আজও পর্যন্ত এবং ভবিষ্যতেও এই আয়াতগুলো আমাদের জন্য ঐশী সান্ত্বনা হয়ে থাকবে।
উহুদের প্রাঙ্গনে আবু সুফিয়ানের সাথে সাহাবীদের কথোপকথন থেকে শিক্ষা
একইভাবে আমাদের ও আপনাদেরকে সান্ত্বনা দেয় সেই সংলাপ; যা আবু সুফিয়ান ইবনে হারব এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবা রাযিয়াল্লাহু আনহুমের মধ্যে যুদ্ধ শেষে হয়েছে। উহুদ যুদ্ধের সময় আবু সুফিয়ান মুশরিক ছিলেন। যুদ্ধ শেষে সাহাবী রাযিয়াল্লাহু আনহুমরা উহুদের পরাজয়ে কাতর ছিলেন। এদিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাথা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, তাঁর দাঁত মুবারক ভেঙে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আবু সুফিয়ান যুদ্ধের পর বিজয় ধ্বনি দিয়ে বলে ওঠে: ‘জয় হোবল!’
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: ‘তোমরা কি তাকে জবাব দেবে না’? তখন হযরত উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু বললেন: ‘আমরা কি বলবো’? নবীজি বললেন: তোমরা বলো— আল্লাহ সর্ব মহান, সর্বশ্রেষ্ঠ!
তখন সাহাবা রাযিয়াল্লাহু আনহুম বললেন— আল্লাহ সর্ব মহান, সর্বশ্রেষ্ঠ। তখন আবু সুফিয়ান বললেন: ‘আমাদের উজ্জা দেবী রয়েছে, তোমাদের নেই কোনো উজ্জা!’ তখন হযরত উমর রাযিয়াল্লাহু আনহুর কন্ঠে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম তাকে জবাব দিলেন: ‘আল্লাহ আমাদের মাওলা ও অভিভাবক; তোমাদের নেই কোনো মাওলা’।
অতঃপর আবু সুফিয়ান বললেন: ‘আজকের দিন বদরের দিনের প্রতিশোধ। আর যুদ্ধ তো উভয় পক্ষের জন্যই সমান সমান’। তখন সাহাবা রাযিয়াল্লাহু আনহুম তাকে জবাব দিলেন: “কখনোই সমান সমান নয়। আমাদের নিহত ব্যক্তিরা জান্নাতে, আর তোমাদের নিহত ব্যক্তিরা জাহান্নামে।”
তাই হে গাজার অধিবাসীরা!
যারা আপনাদের সামনে বলবে: ইহুদীবাদের জয় হোক; আপনারা বলবেন: আল্লাহ সর্ব মহান, সর্বশ্রেষ্ঠ। আপনারা আল্লাহর বান্দা। আল্লাহ কখনোই আপনাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন না।
কেউ যদি আপনাদেরকে বলে: তোমাদের হাজার হাজার শত শত নিহত হয়েছে; আপনারা তাকে বলুন: আমাদের নিহত ব্যক্তিরা জান্নাতে আর তাদের নিহত ব্যক্তিরা জাহান্নামে। কেউ যদি আপনাদেরকে বলে তার উজ্জা রয়েছে, আপনাদের কোনো উজ্জা নেই; আপনারা তাকে বলে দিন: আল্লাহ আমাদের মাওলা, তোমাদের কোনো মাওলা নেই!
আবু সুফিয়ান ও হেরাক্লিয়াসের কথোপকথন থেকে শিক্ষা
একইভাবে আবু সুফিয়ান ইবনে হারব এবং রোম সাম্রাজ্যের কায়সার হেরাক্লিয়াসের মাঝে যে সংলাপ হয়েছে, সেখানেও আমাদের জন্য শিক্ষা রয়েছে। তাদের দীর্ঘ সংলাপের একপর্যায়ে কায়সার আবু সুফিয়ানকে বললেন: “তোমরা কি তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করেছো?”
