Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ০৭ || মুসলিম ভূমিকে প্রতিরক্ষা করা (ঈমান আনার পর প্রথম ফারদ্)|| - শহীদ শাইখ ড. আব্দুল্লাহ আযযাম (রহিমাহুল্লাহ্)|| ১০ম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ০৭ || মুসলিম ভূমিকে প্রতিরক্ষা করা (ঈমান আনার পর প্রথম ফারদ্)|| - শহীদ শাইখ ড. আব্দুল্লাহ আযযাম (রহিমাহুল্লাহ্)|| ১০ম পর্ব

    আত্তিবয়ান পাবলিকেশন্স কর্তৃক পরিবেশিত

    মুসলিম ভূমিকে প্রতিরক্ষা করা
    (ঈমান আনার পর প্রথম ফারদ্)||
    - শহীদ শাইখ ড. আব্দুল্লাহ আযযাম (রহিমাহুল্লাহ্)||
    এর থেকে = ১০ম পর্ব
    ==================================================
    =====


    শাইখ ও শিক্ষক এর নিকট থেকে অনুমতি প্রসঙ্গঃ

    ইবাদাত করার জন্য শাইখ অথবা শিক্ষকদের নিকট থেকে অনুমতি নেওয়ার কোন দলীল প্রমাণ নেই। এই ইবাদাত ফার্দুল আ’ইন অথবা ফার্দুল কিফায়া-ই হোক না কেন। এই ব্যাপারে কোন ‘সালাফুস সালেহ’ হতে কোন উদ্ধৃতি নেই।

    যে ব্যক্তি এর বিপরীত কিছু বলবে তাকে অবশ্যই পরিষ্কার দলিল প্রমাণ হাজির করতে হবে। প্রত্যেক মুসলিম তার শাইখ অথবা শিক্ষকের অনুমতি ব্যতীত জিহাদে রওয়ানা দিতে পারবে। রব্বুল আলামীন এর নিকট থেকে পাওয়া অনুমতি সবার উপরে অগ্রাধিকার পাবে। তিনি তো অনুমতি দিয়েই রেখেছেন। অধিকন্তু তিনি ইহা ‘র্ফাদ’ করেছেন।

    ইবনু হুবাইরা বলেছেন, “শয়তানের একটি চক্রান্ত হচ্ছে ‘আল্লাহর সাথে মূর্তির ইবাদাতের ব্যাপারে সে ধোঁকা দেয়। যখন সত্য প্রমাণিত হয় তখন সে ওয়াস-ওয়াসা দেয় যে, ‘এটি আমাদের মাযহাবে নেই’। সুতরাং এভাবে সত্যের উপর একজন ব্যক্তির মাযহাবকে অগ্রাধিকার দেয়ার মাধ্যমে সে বাতিল ইলাহের ইবাদাত করে।’”

    ধরুন, কেউ আমেরিকাতে ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারি অথবা ইতিহাস নিয়ে লেখা-পড়া করতে যেতে চায়। যেখানে ‘ফাসাদ’ অন্ধকার রাত্রির মত বিস্তৃত, ওয়াস-ওয়াসা তাকে সমুদ্রের তরঙ্গের মত ঘিরে ধরবে। এই লোকেরা যদি তাদের শাইখ এর নিকট হতে অনুমতি গ্রহণ না করে তবে সে অথবা অন্য কেউ রাগান্বিত হয়নাঅথচ সে যদি জিহাদের ভূমিকে প্রতিরক্ষার জন্য বের হয় তখন প্রতিটি ব্যক্তি তার দিকে আঙ্গুল তুলে বলে, “সে কিভাবে অনুমতি ব্যতীত যেতে পারে?” উক্ত শাইখ রসূল এর বাণী ভুলে গেছেঃ

    এক রাত আল্লাহর পথে ‘রিবাত’ (ইসলামী ভূমির সীমানায় প্রহরারত থাকা)-এ ব্যয় করা, হাজার রাত সলাত এ দাড়িয়ে থাকা ও সিয়াম রাখার চেয়ে উত্তম।”