আবু সুফিয়ান বললেন: “জি হ্যাঁ, আমরা লড়াই করেছি।” সম্রাট বললেন: “তোমাদের লড়াই তাঁর বিরুদ্ধে কেমন ছিল?” আবু সুফিয়ান বললেন: “সমান সমান; কখনও তাঁর জয়, কখনও আমাদের জয়।”
এরপর সম্রাট তার প্রশ্নের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন: “তোমাকে আমি জিজ্ঞেস করেছি যে, তোমরা তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করেছো কিনা? তুমি দাবি করলে যে, তোমরা লড়াই করেছ। আমি জিজ্ঞেস করেছি, তাঁর বিরুদ্ধে তোমাদের লড়াই কেমন ছিল? তুমি বললে: সমান সমান; কখনও তাঁর জয়, কখনও তোমাদের জয়। সম্রাট বলেন: এভাবেই নবীদেরকে পরীক্ষা করা হয়। এরপর সবশেষে শুভ পরিণাম তাঁদেরই হয়।”
হে গাজার অধিবাসীরা!
আজ আপনারা পরীক্ষায় পতিত হয়েছেন। আপনারা ছাড়াও আফগানিস্তানে, ইরাকে, অন্য অঞ্চলে মুসলিমগণ পরীক্ষায় নিপতিত হয়েছে। ইনশা আল্লাহ, অচিরেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালার হুকুমে সর্বশেষে শুভ পরিণাম আমাদেরই হবে।
মুসলিমশাসকদেরঅবস্থান
প্রশ্ন: মুসলিমদের শাসকদের অবস্থান নিয়ে আপনাদের বক্তব্য কী?
মুসলিমদের শাসকদের অবস্থান সম্পর্কে বলবো: আমাদের আলোচ্য অপারেশন জনসাধারণের সামনে তাদেরকে আরও বেশি লজ্জার মুখে ফেলে দিয়েছে। তাদের মুখোশ খসে পড়েছে। মুসলিমদের যেকোনো ইস্যুতে তাদের যে অবস্থানের সঙ্গে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি, তাহলো: তারা হামলাকারীদেরকে অভিযুক্ত করে নিন্দা ও ধিক্কার জানায়। তারপরে তারা কিছু ফাঁপা ও অন্তঃসার শূন্য শব্দে এবং তাদের সমর্থকদের করতালির মাধ্যমে সবার চোখে ছাই দিয়ে দেয়, যেন মানুষ প্রশংসা মুখর হয়ে ওঠে। প্রতিটি ইস্যুতে তাদের অতীতের ও বর্তমানের অবস্থানগুলোর মধ্য দিয়েই তাদের মিথ্যা দাবি আমাদের সামনে ধরা পড়ে।
এরদোগানের মুখোশ
উদাহরণস্বরূপ, প্রেসিডেন্ট এরদোগানের বক্তব্য। তিনি বলেছেন: গাজায় গণহত্যা হচ্ছে, সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে ইত্যাদি। এরদোগানের এ ধরনের অন্যান্য কথা ও বিবৃতির পর আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই যে, দখলদার সত্তার সঙ্গে কূটনীতিক সম্পর্কের পরিমাণ কতটুকু আপনাদের? এই ঘটনা তুর্কি সরকার ও ইহুদীদের মাঝে স্থাপিত বন্ধনের মাঝে কোন প্রভাব ফেলেছে কি? তিনি যদি সৎ হন, তবে তার প্রথম কাজ হবে এই বন্ধনগুলো ছিন্ন করা।
এমনিভাবে আমরা তাকে তুরস্কের ইনসিরলিক বিমান ঘাঁটি (Incirlik Air Base) সম্পর্কে প্রশ্ন অথবা জিজ্ঞাসা করতে পারি, যেখান থেকে আমেরিকান বিমান ফ্লাই করে। এর আগে তুর্কি সেনাবাহিনী আফগানিস্তানে আগ্রাসনে ন্যাটোতে অংশ নিয়েছিল। আজও তারা সোমালিয়ায় আমাদের মুজাহিদ্বীন ভাইদের সাথে যুদ্ধ ও লড়াইয়ে আমেরিকার সাথে অংশ নিচ্ছে। তারা যেই বিবৃতিগুলি দিয়েছে, বাস্তবে তার কোনো সত্যতা নেই। তারা দখলকারী সত্তার দিকে কোনো বাস্তব পদক্ষেপ নেয় না— অথচ এরদোগানকে সেরা শাসকদের একজন বলে বিবেচনা করা হয়।
অন্যান্য মুসলিম শাসকদের অবস্থা
এরদোগান ছাড়া আমিরাত, সৌদি আরব অথবা সাধারণভাবে উপসাগরীয় অঞ্চলের শাসক, মিশর, জর্ডান এবং অন্য অঞ্চলের শাসকদের সম্পর্কে বলার কিছু নেই। এইতো মিশর ও জর্ডান মুসলিমদের সামনে তাদের সীমান্ত ফটক বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ ফিলিস্তীনে তাদের ভাইদের সাহায্যের জন্য তা খুলে দেয়া উচিত ছিল। তাই এটা এখন স্পষ্ট বিষয়। এটা কারও কাছে অস্পষ্ট নয়। তারা এই প্রথমবারই এমন করছে তা নয়। আমরা সব সময়ই তাদেরকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে শত্রুপক্ষের পাশে দাঁড়াতে দেখি।
শত্রুপক্ষের বিমানগুলো এমনকি শত্রু সেনাবাহিনীরাও আমাদের মুসলিম দেশগুলোতে অবস্থিত সেনাঘাঁটি থেকে বের হয়ে আসে। যেমন কাতারের আল-উদেইদ বিমান ঘাঁটি (Al Udeid Air Base) এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল-ধাফরা বিমান ঘাঁটি (Al Dhafra Air Base)। এগুলোর কথা আমাদের সামনে এসেছে, এগুলো আমরা নিজেরা দেখেছি অথবা গণমাধ্যমে এগুলোর সংবাদ এসেছে। পর্দার আড়ালে যা রয়েছে তা তো আরও ভয়ানক। কেউ যদি এ বিষয়ের গভীরে যেতে চায়, তাহলে সে পুরোপুরি হতবাক হয়ে যাবে।
আমরা চলমান ইস্যুতে ইহুদীদের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে এই শাসকদের প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে তাদের উপর্যুক্ত কার্যকলাপের তুলনা করে দেখতে পারি। দেখুন, এই শাসকরা তাদের জনগণকে নিরস্ত্র করেছে— এমনকি যদি জনসাধারণ ফিলিস্তীনে তাদের ভাইদের সাহায্যে নিরস্ত্রভাবে এগিয়ে আসতে চায়, তাহলেও শাসকবর্গ এর অনুমতি দেবে না। অথচ ইহুদী এবং ইহুদী শাসকদের অবস্থা মিলিয়ে দেখুন। এখন দখলদার শক্তি, তাদের নেতৃবৃন্দ ও রাজনীতিবিদদের মাঝে মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াই ও প্রতিরোধের জন্য ইহুদী সকল জনগণকে সশস্ত্র করার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ইতামার বেন গেভির (Itamar Ben-Gvir) এবং তার মত অন্য উগ্র কট্টরপন্থি ইসরাঈলি নেতাদের ব্যাপারে একথা প্রযোজ্য।
বর্তমান শাসকেরা মুসলিমদের সমস্যা ও সঙ্কটগুলোর অবিচ্ছেদ্য অংশ
প্রিয় পাঠক!