    একদিন ও একরাত ‘রিবাত’ (সীমানা পাহারা দেয়া)-এ থাকা একমাস সিয়াম রাখা ও সলাত পড়ার চেয়ে উত্তম। সে যদি ‘রিবাত’ এ থাকা অবস্থায় মারা যায় তবে মৃত্যুর পর তার আমল চালু থাকবে, সে রিযিকপ্রাপ্ত হবে এবং সে ফিতনা থেকে মুক্ত থাকবে।”

    একটি সকাল অথবা সন্ধ্যা আল্লাহর পথে জিহাদে ব্যয় করা দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তার চাইতে উত্তম।”

    শাইখ ও তার অনুসারীদের দায়িত্ব হচ্ছে উত্তম আমলের দিকে দ্রুত বেগে অগ্রসর হওয়া। এবং রসূল বলেছেনঃ “৫টি জিনিসের পূর্বে ৫টি জিনিসের সুযোগ গ্রহণ করঃ

    (১) তোমার মৃত্যুর পূর্বে তোমার জীবন,
    (২) অসুস্থতার পূর্বে সুস্থতা,
    (৩) ব্যস্ততার পূর্বে অবসর সময়,
    (৪) বৃদ্ধ হবার পূর্বে যৌবন,
    (৫) দরিদ্রতার পূর্বে সচ্ছলতা।”

    তাদের আরও গভীরভাবে নিম্নের হাদীসের প্রতি গভীর মনোযোগ দেয়া উচিত,
    যুদ্ধের ময়দানে এক মুহুর্ত দাড়িয়ে থাকা ষাট বছর রাতের সলাত থেকে উত্তম।”


    ইমাম আশ-শাফিঈ (রহিমাহুল্লাহ্) বলেছেন, “এই ব্যাপারে সকলে একমত পোষণ করেছেন যে, যদি সুন্নাহ তোমার সামনে পরিষ্কার হয়ে যায় তখন কোন ব্যক্তির কথায় সুন্নাহ পরিত্যাগ করা জায়েজ নয়।”


    মাল দ্বারা জিহাদ করা

    কোন সন্দেহ নেই যে, মাল দ্বারা জিহাদ করার চাইতে জান দ্বারা জিহাদ করা উত্তম। এই জন্যই, রসূল এর যুগে ধনী সাহাবীগণ যেমনঃ উসমান (রদিআল্লাহু আনহু), আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রদিআল্লাহু আনহু)-এর মত সাহাবীগণও জান দিয়ে জিহাদ করা থেকে অবকাশ পাননি। কারণ আত্মার পরিশুদ্ধি ও উন্নতি হয় জিহাদের ময়দানে। এর জন্যই রসূল একজন সাহাবাকে উপদেশ দিচ্ছিলেন, “…জিহাদকে আঁকড়ে ধর কেননা এটিই হচ্ছে ইসলামেরাহবানিয়্যাত’ (সন্ন্যাসবাদ)।”

    এই জন্যই যখন রসূল -কে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, “একজন শহীদ কে কি কবরের ফিতনায় ফেলা হবে? তিনি উত্তর দিলেন, “তার মাথার উপর তরবারির আঘাতই তার জন্য ‘ফিতনা’ হিসেবে যথেষ্ট।”

    অধিকন্তু রসূল জিহাদ কে পরিত্যাগ করে দুনিয়ার প্রতি ঝুঁকতে নিষেধ করেছেন। একদা তিনি লাঙ্গলকে লক্ষ্য করে বললেন, “এটি মানুষের বাড়িতে আসা যাওয়া করে যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ্ এর দ্বারা লাঞ্ছনা প্রবেশ করান।”