এখন তাহলে শত্রুপক্ষের শাসকবর্গ এবং মুসলিমদের বিশ্বাসঘাতক শাসকদের মাঝে তুলনা করে দেখুন। মুসলিমদের শাসকেরা প্রথমে আল্লাহর শরীয়ত পরিবর্তন করেছে, কাফেরদের তাবেদারি করেছে, এরপর কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছে। মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফেরদের পথ তৈরি করে দিয়েছে। জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। এমনকি কোনো দাতব্য সংস্থা কিংবা প্রতিষ্ঠানকেও তারা ছাড় দেয়নি বরং সেগুলোকেও প্রতিরোধ করেছে।
এই শাসকেরা নিকৃষ্ট জিনিসের বিস্তার ঘটিয়েছে, আর উৎকৃষ্ট জিনিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। এমন কোনো জঘন্য অপরাধ নেই, যাতে তারা লিপ্ত হয়নি। কেমন করে আশা করা যায়, তাদের মত লোকেরা ফিলিস্তীনকে সাহায্য করবে?! কেমন করে আশা করা যায়, তারা ফিলিস্তীন ও গাজার ভাই-বোনদেরকে সাহায্য করার জন্য তাদের দেশের জনগণকে অনুমতি দেবে?!
তারাও বর্তমান সময়ে মুসলিমদের সমস্যা ও সঙ্কটগুলোর অবিচ্ছেদ্য অংশ। সব সময় সর্বত্র তাদের অবস্থান অভিন্ন। আমরা চীনের উইঘুরের মুসলিমদেরকে দেখতে পাই, যারা এই শাসকদের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পায়নি। আমরা ভারতের মুসলিমদেরকেও দেখতে পাই, যারা এদের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পায়নি। তাই আল্লাহ তায়ালার কাছে আমরা প্রার্থনা করি- যেন দ্রুত তাদের পতন ঘটে এবং মুসলিমদেরকে যেন আল্লাহ নতুন নেতৃত্ব দান করেন। শুধু তাই নয় — নবুয়তের আদলে এমন খেলাফত ব্যবস্থা যেন তিনি দান করেন, যে ব্যবস্থায় আল্লাহর আনুগত্যশীল বান্দারা সম্মানিত হবেন, আর নাফরমান ও পাপিষ্ঠরা লাঞ্ছিত হবে।
উলামায়ে কেরামের উদ্দেশ্যে বার্তা
প্রশ্ন : উম্মাহর উলামায়ে কেরামের উদ্দেশ্যে আপনাদের বার্তা কী?
উম্মাহর উলামায়ে কেরামের উদ্দেশ্যে আমাদের বার্তা হল, আমরা তাদেরকে বলবো:
হে উম্মাহর উলামায়ে কেরাম!
আপনারা নিজেদের দায়িত্ব যথাযথ পালন করুন। মানুষের কাছে বর্তমান সময়ে একথা সুস্পষ্ট করুন যে, আমাদের সঙ্গে ইহুদী ক্রুসেডার শক্তির চলমান যুদ্ধের প্রকৃতি কি? আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে মুসলিমদের এই যুদ্ধের পরিচয় ও বাস্তবতা কি? আপনারা উম্মাহর সামনে শত্রুতা-মিত্রতার মূলনীতিগুলো সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরুন। আবশ্যকীয়ভাবে আপনারা উম্মাহর অন্তরে ইসলাম, জিহাদ, শাহাদাত ফী সাবীলিল্লাহর ভালোবাসা গেঁথে দিন। এটা আপনাদের দায়িত্ব। আল্লাহ তায়ালা এ দায়িত্ব পালনের জন্য আপনাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন এবং নির্দেশ পালনের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা ইরশাদ করেছেন:
وَإِذْ أَخَذَ اللَّهُ مِيثَاقَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَتُبَيِّنُنَّهُ لِلنَّاسِ وَلَا تَكْتُمُونَهُ فَنَبَذُوهُ وَرَاءَ ظُهُورِهِمْ وَاشْتَرَوْا بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًا ۖ فَبِئْسَ مَا يَشْتَرُونَ ﴿١٨٧﴾
অর্থ: “আর আল্লাহ যখন আহলে কিতাবদের কাছ থেকে প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করলেন যে, তা মানুষের নিকট বর্ণনা করবে এবং গোপন করবে না, তখন তারা সে প্রতিজ্ঞাকে নিজেদের পেছনে ফেলে রাখলো আর তার কেনা-বেচা করলো সামান্য মূল্যের বিনিময়ে। সুতরাং কতই না মন্দ তাদের এ বেচা-কেনা।” [সূরা আলে-ইমরান ০৩: ১৮৭]
অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন:
إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنزَلْنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالْهُدَىٰ مِن بَعْدِ مَا بَيَّنَّاهُ لِلنَّاسِ فِي الْكِتَابِ ۙ أُولَٰئِكَ يَلْعَنُهُمُ اللَّهُ وَيَلْعَنُهُمُ اللَّاعِنُونَ ﴿١٥٩﴾ إِلَّا الَّذِينَ تَابُوا وَأَصْلَحُوا وَبَيَّنُوا فَأُولَٰئِكَ أَتُوبُ عَلَيْهِمْ ۚ وَأَنَا التَّوَّابُ الرَّحِيمُ ﴿١٦٠﴾
অর্থ: “নিশ্চয় যারা গোপন করে, আমি যেসব বিস্তারিত তথ্য এবং হেদায়াতের কথা নাযিল করেছি মানুষের জন্য কিতাবের মধ্যে বিস্তারিত বর্ণনা করার পরও; সে সমস্ত লোকের প্রতিই আল্লাহর অভিসম্পাত এবং অন্যান্য অভিসম্পাতকারীরও। তবে যারা তওবা করে এবং বর্ণিত তথ্যাদির সংশোধন করে মানুষের কাছে তা বর্ণনা করে দেয়, সে সমস্ত লোকের তওবা আমি কবুল করি এবং আমি তওবা কবুলকারী পরম দয়ালু।” [সূরা বাকারা ০২: ১৫৯-১৬০]
কাজের মাধ্যমে উম্মাহকে উদ্ভুদ্ধ করুন
উম্মাহর উলামায়ে কেরামের আরও দায়িত্ব হচ্ছে:
বর্তমান সময়ে অপর মুসলিম ভাইদেরকে কথার আগে কাজের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা। নিজেরা বের হবার মাধ্যমে অন্যদেরকে উদ্বুদ্ধ করা। লড়াইয়ের ময়দানে যারা রয়েছে তাদেরকে নেতৃত্ব দান করা। প্রতিটি ইসলামী ভূখণ্ডের সীমান্তে অবস্থানকারী মুজাহিদ্বীনকে নেতৃত্ব দানের মাধ্যমে মুসলিম ভাইদেরকে উৎসাহিত করা। নিজেরা সামনের কাতারে দাঁড়িয়ে অপর মুসলিম ভাইদেরকে রণাঙ্গনে শরীক হওয়ার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা। এখন তাদের পতাকা বহন করে নেয়ার সময় হয়েছে। তারা এগিয়ে চলবে আর তাদের পেছনে পেছনে অন্যরা আসবে। অন্যরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে। তাইতো বলা হয়েছে: “যদি আপনি আমার ‘ইমাম’(নেতা) হন, তাহলে আমার ‘আমাম’ এ (সম্মুখভাগে) থাকুন।”
কতক উলামায়ে কেরামের বিভ্রান্তি
আমি আসলেই আশ্চর্য বোধ করি, এত বিরাট ঘটনার ব্যাপারে কেমন করে কিছু আলেম বিভ্রান্তিতে নিপতিত হতে পারেন। যেই শাসকবৃন্দ আমাদের সমস্যা ও সঙ্কটের অবিচ্ছেদ্য অংশ, যারা কখনোই আমাদের সমস্যাবলীর সমাধান হতে পারে না, যারা আল্লাহর শরীয়ত পরিবর্তন করেছে, যারা কাফেরদের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করেছে, যেই শাসকেরা উৎকৃষ্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও নিকৃষ্টের বিস্তার ঘটানোর এমন কোনো পথ বাদ রাখেনি; যা তারা অবলম্বন করেনি, যারা সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত, যারা উলামায়ে কেরাম ও ইসলামের দাঈদের জুলুম করে যাচ্ছে, সেই শাসকদেরকে কেমন করে কিছু আলেম এই অনুরোধ করছেন যে, তারা যেন আমাদের সঙ্কট থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করে দেন?! তারা কেমন করে সঙ্কট মোকাবেলা করবেন যখন কিনা তারা নিজেরাই প্রধান সমস্যা ও সঙ্কট?!