    বিশুদ্ধ হাদিসে এসেছে, “যদি তোমরাতাবাইয়া আল য়ি’নিয়্যা’ “অর্থাৎ (এক ব্যক্তির নিকট কোন জিনিষ একটি দামে বিক্রয় করা অতপর একই জিনিস তার নিকট থেকে অনেক কম দামে ক্রয় করা) অনুসরণ কর, বলদের লেজের অনুসরণ কর (অর্থাৎ কৃষিকাজ নিয়েই সন্তুষ্ট থাক) এবং জিহাদকে বর্জন কর তখন আল্লাহ্ তোমাদের উপর নির্যাতন চাপিয়ে দিবেনএই নির্যাতন ততদিন পর্যন্ত থাকবে যতদিন তোমরা দ্বীনের মধ্যে ফেরত না আস।”

    আরেকটি সহীহ হাদীসে এসেছে, “তোমরা ‘দাইয়া’ গ্রহণ করনা কারণ ইহা তোমাদেরকে দুনিয়ার জীবন এর উপর সন্তুষ্ট করে রাখবে।”

    রসূল দুনিয়াকে বর্জনের উপায় বলে দিয়েছেন। যেমনঃ কৃষি, সুদের ব্যবসা, য়ি’নায় ব্যবসা, পশুপাখির খামার, শিল্প-কারখানা ও উঁচু দালান ইত্যাদি বর্জনের মাধ্যমে। শারীয়াহ অনুযায়ী ইসলাম যখন আক্রান্ত তখন উক্ত কাজগুলির মধ্যে ব্যস্ত হওয়া হারাম এবং অনেক বড় গুণাহ্।

    যদি মুজাহিদীনদের মালের প্রয়োজন হয় তখন একজনের মাল দ্বারা জিহাদ করা র্ফাদ। তখন মহিলা ও শিশুর মাল দ্বারা জিহাদ করাও র্ফাদ, এটি ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন। এই জন্যই জিহাদে যখন মালের প্রয়োজন হবে তখন মাল জমা করা হারাম। ইবনে তাইমিয়্যাহ্ (রহিমাহুল্লাহ)-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, “আমাদের কাছে এত সামান্য মাল আছে যে, হয় দুর্ভিক্ষ পীড়িতদের উপর খরচ করতে হবে অথবা জিহাদে ব্যয় করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমরা কি করবো?” তিনি বলেছিলেন, “যদিও দুর্ভিক্ষে পীড়িতরা মারা যায় তবুও আমরা জিহাদকে অগ্রাধিকার দিব। মুসলিমদেরকে যখন শত্রুরা বর্ম হিসেবে ব্যবহার করে তখন ঐ মুসলিমরা আমাদের হাতে নিহত হয় অথচ এখানে দুর্ভিক্ষ পীড়িতরা আল্লাহর হুকুমের অধীনে মারা যায়।”

    আল কুরতুবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “আলিমগণ একমত পোষণ করেছেন যে, যাকাত পরিশোধের পরও যদি মুসলিমদের কোন প্রয়োজন থাকে; তবে তারা নিজেদের মাল থেকে খরচ করবে উক্ত প্রয়োজন পূরণ করার জন্য।”


    ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “মুসলিম বন্দীদেরকে মুক্ত করা র্ফাদ। যদিও সমস্ত সম্পদ খরচ হয়ে যায়। এ ব্যাপারেও সবাই একমত পোষণ করেছেন।”

    একজন ব্যক্তিকে রক্ষার চাইতে দ্বীনকে রক্ষা করা অগ্রাধিকার যোগ্য, এবং সম্পদকে রক্ষার চাইতে একজন মানুষের জীবন রক্ষা করা অগ্রাধিকার যোগ্য। সুতরাং একজন মুজাহিদীন এর রক্তের চাইতে একজন ধনীর সম্পদ বেশী মূল্যবান নয়।