তাই বর্তমান সময়ে উম্মাহর উলামায়ে কেরামের কর্তব্য হলো, এই বাস্তবতা ভালোভাবে উপলব্ধি করা। শাসকবর্গের প্রকৃত পরিচয় জেনে ও বুঝতে পেরে মুসলিমদেরকে তাদের অপসারণ এবং তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে উদ্বুদ্ধ করা। উলামায়ে কেরামের দায়িত্ব মুসলিমদেরকে এ বিষয়ে উৎসাহিত করা, তারা যেন নিজেদের সন্তানদেরকে এই সমস্ত শাসকের সেনাবাহিনীতে ভর্তি না করায়। কারণ এতে তারা তাগুতের সেনাবাহিনীর শামিল হয়ে যাবে নাউযুবিল্লাহ!
আল্লাহ সুবহানাল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন:
إِنَّ فِرْعَوْنَ وَهَامَانَ وَجُنُودَهُمَا كَانُوا خَاطِئِينَ ﴿٨﴾
অর্থ: “নিশ্চয়ই ফেরাউন হামান এবং তাদের সেনাবাহিনী ভুলের মধ্যে ছিল।” [সূরা কাসাস ২৮: ০৮]
এদের উপর যখন শাস্তি আসবে, তখন এই সেনাবাহিনীও বাদ থাকবে না। এ কারণে মুসলিমদের বিশেষত উম্মাহর উলামায়ে কেরামের আবশ্যকীয় কর্তব্য হচ্ছে, উম্মাহর পিতাদের কাছে এ কথা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা যে, যারা এই সমস্ত তাগুতদের সেনাবাহিনীতে শামিল থাকবে, তাদের উপর শরীয়তের কী হুকুম বর্তাবে? শরীয়তের দৃষ্টিতে তাদের হুকুম হলো: দলগতভাবে তারা মুরতাদ বাহিনী। তারা এমন বাহিনী, যারা আল্লাহর শরীয়ত পরিবর্তনকারী শাসককে সাহায্য করে। তাই উম্মাহর পিতাদের কাছে এই বাহিনীর প্রকৃত অবস্থা ও শরীয়তের হুকুম তুলে ধরা আবশ্যক।
এই সমস্ত শাসকের অধীনতা থেকে মুসলিমরা কিভাবে মুক্তি পাবে এবং তাদের বিরুদ্ধে কেমন করে বিদ্রোহ করবে— এবিষয়ে শরীয়তের হুকুম উলামায়ে কেরাম যদি মুসলিম জনসাধারণের কাছে বর্ণনা না করেন, তবে কে করবে? তাই উলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে এগুলো হতে হবে। ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা পূর্ববর্তী উলামায়ে কেরামের হকের উপর যথাযথ অবস্থান দেখতে পাই।
দুর্যোগের সময় শায়খ ইবনে তাইমিয়ার অবস্থান
তাতারীদের হামলার সময় শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ’র অবস্থান কি ছিল? তিনি কেমন করে মুসলিমদেরকে তাতারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন!
তাতারী গোষ্ঠী ছিল মুসলিমদের শাসক। যখন তারা শরীয়তে পরিবর্তন ঘটালো এবং ইয়াসিক সংবিধান দিয়ে বিচারকার্য শুরু করলো, তখন শায়খ তাইমিয়া তাদেরকে কাফের সাব্যস্ত করে ফতোয়া ঘোষণা করলেন। তিনি ছাড়াও উম্মাহর অন্য উলামায়ে কেরাম; যেমন- ইবনে কাসীর রহিমাহুল্লাহ প্রমুখ ব্যক্তিগণ কাফের হবার ফতোয়া দেন। তখন মুসলিমরা তাড়াতাড়ি শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। এমনই আরও বিভিন্ন ঘটনা রয়েছে।
এমনকি জালেম মুসলিম শাসকেরাও হক্কানী রব্বানী এ জাতীয় উলামায়ে কেরামের উপস্থিতিতে কখনও নিরাপদ ছিল না। ইজ ইবনে আব্দুস সালাম রহিমাহুল্লাহ ‘রাজাদের বিক্রেতা’ নামে অভিহিত ছিলেন। মিশরের শাসকরা তাকে অত্যধিক ভয় করতো। কারণ তিনি সত্য প্রকাশে নির্ভীক ছিলেন। মানুষের কাছে তিনি শরীয়তের প্রকৃত বিষয়গুলো যথাযথভাবে তুলে ধরতেন। তিনি ছিলেন মুসলিম মিল্লাতের রাহবার। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে রহম করুন এবং উম্মাহর উলামায়ে কেরাম সকলকে আপন দয়ার চাদরে আবৃত করুন।
যাই হোক, এজন্যই উলামায়ে কেরামের জন্যও অবশ্য কর্তব্য হলো, পূর্ববর্তী উলামায়ে কেরামদের পদাঙ্ক অনুসরণ করা। তাঁরা হযরত আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুকে অনুসরণ করবেন, যিনি মুরতাদদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য একাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। কেমন ছিল মুরতাদদের এবং যাকাত প্রদানে অস্বীকৃতি জ্ঞাপনকারীদের সেই ফিতনা? হযরত আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু তখন মুসলিমদেরকে এমন এক বিষয় সম্পর্কে অবহিত করেন, যা হযরত উমর রাযিয়াল্লাহু আনহুর কাছেও অস্পষ্ট ছিল—যেই উমর রাযিয়াল্লাহু আনহুর মনে আল্লাহ তায়ালা এমন বিষয়ের সঞ্চার ঘটাতেন, যা পরবর্তীতে হাদীস হয়ে যেতো।
হযরত আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু যেহেতু শরীয়তের ব্যাপারে মুসলিমদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী ছিলেন, তিনি দাঁড়িয়ে নবীজির সাহাবী রাযিয়াল্লাহু আনহুমের কাছে যাকাত প্রদান করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপনকারীদের রিদ্দা তথা মুরতাদ হবার হুকুম তুলে ধরলেন। তখন সাহাবায়ে কেরাম রাযিয়াল্লাহু আনহুমও প্রস্তুত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করলেন। আল্লাহর পর যদি আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু না থাকতেন, তাহলে ইসলামের অসম্পূর্ণ রূপ আমরা পেতাম। একইভাবে ইমাম আহমদ রহিমাহুল্লাহ খলকে কুরআন ফিতনার সময় কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। এমন বহু ঘটনা রয়েছে। সেসব ঘটনা উল্লেখ করলে আলোচনা অনেক বেশি দীর্ঘ হয়ে যাবে।
যাই হোক, উলামায়ে কেরামকেই এই পতাকা বহন করতে হবে। শাসকবর্গের মোকাবেলায় তাদেরই দাঁড়াতে হবে। ইহুদী খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে তাদেরই প্রথম সারিতে থাকতে হবে। আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ফতোয়া ঘোষণা করতে হবে। ইহুদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যারা আমাদের বিরোধিতা করে, সে সমস্ত শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ফতোয়াও উলামায়ে কেরামেরই ঘোষণা করতে হবে।
হে উলামায়ে কেরাম!