    সুতরাং হে ধনীগণ! তোমরা মালের ক্ষেত্রে আল্লাহর হুকুমের ব্যাপারে সতর্ক হও। যেখানে মুসলিম দেশগুলো শেষ হয়ে যাচ্ছে সেখানে ধনীরা তাদের মাল নিয়ে নফসের খাহেশাতের মধ্যে ডুবে আছে। আফসোস!! যদি এই ধনীরা মাত্র একদিন তাদের নফসের খাহেশাত থেকে দূরে থাকত এবং মালের অপচয় বন্ধ করে সমস্ত টাকা আফগানিস্তানের মুজাহিদীনদের নিকট পাঠাতো! যাদের পা গুলো বরফে ক্ষয়ে যাচ্ছে, এবং ঠাণ্ডায় মারা যাচ্ছে। তারা দিনে খাবার পায়না এবং নিজেদের রক্ষার জন্য অস্ত্র পায়না।

    আমি বলি, যদি ধনীরা তাদের একদিনের অপচয়ের টাকা আফগানিস্তানে ব্যয় করতো তবে মুজাহিদীনরা আল্লাহর সাহায্যে বিজয় লাভ করতো। অধিকাংশ আলিম, তম্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন শাইখ বিন বায তারা ফাতওয়া দিয়েছেন যে, মুজাহিদীনদের মধ্যে যাকাত ব্যয় করা হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম আমল ও উত্তম সাদাকা।

    সারাংশঃ

    একঃ পৃথিবীর প্রতিটি মুসলিম এর জন্য নিজের জীবন দ্বারা জিহাদ করা ফার্দুল আ’ইন।

    দুইঃ জিহাদ করার জন্য একজন অপরজন থেকে অনুমতির প্রয়োজন নেই। সন্তানের জন্য পিতার নিকট থেকে অনুমতি প্রয়োজন নেই।

    তিনঃ মাল দ্বারা জিহাদ করা ফার্দুল আ’ইন। এবং জিহাদের জন্য মালের প্রয়োজন হলে সে পরিস্থিতিতে মাল জমা করা হারাম।

    চারঃ জিহাদকে অগ্রাহ্য করা সলাত এবং সিয়ামকে অগ্রাহ্য করার মতই। বরং বর্তমানে জিহাদকে অগ্রাহ্য করা আরও নিকৃষ্ট। ইবন আর রুশদ বলেছেনঃ “ইজমা হচ্ছে যখন জিহাদ ফার্দুল আ’ইন হয়, তখন এই ফার্দ হজ্জের চাইতেও অগ্রাধিকার পাবে।”



    আরও পড়ুন
    ৯ম পর্ব ------------------------------------------------------------------------------------------------- ১১তম পর্ব


    Last edited by tahsin muhammad; 11-04-2023, 03:01 PM.

  • #2
    জিহাদকে অগ্রাহ্য করা সলাত এবং সিয়ামকে অগ্রাহ্য করার মতই। বরং বর্তমানে জিহাদকে অগ্রাহ্য করা আরও নিকৃষ্ট।

    ইবন আর রুশদ
    বলেছেনঃ “ইজমা হচ্ছে যখন জিহাদ ফার্দুল আ’ইন হয়, তখন এই ফার্দ হজ্জের চাইতেও অগ্রাধিকার পাবে।”
    আল্লাহ্‌ তাআলা আমাদের জিহাদ পরিত্যাগ করার গুনাহ থেকে হিফাজত করুন, এবং যথাসাধ্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে, হক্ব জামাআত তালাশ করে আমীরের অধীনে জিহাদে যোগদান করার তাওফিক দান করুন, আমীন

    Comment


    • #3

      (আরেকটি সহীহ হাদীসে এসেছে, “তোমরা ‘দাইয়া’ গ্রহণ করনা কারণ ইহা তোমাদেরকে দুনিয়ার জীবন এর উপর সন্তুষ্ট করে রাখবে।)
      এখানে দাইয়া দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে?
      পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

      Comment

      Working...
      X