আপনারা আলোর বাতিঘর। সাধারণ মানুষ আপনাদের দ্বারা আলোকিত হন। তাই কিছুতেই আপনারা এই আলো গোপন করবেন না। আপনারা উম্মাহর কাছে প্রকৃত বাস্তবতা তুলে ধরুন। আপনারা আপনাদের ভাই ওই সমস্ত আলেমের কথা তুলে ধরুন, যারা সত্য বলার কারণে কারারুদ্ধ হয়ে আছেন। যারা আলে সৌদ, আমিরাত এবং সিসি সহ তাগুত শাসকবর্গের কারাপ্রকোষ্ঠে আবদ্ধ হয়ে আছেন। আপনারা সত্য তুলে ধরুন। সত্য এখন মৃতপ্রায়। নিজেদের জীবনের বিনিময়ে একে আপনারা জাগিয়ে তুলুন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন:
أفضل الشهداء حمزة بن عبد المطلب ورجل قام إلى إمام جائر فأمره ونهاه فقتله
“সর্বশ্রেষ্ঠ শহীদ হলেন হামজা ইবনে আব্দুল মুত্তালিব রাযিয়াল্লাহু আনহু এবং এমন ব্যক্তি যিনি কোনো জালিম রাজার সামনে দাঁড়ালেন অতঃপর তাকে আদেশ ও নিষেধ করলেন, ফলে বাদশা তাকে হত্যা করলো।[1]”
তারাই হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ শহীদ। শহীদানের সরদার তাঁরা। যেমনটি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীসে শরীফে বলেছেন। অতএব, আপনারা এই উম্মাহর সরদার হবেন। আপনাদের কাছে উম্মাহর এটাই দাবি। তাই উম্মাহকে কিছুতেই একা ছেড়ে যাবেন না।
সবশেষে আমি পরিপূর্ণ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি- ওই সকল আলেমের প্রতি; যারা এই প্রেক্ষাপটে এবং এ জাতীয় প্রতিটি পূর্ববর্তী ইস্যুতে প্রশংসনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আপনারা সত্যকে নির্ভয়ে উচ্চারণ করেছেন, আল্লাহর পথে কোনো নিন্দুকের নিন্দার পরোয়া করেননি। ঈমানদারদেরকে লড়াই করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন, মুসলিমদের কাছে আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধের প্রকৃত রূপ তুলে ধরেছেন। আপনাদের প্রতি আমি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি- যেন তিনি তাঁদেরকে তাওফীক দান করেন। অটল-অবিচল রাখেন ও সাহায্য করেন। তাদের উপর আপন বরকতের ফোয়ারা জারি করেন! আরও প্রার্থনা করি- আল্লাহ যেন তাদের উপর সাকিনা ও প্রশান্তি অবতীর্ণ করেন! আল্লাহ যেন তাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে সৈন্যবাহিনী পাঠিয়ে শক্তিশালী করেন। নিশ্চয়ই তিনি তা করতে সক্ষম এবং তিনিই উত্তম তত্ত্বাবধায়ক।
আরও পড়ুন
১ম পর্ব
[1] হাদীসের ভাষ্যটি অন্যত্র বিশুদ্ধ সূত্রে এভাবে এসেছে- سَيِّد الشُّهَدَاءِ حَمْزَةُ بْنُ عَبْدِ المُطَّلِبِ وَرَجُلٌ قَامَ إلَى إمَامٍ جائرٍ فَأَمَرَهُ وَنَهَاهُ فَقَتَلَهُ“শহীদদের সর্দার হামযা বিন আব্দুল মুত্ত্বালিব এবং সেই ব্যক্তি, যে কোন স্বৈরাচারী শাসকের নিকট দাঁড়িয়ে তাকে (ভাল কাজের আদেশ) ও (মন্দ কাজে) নিষেধ করলে সে তাকে হত্যা করে।” (ত্বাবারানীর আওসাত্ব: ৪০৭৯, হাকেম: ৪৮৮৪, সহীহ তারগীব: ২৩০৮) [সম্পাদক]
Comment